Skip to main content

Posts

Showing posts from 2023

ফিলিস্তিনের মজলুম ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের ঈমানের দাবি

 জুমা আলোচনা বাঁশেরদিয়াড় আল হেরা জামে মসজিদ তারিখ : ১৩.১০.২০২৩ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বাঁশেরদিয়াড় আল হেরা জামে মসজিদ, খুব প্রাচীন না হলেও একেবারে কম নয়, বয়স ২৬ বছর (২রা ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সনে প্রতিষ্ঠিত), অথচ বাড়ির নিকটবর্তী হওয়া সত্ত্বেও আজই আমার প্রথম জুমা আদায়। আমার  স্নেহধন্য নাহিদের আমন্ত্রণে আজ সেখানে নামাজ আদায় ও কিছু কথা বলার সুযোগ হয়।   মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মকছেদ আলী ড্রাইভার মসজিদের আঙিনায় চিরদিনের জন্য শায়িত আছেন। আমরা তাঁর মাগফেরাত কামনা করি। বর্তমানে মসজিদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আমার একান্ত স্নেহধন্য জনাব মো. ছাইদুর রহমান এবং সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এক ভাইপো  জনাব আবু সাঈদ (ইউপি মেম্বর)। মসজিদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের কল্যাণ কামনা করি। সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে আমার বক্তব্য - আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। গ্রামে বেশ কিছু মসজিদে আমি নামাজ আদায় করেছি। সম্প্রতি প্রচুর মসজিদ গড়ে উঠেছে। আল্লাহর ঘর শুরু করলে স্বল্প সময়ের মধ্যে তা সুন্দর মসজিদে রূপ নেয়। আলহামদু লিল্লাহ। অধিকাংশ মসজিদে মুসল্লিরা অনেক বিলম্বে আসেন। কিন্তু আপ...

ইন্না লিল্লাহর মর্ম বুঝেছে ফিলিস্তিনরা

 ফিলিস্তিনের হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যা করেছে তা এক বিস্ময়। মানুষের জ্ঞানে তা ব্যাখ্যা করা কঠিন। যেমনটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর আমেরিকাকে পরাস্ত করলো আফগানরা। আমি মনে করি সবই আল্লাহপাকের নিদর্শন। আমি করোনাকেও আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন মনে করি। এই করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বর্তমান বিশ্বের পরাশক্তি ইউরোপ ও আমেরিকা। তাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান, আবিষ্কার শৌর্যবীর্য, সম্পদ সবকিছুকে আল্লাহ সাময়িকভাবে স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তা থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করেনি। জালেম কখনোই উপলব্ধি করে না। একজন মুসলমান হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, মহান আল্লাহপাকের ইচ্ছার বাইরে কোনো কিছু সংঘটিত হয় না। মানুষের মৃত্যুর কথা শুনে আমরা পড়ে থাকি ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন। নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য এবং তাঁরই কাছে ফিরে যাবো। এই উক্তির মধ্য দিয়ে আমরা ঘোষণা দেই, আমাদের নিজস্ব বলে কিছু নেই, আমরা পরিপূর্ণ আল্লাহতে সমর্পিত। আমরা না নিজের, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের, আমরা পরিপূর্ণ আল্লাহর। এই সমাজে যা করি তা আল্লাহর পক্ষে, তাঁর মর্জি ও নির্দেশক্রমে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সীমিত জ্ঞান ও যোগ্যতা দিয়েছেন তা তাঁর প্রতিনিধি ...

এখন মোটামুটি সুস্থ

 তিন মাস পূর্বে অসুস্থ হয়ে প্রথমে ধানমন্ডি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে আগারগাঁও নিউরো সাইন্স হাসপাতালে ডা. কবিরুজ্জামান (অত্যন্ত আন্তরিক) সাহেবের নিকট দুবার চিকিৎসা নিয়েছি। সেবারে ইসিজি, ইকো ও ব্রেনের এমআরআই করা হয়। আমার বয়স ৭০ বছর। তখন থেকে ঔষধ Co-dopa 110 & Rivamer 1.5 খাচ্ছি। কো-ডোপা দৈনিক (সকাল, দুপুর ও রাত) তিনটা এবং রিভামির রাতে একটি করে। দুমাস পরে দেখা করার কথা (সেপ্টেম্বর মাসের শেষে)। মোটামুটি ভালো ছিলাম। আমার স্বাভাবিক জীবন যাপন। রাত সাড়ে দশটার দিকে ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুমানোর পূর্বে এক গ্লাস পানি খাই। আগের তুলনায় বর্তমানে একটু ঘন ঘন পেশাব হয়। গতকাল রাত দুটোয় স্বাভাবিকভাবে বাথরুম থেকে এসে শোয়ার আধাঘন্টা পর আবার বাথরুমে যেতে হয় এবং খুব ঢেকুর উঠতে থাকে। এসময়ে মাথা ঘুরে ও বমি হয় এবং ঘাম ঝরে।  রনির আম্মা কিছুক্ষণ পরে আমার ছোট ভাই ডা. কামালের সাথে কথা বলে। কামাল স্যালাইন নেয়ার কথা বলে। আতিয়ার/শাহানুরকে ডেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলে। রাতে লুলু ওদের বললে দুজনই ইতিবাচক সাড়া দেয়। ফজর পড়ে আতিয়ার এসে কামালের সাথে পরামর্শ করে স্যালাইন এনে পুস করে এবং এখন ভালো বোধ করছ...

এক অকৃতজ্ঞ জাতি বনি ইসরাইল (ইহুদি জাতি)

 কুরআনের পাঠ  সুরা বাকারা ষষ্ঠ রুকু ৪৭-৫৯ আয়াত পঞ্চম থেকে চৌদ্দ রুকু বনি ইসরাইল জাতি সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। ইহুদিদের বজ্জাতি নতুন না। ওরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী এক জাতি। অসংখ্য নবি-রসুলকে তারা হত্যা করেছে।  ষষ্ঠ রুকুতে আমরা তাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা  প্রদত্ত নেয়ামত লক্ষ করবো। ৪৭ নং আয়াতে সমস্ত জাতির ওপর বনি ইসরাইলকে শ্রেষ্ঠত্ব দানের উল্লেখ করার পর আখেরাতকে ভয় করার জন্য আল্লাহ বলেন, সেদিন কেউ কারো কোনো উপকারে আসবে না, কারো সুপারিশ গৃহীত হবে না, বিনিময় নিয়ে কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না এবং কোথাও থেকে কোনো সাহায্য লাভ করতে পারবে না। আল্লাহপাক তাদের ভ্রান্ত ধর্মবিশ্বাসের মূলোৎপাটন করে স্পষ্ট বলেছেন, আল্লাহর সাথে কারো কোনো বিশেষ সখ্যতা নেই। আল্লাহর কাছে মূল্য বহন করে ঈমান ও নেক আমল। বর্তমানে মুসলমানদের বিশ্বাসও ইহুদিদের মতোই। তাদের ধারণা, শেষ নবির উম্মত, তাঁর সুপারিশে সবাই জান্নাতে চলে যাবে। আর জাহান্নামে গেলেও সামান্য সময়ের জন্য। আল্লাহ বলেন, তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে মৃত্যু কামনা করো দেখি। ৪৭-৪৮ পরবর্তী ৪৯-৫০ আয়াতে আল্লাহপাক স্মরণ করে দিয়েছেন, ফেরাউন ও তার দলবলের...

