Skip to main content

Posts

Showing posts from August, 2022

রাজনীতি হোক অহিংস

 রাষ্ট্র পরিচালনার ক্ষেত্রে যতো নিয়ম-কানুনই থাকুক না কেন গণতন্ত্রই সর্বোত্তম। গণতন্ত্র বলতে জনগণের মতামতের ভিত্তিতে সরকার গঠন ও দেশ পরিচালনা করাকে বোঝাচ্ছি। এ প্রসঙ্গে আব্রাহাম লিংকনের সংজ্ঞা প্রণিধানযোগ্য Democracy is a government of the people, by the people and for the people (গণতন্ত্র হলো জনগণের সরকার, জনগণের দ্বারা সরকার, জনগণের জন্য সরকার)। তাঁর আরো উক্তি, ‘ব্যালট বুলেটের চেয়েও শক্তিশালী’ এবং ‘নির্বাচন জনগণের, এটা তাদের সিদ্ধান্ত’। জোর-জুলুম করে শাসন করার সুযোগ গণতন্ত্রে নেই। উন্নত বিশ্ব বিশেষ করে ইউরোপ-আমেরিকার জনগণ তাদের দেশে শাসনকার্য পরিচালনার ক্ষেত্রে গণতন্ত্রকে বেছে নিয়েছে এবং উন্নয়নের পাশাপাশি সভ্য জাতি হিসেবে বিশ্বদরবারে পরিচিতি লাভ করেছে। সেখানে কাউকে ইরানের শাহ, লিবিয়ার গাদ্দাফি বা ইরাকের সাদ্দামের মতো পরিণতি ভোগ করতে হয় না, আবার ইরাক, সিরিয়া, আফগানিস্তানের মতো কোনো দেশ ও জাতিকে চরম মূল্য দিতে হয় না। সেসব দেশে সরকারকে টেনেহেঁচড়ে নামাতে হয় না। ইউরোপ- আমেরিকায় শক্তিশালী সেনাবাহিনী রয়েছে, কখনো শোনা যায় না, জাতির ঐতিহাসিক প্রয়োজনে রাষ্ট্রের দায়িত্ব তাদের গ্রহণ করতে হচ্...

পর্দা আল্লাহর একটা ফরজ বিধান

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম  يَٰٓأَيُّهَا ٱلنَّبِىُّ قُل لِّأَزْوَٰجِكَ وَبَنَاتِكَ وَنِسَآءِ ٱلْمُؤْمِنِينَ يُدْنِينَ عَلَيْهِنَّ  مِن جَلَٰبِيبِهِنَّ ذَٰلِكَ أَدْنَىٰٓ أَن يُعْرَفْنَ فَلَا يُؤْذَيْنَ وَكَانَ ٱللَّهُ غَفُورًا رَّحِيمًا হে নবি! তোমার স্ত্রীদের, কন্যাদের ও মু’মিন নারীদের বলে দাও তারা যেন তাদের চাদরের প্রান্ত তাদের ওপর টেনে নেয়। এটি অধিকতর উপযোগী পদ্ধতি, যাতে তাদেরকে চেনা যায় এবং উত্যক্ত না করা হয়। আল্লাহ ক্ষমাশীল ও করুণাময়।- সুরা আহযাব ৫৯। পর্দা মেনে চলার কল্যাণকারিতা স্বয়ং আল্লাহপাক নিজেই এভাবে বর্ণনা করেছেন, যারা চাদরের একটি অংশ দিয়ে নিজেদের আড়াল করে (অর্থাৎ ঘোমটা দেয়) তাদেরকে চেনা যায় অর্থাৎ তারা সম্ভ্রান্ত, বনেদি ঘরের মেয়ে ও আত্মমর্যাদাবোধসম্পন্ন। এমন অবস্থায় তাদেরকে উত্যক্ত করার মতো দুঃসাহস কেউ রাখে না। আজকাল পথেঘাটে, বাজারে, বাস-ট্রেনে নারীদের প্রায়ই উত্যক্ত করা হয়। উত্যক্ত করা থেকে নিরাপদ থাকার উপায় হিসেবে আল্লাহ তায়ালা পর্দার বিধান দান করেছেন। পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য পর্দা মেনে চলা ফরজ।  আমাদের নানা দুর্বলতা রয়েছে। পর্দার এই আয়াতটি নাজিল হয় ৫ম হিজ...

অনাড়ম্বর অথচ এক অনন্য বিয়ে

বিয়ে মানে জমকালো অনুষ্ঠান, হৈ-হুল্লোড়, বাহারি পোশাকে নগ্নতার প্রকাশ, আলোক-সজ্জা, গান- বাজনা, গায়ে হলুদ, মান-অভিমান, মোহরানা নিয়ে দরকষাকষি, যৌতুক, খানাপিনায় অপচয়, আরো কতো কী? না, এতো সব আচার-অনুষ্ঠানের সাথে ইসলামের কোনো সম্পর্ক নেই। পরিপূর্ণ জীবন বিধান হিসেবে ইসলামে বিয়েও এক ইবাদত। জরুরি অর্থাৎ যে সব কাজে বিলম্ব করতে নেই সেসব কাজের মধ্যে বিয়ে অন্যতম এবং আমরা তা জেনেছি প্রিয়তম নবি মুহাম্মদ সা. থেকে। বলা যায় ছেলে-মেয়ে বালেগ হলে দ্রুত বিয়ে দেয়ার জন্য রসুলুল্লাহ সা. অভিভাবককে তাগিদই দিয়েছেন এবং এর মাধ্যমে ছেলে-মেয়ের চরিত্র সুরক্ষা পাওয়ার কথা বলেছেন। আর বিয়ে করতে না পারলে তাকে রোজা রাখতে বলেছেন। বিয়েতে আনন্দ-স্ফুর্তি করতে নেই এমনটি নয়। ইসলাম ফিতরাতের ধর্ম, মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি যা দাবি করে ইসলাম তা অস্বীকার করে না। বিনোদন ও আনন্দ- স্ফুর্তি সকল ক্ষেত্রে ইসলাম একটি সীমারেখা নির্ধারণ করে দিয়েছে। পর্দাহীনতা ও অপচয় না করার শর্তে এবং ইসলামের সুনির্দিষ্ট সীমারেখার মধ্যে দেশাচার ও স্বভাব-প্রকৃতির দাবি মেটানো বৈধ। ইসলামে বিয়েকে সহজ করা হয়েছে এবং জেনা-ব্যাভিচারকে কঠিন করে দেয়া হয়েছে। দুজ’ন বয়োপ্রাপ্ত...

