ভ্রাতৃত্ব ও সৌহার্দের প্রতীক আমাদের ঈদ
১ আগস্ট ২০২০ কুচিয়ামোড়া বাজার জামে মসজিদে ঈদের সালাতের প্রক্কালে সমবেত মুছল্লিদেরকে ঈদের শুভেচ্ছা ও সালাম বিনিময়ের পর প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী সামনে ঈদগাহ রেখে মসজিদে নামায আদায় প্রসঙ্গে বলেন, করোনার কারণে দুটি ঈদই আমরা মসজিদে আদায় করতে বাধ্য হলাম। তিনি আল্লাহর কাছে করোনা থেকে হেফাজত কামনা করেন।
মুসলমানরা পরস্পর গভীর ভ্রাতৃত্ব বন্ধনে আবদ্ধ। আল্লাহর রসূল (সা) মুসলমানদেরকে একটি দেহের সাথে তুলনা করেছেন। পরস্পরের প্রতি ভ্রাতৃত্ব ও ভালোবাসা ঈমানের শর্ত। আমরা দুই ঈদে তার প্রমাণও রাখি। ঈদুল ফিতরে সদকাতুল ফিতর আদায় করে ধনী-দরিদ্র যাতে ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে তার সুব্যবস্থা রয়েছে। ঈদুল আযহায় নামায শেষে বড় কর্ম হলো কুরবানি করা। আল্লাহ বলেন, কুরবানির রক্ত ও গোশত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, পৌঁছে তাকওয়া। কুরবানির গোশত প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেন, তোমরা খাও ও দরিদ্রদের খাওয়াও। অভাবী মানুষগুলো যাতে গোশত পায় সেদিকে আমাদের খেয়াল রাখতে হবে।
হিংসা-বিদ্বেষ পরিহার করে পরস্পর সৌহার্দ-সম্প্রীতি বজায় রাখা আমাদের দ্বীনের মৌলিক শিক্ষা। আমরা সবাই আল্লাহর ক্ষমা চাই। আল্লাহর ক্ষমা ছাড়া জান্নাতে যাওয়া কারো সম্ভব নয়। আল্লাহর ক্ষমা পাওয়ার একটি সহজ উপায় হলো তাঁর বান্দাদেরকে ক্ষমা করা। রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ‘যে তার ভাইয়ের দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ-ত্রুটি ক্ষমা করবেন’। কত বড় সুসংবাদ। তাই প্রতিশোধ গ্রহণ নয়, মানুষকে ক্ষমা করার মধ্য দিয়ে আল্লাহর ক্ষমালাভে আমরা সচেষ্ট হব।
আমাদের সমাজে মানুষের দোষ-ত্রুটি চর্চা ব্যাপকভাবে লক্ষ্য করা যায়। এ সবই গুনাহ। আল্লাহর কোনো বান্দাহ খারাপ পথ থেকে ফিরে এসে সৎ জীবনযাপন শুরু করলে মানুষ অনেক সময় সমালোচনা করে বলে, দেখ দরবেশ হয়ে গেছে অথচ তার অতীত কতো জঘন্য। এমন কথা বলা ভয়ানক গুনাহের কাজ। আল্লাহর রসূল (সা) দোষ-ত্রুটি গোপন রাখা প্রসঙ্গে বলেছেন, ‘যে তার ভাইয়ের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবেন’। আমাদের আচার-আচরণ, লেন-দেন সুন্দর করতে হবে।
আমাদেরকে মানুষের প্রতি দয়ার্দ হতে হবে। আল্লাহর রসূল (সা) বলেছেন, ‘যে দয়া করে না সে দয়া পায় না’। আল্লাহর সকল সৃষ্টি এমন কি পশু ও বৃক্ষলতার প্রতিও দয়ার আচরণ করতে হবে। কোনো পশুকে কষ্ট দেয়া বা অপ্রয়োজনে গাছের একটি পাতা ছেঁড়াও অন্যায়। আমরা যদি পরস্পর দয়ার আচরণ করি তাহলে দুনিয়ার এ জীবনটা আমাদের জন্য আনন্দদায়ক হতে পারে। আজকের এ দিনটি আমাদের জন্য পবিত্র এবং আমরা পাশাপশি দাঁড়িয়ে পরস্পর ভ্রাতৃত্বের পরিচয় প্রদান করছি। এমনিভাবে আমাদের সমগ্র জীবনটা ঘৃণা-বিদ্বেষ নয়, সৌহার্দ-সম্প্রীতি বজায় রাখতে পারি আল্লাহপাক যেন সেই তাওফিক আমাদেরকে দান করেন।
ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়ে ব্যক্তিগত ব্লগ
Comments
Post a Comment