চলতে ফিরতে দেখা

 ইটের লরির সাথে চারজন শ্রমিকের সাথে একজনকে দেখলাম বয়সে একটু কম। জিজ্ঞেস করলাম, পড়ালেখা করো? জবাব দিল, হ্যাঁ। আবার জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ ক্লাসে পড়ো? বললো, ক্লাস সেভেনে। ছেলেটার চেহারায় লাবণ্য আছে এবং দেখতেও সুন্দর। বললাম, লেখাপড়া ও ইটটানা কোনটা বেশি কঠিন? তার জবাব, দুটোই কঠিন। আসলে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার জন্য দারিদ্র্যের পাশাপাশি লেখাপড়াকে কঠিন মনে করাটাও দায়ী। বাবা-মার অভিযোগ, ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে চায় না। স্কুল ফাঁকি দেওয়া ও প্রাইভেট টিউটরের কাছে না যেতে চাওয়া একটা সাধারণ ব্যাপার। বাবা-মারা সন্তানের লেখাপড়া নিয়ে দারুণ পেরেশান। আসলে ছেলেমেয়েদের সম্মুখে আমরা ভালো কিছু উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হচ্ছি। সকল বাবা-মা চান তার সন্তান লেখাপড়া করুক। ছেলেমেয়ে আগ্রহী হলে অর্থসংকট বাধা হয় না। সন্তানের জন্য বাবা-মা তাদের কষ্টকে কিছু মনে করে না। পিতা ভ্যান চালিয়ে এবং মা অপরের বাড়িতে কাজ করে হলেও সন্তানকে লেখাপড়ার সুযোগ করে দেয়। আমি অনেক ছেলেমেয়েকে জিজ্ঞেস করে দেখেছি, জবাব দেয় নিজেদের গাফিলতির কারণেই লেখাপড়া হয়নি।বাবা-মাকে দোষারোপ করার মতো কোনো সন্তান পায়নি। স্কুলের শিক্ষার্থী শুধু নয় কলেজ বিশ্ববি...

কুরআনের পাঠ

 সুরা বাকারা পঞ্চম রুকু ৪০-৪৬ আয়াত চতুর্থ রুকু পর্যন্ত সকল মানুষকে সম্বোধন করে কথা বলার পর পঞ্চম থেকে চৌদ্দ রুকু বনি ইসরাঈল সম্পর্কে ধারাবাহিক আলোচনা করা হয়েছে। ইসরাইল ইয়াকুব আ.-এর উপাধি। এর অর্থ আব্দুল্লাহ (আল্লাহর বান্দা)। তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে এই উপাধি লাভ করেছেন। ইয়াকুব আ. ইসহাক আ.-এর পুত্র এবং ইব্রাহিম আ.-এর নাতি। ইয়াকুব আ.-এর বংশধরদের বলা হয় বনি ইসরাইল। এই বংশে অনেক নবি-রসুলের আগমন হয়েছে। মুসা আ. এই বংশেরই নবি ও এখানে তাঁর অনুসারী ইহুদি জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য  করেই কথা বলা হয়েছে। বনি ইসরাইলকে আল্লাহপাক প্রভূত নেয়ামত দান করেছেন। স্বৈরশাসক ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি, নিরাপদে সাগরপাড়ি, মান্না ও সালওয়া দিয়ে খাদ্যের ব্যবস্থা সর্বোপরি তাদের বংশে নবুয়ত দান। কিন্তু তারা বারবার আল্লাহর নাফরমানি করে আল্লাহকে প্রদত্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে। আল্লাহর নেয়ামত ও তাঁকে দেওয়া ওয়াদা স্মরণ করে দিয়ে আল্লাহকে ভয় করে চলার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। তাদেরকে মুহাম্মদ সা.-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাবের প্রতি ঈমান আনার জন্য বলা হয়েছে। এটা অভিনব কোনো কিতাব নয় বরং তাদের কিতাবের সত্যতা সমর্থনকারী। আসলে ওরা দুনিয়া পূজার...

এক বিস্ময় : বিগত পঞ্চাশ বছরে এতবড় হামলার সম্মুখীন হয়নি ইসরাইল।

 ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে উপর্যুপরি হামলা, হত্যা ও একের পর এক ভূমি দখল করে অবৈধ বসতি স্থাপন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল আকসায় নামাজে বাধাদান ও এর মর্যাদা ক্ষুন্ন করাসহ দেশে দেশে ফিলিস্তিনী নেতৃবৃন্দকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরাইলের ওপর এক বড়ো ধরনের হামলা করতে সক্ষম হলো সে দেশের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখা। সত্যি এটা একটা বিস্ময়! এর ব্যখ্যাদান বড়ো কঠিন। আল্লাহপাকই ভালো জানেন। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা যায় ইসরায়েলের সাতশ জন নিহত হয়েছে। গাজা এলাকায় বিমান হামলায় ৩৭০ জন ফিলিস্তিনি শহিদ হয় এবং কয়েক হাজার আহত হয়। শতাধিক ইসরাইলিকে বন্দী করে হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিয়ে আসে।এটিই তাদের বড়ো সাফল্য। পাঁচ সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি ইসরাইলের কারাগারে বন্দী রয়েছে। যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময়ে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে ইনশা-আল্লাহ। ইসরায়েলের পার্লামেন্ট এই ঘটনার প্রতিশোধে সর্বাত্মক যুদ্ধের  সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ফলে ইসরায়েলের সরকার যেকোনো সময়ে যেকোনো স্থানে হামলা করার অনুমতি পেল। হামাসের সামরিক হামলায় বিশ্বব্যাপী মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকা তাৎক্ষণিক নিন্দা জানিয়েছে।...

নামাজই যেন সব

 ইসলামের বুনিয়াদ কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত। কালেমা তাইয়্যেবার ঘোষণা প্রদানের মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তি ইসলামের সীমার মধ্যে প্রবেশ করে। সে যে এই ঘোষণায় সত্যবাদী তার প্রমাণ দিতে হয় মৌলিক চারটি ইবাদত পালনের মাধ্যমে। তার মধ্যে সর্বপ্রথম যে কাজটি সামনে আসে সেটা হলো নামাজ। মনে করুন দুপুর ১২ টায় এক লোক ইমান আনলো এবং ইমান আনার কিছুক্ষণ পরেই জোহরের আজান হলো- হাই আলাসসালা, হাই আলাল ফালা (তোমরা নামাজের দিকে এসো, কল্যাণের দিকে এসো।) এই আহবানে সাড়া দেয়া ব্যক্তিই মূলত মুসলিম। সকল নবি-রসুলের উপর নামাজ ফরজ ছিল। রসুলুল্লাহ সা. নবুয়ত লাভের পর থেকেই নামাজ পড়েছেন যদিও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয় মিরাজের রাতে। কাবায় নামাজ পড়ার কারণে তাঁর ঘাড়ে উটের নাড়িভুড়ি চাপিয়ে দেওয়ার কথা আমাদের জানা আছে। কুরআনে নানাভাবে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। সুরা আল মুদ্দাসসিরে বলা হয়েছে নামাজ না পড়া মানে জাহান্নামে যাওয়া। সুরা বাকারায় বলা হয়েছে পরকাল অবিশ্বাসীদের কাছেই কেবল নামাজ কঠিন কাজ। সুরা মুমিনুনে সফলকাম ব্যক্তির প্রথম গুণ বলা হয়েছে খুশুখুজুর সাথে নামাজ পড়ে। সকল অবস্থাতেই নামাজ আদায় করতে হয়। যুদ্ধের ময়দানেও নামাজ আ...