লাইফ স্টাইল চেঞ্জ করা দরকার

আমাদের তরুণ সমাজ দিনকে বেছে নিয়েছে ঘুম ও রাতকে নিয়েছে জেগে থাকার জন্য। এই জেগে থাকাটা অধিকাংশ সময় কাটে মোবাইলে ভিডিও দেখে। এর থেকে বেরিয়ে আসা দরকার। একক প্রচেষ্টায় সম্ভব নয়। দরকার সমন্বিত প্রচেষ্টা। গরমকালে আমাদের মর্নিং স্কুল ছিল। শিক্ষা প্রতিষ্ঠান ও অফিস সকাল আটটায় হতে পারে। সম্ভবত ইউরোপ-আমেরিকায় এমনটিই হয়। আজকে হাঁটার সময় একজন বললেন, চীনে অফিস ধরতে হলে সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করে মসজিদে ফজর আদায় করেই ছুটতে হয়। স্কুলজীবনে আমাদের বাংলা ও ইংরেজি রচনা মুখস্থ করতে হতো। রচনাগুলো থাকতো-  Early Rising, Discipline, Aim in life, My hobby etc. আমাদের শিক্ষকগণ Translationসহ নানা কায়দায় শেখাতেন- Walking in the morning is good for health, Early Rising is good for heath etc. এখন হয়তো স্যারেরা এসব শেখান না, নিজেরাও হয়তো ঘুম থেকে জাগতে পারেন না।  আমাদের সম্মুখে রয়েছে রসুলুল্লাহ সা.-এর জীবনাচার। অত্যন্ত কর্মব্যস্ত মানুষ। কিন্তু অগ্রাধিকার পেত পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াতে নামাজ। এই ব্যস্ত মানুষটি এশার নামাজ আদায় করে সবকিছু থেকে নিজেকে গুটিয়ে নিতেন। কোনো কথা নয়, কাজ নয়। আবার ফজরের পর শুরু হতো তাঁর ব্যস্...

মধ্যবিত্ত শ্রেণি বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে

গণপরিবহনে উঠলে তাই মনে হয়। কিছুদিন আগেও ঢাকা শহরে সিটিং বাস সার্ভিস ছিল। একটু স্বস্তির সাথে যাতায়াত করা যেত। মাঝে ভাড়া বৃদ্ধি নিয়ে সরকারের সাথে একটা সমঝোতার ভিত্তিতে সরকার নিজেই সিটিং সার্ভিস বা গেটলক উঠিয়ে দেয়। বর্তমানে  বাস মালিকরা বাসের সংখ্যা কমিয়ে দিয়ে বাসে যতো সিট তার দ্বিগুণ যাত্রী নিয়ে থাকে। তাদের একই কথা পেছনে ফাঁকা আপনারা পেছনে যান। মনে হয় যেন ছাগল-গরুর ট্রাক। উচ্চবিত্তদের নিজস্ব গাড়ি আছে তাদের চলাচলে কোনো সমস্যা নেই। উচ্চবিত্তদের একটা বড় অংশ লুটেরাদের দলভুক্ত। বাজারে মূল্যবৃদ্ধি বা গণপরিবহনে যাতায়াত নিয়ে তাদের কোনো মাথাব্যথা নেই। হ্যাঁ আছে, রোডে বাসের সংখ্যা বাড়লে জ্যাম বাড়বে এবং তাতে তাদের সময়ের অপচয় হবে। কিন্তু আমরা যারা স্বল্প আয়ের মানুষ তাদেরকে ভাবিয়ে তুলেছে। বাজারে গেলে আমরা ক্ষুব্ধ হই এবং আরো ক্ষুব্ধ হই যখন বাসের জন্য দীর্ঘ অপেক্ষার পর ভীড় ঠেলে উঠে দাঁড়িয়ে থাকতে হয়। মনে হয়, আমাদের মতো মধ্যবিত্তদের জন্য এ সরকার নয়, এ সরকার দুর্নীতিবাজ ও লুটেরাদের।  বাসের ভাড়া বাড়িয়ে হলেও নির্বিঘ্নে যাতায়াতের জন্য সিটিং সার্ভিস বা গেটলক বাস সার্ভিস চাই। মিরপুর থেকে আমরা ট্রান্সস...

