Skip to main content

কুরআনের পাঠ

 

আল্লাহর দুশমনদের শান-শওকতে প্রলুব্ধ হবে না

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 

(হে নবি!) আর চোখ তুলে তাকাবেও না দুনিয়াবী জীবনের শান-শওকতের দিকে যা আমি এদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ধরনের লোকদের দিয়েছি, (এসব কিছু আমি এ কারণেই দিয়েছি) যেন আমি তাদের সেখানে পরীক্ষা করতে পারি, মূলত তোমার রবের দেয়া রিজিকই উত্তম ও অধিক স্থায়ী’- সুরা ত্বহা ১৩১।

মক্কি সুরা। সম্ভবত হাবসায় হিজরতকালে বা তার পরবর্তী সময়ে এই সুরাটি অবতীর্ণ হয়। খুব সহজেই উপলব্ধি করা যায়, ঈমান গ্রহণের ফলে তৎকালে মুসলমানদের জীবনে কত বড় বিপর্যয় নেমে এসেছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য, খেত-খামার বন্ধ হয়ে জীবনটা হয়ে পড়েছিল বড় সংকীর্ণ। পক্ষান্তরে সমাজের নেতৃত্ব ছিল মুষ্টিমেয় কিছু কাফেরদের হাতে। কর্তৃত্ব, অর্থবৃত্ত, মান-সম্মান সবই ছিল আল্লাহর দুশমন স্বল্পসংখ্যক সমাজপতিদের হাতে। এমন কঠিন অবস্থায় মুমিনদের মাঝে হতাশা আসা খুবই স্বাভাবিক।

বর্তমান সময়কে যদি আমরা বিবেচনা করি তাহলে দেখবো দেশের কর্তৃত্ব, ক্ষমতা, অর্থবৃত্ত সবই মুষ্টিমেয় ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা রাজনীতিক টাউট- বাটপার ও আমলাদের হাতে। অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ যারা ধর্মীয় অনুশাসন ও ব্যবসায়ে নীতি-নৈতিকতা মেনে চলে তাদের জীবনে দুঃসহ যন্ত্রণা। একদিকে দেশে-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়ে তুলে লুটেরাদের চোখধাঁধানো আলিশান জীবন যাপন এবং অন্যদিকে বাজারে যেতে ভয়ে কাতর অসংখ্য বনি আদম। এমতাবস্থায় বড় সান্ত্বনা এই সুরা ত্বহার ১৩১ নং আয়াত। আল্লাহপাক তাঁর নবি ও মুমিনদেরকে লুটেরাদের দিকে চোখ তুলে তাকাতেও নিষেধ করেছেন। তাদের এই বলগাহীন ও শান-শওকতের জীবন যাপন সবই অবৈধ উপার্জনের ফল এবং আল্লাহপাক তাদেরকে এই সম্পদ ও কর্তৃত্ব দিয়ে কঠিন পরীক্ষায় নিমজ্জিত করেছেন।

মুমিনদের হালাল রুজিকে বলা হয়েছে আল্লাহপাক প্রদত্ত এবং এটি উত্তম-উৎকৃষ্ট ও স্থায়ী। তার এই স্বল্প পবিত্র রিজিক দুনিয়া থেকে আখেরাত পর্যন্ত স্থায়ী হবে। দুনিয়ায় তাকে বিপদাপদ থেকে যেমন হেফাজত করা হবে, তেমনি তার অন্তরে প্রশান্তি ঢেলে দেয়া হবে। রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, মুমিনদের জন্য উভয় অবস্থা কল্যাণকর- বিপদাপদে পড়লে ধৈর্য ধারণ করে এবং সচ্ছলতা আসলে শুকরিয়া আদায় করে। তাই মুমিনদের উচিৎ আল্লাহর দেয়া রুজিতে তুষ্ট থাকা এবং পরম ধৈর্য অবলম্বন করা। এই ধৈর্যশীল বান্দাদের জন্যই রয়েছে অফুরন্তু নেয়ামতে পূর্ণ জান্নাত এবং সেখানে থাকবে চিরকাল। ৩১.০৭.২০২২

Comments