আল্লাহর পথে ব্যয়, ক্রোধ সংবরণ ও ক্ষমা করার মধ্য দিয়ে আমরা মুহসিন বান্দা হই

 জুমা আলোচনা কাজিপাড়া জামে মসজিদ তারিখ : ০৬.১০.২০২৩ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম কাজিপাড়া জামে মসজিদ, অনেক প্রাচীন মসজিদ, বয়স আটষট্টি বছর (১৫ই জুন ১৯৫৫ সনে প্রতিষ্ঠিত), অথচ ইতোপূর্বে আমার যাওয়া হয়নি। আজই প্রথম জুমা আদায়। আমার একটু বিলম্ব হয়ে গিয়েছিল। খতিব মহোদয় খুতবা দানরত অবস্থায় আমি উপস্থিত হলে মুয়াজ্জিন সাহেব খতিব মহোদয়কে কানে কানে বললে খতিব মহোদয় আমাকে আলোচনা করার সুযোগ দান করেন। খতিব মহোদয়ের সাথে আজই আমার প্রথম পরিচয়। অবশ্য তিনি আমার আব্বাকে চিনতেন।  মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আফিল উদ্দিন সরদার (১৯০৭-২৬.০৭.১৯৯৮) নিজ বাড়ির আঙিনায় জমি দান করে এই মসজিদটি গড়ে তুলেন। তাঁর মেজ ছেলে জনাব মতিউর রহমান (মুকতার) বর্তমানে মসজিদের সভাপতি এবং  সেক্রেটারি ও ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন যথাক্রমে জনাব মো. হাফিজুর রহমান ও জনাব মো. জিয়াউল হক। এর পূর্বে সুদীর্ঘ দশ বছর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এলাকার বিশিষ্ট সমাজকর্মী জনাব মো. মোফাককার হোসেন (বাবুল ডাক্তার)। তাঁর সময়ে মসজিদটির ব্যাপক সংস্কার করা হয় এবং দ্বিতল মসজিদ করে উপর-নিচ পুরোটাই টাইলস, বাথরুম, ওজুখানা সবমিলে এক দৃষ্...

মুত্তাকি হওয়ার জন্য ঈমানের সাথে আমলও শর্ত

 কুরআনের পাঠ  সুরা বাকারার প্রথম রুকু ১-৭ আয়াত পরপর চারদিন ফজরের পূর্বে সুরা বাকারার চারটি রুকু তেলাওয়াত, অর্থ ও ব্যাখ্যা পড়লাম এবং সেটি সংক্ষিপ্ত পরিসরে আমার পাঠকদের কাছে পেশও করলাম। আলহামদু লিল্লাহ। কুরআন মজিদ খুললে আমরা প্রথমে পাই সুরা ফাতিহা। সেখানে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা শেষে তাঁর কাছে প্রার্থনা শেখানো হয়েছে, 'আমাদের সরল সঠিক পথ দেখাও।' আমাদের প্রার্থনার জবাবে আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদ পেশ করে বলেন, হেদায়াতের জন্য এই হলো আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই। এর দুটি অর্থ হতে পারে- এক. এটি কোনো মানুষের তৈরি নয়, মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর কিতাব। দ্বিতীয়. এটি নির্ভুল জীবন যাপনের বিধান, এর মধ্যে কোনো সন্দেহ সংশয় নেই। এটি আল্লাহর কিতাব- এব্যাপারে কুরআন মজিদে একাধিক জায়গায় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন, এই সুরার তৃতীয় রুকুতেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এই কুরআনের মধ্যে কোনো ভুলত্রুটি নেই। ত্রুটি তালাশ করতে ইসলামের শত্রুদের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। কোনরকম পরিবর্তন, পরিমার্জন ও সংস্করণ ছাড়াই কুরআন মজিদ অবিকৃতভাবে আমাদের কাছে রয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত কোনো সংস্করণ লাগবে না। অথচ আমাদে...

আসুন জান্নাতের পথে-

 তোমরা দৌড়াও তোমাদের রবের ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে যার প্রশস্ততা আসমান ও জমিন  সমান এবং তা প্রস্তুত করা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্য। যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় অবস্থায় খরচ করে, যারা নিজেদের ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে দেয়; আল্লাহ মুহসিন বান্দাদের ভালোবাসেন। সুরা আলে ইমরান ১৩৩-১৩৪। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের আহবান জানিয়েছেন  নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও জান্নাত প্রাপ্তির জন্য প্রতিযোগিতা করতে। মানুষ কতো কিছুর জন্যই না প্রতিযোগিতা করে-অর্থ-বৃত্ত, প্রভাব-প্রতিপত্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব। দুনিয়ার জীবনটা বড়ো সংকীর্ণ, মৃত্যু খবর প্রতিনিয়ত কানে আসে। মৃত্যুর সাথে সাথে ধন-সম্পদ, কর্তৃত্ব সবকিছু রেখে একেবারে শূন্য হাতে বিদায় নেয়ার দৃশ্য আমাদের সচেতন করে না। আমরা শুধু চাই এবং এই চাওয়ার কোনো শেষ নেই, কবরের মুখ পর্যন্ত পৌঁছেও চাই; রসুলুল্লাহ সা.-এর ঘোষণা, মাটি ছাড়া কোনো কিছু এই মানুষকে পরিতৃপ্ত করতে পারে না।   জান্নাতের বিশালতা বলতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, সেই জান্নাতের প্রশস্ততা আসমান ও জমিন সমান। আর আল্লাহর এই বিশাল জান্নাত কেবল মুত্তাকিদের জন্য। আর মুত্তাকি ...

মুনাফিকরা ঈমানদারদের ধোঁকা দেয় না, নিজেরা নিজেদেরকে ধোঁকা দেয়

 কুরআনের পাঠ সুরা বাকারার দ্বিতীয় রুকু ৮-২০ আয়াত পুরো রুকু মুনাফিকদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মুনাফিকরা দাবি করে যে তারা আল্লাহ ও আখেরাতের দিনের ওপর ঈমান এনেছে। কিন্তু আল্লাহপাক বলেন, তারা আসলে মুমিন নয়। আল্লাহ ও ঈমানদারদের ধোঁকা দিতে চায়। কিন্তু আসলে তারা নিজেরাই নিজেদেরকে ধোঁকায় নিক্ষেপ করেছে। মদিনায় ইসলাম রাষ্ট্রীয় দীনের মর্যাদা লাভ করলে তারা সুযোগ সুবিধার আশায় নিজেদেরকে মুসলমান পরিচয় দিতো। ওদের হৃদয়ে রয়েছে রোগ আর আল্লাহ সেটিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। মিথ্যা বলার কারণে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। জমিনে বিপর্যয় সৃষ্টি করাই মুনাফিকদের কাজ। যখন তাদের বলা হয়, তোমরা ফাসাদ সৃষ্টি করো না, তখন তারা নিজেদের সংশোধনকারী বলে দাবি করে। মুনাফিকরা বড়ো স্বার্থপর। রসুলুল্লাহ সা.-এর মদিনায় হিজরতের প্রাক্কালে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে তাদের শাসক নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু রসুলু সা.-এর হিজরত করার ফলে তার সব স্বপ্ন ভেঙে যায়। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে মুসলমান না হলে সামাজিক মান মর্যাদা থাকে না। স্রেফ স্বার্থের কারণে তারা বাধ্য হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেও তাদের অন্তরে ছিল চরম বিদ্বেষ।...