এক রত্নগর্ভা মায়ের চিরবিদায়

বাহাদুরপুর ইউনিয়নের গোসাইপাড়া গ্রামের মরহুম ফজলুর রহমানের (ফজলু ডিলার) স্ত্রী এবং বাসসের কর্মকর্তা জনাব জিয়াউর রহমান (মধু) ও মেহেরপুর সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক জনাব মো. হাবিবুর রহমানের (লিটন) মাতা আজ বিকেল সাড়ে চারটায় ৮২ বছর বয়সে ইন্তেকাল করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন)। মরহুমা ৮ ছেলে (বর্তমানে ৭) ও ২ মেয়ের গর্বিত মাতা। পরিবারটি আমাদের ইউনিয়নে এক প্রভাবশালী ও শিক্ষিত পরিবার।  মরহুমার নামাজে জানাজা রাত এগারোটায় অনুষ্ঠিত হবে ইনশা-আল্লাহ। জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে সমাহিত করা হবে। পরিবারের পক্ষ থেকে জানাজায় শরীক হওয়ার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে।  আমরা মরহুমার মাগফেরাত কামনা করি ও শোক- সন্তপ্ত পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা প্রকাশ করছি। আল্লাহ তায়ালা তাঁর সন্তানদের দোয়াকারী নেক সন্তান হিসেবে কবুল করুন।

জুমার খুতবা ১৯.০৮.২০২২

নামাজ পড়ে ও দেখে শিখতে হবে আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জুমার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল সা.-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর সুরা আল মায়েদা ৬ নং আয়াত তেলাওয়াত করেন। তিনি ধারাবাহিকভাবে নামাজ সম্পর্কে আলোচনা করছেন। হজরত আব্দুল্লাহ ইবনে মাসুদ রা. বর্ণিত একটি হাদিস উদ্ধৃত করেন। রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, যে নামাজ ছেড়ে দিল সে মূলত দ্বীনকে ধ্বংস করে ফেললো। তিনি আরো বলেছেন, যে নামাজ ছেড়ে দিল সে কুফরি করলো। মূলত নামাজ ছেড়ে দেয়ার ফলে তার আর ইসলামের সাথে কোনো সম্পর্ক থাকে না। নামাজ সহিহ -শুদ্ধ করে আদায় করার জন্য তিনি নামাজের মাসালা নিয়ে কয়েক জুমা আলোচনা করার ইচ্ছা প্রকাশ করলেন। তিনি বলেন, নামাজ দেখে শিখতে হবে এবং সাথে সাথে বইপুস্তক পড়েও শিখতে হবে। কেবল বই পড়ে নামাজ শিখতে চাইলে অনেক সময় বিভ্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা থাকে। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, তোমরা নামাজ পড়ো যেভাবে আমাকে নামাজ পড়তে দেখ। আমরাও আমাদের বাপ-দাদা ও মা-দাদিদের কাছ থেকে নামাজ শিখেছি। এই শেখার মধ্যেও ভুল থাকতে পারে। এজন্য দরকার আলেমদের ছোহবতে থেকে নামাজের মাসালা জেনে নেয়া। নাম...

মুমিনের পরিচয়

'মুহাম্মদ আল্লাহর রসুল। তাঁর সাথে যাঁরা রয়েছেন তাঁরা কাফেরদের প্রতি আপোষহীন এবং নিজেদের প্রতি দয়ার্দ্র'- সুরা ফাতাহ ২৯। এই সুরাটি হুদায়বিয়ার সন্ধির পরে নাজিল হয়। সন্ধিটি বাহ্যত মুসলমানদের জন্য অবমাননাকর হলেও আল্লাহ তায়ালা সুস্পষ্ট বিজয় বলে উল্লেখ করেছেন। আর হয়েছেও তাই। অনুকূল পরিবেশে ব্যাপক দাওয়াতের মাধ্যমে ইসলাম দ্রুত প্রসারিত হয়। সন্ধিপত্রে মুহাম্মদ সা.-এর নামের সাথে রসুলুল্লাহ লেখাতে কাফেররা তীব্র বিরোধিতা করে। শেষে লেখা হয় মুহাম্মদ ইবনে আব্দুল্লাহ। কে কী বললো সেটি বড় কথা নয় আল্লাহ নিজেই স্বীকৃতি দিচ্ছেন মুহাম্মদ সা. আল্লাহর রসুল।  মুহাম্মদ সা.-এর সঙ্গী-সাথিদের পরিচয় দিয়ে আল্লাহ বলেছেন, তারা কাফেরদের প্রতি আপোষহীন ও কঠোর অর্থাৎ নীতির প্রশ্নে তারা কাফেরদের সাথে একাট্টা হয়ে চলে না। কোনো অবস্থাতেই নিজস্ব নীতি-নৈতিকতা ও মূল্যবোধ বিসর্জন দিয়ে কাফেরদের সাথে মিলে যায় না। কাফেরদের সাথে সদাচরণ ও বিপদাপদে তাদের পাশে দাঁড়ানো ইসলামের মৌলিক শিক্ষা। কিন্তু বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে তাদের কৃষ্টি-কালচারে নিজেকে বিলীন করে দেয়া সত্যিকার ঈমানদার কখনোই পারে না। এই অর্থে তারা কাফেরদের প্রতি অত্যন্ত...

