রমযান মাস নেকি কুড়াবার
এক মওসুম। এ মাসে যে কোনো নেক আমলের প্রতিদান অন্য সময়ের তুলনায় ৭০ গুণ বেড়ে যায়।
রসুল (সা) ছিলেন একজন দরদী মানুষ। তিনি সকল শ্রেণী ও পেশার মানুষের প্রতি ছিলেন
অত্যন্ত দয়ার্দ। বিশেষ করে শ্রমজীবী মানুষের প্রতি তাঁর দয়া অনুগ্রহের কোনো
সীমা-পরিসীমা ছিল না। তিনি বলেন, শ্রমজীবী মানুষ আল্লাহর বন্ধু। ওরা তোমাদের ভাই।
এই রমযানে তিনি তাদের কাজ হালকা করে দিতেন। তিনি তাঁর বাড়িতে থাকা জায়েদ বিন
হারেসার সাথে উত্তম আচরণের যে দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন তা ইতিহাসে বিরল। জায়েদ
ছিলেন একজন ক্রীতদাস, কিন্তু আল্লাহর রসুল (সা) তাঁর সাথে সন্তানের মত ব্যবহার
করতেন। সবাই পালক পুত্র হিসেবেই জানতো। পিতাসহ আপন পরিবার জায়েদকে নিতে আসলে
পরিবারের কাছে ফিরে যাওয়ার পরিবর্তে রসুল (সা)-এর কাছে থেকে যাওয়াটাই তিনি পছন্দ করেছিলেন।
আজ ১ লা মে।
আন্তর্জাতিক শ্রমিক দিবস। শ্রমঘন্টা কমানোসহ সম্মানজনক জীবন যাপনের লক্ষ্যে
শ্রমিকদের আন্দোলন ও জীবনদানের স্মৃতি বহন করে আছে এ দিনটি। বিশ্বসমাজ শ্রমিকদের
আত্মদানকে স্বীকৃতি দিয়েছে। এবারে এ দিনটি পড়েছে পবিত্র রমযান মাসে। করোনার ভয়াল
থাবায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে শ্রমজীবী মানুষ। গৃহকর্মীসহ শ্রমজীবী মানুষ
অধিকাংশই কর্মহীন হয়ে পড়েছে।
আল্লাহপাক সম্পদশালী
মানুষের প্রতি যাকাত ফরজ করেছেন এবং এটিকে দরিদ্রের অধিকার বলে আখ্যায়িত করেছেন।
হিসাব করে যাকাত আদায় না করলে সেই সম্পদ অপবিত্র ও তা জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হয়ে
পড়বে। সন্তুষ্টচিত্তে যাকাত আদায় করে এই দুঃসময়ে শ্রমজীবী ও দরিদ্র মানুষের পাশে
দাঁড়ালে বর্তমান এই বিপর্যয়কর পরিস্থিতি উত্তরণ অনেকখানি সহজ হবে।
আসুন, রসুল (সা)-এর
ঘোষণা মোতাবেক আমরা আল্লাহর বন্ধু ও আমাদের ভাই-বোনদের সাথে সর্বোত্তম আচরণটি করি।
গৃহকর্মীর সাথে দুর্ব্যবহার ও তাদের প্রতি অত্যাচার-নির্যাতনের কথা প্রায়ই শোনা
যায় যা একজন মুসলিমের পক্ষে অকল্পনীয়।
করোনার কারণে অধিকাংশ
গৃহকর্মী আর গৃহে প্রবেশ করতে পারছে না। তাদের বেতন-ভাতা প্রদান আমরা অব্যাহত রাখি
এবং সময়মত প্রদান করি ও হাসিমুখে তাদের সাথে কথা বলি। তাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি ও
অপরাধ ক্ষমা করে দেই। রসুল (সা) বলেছেন, দৈনিক ৭০ বার হলেও তাদের অপরাধ ক্ষমা করে
দাও।
আল্লাহর বন্ধুদের সাথে
ভালো ব্যবহার করলে নিঃসন্দেহে আল্লাহ আমাদের প্রতি খুশি হবেন ও আমাদের ক্ষমা
করবেন। এই রমযান মাসে সহজে নেকি পাওয়ার সুযোগ যেন আমরা হাতছাড়া না করি।
পরোয়ারদেগার! এই পবিত্র
রমযানের রহমতের অধ্যায়ে তোমার অসহায় বান্দাদের সাথে সদয় হওয়ার মধ্য দিয়ে তোমার
নিকটবর্তী বান্দাহ হওয়ার তাওফিক আমাদের দান করো।
Comments
Post a Comment