আমাদের লেখাপড়া ও জীবন যাপন হোক কুরআনকেন্দ্রিক-

আজ পড়লাম সুরা বাকারার তৃতীয় রুকু (২১-২৯ আয়াত)। সারসংক্ষেপ তুলে ধরছি। আল্লাহ তায়ালা সমগ্র মানবজাতিকে সম্বোধন করে বলেছেন, তোমরা সেই রবের ইবাদত করো যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্ববর্তীদের সৃষ্টি করেছেন। যিনি জমিনকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ হিসাবে এবং আকাশ থেকে পানিবর্ষণ করে জমিনকে শস্যশ্যামল করেছেন। একথা জানার পর আল্লাহর প্রতিপক্ষ আর কাউকে দাঁড় করিও না। এখানে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট করেছেন তাঁকে রব মেনে ইবাদত করলে মানুষ আখেরাতে নিষ্কৃতি পাবে। আল্লাহকে স্রষ্টা মানার ক্ষেত্রে কারো মধ্যে  আপত্তি নেই। নমরুদ-ফেরাউনরাও আল্লাহকে স্রষ্টা মেনেছে। তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছে, আসমান-জমিন কে সৃষ্টি করেছে? তারা বলেছে, আল্লাহ। রব মানার ক্ষেত্রে তাদের আপত্তি ছিল। রব মানা অর্থ আল্লাহপাককে হুকুমকর্তা হিসাবে মানা। ইবাদত করো, অর্থ আল্লাহকে হুকুমকর্তা হিসেবে মানো, তাঁর আনুগত্য করো এবং তাঁর প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করো অর্থাৎ পূজা-অর্চনা করো একমাত্র আল্লাহর। এসব ক্ষেত্রে কাউকে আল্লাহর প্রতিপক্ষ করো না। ২১ ও ২২ আয়াত। আল্লাহপাক মানুষের হেদায়াতের জন্য সর্বশেষ কিতাব হিসেবে পাঠিয়েছেন আল কুরআনকে। কুরআন যে আল্লা...

মানুষ আল্লাহর খলিফা। মর্যাদায় সেরা

কুরআনের পাঠ  আজকে ফজরের বেশ পূর্বে উঠা হয়। প্রতিদিন নয়। সুযোগটা কাজে লাগালাম সুরা বাকারার ৪র্থ রুকু ৩০-৩৯ আয়াত অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ পড়ার মধ্য দিয়ে। এখানে হজরত আদম আ.-কে নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে তাঁর কথপোকথন, আদম আ.-এর মর্যাদা, পৃথিবীতে তাঁর আগমন ইত্যাদি আলোচনা করা হয়েছে। অবশ্য কুরআন মজিদে আরো অনেক জায়গায় আদম আ. সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে।  ফেরেশতা আল্লাহর বিশাল সাম্রাজ্যের কর্মচারী। ফেরেশতা ও জিন জাতি পূর্ব থেকেই ছিল। মানুষ  সৃষ্টি প্রসঙ্গে ফেরশতাদের সাথে আল্লাহর কোনো পরামর্শ নয় বরং একটা নতুন সৃষ্টি সম্পর্কে তাঁর কর্মচারীদের অবহিত করা। ফেরেশতা আল্লাহ তায়ালার এক অনুগত সৃষ্টি যাদের নাফরমানি করার কোনো ক্ষমতা নেই অর্থাৎ তাদের কোনো স্বাধীন সত্তা নেই। আল্লাহপাক মানুষকে খলিফা (প্রতিনিধি) করে পাঠিয়েছেন। খলিফা শব্দ শুনে তাদের মনে প্রশ্ন জাগে- কেন স্বাধীন এখতিয়ার সম্বলিত স্বতন্ত্র এক সৃষ্টি? তারা নিজেরাই আল্লাহর হুকুম মেনে চলছেন এবং সর্বদা তাঁরই প্রশংসা করছেন। জবাবে আল্লাহ বলেন, আমি যা জানি তোমরা তা জানো না। আল্লাহ তায়ালা আদম আ.-কে সকল সৃষ্টির নাম শিখিয়ে দেন এবং ফেরশতাদের সম্মুখে উপস্থাপন করেন...

দাওয়াতে দীন ও সঙ্ঘবদ্ধ জীবন যাপন

 হে রসুল! তোমার রবের পক্ষ থেকে তোমার কাছে যা কিছু নাজিল করা হয়েছে তা মানুষের কাছে পৌঁছে দাও। যদি তুমি তা না করো তাহলে তুমি তাঁর রিসালাতের হক আদায় করলে না। মানুষের ক্ষতি থেকে আল্লাহ তোমাকে রক্ষা করবেন। নিশ্চয়ই আল্লাহ কখনো কোনো কাফের জাতিকে পথ প্রদর্শন করেন না- সুরা মায়েদা ৬৭। অতঃপর রসুলুল্লাহ সা. নির্দেশ দিলেন, আমার পক্ষ থেকে মানুষের নিকট পৌঁছাতে থাকো, যদি একটি মাত্র আয়াতও হয়। মুসলমান মাত্রই দায়ী ইলাল্লাহ। স্রেফ ঈমান ও নেক আমল মানুষকে ধ্বংস ও বিপর্যয় থেকে রক্ষা করবে না। এর সাথে অবশ্যম্ভাবী মানুষকে হকের দাওয়াত দিতে হবে ও ধৈর্য ধারণের উৎসাহ যোগাতে হবে। কথাগুলো মহান আল্লাহ তায়ালা সুরা আসরে কসম খেয়ে বলেছেন। সাথে এটিও বলে রাখি, আমাকে-আপনাকে পরিপূর্ণ ইসলামে দাখিল হতে হবে। আংশিক দীন মানা আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। আল্লাহর বাণী, তোমরা পরিপূর্ণ ইসলামে দাখিল হও। জীবনকে বিভিন্ন ভাগে ভাগ করার মতো সুযোগ ইসলামে রাখা হয়নি। আপনার ঘর, চাকরি, ব্যবসা-বাণিজ্য অর্থাৎ আপনার অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক জীবনসহ সকল ক্ষেত্রে ইসলামকে একনিষ্ঠভাবে মানতে হবে। যদি মানতে পারেন তাহলে আপনি মুসলিম অর্থাৎ অনুগত। সাথে সাথে ...