চাই দান-সাদাকার অর্থনীতি

বিশ্বব্যাপী অর্থনৈতিক মন্দা। উত্তরণের উপায় কী? সবাই বলছে কৃচ্ছতা সাধন করো। এতে কি সমাধান সম্ভব না আরো আটকে যাবে? শ্রমিক ছাঁটাই, তাদের মজুরি কমিয়ে দেয়া বা ফুটপাত থেকে দোকানপাট উচ্ছেদ করে দেয়ার মধ্যে কি কোনো সমাধান রয়েছে? আজ হাঁটতে গিয়ে লক্ষ করলাম, ধানমন্ডিতে ভ্যানের উপরে তরকারি বিক্রেতা নেই, ৬-এ জমজমাট বাজার বসে, সেখানেও বাজার নেই। এই বাজারগুলো দশটার মধ্যেই শেষ হয়ে যায়। ২/৩ দিন পূর্বে এক স্বনামধন্য ডিপার্টমেন্টাল স্টোরে কিছু বাজার করলাম। তাদের একজন কর্মচারীকে কাছে ডেকে তার নাম বাড়ি কী করে জানতে চাইলাম। রাষ্ট্রবিজ্ঞান দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। সেখানে দুই শিফটে ডিউটি করতে হয়। ১৫ দিন সকালে এবং ১৫ দিন বিকেলে। সম্ভবত সাত ঘন্টা করে সকাল সাড়ে সাতটা থেকে আড়াইটা। বিকেলে আড়াইটা হতে রাত দশটা। বিদ্যুৎ সাশ্রয়ের জন্য সময় হয়তো একটু কমতে পারে। বেতন জিজ্ঞেস করলে জানালো সাড়ে পাঁচ হাজার টাকা। এই টাকা দিয়ে তার মেসের ভাড়া, খাওয়া ও আনুষঙ্গিক ব্যয় মেটাতে হয়। কষ্টের মাঝেও তাদেরকে হাসিখুশি থাকতে হয় ও কাস্টমারের সম্মুখে নিজেকে স্মার্ট হিসেবে উপস্থাপন করতে হয়। একজনের বেতন শুধু এমন তা নয়, হয়তো ৮০% কর্মচারীর বেতন...

খুতবার গুরুত্ব

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম মসজিদ আল্লাহর ঘর, আমাদের সমাবেশস্থল ও শক্তিকেন্দ্র। মুসলিম পরিচয় দানকারী সকলকে দৈনিক পাঁচবার বাধ্যতামূলক আল্লাহর ঘরে হাজিরা দিতে হয়। একজন অন্ধ সাহাবিকেও রসুলুলুল্লাহ সা. জামায়াতে আসা থেকে অব্যাহতি দেননি। তিনি বলেছেন, আজান শুনলে তোমাকে আসতে হবে। সেই ঘরের একজন ইমাম (নেতা) আছেন এবং নামাজে মূলত চলে সেই ইমামের আনুগত্যের অনুশীলন (অন্যতম শিক্ষা)। নামাজে বহুবিধ কল্যাণকারিতা (ফায়দা) রয়েছে। তন্মধ্যে আল্লাহর স্মরণ প্রধানত। অর্থাৎ মানুষ যে আল্লাহর গোলাম সেটি বারবার স্মরণ এবং আল্লাহর গোলামি করার স্বীকৃতি নামাজের মাধ্যমে নেয়া হয়। আমি এখানে আনুগত্য, শৃঙ্খলা ও খুতবা নিয়ে কিছু আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ।  কাতার সোজা করা নামাজের অন্যতম শর্ত। নামাজ শুরু করার পূর্বে কাতার সোজা করার জন্য ইমাম সাহেব প্রতি ওয়াক্তে তাঁর মুসল্লিদের দৃষ্টি আকর্ষণ করেন। মুসল্লিরা কাঁধে কাঁধ মিলে ও গায়ে গা লাগিয়ে কাতারবদ্ধ হয়ে দাঁড়ায়। রসুলুল্লাহ সা. সতর্ক করে বলেছেন, তোমরা কাতার সোজা করে দাঁড়াবে অন্যথায় তোমাদের দিল পরস্পর থেকে বাঁকা হয়ে যাবে। আর ফাঁকা ফাঁকা দাঁড়াবে না তাতে শয়তান তোমাদের মাঝে দাঁড়িয়ে যা...

নামাজ, নামাজই সব

যারা নামাজ পড়ে না তাদের কথা, নামাজ না পড়লেও ঈমান ঠিক আছে। একেবারে মিথ্যে কথা। নামাজ নেই ঈমান নেই, নামাজ নেই মুসলমানিত্ব নেই। নামাজ মুমিন  হওয়ার দলিল ও প্রমাণ। হাদিসের ভাষা, নামাজ ঈমান ও কুফরির মাঝে পার্থক্যকারী। যে নামাজ ছেড়ে দিল সে কুফরি করলো। আল্লাহর ভাষায়, জাহান্নামিদের জিজ্ঞেস করা হবে, কোন্ জিনিস তোমাদের জাহান্নামে নিয়ে আসলো? তারা বলবে, আমরা নামাজি ছিলাম না।  রসুলুল্লাহ সা. ও খুলাফায়ে রাশেদিনের যুগে মুসলমান দাবিদার কোনো বেনামাজি ছিল না। এতটুকু জানা যায় রসুলুল্লাহ সা.-এর ইন্তেকালের পর কিছু মানুষ জাকাত দিতে অস্বীকার করেছিল যদিও তারা নামাজ পড়তো। আবু বকর রা.-এর শাসনামলে তাদেরকে মুরতাদ ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করা হয়েছিল (মুরতাদের শাস্তি হত্যা যেটা কার্যকর করবে রাষ্ট্র)। নামাজ না পড়ার শাস্তি প্রসঙ্গে ইমাম আবু হানিফা রহ. ন্যূনতম শাস্তির কথা বলেছেন। তা হলো বেনামাজিকে জেলখানায় আবদ্ধ করে রাখা হবে যতক্ষণ না তওবা করে বা মৃত্যু ঘটে। নামাজের মাধ্যমে আল্লাহর কাছে বান্দার যতো চাওয়া- পাওয়ার সম্পর্ক। আমরা নামাজে দণ্ডায়মান হয়ে প্রতি রাকাতে বলি (আল্লাহরই শেখানো), 'আমরা তোমারই গোল...

