১২.০৯.২০২৩
ধানমন্ডি মসজিদ উত তাকওয়ায় সম্মানিত দ্বিতীয় ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশিদ আজকে ফজরের সালাতে ৪৮ নং সুরা ফাতহ্ তেলাওয়াত করেন। নামাজ শেষে পাঠকৃত সুরার সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন।
সুরা ফাতহ্ হুদায়বিয়ার সন্ধি শেষে মক্কা থেকে মদিনায় ফেরার পথে নাজিল হয়। সন্ধিটা ছিল মুসলমানদের প্রতিকূলে ও কাফেরদের অনুকূলে। মুসলিম শক্তি খুবই মনঃক্ষুণ্ন ও বিপর্যস্ত ছিল। এমন পরিবেশ পরিস্থিতিতে আল্লাহর পক্ষ থেকে বলা হয় সুস্পষ্ট বিজয় দান করা হয়েছে। সুরাটি নাজিল হওয়ার পর রসুলুল্লাহ সা. খুবই উৎফুল্ল হয়ে উঠেন এবং সাহাবিদের একত্রিত করে শুনিয়ে দেন। হুদাইবিয়ার সন্ধি মুসলমানদের মক্কা বিজয়কে ত্বরান্বিত করে।
হুদাইবিয়ার সন্ধির সময় রাসুলুল্লাহ সা.-এর সঙ্গী হয়েছিলেন মাত্র ১৪০০ জন। এই সন্ধিটা ছিল মূলত এক অনাক্রমণ চুক্তি এবং এক অনুকূল পরিবেশে রসুলুল্লাহ সা. এর সুবিধা গ্রহণ করে ব্যাপক দাওয়াতী কাজের মাধ্যমে মুসলমানদের সংখ্যা ও প্রভাব-প্রতিপত্তি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হন। কাফেরদের কোনো সুযোগ না দিয়ে অষ্টম হিজরিতে দশ সহস্রাধিক সাহাবির এক বিশাল বাহিনী নিয়ে তিনি মক্কা আক্রমণ করেন এবং বিনা যুদ্ধে মক্কা বিজয় সম্পন্ন হয়।
আল্লাহ তায়ালা এই সুরায় সাহাবিদের কিছু গুণ বৈশিষ্ট্য উল্লেখ করেন। প্রথমেই বলেছেন, মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল (কাফেরদের অস্বীকৃতি বিবেচনার বিষয় নয়) এবং তাঁর সঙ্গী-সাথিরা কাফেরদের প্রতি অত্যন্ত কঠোর। ঈমান ও কুফর কখনোই মিল হতে পারে না। কাফের মুসলমানের বন্ধু হতে পারে না। পক্ষান্তরে মুমিনরা পরস্পর দয়ার্দ্র, একে অপরের কল্যাণকামী। ঈমানের দাবিই হলো এক মুমিন অপর মুমিনের কল্যাণ কামনা করবে।
রসুলুল্লাহ সা.-এর সাহাবিদের রুকু ও সাজদা অবস্থায় অর্থাৎ নামাজে তৎপর পাওয়া যায় এবং এর মাধ্যমে তারা আল্লাহর ফজল ও করুণা তালাশ করে। তাদের চেহারায় সাজদার চিহ্ন জ্বলজ্বল করে। আল্লাহর প্রতি বিনয়, ভক্তি-শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা চেহারায় ফুটে উঠে। মানুষের চেহারা যেন একটা খোলা আয়না। একজন সৎ লোক ও দুশ্চরিত্রবান লোকের চেহারার মধ্যে প্রকাশ পায় বিস্তর পার্থক্য। মুমিন হয় বিনয়ী, নম্র -ভদ্র ও উদার এবং সেটি তার চেহারায় প্রকাশ ঘটে। সর্বোত্তম জামাত হলো সাহাবাদের জামাত। আল্লাহপাক নানাভাবে তাঁদের প্রশংসা করেছেন। আল্লাহ নিজে তাঁদের প্রতি সন্তুষ্ট এবং সাহাবায়ে কেরামও আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট। তাঁদের অনুসরণ করার তৌফিক আল্লাহ আমাদের দান করুন।
Comments
Post a Comment