আকছেদ মাস্টার তাঁর রবের কাছে ফিরে গেলেন

 বাহাদুরপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের (মফের আলী মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়) অবসরপ্রাপ্ত সহকারী শিক্ষক জনাব আকছেদ আলী (ভাদু মাস্টার) গত রাত আটটায় রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন)। আগের দিন স্ট্রোক করলে তাঁকে দ্রুত রাজশাহী নেয়া হয়। মৃত্যুকালে তাঁর বয়স সত্তর ঊর্ধ হবে। তিনি স্ত্রী, ছয় মেয়ে ও এক ছেলে এবং অসংখ্য আত্মীয়স্বজন ও গুণগ্রাহী রেখে গেলেন।একসময় তিনি বাহাদুরপুর ইউনিয়ন পরিষদের মেম্বর ছিলেন। ফলে তাঁর আর একটি পরিচয় ভাদু মেম্বর। মরহুম আকছেদ আলী কাজিপাড়া গ্রামের মরহুম আকুল খামারুর ছেলে। তিনি মরহুম মফের আলী সরদারের জামাই এবং বীর মুক্তিযোদ্ধা ডা. মনসুর রহমান (আঁতু ডাক্তার)- এর ভগ্নিপতি। আমরা মরহুমের মাগফেরাত কামনা করছি এবং শোকসন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। আল্লাহ তায়ালা তাঁর সন্তানদের ধৈর্য ধারণের তৌফিক দান করুন এবং দোয়াকারী নেক সন্তান হিসেবে কবুল করুন। মরহুমের নামাজে জানাজা সকাল দশটায় কাজিপাড়া গোরস্থানে অনুষ্ঠিত হবে ইনশা- আল্লাহ।

জানাজা একটি গুরুত্বপূর্ণ ইবাদত

হাদিসে জানাজা ও দাফন-কাফনে বেশ উৎসাহ প্রদান করা হয়েছে। দুই কিরাত সওয়াবের কথা বলা হয়েছে। এর সামাজিক গুরুত্ব অনেক উচ্চে। আমাদের কুষ্টিয়া অঞ্চলে সামাজিক গোরস্থানের ব্যাপক প্রচলন। এক বা একাধিক গ্রাম নিয়ে গোরস্থান গড়ে উঠে। পারিবারিক গোরস্থান নেই বললেই চলে। মরহুম আকছেদ আলী মাস্টারের জানাজা উদ্দেশ্যে আজ গিয়েছিলাম কাজিপাড়া গোরস্থানে। মাস্টার সাহেব অত্যন্ত ভালো মানুষ। কাজিপাড়া, কৈগাড়িপাড়া ও কুচিয়ামোড়া গ্রামের আংশিক নিয়ে ১৯৫০ দশকে গোরস্থানটি গড়ে উঠে। বর্তমানে জমির পরিমাণ সাড়ে দশ বিঘা। সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাস্টার সা'দ আলী, সহসভাপতি মো. শফিউল ইসলাম রাজা এবং সেক্রেটারি মো. গোলাম হোসেন। মুক্তার ভাই, রাজা ভাই, গ্যাদা ভাই ও কালুকে সাথে করে খালা-খালু, বড়ো ভাই ও ভাবি এবং রুবিসহ পরিচিত অনেকের কবরের কাছে গিয়ে কবরবাসীকে সালাম ও তাদের জন্য দোয়া করা হলো। মৃত্যুর কথা শুনে আমরা যা পাঠ করি (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন) তাতে আমাদের স্মরণ করে দেওয়া হয় যে কেউ এই দুনিয়ায় চিরস্থায়ী নই। আমরা অবশ্যই আল্লাহর কাছে ফিরে যাবো। আর এব্যাপারে কারো মধ্যে কোনো সংশয় নেই। এখন প্রয়োজন আল্লাহর কাছে ফিরে ...

আলেমরা নবিদের ওয়ারিশ। তাঁদের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হই

 জুমা আলোচনা কুচিয়ামোড়া মদিনাতুল উলুম জামে মসজিদ তারিখ : ২২.০৯.২০২৩ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম আমাদের বাড়ির সন্নিকটে এটি একটি নতুন মসজিদ, কুচিয়ামোড়া পূর্বপাড়া জামে মসজিদ। মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত হওয়া প্রায় ১৫ বছর হলো। আমাদের ইউনিয়নের সেরা ধনী ও দানশীল ব্যক্তি মরহুম আহছান উদ্দিন কোম্পানির ছেলে আলহাজ মো. রশিদুল ইসলাম একক প্রচেষ্টায় ১০ কাঠা জমি ক্রয় করে দৃষ্টিনন্দন মসজিদটি গড়ে তুলেছেন। দীর্ঘদিন পরিচালনার পর তিনি দায়িত্ব এলাকাবাসীর কাছে অর্পণ করেছেন। বর্তমানে সভাপতি, সম্পাদক ও কোষাধ্যক্ষ হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন যথাক্রমে ডা. মো. শামীম ফেরদৌস, প্রকৌশলী মো. হারুনর রশিদ এবং জনাব মো. গোলাম জাকারিয়া। মসজিদের ইমাম হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন মাওলানা মো. আব্দুল্লাহ। এই মসজিদে নামাজ আদায় আজ আমার প্রথম।  মসজিদের সম্মুখে খোলা চত্তর ও অজুখানা- পেশাবখানা সবই আছে এবং মসজিদের মেঝে ও দেয়াল পুরোটাই টাইলস। আমাদের দেশে একটা ভালো দিক হলো, আল্লাহর কোনো বান্দা মসজিদ শুরু করলে অল্পদিনেই সেটি একটি দৃষ্টিনন্দন মসজিদে রূপ নেয়। আলহামদু লিল্লাহ। আমি মরহুম আহছান উদ্দিন ও তাঁর পরিবারে যারা আল্লাহর কাছে ফিরে গেছেন তা...

মানসিক রোগ

আমরা সবাই মানসিক রোগী - একটু কমবেশি এই আর কী? এতে অনেক সময় নিজেরাই নানান সমস্যায় ভোগী এবং আমাদের জীবন সংকীর্ণ হয়ে পড়ে। অথচ আল্লাহ তায়ালা নিজে আমাদের দীনে কোনো সংকীর্ণতা রাখেননি। এ এক উদার ও প্রশস্ত দীন। যেমন ধরুন খানাপিনা - আমরা নিজেরা অনেক কিছু হারাম করে নিয়ে হারামের লম্বা ফিরিস্তি তৈরি করেছি- অথচ আল্লাহ তায়ালা হালালের কোনো তালিকা না দিয়ে খুবই সংক্ষিপ্ত হারামের তালিকা (শুকরের মাংস, প্রবাহিত রক্ত, মৃত জীব-জন্তু ও আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে জবেহ) দিয়ে বলেছেন, সকল পবিত্র জিনিসই তোমাদের জন্য হালাল করা হয়েছে। এর সাথে রসুলুল্লাহ সা. হিংস্র ও নখরধারী কিছু জীব ও পাখির কথা বলেছেন।  ছোঁয়াছুঁয়ির রোগ ইসলামে নেই। নিজের জন্য গামছা, থালা, গ্লাস, বিছানাপত্র সবকিছু আলাদা করে নেয়া এবং কেউ স্পর্শ করলে আবার তা ধোয়া এটা বাহুল্য। বরং ইসলাম বলে কোনো নিম্ন বর্ণ বা পেশার লোক যদি গ্লাসে পানি খেয়ে কিছু রেখে দেয় সেই পানি পান করাতে কোনো সমস্যা নেই। আবার সবাই মিলে একই প্লেটে খানা খেতেও দোষ নেই। কোনো খাবারে বা পানিতে যাদের গোশত হালাল এমন জীব যেমন ছাগল- গরু মুখ দেয় তবে সেই খাবার হারাম হয়ে যায় না। বিড়ালের গোশ আমা...