সন্তানের ভালো কিছু দেখা অভিভাবকের জন্য প্রশান্তি

 সন্তানের ভালো কিছু দেখা অভিভাবকের জন্য প্রশান্তি  গত ১১ তারিখ তাহেরাদের বাসায় আমরা মামা-ভাগনে (রেহান) অনেকক্ষণ গল্প করলাম। গল্পের বিষয় ছিল  ক্যারিয়ার গঠন। আল্লাহ তায়ালার দরবারে শুকরিয়া যে  লিটন ও রেহান দু'ভাই একটি কর্মের মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করছে। রেহানের ১২ ঘন্টা ডিউটি। তাকে বললাম, কাজ যতো কঠিনই হোক (শিক্ষা নবিশকাল) নিজের কাজ মনে করে পূর্ণ নিষ্ঠা ও আন্তরিকতার সাথে করবে। এতে সওয়াবের পাশাপাশি তোমার  কর্মদক্ষতা বাড়বে যা পরবর্তী সময়ে উন্নতির পথ প্রশস্ত করবে। সর্বাধিক গুরুত্ব দিবে অফিসে গমন ও প্রস্থানের ক্ষেত্রে। একটা সেকেন্ড যেন বিলম্ব না হয়। মাহাথির মোহাম্মদের অফিসে উপস্থিতির ক্ষেত্রে কক্ষনো বিলম্ব হতো না। আস্তে আস্তে সবারই ব্যবস্থা হচ্ছে এবং যাদের এখনো হয়নি হবে ইনশা-আল্লাহ। নিজের উপর আস্থা রাখতে হবে। প্রেসিডেন্ট আব্রাহাম লিংকন তাঁর ছেলের শিক্ষককে লিখেছিলেন, আমার ছেলেকে শেখাবেন, পাঁচটি ডলার কুড়িয়ে পাওয়ার চেয়ে পরিশ্রম করে একটি ডলার পাওয়া অনেক মূল্যবান। তার যেন নিজের প্রতি সুমহান আস্থা থাকে।  পরিশ্রম করতে হবে। পরিশ্রমের কোনো বিকল্প নেই। আল্লাহ ও তাঁর রসুল স...

জুমা আলোচনা (মসজিদ উত তাকওয়া)

১২.০৮.২০২২ যুবসমাজ জাতির কলব, যুবসমাজ ভালো থাকলে জাতি ভালো থাকবে বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম আজ জুমায় মসজিদ উত তাকওয়া, ধানমন্ডির সম্মানিত খতিব আলহাজ মুফতি সাইফুল ইসলাম আল্লাহর হামদ ও রসুলল্লাহ সা.-এর ওপর দরুদ ও সালাম পেশের পর একটি হাদিস উদ্ধৃত করেন, ‘জেনে রেখ! তোমাদের শরীরের মধ্যে এক টুকরো গোশ্তপিণ্ড আছে, যদি তা সংশোধিত হয়, তবে গোটা শরীরই সংশোধিত হয়। আর যদি খারাপ হয়; তবে সমস্ত শরীরই খারাপ হয়ে যায়। মনে রেখ তাহলো কলব বা দিল’- বুখারি, মুসলিম ও মিশকাত। কলব মূলত চালিকাশক্তি। কলব যদি ঠিক থাকে তাহলে শরীরের বিভিন্ন অঙ্গ-প্রত্যঙ্গকে সঠিক পথে চালানো সম্ভব। ওহির জ্ঞানে কলব সমৃদ্ধ হয় এবং তখন সঠিক পথে চলা সম্ভব হয়। আজ আন্তর্জাতিক যুব দিবস। এ বছর দিবসটির থিম হলো ‘বয়স-নির্বিশেষে সাম্য : সব বয়সীদের জন্য এক বিশ্ব’। ২০০০ সালের ১২ আগস্ট দিবসটি প্রথম উদযাপিত হয়েছিল। সামাজিক, অর্থনৈতিক ও রাজনৈতিক ঘটনাবলির সাথে যুবসমাজকে সম্পৃক্ত করে তাদের অধিকার বুঝে নেয়ার বিষয়ে সচেতন করে তোলা। খতিব মহোদয় বলেন, মানবদেহে কলবের যে অবস্থান জাতীয় জীবনে তেমনি যুব সমাজের অবস্থান। সমাজ পরিবর্তনে যুব সমাজের ভূমিকা অবিশ্বরণীয়। ‘যৌবন ...

হাদিসের পাঠ

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম  অনেক দিন পর আজ মসজিদ উত তাকওয়ায় মাগরিবের নামাজ পড়লাম। মাগরিবের পূর্বে মসজিদের ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল হাফিজ মারুফ ফজরের সালাতের ফজিলত সংক্ষেপে আলোচনা করেন। তিনি মুসলিম শরিফের হাদিস উদ্ধৃত করে বলেন, ফজরের নামাজ যে জামাতের সাথে আদায় করলো সে আল্লাহর জিম্মায় চলে গেল। ফজরের নামাজ জামাতে পড়া মানে অর্ধেক রাত নামাজে অতিবাহিত করা। তিনি আরো বলেন, দিনের দুটি সময় ফেরেশতাদের পালাবদল হয়। ফজর ও আসর। আল্লাহ সব জানেন, তারপরও ফেরেশতাদের জিজ্ঞেস করেন, আমার বান্দাকে কেমন অবস্থায় দেখে এসেছ। তারা জবাব দেন, আমরা যখন যাই তখন নামাজে রত দেখি আবার যখন ছেড়ে আসি তখনও নামাজরত দেখে আসি। নানা কারণে ফজরের নামাজটা কঠিন হয়। কারো ঘুমের সমস্যা, জাগতে পারে না, আবার কেউ গেট খোলা পায় না। নানা জটিলতা সামনে হাজির হয়। প্রকৃত নামাজির উচিৎ সবকিছু অতিক্রম করে ফজর ও অন্যান্য নামাজ সময়মত জামাতের সাথে আদায় করা। মসজিদ উত তাকওয়া সেরা মসজিদসমূহের অন্যতম। শিক্ষা ও প্রশিক্ষণসহ নানামুখী সেবামূলক কার্যক্রম এখান থেকে পরিচালিত হয়। এখানকার মানুষ দানের ক্ষেত্রে অত্যন্ত উদার। গত জুমায় দানবক্সে আদায় হয়েছে এক লক্ষ ...

