কুরআনের পাঠ
(হে নবি) আমি জানি, এসব লোকগুলো যেসব কথাবার্তা বলে, তাতে তোমার বড়ই মনোকষ্ট হয়, কিন্তু এরা তোমাকে মিথ্যা সাব্যস্ত করছে না, বরং এ জালেমরা এর মাধ্যমে আল্লাহর আয়াতকেই (নিদর্শন) অস্বীকার করছে।
তোমার আগেও এভাবে নবি-রসুলদের মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করা হয়েছিল, কিন্তু তাদের মিথ্যাবাদী সাব্যস্ত করা ও নানা রকম নির্যাতন চালাবার পরও তাঁরা কঠোর ধৈর্য ধারণ করেছে, শেষ পর্যন্ত তাদের কাছে আমার পক্ষ থেকে সাহায্য এসে হাজির হয়েছে। আসলে আল্লাহর কথার রদবদলকারী কেউ নেই, তদুপরি নবিদের এসব সংবাদ তো তোমার কাছে আগেই এসে পৌঁছেছে। সুরা আল আনয়াম ৩৩-৩৪
আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবি সা.-কে সান্ত্বনা দিচ্ছেন। মুহাম্মদ সা. ছিলেন জাতির সবচেয় গ্রহণযোগ্য ব্যক্তি। সততা, বিশ্বস্ততা, প্রতিশ্রুতি পালন ও আমানতদারিতায় তাঁর কোনো জুড়ি ছিল না। সবাই তাঁকে আল আমিন, আস সাদিক বলে ডাকতো। কিন্তু যখনই মুহাম্মদ সা. মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা শুরু করেন তখনই তাঁর সাথে শত্রুতা শুরু হয়ে যায়। তাই রসুল সা.-কে সান্ত্বনা দিয়ে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, তোমার প্রতি মিথ্যারোপ নয়, তারা আল্লাহর নিদর্শন মানতেই অস্বীকার করছে। আসলে কাফেরদের শত্রুতা মূলত আল্লাহর সাথে।
অন্যান্যদের তুলনায় নিঃসন্দেহে ঈমানদাররা উত্তম চরিত্রের অধিকারী। নবিদের ওয়ারিস হিসেবে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকার ফলে নবিদের মতই ঈমানদারদের ওপর নানাভাবে মিথ্যারোপ করা হয় এবং তারা যা নয় তাই বলে প্রচার-প্রপাগাণ্ডার ঝড় তুলে;একই মিথ্যা বারবার বলে সত্যে পরিণত করতে চায়। অতীতে সকল নবি-রসুলের সাথেই এমন আচরণ করা হয়েছে। এটা শয়তানের একটি কৌশল এবং এর মধ্যে রয়েছে আল্লাহর পথে আহবানকারীদের জন্য একটি পরীক্ষা। তবে এটা ঠিক, ইসলামপন্থীদের যে ব্যাপক পরিচিতি তার মূলে রয়েছে শয়তানের অনুচরদের সীমাহীন মিথ্যা প্রচারণা। ইসলামের দুশমনদের অর্থ-বৃত্ত-লোকবল-বাহুবল সবই আছে- শুধু নেই চরিত্র। এই চরিত্রের শক্তিই ঈমানদারদের বড়ো পুঁজি।
খুন-ছিনতাই-ধর্ষণ-মাদকাসক্তি-দখলবাজি ও মানুষকে লাঞ্ছিত করাসহ এমন কোনো অপকর্ম নেই যা এই শয়তানের অনুচররা না করে। এর পরিবর্তে আল্লাহর পথে আহবানকারীদের পরম ধৈর্য অবলম্বন ও উত্তম চরিত্রে ভূষিত হতে হবে। এটা সম্ভব হলে অবশ্যম্ভাবী আল্লাহর প্রতিশ্রুত সাহায্য আসবে। এ ব্যাপারে বিন্দুমাত্র সন্দেহ নেই। আল্লাহই মুমিনদের অভিভাবক, শ্রেষ্ঠতম অভিভাবক এবং সাহায্য করার ক্ষেত্রে তিনিই যথেষ্ট।
Comments
Post a Comment