চলতে ফিরতে কথা

  বাড়ির পাশে বাজারে সকালে চুল কাটাতে গেলাম। বছর দুই হলো ছেলেটি দাখিল পাশ করেছে। বাড়ি পাশ্ববর্তী ইউনিয়নের জুনিয়াদহ গ্রামে। বাব-মা ও দুই ভাই। ছোট ভাইটি তৃতীয় শ্রেণিতে পড়ে। জিজ্ঞেস করলাম, রেজাল্ট কেমন ছিল। বললো, পড়াকালীন আমি কাজ শিখেছি। ফলে রেজাল্ট খুব ভালো হয়নি। গ্রেড ৩.৬৯ পেয়েছি। বললাম, তোমার রেজাল্ট তো বেশ ভালো, ফার্স্ট ডিভিশন। লেখাপড়া করতে পারতে? চাকরি- বাকরির জন্য না হলেও বিয়েসাদী করার সময় দরকার হয়। মেয়ের বাবা-মা জানতে চায় ছেলে লেখাপড়া কতদূর করেছে? সে জবাবে বললো, বাবা-মা পছন্দ করে আমাকে বিয়ে দিয়েছে। তাদের খুব পছন্দ। রান্না-বান্না, কাজেকর্মে ও বাবা-মা’র সেবা-যত্নে বাবা-মা খুব সন্তুষ্ট। আমি বললাম, খুব ভালো করেছ। এখন তুমি তোমার পেশায় মনোযোগী হও। আয়-রোজগারের খোঁজ নিয়ে জানলাম দৈনিক ৬/৭শ টাকা করে আয় হয়। খরচ বাদে মাসে ১৮,০০০ টাকা আয় করে। এখানে তার দোকান এক বছর এখনো পূর্ণ হয়নি। ভবিষ্যতে ভালো করবে ইনশা-আল্লাহ।  ছেলেটার নাম জিহাদ। বললাম, বাবা-মা সুন্দর নাম রেখেছেন এবং আলেম বানানোর জন্য তোমাকে মাদ্রাসায় দিয়েছেন। তুমি তাঁদের আশা পূর্ণ করবে। কর্মব্যস্ততার কারণে নামাজ যদি কখনো ছুটে যায় ত...

শীতের আমেজ

আজ ১১ই আশ্বিন। আগে শুনতাম আশ্বিনে গা শিন শিন করে। হ্যাঁ, রাতে ফ্যান ছাড়া ঘুমালাম এবং ফজরের নামাজ শেষে হাঁটতেও বেশ মজা লাগলো। গেঞ্জি-জামা অন্য দিনের তুলনায় কমই ভিজলো। এমন আবহাওয়াটা ভারি চমৎকার। সকালে হেঁটে এসে অবশ্য ফ্যান ছেড়ে দিয়েছি। আল্লাহ তায়ালা আমাদের জন্য আবহাওয়া ও পরিবেশটা মনোমুগ্ধকর করে দিয়েছেন। আল্লাহ তায়ালাকে অসংখ্য ধন্যবাদ। আলহামদু লিল্লাহ। আমরা তাঁর প্রতিনিধি হয়ে দেশের রাজনৈতিক পরিবেশকে আমাদের জীবন যাপনের উপযোগী করি। এর জন্য প্রয়োজন ব্যক্তিগত জিদ, মিথ্যা, অহংকার ও জুলুম থেকে নিজেকে মুক্ত করা। আমাদের মনে রাখতে হবে, জুলুমের শাস্তির জন্য আল্লাহপাক কেয়ামত পর্যন্ত সবসময় অপেক্ষা করেন না, দুনিয়াতেও দিয়ে থাকেন। হে আল্লাহ! সর্বপ্রকার জুলুম থেকে তুমি আমাদের হেফাজত করো।

হারজিত

এই দুনিয়ায় চলছে তীব্র প্রতিযোগিতা। নেতৃত্ব, প্রভাব-প্রতিপত্তি ও অর্থবৃত্তে একে অপরকে ছেড়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতা। একারণে দুর্নীতি, জুলুম-নির্যাতন এমনকি খুন করতেও পিছপা হয় না। যে অপরকে পেছনে ফেলে এগিয়ে যায় সে বিজয়োল্লাস করে এবং নিজেকে বিজয়ী ভেবে গর্ব-অহঙ্কারে মেতে উঠে। কিন্তু আল্লাহ বলেন ভিন্ন কথা। আল্লাহপাক কিয়ামতের দিবসকে তাগাবুন হারজিতের দিন বলে আখ্যায়িত করেছেন। সেদিন যে ব্যক্তি ঈমান ও নেক আমল নিয়ে উত্থিত হবে সে হবে যথার্থ বিজয়ী। তার কোনো ভয় থাকবে না। সে পাবে আল্লাহর ক্ষমা ও চিরস্থায়ী জান্নাত। আর সেই জান্নাত পাওয়ার জন্যই আল্লাহ তায়ালা প্রতিযোগিতা করার কথা বলেছেন।  তোমরা দৌড়াও বা প্রতিযোগিতা করো সেই জান্নাতের দিকে যার প্রশস্ততা আসমান ও জমিনব্যাপী। আর জান্নাত হলো সেই মুত্তাকিদের জন্য যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় অবস্থায় খরচ করে, ক্রোধ হলে নিজেকে দমন করে, অপরকে ক্ষমা করে এবং গুনাহ করলে তওবা (গুনাহ থেকে ফিরে আসে) করে। পক্ষান্তরে যারা কুফরি করে ও আল্লাহর নিদর্শন অস্বীকার করে তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নাম। যাদের ঠিকানা হবে জাহান্নাম তারা সত্যিই হেরে যাবে। তাদের পরিতাপের কোনো শেষ নেই। রসুল সা. জালে...

আমেরিকার ভিসানীতি- এর প্রভাব ও উত্তরণের উপায়

সম্প্রতি দেশের প্রধান আলোচনার বিষয় এবং পক্ষে-বিপক্ষে বিতর্ক চরমে। আমেরিকা বারবার বলছে তারা কোনো পক্ষ নেবে না, তারা চায় সবার অংশগ্রহণমূলক একটা সুষ্ঠু নির্বাচন। সুষ্ঠু নির্বাচন ও গণতান্ত্রিক অগ্রযাত্রায় যারা বাধ সাধবে তাদের উপরই ভিসানীতি প্রয়োগ করা হবে। সেটা বিচারপতি, আমলা, আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী, মিডিয়া সকল ক্ষেত্রে প্রয়োগ হতে পারে। ভিসা নীতির নগদ লাভ দেশে গুম-খুন বন্ধ হয়েছে এবং মানুষ কিছুটা স্বস্তি অনুভব করছে। আমাদের দুর্ভাগ্য, বর্তমানে আমরা চরম আস্থার সংকটে ভুগছি। রাজনীতিবিদদের অনর্গল মিথ্যা বলা, কাদা ছোঁড়াছুঁড়ি, হিংসা-বিদ্বেষ আমাদের ধ্বংসের কিনারায় পৌঁছে দিয়েছে। একজন বিচারক যখন দলীয় বিবেচনায় নিয়োগ ও পদোন্নতি পান এবং দলীয় স্বার্থে ভ্রষ্ট রায় দেন তখন আর সুবিচার থাকে না অথচ সুশাসন ও সুবিচার গণতন্ত্রের অন্যতম শর্ত। গণতন্ত্র মানেই জনগণের দ্বারা নির্বাচিত জনগণের সরকার। আজ সরকারের সকল প্রতিষ্ঠান বিরোধী দল দমনে ব্যবহৃত হচ্ছে। মামলা হাজার হাজার নয় লাখে লাখে। আদালতের বারান্দায় ঘুরতে ঘুরতে তারা পেরেশান। আবার ঘুরে ঘুরে একবার জামিন পেলেও জেলগেটে আর এক মামলায় আটক। এই আমাদের বিচার বিভাগ ও আইন- শৃঙ্খলা...