কুরআনের পাঠ

  আল্লাহর দুশমনদের শান-শওকতে প্রলুব্ধ হবে না বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম  (হে নবি!) আর চোখ তুলে তাকাবেও না দুনিয়াবী জীবনের শান-শওকতের দিকে যা আমি এদের মধ্য থেকে বিভিন্ন ধরনের লোকদের দিয়েছি, (এসব কিছু আমি এ কারণেই দিয়েছি) যেন আমি তাদের সেখানে পরীক্ষা করতে পারি, মূলত তোমার রবের দেয়া রিজিকই উত্তম ও অধিক স্থায়ী’- সুরা ত্বহা ১৩১। মক্কি সুরা। সম্ভবত হাবসায় হিজরতকালে বা তার পরবর্তী সময়ে এই সুরাটি অবতীর্ণ হয়। খুব সহজেই উপলব্ধি করা যায়, ঈমান গ্রহণের ফলে তৎকালে মুসলমানদের জীবনে কত বড় বিপর্যয় নেমে এসেছিল। ব্যবসা-বাণিজ্য, খেত-খামার বন্ধ হয়ে জীবনটা হয়ে পড়েছিল বড় সংকীর্ণ। পক্ষান্তরে সমাজের নেতৃত্ব ছিল মুষ্টিমেয় কিছু কাফেরদের হাতে। কর্তৃত্ব, অর্থবৃত্ত, মান-সম্মান সবই ছিল আল্লাহর দুশমন স্বল্পসংখ্যক সমাজপতিদের হাতে। এমন কঠিন অবস্থায় মুমিনদের মাঝে হতাশা আসা খুবই স্বাভাবিক। বর্তমান সময়কে যদি আমরা বিবেচনা করি তাহলে দেখবো দেশের কর্তৃত্ব, ক্ষমতা, অর্থবৃত্ত সবই মুষ্টিমেয় ঘুষখোর, দুর্নীতিবাজ ও লুটেরা রাজনীতিক টাউট- বাটপার ও আমলাদের হাতে। অধিকাংশ সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী ও সাধারণ মানুষ যারা ধর্মীয় অনুশ...

হাদিসের পাঠ

মানুষ সীমাহীন দুর্নীতি ও ভোগবিলাসে মত্ত। প্রতিনিয়ত মৃত্যুর কথা শুনছি, পোস্ট দিচ্ছি, জানাযায় শরীক হচ্ছি; অথচ নিজের মৃত্যুর কথা একবারও ভাবছি না। সকালে মৃত্যু সম্পর্কীয় দুটি হাদিস পাঠের মধ্য দিয়ে দিনের সূচনা করি। ১. হযরত আবু হুরাইরা রা. থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘সকল সুখ ও আনন্দের অবসানকারী মৃত্যুকে তোমরা বেশি বেশি স্মরণ করো।’- সুনানু ইবনু মাজাহ ২. হযরত উসমান রা. থেকে বর্ণিত। রসূলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘মৃত্যুর চেয়ে ভালো উপদেশদাতা আর নেই, মজবুত ঈমানের চেয়ে ভালো সম্পদ আর নেই।’- আত্ তাবারানি হে আল্লাহ! মৃত্যুর কথা স্মরণ করে প্রতিটি মুহূর্ত তোমার পছন্দনীয় কাজে ব্যয় করার তৌফিক দান করো।

আমরা তোমারই গোলামি করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য চাই

 কুরআনের পাঠ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম  ‘আমরা তোমারই গোলামি করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য চাই’- সুরা ফাতেহা ৫। এই আয়াতটি সুরাতুল ফাতেহার ৫ম আয়াত। ফাতেহা শব্দের অর্থ ভূমিকা বা মুখবন্ধ। এই সুরা দিয়ে কুরআন মজিদ শুরু হয়েছে। তাই এর নাম ফাতেহা। রসুলুল্লাহ সা.-এর উপর পূর্ণাঙ্গ সুরা হিসেবে সুরা ফাতেহা প্রথম অবতীর্ণ। আল্লাহপাক বলেছেন, ‘তোমাকে সাতটি আয়াত দেয়া হয়েছে যা বারবার আবৃতিযোগ্য’- সুরা আল হিজর ৮৭। সুরা ফাতেহা ছাড়া নামাজ নেই। প্রতি নামাজে ও প্রতি রাকাতে আল্লাহপাক তাঁর বান্দার কাছ থেকে প্রতিশ্রুতি আদায় করছেন, ‘আমরা তোমারই গোলামি করি এবং তোমারই কাছে সাহায্য চাই’। না’বুদু শব্দটি বর্তমান ও ভবিষ্যৎ উভয় অর্থে ব্যবহৃত হয়। অর্থাৎ এই নামাজ আদায়ের মধ্য দিয়ে যেমন তোমার বন্দেগি করছি তেমনি নামাজের বাইরেও তোমারই বন্দেগি করবো। আল্লাহপাকের মানব সৃষ্টির উদ্দেশ্যই হলো তাঁর ইবাদত করা (নিশ্চয়ই জিন ও মানুষকে আমি সৃষ্টি করেছি কেবল আমার ইবাদত করার জন্য- সুরা যারিয়াত ৫৬)। এই ইবাদত বেছে বেছে কিছু আনুষ্ঠানিক আচার- অনুষ্ঠানের নাম নয়। বরং চেতনা লাভের পর থেকে মৃত্যু পর্যন্ত বা সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত এবং সূর্য...

