Skip to main content

ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতি বনাম রাজনীতি নিরপেক্ষ ধর্ম- এই দুইয়ের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক আছে কি?

 


ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির প্রবক্তরা বলেন, ধর্ম ব্যক্তিগত আচার-আচরণের সাথে সংশ্লিষ্ট। ধর্ম পবিত্র জিনিস। তাদের মতে, রাজনীতির মতো নোংরা মাঠে ধর্মকে নিয়ে আসা ঠিক নয়। এই ধারণায় বিশ্বাসীরা হাতে তসবিহ, মাথায় কালো হেজাব, নিয়মিত কুরআন পাঠে মগ্ন ও তাহাজ্জুদ গুজারও হয়ে থাকে। পক্ষান্তরে রাজনীতির মাঠে এই অতি ধার্মিকরা এক একজন দানব। ভোট ডাকাতি, গুম-খুন, আয়নাঘরে এনে নজিরবিহীন জুলুম-নির্যাতন এবং রাষ্ট্রের হাজার হাজার কোটি টাকা লুটপাট ও পাচারে ওদের ধর্মে বাধা হয় না। বরং ওরা জমকালো আয়োজনের মধ্য দিয়ে ধর্মীয় আচার হিসেবে ঈদে মিলাদুন্নবি সা. ও শবেবরাত পালন করে থাকে। ওরা যে ভণ্ড ও প্রতারক, অজ্ঞ জনগণ তা বোঝে না এবং বুঝতে দেয়ও না। রাষ্ট্রের টাকা ব্যয় করে ওরা একদল দরবারি আলেম রাখে যেমনটি রেখেছিল নমরুদ আজরকে যে তার পুত্র নবি ইব্রাহিম আ.-এর দীন কবুল করতে পারেনি। ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতির প্রকৃষ্ট উদাহরণ হলো নমরুদ, ফেরাউন, আবু জেহেল, আবু লাহাব ও তাদের উত্তরসূরিরা। এরা সকলেই নিজেদেরকে বড়ো ধার্মিক মনে করতো কিন্তু রাজনীতির অঙ্গনে ছিল ধর্মনিরপেক্ষ। বরং নবি-রসুলদেরকে অধার্মিক মনে করতো। এসব ধর্মনিরপেক্ষ রাজনীতিকরা জানে না যে জুলুম কতো ভয়াবহ অপরাধ। ওরা কুরআন পড়ে না আর কুরআন থেকে হেদায়াতও নেয় না। জাস্ট সওয়াবের আশায় বা নিজের ধার্মিকতা জাহির করার উদ্দেশ্যেই লোক দেখানো তেলাওয়াত করে।

সুরা হুমাজা যদি কেহ পড়ে এবং এটি আল্লাহর কালাম বলে বিশ্বাস করে তাহলে কি রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে থেকে জুলুম করা সম্ভব? আল্লাহ কী বলেছেন তা একটু ভাবুন, 'নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনা-সামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে এবং ধনমাল জমা করে আর গুণে গুণে রাখে। সে মনে করে, এই ধনমাল চিরকাল তার নিকট থাকবে।' মানুষের মর্যাদাকে আল্লাহপাক কতো উচ্চে তুলে ধরেছেন তা এই তিনটি আয়াত থেকেই বোঝা যায়। একটুা গালি দেয়া ও অসাক্ষাতে নিন্দা জানানোর পরিণতি যদি হয় নিশ্চিত ধ্বংস তাহলে গুম-খুন ও জুলুম- নির্যাতনের পরিণতি কী হতে পারে? পরিণতি সম্পর্কে সুরা হুমাজায় বলা হয়েছে যে তাদেরকে হুতামায় নিক্ষেপ করা হবে এবং সেটা হলো আল্লাহর আগুন প্রচণ্ডভাবে উত্তপ্ত-উৎক্ষিপ্ত।

রাজনীতির ক্ষেত্রে মানুষ যদি ধার্মিক হতো ও সর্বাবস্থায় আল্লাহকে ভয় করে চলার নীতি অবলম্বন করতো তাহলে সমাজে জুলুম বলে কিছু থাকতো না। আর দুর্নীতি ও টাকা পাচার সেটাও সম্ভব হতো না। বড়ো বড়ো দুর্নীতি হয় ঘুষ ও খেয়ানতের মধ্য দিয়ে। রসুলুল্লাহ সা. স্পষ্ট করে বলেছেন, ঘুষ দানকারী ও গ্রহণকারী উভয়ই দোযখী। ওর আবার নামাজ-রোজার দরকার কী? আর রাষ্ট্রীয় অর্থের খেয়ানত? মুনাফিক ও কাফের ছাড়া কেহ খেয়ানত করতে পারে না। রসুল সা. বলেছেন, খেয়ানতকারী কিয়ামতের দিন খেয়ানতের বোঝা মাথায় করে উত্থিত হবে। সেদিন সকল খুনি ও লুটেরা হবে বড়ো অসহায়। রসুলুল্লাহ সা.-এর ভাষায় এরা হবে হতদরিদ্র। কারণ এই ব্যাংক-ব্যালেন্স অর্থ কড়ি কিছুই সঙ্গে নেয়া যাবে না। মজলুমের পাওনা পরিশোধ করতে হবে নেক আমল দিয়ে এবং নেক আমল শেষ হয়ে যাওয়ার পর মজলুম -এর গুনাহ জালেমের ঘাড়ে চাপিয়ে দিয়ে তাকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে।

★ রাজনীতি নিরপেক্ষ ধর্ম নিয়ে আলোচনা পরে আসবে ইনশা-আল্লাহ।

Comments