পর্দা আল্লাহপাকের ফরজ বিধান

 জুমার খুতবা ০৮.০৯.২০২৩ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম মাল্টিপ্ল্যান রেডক্রিসেন্ট সিটি (কুশিয়ারা, পদ্মা ও সুরমা ভবন), মিরপুর জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আহমাদুল্লাহ সাইয়াফ শুরুতে আল্লাহপাকের হামদ ও রসুল সা.-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করার পর সম্প্রতি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনৈক শিক্ষক কর্তৃক একজন ছাত্রীর পর্দা করাতে হেনস্থা হওয়া এবং তার প্রেক্ষিতে শিক্ষক পিতার মতো বলে তার সম্মুখে পর্দা করা প্রয়োজন নয় বলে জনৈক বিচারকের মন্তব্য করার তীব্র সমালোচনা করেন।  খতিব মহোদয় বলেন, পর্দা মুসলিম নরনারীর জন্য স্বয়ং আল্লাহপাকেে ফরজ বিধান এবং এর মধ্য দিয়ে একজন নারী সম্মান ও মর্যাদা লাভ করেন। তিনি বলেন, পর্দা সম্ভ্রান্তের প্রতীক এবং আল্লাহ তায়ালা পর্দার মাধ্যমে নারীর নিরাপত্তার গ্যারান্টি দিয়েছেন। আল্লাহর ভাষায় বলা যায়, পর্দানশীন নারীকে পথেঘাটে উত্যক্ত করা হয় না। একজন নারীকে পর্দার জন্য বিরূপ মন্তব্য করা তার স্বাধীনতার উপর হস্তক্ষেপ। দেশের আইন ও সংবিধান, মানবাধিকার ও ইসলাম পালনের উপর নগ্ন হস্তক্ষেপ। খতিব মহোদয় বলেন, আল্লাহর কোনো ফরজ বিধান পালন না করা কবিরা গুনাহ। কিন্তু তুচ্ছতাচ্ছিল...

কুরআনের পাঠ

১২.০৯.২০২৩ ধানমন্ডি মসজিদ উত তাকওয়ায় সম্মানিত দ্বিতীয় ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশিদ আজকে ফজরের সালাতে ৪৮ নং সুরা ফাতহ্ তেলাওয়াত করেন। নামাজ শেষে পাঠকৃত সুরার সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন।  সুরা ফাতহ্ হুদায়বিয়ার সন্ধি শেষে মক্কা থেকে মদিনায় ফেরার পথে নাজিল হয়। সন্ধিটা ছিল মুসলমানদের প্রতিকূলে ও কাফেরদের অনুকূলে।  মুসলিম শক্তি খুবই মনঃক্ষুণ্ন ও বিপর্যস্ত ছিল। এমন পরিবেশ পরিস্থিতিতে আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয় সুস্পষ্ট বিজয় দান করা হয়েছে। সুরাটি নাজিল হওয়ার পর রসুলুল্লাহ সা. খুবই উৎফুল্ল হয়ে উঠেন এবং সাহাবিদের একত্রিত করে শুনিয়ে দেন। হুদাইবিয়ার সন্ধি মুসলমানদের মক্কা বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।  হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় রাসুলুল্লাহ সা.-এর সঙ্গী  হয়েছিলেন মাত্র ১৪০০ জন। এই সন্ধিটা ছিল মূলত এক অনাক্রমণ চুক্তি এবং এক অনুকূল পরিবেশে রসুলুল্লাহ সা. এর সুবিধা গ্রহণ করে ব্যাপক দাওয়াতী কাজের মাধ্যমে মুসলমানদের সংখ্যা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন। কাফেরদের কোনো সুযোগ না দিয়ে অষ্টম হিজরিতে দশ সহস্রাধিক সাহাবির এক বিশাল বাহিনী নিয়ে তিনি মক্কা আক্রমণ করেন এবং বিনা যুদ্ধে মক্কা বিজয় সম্প...

নবি-রসুল ও ঈমানদারদের সাথে শত্রুতার মূলে রয়েছে আল্লাহর নিদর্শনকে অস্বীকৃতি

 কুরআনের পাঠ  (হে নবি) আমি জানি, এসব লোকগুলো যেসব কথাবার্তা বলে, তাতে তোমার বড়ই মনোকষ্ট হয়, কিন্তু এরা তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে না, বরং এ জালেমরা এর মাধ্যমে আল্লাহর আয়াতকেই (নিদর্শন) অস্বীকার করছে। তোমার আগেও এভাবে নবি-রসুলদের মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, কিন্তু তাদের মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করা ও নানা রকম নির্যাতন চালাবার পরও তাঁরা কঠোর ধৈর্য ধারণ করেছে, শেষ পর্যন্ত তাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে সাহায্য এসে হাজির হয়েছে। আসলে আল্লাহর কথার রদবদলকারী কেউ নেই, তদুপরি নবিদের এসব সংবাদ তো তোমার কাছে আগেই এসে পৌঁছেছে। সুরা আল আনয়াম ৩৩-৩৪  আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবি সা.-কে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। মুহাম্মদ সা. ছিলেন জাতির সবচেয় গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। সততা, বিশ্বস্ততা, প্রতিশ্রুতি পালন ও আমানতদারিতায় তাঁর কোনো জুড়ি ছিল না। সবাই তাঁকে আল আমিন, আস সাদিক  বলে ডাকতো। কিন্তু যখনই মুহাম্মদ সা. মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা শুরু করেন তখনই তাঁর সাথে শত্রুতা শুরু হয়ে যায়। তাই রসুল সা.-কে সান্ত্বনা দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমার প্রতি মিথ্যারোপ নয়, তারা আল্লাহর নিদর্শন মানতেই অস্বীকার করছে। আসলে কাফের...

পরিবারের প্রতি দায়িত্ব পালন

মুসলমান মাত্রই দায়ী ইলাল্লাহ। দীনের প্রচার, প্রসার ও প্রতিষ্ঠা নির্ভর করে দাওয়াতের ওপর। আল্লাহপাক যাদেরকে হেদায়াত দান করেছেন তারা বড়ো ভাগ্যবান এবং তারা বিশ্বাস করে যে দুনিয়া ও আখেরাতের জীবনে তারা সফলকাম। তারা চেষ্টা করে অপরাপর লোকের কাছে দীনের দাওয়াত পৌঁছে দেওয়ার। সুরা আসরে স্পষ্ট করা হয়েছে যে স্রেফ ঈমান ও নেক আমল জান্নাতে যাওয়ার জন্য যথেষ্ট নয়। সাথে সাথে প্রয়োজন মানুষের কাছে দাওয়াত পৌঁছানো ও ধৈর্য ধারণ করা। ব্যক্তিগত পর্যায়ে ও বিভিন্ন সংগঠনের মাধ্যমে দাওয়াতে দীনের কাজ চলমান রয়েছে। ওহি প্রাপ্তির পরপরই রসুলুল্লাহ সা. মানুষের কাছে প্রথমে গোপনে ও পরবর্তী সময়ে প্রকাশ্যে দাওয়াত দিয়েছেন। দাওয়াত দানের ক্ষেত্রে তিনি প্রথমে আত্মীয়স্বজনকে বাছাই করেছেন। প্রথম ইসলাম গ্রহণকারী ব্যক্তি হলেন তাঁর স্ত্রী খাদিজা রা. এবং তার সাথে আলী রা ও আবু বকর রা. প্রমুখ। সম্প্রতি এক ইসলামী সংগঠন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী নিজ পরিবার ও আত্মীয়- স্বজনের মধ্যে দীনের দাওয়াত ও ইসলাম মেনে চলার জন্য সপ্তাহব্যাপী পরিবার দিবস পালন করছে। তাদের কর্মসূচির মধ্যে রয়েছে সপ্তাহে একদিন পারিবারিক বৈঠক করা। দাওয়াত দান ও সম্প্রসারণের ক্ষে...

