গত ১০ জুলাই থেকে দীর্ঘ ২৪ দিন বাড়িতে কাটিয়ে ৩ আগস্ট ঢাকায় ফিরে আসলাম। মাসহ বাড়ির সবাই মোটামুটি ভালো। আলহামদু লিল্লাহ।
বাড়ি যাওয়ার পর হালকা জ্বর হলেও ২/৩ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে উঠি। আলহামদু লিল্লাহ। জ্বরের কারণে নিজেকে কয়েক দিন আইসোলেশনে রাখার পর বাইরে বের হই। বের হওয়া অর্থ নিতান্ত প্রয়োজন ও নামাযের জন্য অতটুকু সময় মাত্র। করোনাভীতি গ্রামের মানুষের মধ্যে মোটেই নেই। বলা যায়, একেবারে স্বাভাবিক জীবন যাপন করছেন। মাস্ক ব্যবহার কালেভদ্রে এবং বাজারে-মসজিদে কোথাও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখা নেই বললেই চলে। লকডাউনের পর থেকে আমাদের ঘরগুলোকে মসজিদে রূপান্তর করে নিয়েছিলেন। পাঁচ ওয়াক্ত নামায বাসায় জামাত করে আদায় করেছি। এমন কি জু’মার পরিবর্তে যোহর এবং ঈদের নামাযও বাসায় পড়েছিলাম।
গ্রামে দেখাদেখি আমার মধ্যে করোনার ব্যাপারে যে ভীতি ও সতর্কতা ছিল সেটি লোপ পায়। ফলে দু’টি জু’মার নামায ও ঈদের নামাযের পাশাপাশি পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে আদায় করি। জু’মার নামায ও ঈদের জামাতে সমবেত মুছল্লিদের উদ্দেশ্যে করোনা নিয়ে কিছু কথাও বলি। কুষ্টিয়ার জেলা প্রশাসক ও ভেড়ামার পৌরসভার মেয়রসহ কুষ্টিয়া জেলায় বেশ কিছু মানুষ করোনায় আক্রান্ত হন এবং আমার জানা মতে কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজের একজন বিশেষজ্ঞ ডাক্তার ছাড়া আর কেউ করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা যাননি। করোনা উপসর্গ নিয়ে কিছু লোক মারা গেছেন। কুষ্টিয়া মেডিকেল কলেজে করোনার টেস্ট হচ্ছে। ফলে যাদের মধ্যে করোনা উপসর্গ দেখা যাচ্ছে তারা সহজেই টেস্ট করতে পারছেন। কুষ্টিয়ার প্রশাসনকে করোনা প্রতিরোধে বেশ সক্রিয় দেখা যায়।
চার মাস পর আজ ঢাকায় মহল্লার মসজিদে নামায আদায় করলাম এবং এখন থেকে নিয়মিত আদায় করতে থাকবো ইনশা-আল্লাহ। ওজরের কারণে জামায়াত ত্যাগ করা হয়েছে এবং এখন থেকে নিয়মিত জামাতে উপস্থিত থাকার ইচ্ছা পোষণের কারণে আশা করি আল্লাহপাক ক্ষমা করে দিবেন। শীতাতপনিয়ন্ত্রিত মসজিদে চমৎকার আয়োজন। নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে মুছল্লিদের দাঁড়ানোর জন্য স্থান সুনির্দিষ্ট (রেডমার্ক) করা আছে। বাসা থেকে ওযু করে, মাস্ক পরে এবং জায়নামাযসহ মুছল্লিগণ মসজিদে উপস্থিত হন। ব্যবস্থাপনা খুবই ভালো। আলহামদু লিল্লাহ।
বিশ্বব্যাপী করোনার প্রকোপ অব্যাহত রয়েছে। প্রতিবেশী ভারতে করোনা আক্রান্ত ও মৃত্যু দুইই বেশ বেশি। সেদেশে ২৪ ঘন্টায় আক্রান্ত ৫০ হাজারের অধিক এবং মৃত্যু আট শতাধিক। আমাদের দেশে আজকে মৃত্যুর সংখ্যা ৫০। বিশ্বে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা দুই কোটি ছুঁই ছুঁই করছে এবং মৃত্যুর সংখ্যা সাত লাখের কাছাকাছি। সহসা করোনা থেকে মুক্তির সম্ভাবনাও নেই। মনে করা হচ্ছে, অনেক লোক ইতোমধ্যে করোনায় আক্রান্ত হয়ে আবার সুস্থ হয়ে উঠেছেন।
করোনার কারণে সবকিছু স্থবির হয়ে পড়েছে। করোনাকে মেনে নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসা ছাড়া কোনো উপায় নেই। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানও হয়তো সহসা খুলে যাবে। স্বাস্থ্যবিধি মেনে অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্বাভাবিক করার দিকে সরকারকে পদক্ষেপ নিতে হবে। করোনা উপেক্ষা বা অবজ্ঞা করার মতো বিষয় নয়। অপ্রয়োজনে ঘর থেকে বাইরে বের না হওয়া এবং বের হলে মাস্ক পরে বের হওয়ার নিয়ম স্বতস্ফুর্তভাবে মেনে চলা একান্ত জরুরী। আল্লাহপাক আমাদেরকে করোনাসহ সব ধরনের বিপদাপদ থেকে হেফাজত করুন। আমিন। ০৪.০৮.২০২০।
ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়ে ব্যক্তিগত ব্লগ
Comments
Post a Comment