মুহররম আল্লাহর মাস এবং আশুরার রোজা বিগত বছরের গুনাহের কাফ্ফারা

 জুমার খুতবা ০৫.০৮.২০২২ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম  মিরপুর কাঁঠালবাগান জামে মসজিদে জুমার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল সা.-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর সুরা তওবা ৩৬ নং আয়াত তেলাওয়াত করেন। আজকে হিজরি বছরের প্রথম মাস এবং প্রথম জুমা। তিনি বলেন, ১৪৪৪ হিজরি আমরা শুরু করলাম। আমাদের রোজা, হজ, ঈদ এবং ইবাদত- বন্দেগি চন্দ্র মাসের সাথে সংশ্লিষ্ট। দুর্ভাগ্য, আমরা চন্দ্র মাসের হিসাব জানি না এবং জানার চেষ্টাও করি না। এমনকি বাংলা ভাষার সন তারিখও আমরা জানি না। ইংরেজিপ্রীতি আমাদের মধ্যে চরমভাবে পেয়ে বসেছে। অন্য ভাষা জানা ও শেখায় কোনো দোষ নেই। কিন্তু নিজের স্বকীয়তা বাদ দিয়ে নয়। একজন মুসলমান হিসেবে হিজরি সনের মাস ও তারিখ সম্পর্কে একটু জানার জন্য তিনি আহবান জানান। খতিব মহোদয় বলেন, আমাদের সমাজে মুহাররম মনেই কারবালা। কারবালার ঘটনার পূর্বেও মুহাররম ও আশুরা তাৎপর্যপূর্ণ ছিল। ইসলামে চারটি মাস বিশেষ গুরুত্বের দাবিদার। সুরা তওবায় ৩৬ নং আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘আসলে যখন আল্লাহ আকাশ ও পৃথিবী সৃষ্টি করেছেন তখন থেকেই আল্লাহর লিখন ও গণনায় মাসের সংখ্যা বারো চলে...

আশুরার রোজা বিগত বছরের গুনাহ মাফ

বান্দার প্রতি আল্লাহর কতো দয়া, কতো অনুগ্রহ। বান্দার অপরাধ মাফ করেই যেন তাঁর যতো আনন্দ। আরাফার দিনের রোজা বিগত ও অগ্রিম দুই বছরের গুনাহ মাফ। লাইলাতুল কদরের রাত্রি জাগরণ যেন তার সমগ্র জীবনের গুনাহ মাফ। শুধু কি তাই? প্রতি রাতের শেষ প্রহরে আল্লাহপাক নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে জানতে চান, বান্দা তাঁর কাছে কী চায়? এবং তিনি তা দেয়ার জন্য প্রস্তুত। বান্দাকে দেয়ার মধ্যেই তাঁর আনন্দ। তাঁর ভাণ্ডার অফুরন্ত, বান্দাকে দিয়ে শেষ করা যায় না, আর তিনি দাতাও। কার্পণ্য কখনোই তাঁকে স্পর্শ করতে পারে না। মানুষ যা পায় সবই আল্লাহর অনুগ্রহ। মানুষের জান্নাত প্রাপ্তি একান্তভাবে আল্লাহর মর্জি। রসুলুল্লাহ সা. নিজে বলেছেন, মানুষ তার আমলের বিনিময়ে জান্নাতে যাবে না। সাহাবায়ে কেরাম জিজ্ঞাসা করেন, ইয়া রসুলুল্লাহ সা.! আপনি নিজেও। জবাবে বলেছেন, হ্যাঁ। আমলের বিনিময়ে হলে বান্দার মধ্যে অহমিকা দেখা দেবে। বিনয় ও নম্রতা বান্দার বড় গুণ। বিনয় ও নম্রতা যার মধ্যে রয়েছে সেই সফলকাম। পক্ষান্তরে আল্লাহ তাঁর অনুগত ও বিনয়ী বান্দার আমলগুলোকে অনেক বড় করে দেখাবেন। আসলের চেয়ে বোনাস অনেক বেশি। আমলের বিনিময়ে সমপরিমাণ নয় দশ থেকে সাতশ গুণ বাড়িয়ে দ...