আলেমরা হলেন নবিদের ওয়ারিস

 জুমা আলোচনা গাছিয়া দৌলতপুর কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ তারিখ : ১৮.০৮.২০২৩ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম এই গ্রামেই আমার আদিবাস। আপনাদের মধ্যে যারা বয়স্ক, সবার সাথে আমার জানাশোনা রয়েছে। দীর্ঘদিন পর কয়েকটি জুমা পড়ার সৌভাগ্য আমার হলো। পূর্বের এক জুমায় দাদাডাকা একজনকে পেয়েছিলাম, আজকে তাঁকে দেখছি না। প্রায় ৫০ বছর পর অল্প সময়ের ব্যবধানে তিনটা জুমা আদায় হলো। আমাদের এই মসজিদটি অত্যন্ত প্রাচীন এবং কতো প্রাচীন আমরা তা জানি না। তবে এতটুকু মনে আছে, আমার আব্বার (তিনি ছিলেন মসজিদের সেক্রেটারি ও ইমাম) নেতৃত্বে গ্রামবাসী সবাই মিলে ষাটের দশকে টিনের ঘর ভেঙ্গে পাকা মসজিদ তৈরি করেছিলেন এবং ৫০ বছর পরে আপনারা সবাই মিলে সেটি ভেঙ্গে এক দৃষ্টিনন্দন মসজিদ তৈরি করেছেন। মসজিদের সামনে বাগান ও অভ্যন্তরে টাইলস এবং অজুখান ও প্রস্রাব-পায়খানা সবই সুন্দরভাবে হয়েছে। আরো ৫/৬ টা মসজিদ গ্রামে হলেও এটিই সবচেয়ে প্রাচীন ও কেন্দ্রীয় জামে মসজিদ হিসেবে পরিচিত। আলহামদু লিল্লাহ। আল্লাহ এই মসজিদ ও এর সাথে সংশ্লিষ্ট সকলকে কবুল করুন। গ্রামের সব মসজিদেই মুসল্লিরা অনেক বিলম্বে আসেন। অথচ জুমার দিন আমাদের ঈদের দিন। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন। গোসল ...

ইতিহাসেরই পুনরাবৃত্তি

সুরা বরুজ পড়ছিলাম। আল্লাহ তায়ালা কসম করে বলেছেন, ধ্বংস হয়েছে গর্তওয়ালারা যে গর্তে দাউ দাউ করে জ্বলা আগুন ছিল এবং সেই আগুনে ঈমানদারদের নিক্ষেপ করে গর্তের পাশে অবস্থান করা জালেমরা উল্লাস প্রকাশ করছিল। আপাতত আমরা দেখছি ঈমানদাররাই ধ্বংস হয়ে যাচ্ছে অথচ আল্লাহপাক বলছেন, না ধ্বংস হয়েছে জালেমরা। জালেমরা হচ্ছে মিথ্যুক, ওরা অনর্গল মিথ্যা বলতে পারে এবং ঈমানদারদের বিরুদ্ধে সবসময় মিথ্যা রটায়। জাহান্নামে যাওয়ার জন্য যেসব কারণ রয়েছে তার মধ্যে অপবাদ রটনা অন্যতম কারণ (সুরা মুদ্দাস্সির)। সকল যুগে নবি-রসুল ও ঈমানদারদের সাথে নমরুদ, ফেরাউন, আবু জেহেল, আবু লাহাবরা যে আচরণ করেছে, এখনো তার উত্তরসূরীরা তাই করছে। আল্লাহপাক স্পষ্ট করেছেন, কোনো অপরাধে তারা অপরাধী নয়, তাদের অপরাধ একটাই, তারা আল্লাহর প্রতি ঈমান এনেছিল, যিনি পরাক্রমশালী ও নিজ সত্তায় নিজেই প্রশংসিত- সুরা বুরুজ ৮। আল্লামা সাঈদীসহ যেসব আলেম আজ জেলখানায় জুলুম-নির্যাতন সহ্য করছেন তাঁদেরও এই একই অপরাধ, তাঁরা ঈমানদার এবং মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকেন। ইসলামের দুশমনদের বড়ো আপত্তি কুরআনের প্রতি এবং সেটা ছিল রসুলুল্লাহ সা.-এর সময় থেকে আজ অবধি ও ভবিষ্যতেও চলতে থা...

ঈমানদারদের উপর জুলুম-নির্যাতন স্বাভাবিক

 হাদিসের পাঠ হুমায়দী রহ. বর্ণনা করেন, খাব্বাব রা. বলেন, আমি একবার নবি সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম এর খেদমতে হাজির হলাম। তখন তিনি তাঁর নিজের চাদরকে বালিশ বানিয়ে কাবাগৃহের ছায়ায় বিশ্রাম গ্রহণ করছিলেন। যেহেতু আমরা মুশরিকদের পক্ষ থেকে কঠিন নির্যাতন ভোগ করছিলাম। তাই আমি বললাম, আপনি কি আমাদের (শান্তি ও নিরাপত্তার জন্য) আল্লাহর কাছে দোয়া করবেন না? তখন তিনি উঠে বসলেন এবং তাঁর চেহারা রক্তিম বর্ণ হয়ে গেল। তখন তিনি বললেন, তোমাদের পূর্ববর্তী  ঈমানদারদের মধ্যে কারো কারো শরীরের হাড় পর্যন্ত সমস্ত মাংস ও শিরা উপশিরাগুলি লোহার চিরুনি দিয়ে আঁচড়ে বের করে ফেলা হতো। কিন্তু এসব নির্যাতনও তাদের দীন থেকে বিমুখ করতে পারতো না। তাঁদের মধ্যে কারো মাথার মধ্যবর্তী স্থানে করাত স্থাপন করে দ্বিখণ্ডিত করে ফেলা হতো। কিন্তু এ নির্যাতনও তাঁদেরকে দীন থেকে ফেরাতে পারতো না। আল্লাহর কসম, আল্লাহ্ তা’আলা অবশ্যই দীনকে পরিপূর্ণ করবেন, ফলে একজন উষ্ট্রারোহী সান’আ (শহর) থেকে হাযারামাউত পর্যন্ত একাকী ভ্রমণ করবে। আল্লাহ্ ব্যতীত অন্য কাউকে সে ভয় করবে না। বুখারি। খাব্বাব ইবনে আরাত রা. মক্কায় ইসলাম গ্রহণ করার পর সীমাহীন জুলু...