হাদিসের পাঠ

আব্দুর রহমান ইবনে আওফ রা. থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, নবি সা. বলেছেন, 'নারীরা যদি পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করে, রমজান মাসে সিয়াম পালন করে, নিজের লজ্জাস্থান হেফাজত করে এবং স্বামীর আনুগত্য করে, তাহলে সে জান্নাতের যে দরজা দিয়ে ইচ্ছে প্রবেশ করবে'- আল মুজামুল আওসাত হাদিস নং ৮৮০৫। (এই হাদিসটি মাসিক পৃথিবী আগস্ট সংখ্যা ৯ পৃষ্ঠার দরসুল হাদিস হিসেবে ছাপানো হয়েছে।) নারী-পুরুষ নিয়েই মানবসমাজ। আল্লাহর পক্ষ থেকে ঈমান ও নেক আমলের বিনিময়ে উভয়কেই দুনিয়া ও আখেরাতে  কল্যাণ দানের ওয়াদা রয়েছে। আল্লাহ তায়ালা তাঁর কিতাবে নর ও নারীকে পরস্পরের বন্ধু ও সাথী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। পুরুষ ও নারী উভয়ই দায়িত্বশীল এবং দায়িত্বের ব্যাপারে তাদের উভয়কেই জবাবদিহি করতে হবে। সংসারে পুরুষকে উপার্জন ও নারীর ভরণপোষণ এবং নারীকে গৃহের রাণী হিসেবে দেখভালের দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। আল্লাহপাক পুরুষকে নারীর উপর কর্তৃত্বশীল করেছেন।  রসুলুল্লাহ সা. নারীর সহজ জান্নাত প্রাপ্তির কিছু আমল বলে দিয়েছেন। আমলসমূহ নিম্নরূপ : ★ পাঁচ ওয়াক্ত সালাত আদায় করা। নারী হোক ও পুরুষ হোক মুসলমান হওয়ার জন্য সালাত প্রধান শর্ত। ★ রমজান মাসে রোজা পালন করা। ...

ঈমান ও দ্বীনহীন মানুষের বৈশিষ্ট্য

عَنْ أَنَسِ بْنِ مَالِكٍ قَالَ مَا خَطَبَنَا نَبِيُّ اللهِ ﷺ إِلَّا قَالَ لَا إِيْمَانَ لِمَنْ لَا أَمَانَةَ لَهُ وَلَا دِينَ لِمَنْ لَا عَهْدَ لَهُ আনাস ইবনে মালিক রা. থেকে বর্ণিত। রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, ‘যার আমানত নেই তার ঈমান নেই আর যার প্রতিশ্রুতি নেই তার দ্বীন নেই’- মুসনাদে আহমাদ  বহুল প্রচলিত হাদিস। আমাদের অনেকেরই মুখস্থ এবং আমরা উচ্চারণও করি। বড় তাৎপর্যপূর্ণ হাদিস। এই দুটি আমল ঈমান ও দ্বীনের সাথে সম্পৃক্ত। রসুলুল্লাহ সা. স্পষ্ট বলেছেন, আমানত ও ঈমান পরস্পর সংযুক্ত। অর্থাৎ যার মধ্যে আমানতদারি নেই তার ঈমান নেই। আবার তিনি বলেছেন, ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি পালন এবং ধর্ম পরস্পর সংযুক্ত। যার মধ্যে ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি পালনের বাধ্যবাধকতা নেই তার ধর্ম নেই অর্থাৎ সে মুসলিম নয়। যার ইমান নেই ও ধর্ম নেই তার নামাজ- রোজা-হজ- জাকাত-কুরআন তেলাওয়াত ও জিকির- আজগার কি কোনো মূল্য বহন করবে? সবাই বলবে কক্ষনো না। কারণ আগে দরকার ঈমান। কুরআন মজিদে নানাভাবে এই দু’টি গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যেমন সুরা বাকারার ১৭৭ নং আয়াতে মুত্তাকিদের পরিচয় প্রসঙ্গে অন্যান্য গুণের সাথে বলা হয়েছে ‘যারা প্রতিশ্রুতি দিলে তা পালন ক...

মুত্তাকির পরিচয়

মুত্তাকি কে? এ প্রশ্নে আমাদের মানসপটে ভেসে উঠে এমন একটি চেহারার মানুষ যিনি বিশেষ ধরনের পোশাকে আচ্ছাদিত, মুখে শুভ্র দাঁড়ি, মাথায় টুপি এবং সম্ভব হলে হাতে তসবিহ। এমন লোককে দেখলেই মানুষ সমীহ করে। যেমন বাসে উঠলে অনেক সময় মানুষ আমাকে সমীহ করে জায়গা করে দেয়। এগুলোও মুত্তাকির বৈশিষ্ট্য। কিন্তু আল্লাহপাক এতটুকুতে সন্তুষ্ট নন। আল্লাহপাক চান পোশাকি তাকওয়ার পাশাপাশি মানুষের আমল-আখলাক, লেনদেন ব্যবসা-বাণিজ্য সকল ক্ষেত্রে তাকওয়ার বহিপ্রকাশ ঘটবে। অর্থাৎ এই মুত্তাকি বান্দার দ্বারা আল্লাহর কোনো নাফরমানি হবে না এবং তার দ্বারা আল্লাহর বান্দারা সর্বদাই উপকৃত হবে। মানুষ আল্লাহর বান্দা এবং তিনি আমাদের মনিব। আল্লাহর বান্দা হয়ে চলার জন্য তাকওয়া অপরিহার্য। তাকওয়া অর্থ আল্লাহর ভয় অর্থাৎ ন্যায়-অন্যায় বেছে বেছে চলা। মনিবের আনুগত্য বা হুকুম মেনে চলার জন্য গোলামের মধ্যে দু’টি গুণ থাকতেই হবে। এক মনিবকে যথার্থ মনিব হিসেবে মনে করা এবং দুই তাকে ভয় করে চলা।  ঈমান আনয়নকারী প্রত্যেকের উপর আল্লাহপাক নামাজ ও রোজার মতো আনুষ্ঠানিক ইবাদত ফরজ করেছেন। মানুষ আল্লাহর গোলাম, নামাজ দৈনিক পাঁচবার মানুষকে সে কথা স্মরণ করে দেয় বলে ন...