Skip to main content

Posts

Showing posts from August, 2020

সূরা আল মুদ্দাস্সির

দরসুল কুরআন ১. হে বস্ত্র মুড়ি দিয়ে শয়নকারী, ২. ওঠো এবং সাবধান করো, ৩. তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো, ৪. তোমার পোশাক পবিত্র রাখো, ৫. এবং অপবিত্রতা থেকে দূরে থাকো, ৬. বেশি পাওয়ার আশায় ইহসান করো না ৭. এবং তোমার রবের জন্য ধৈর্য অবলম্বন করো। নামকরণ : প্রথম বাক্যের আল মুদ্দাস্সির শব্দকে নাম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। এটি কোনো শিরোনাম নয়। নাজিলের সময়কাল : কেউ কেউ সূরা মুদ্দাস্সিরের ৭টি আয়াত প্রথম অবতীর্ণ বললেও উম্মাহর মাঝে ঐকমত্য রয়েছে যে, সূরা আলাকের প্রথম পাঁচটি আয়াতই রসূল (সা)-এর ওপর অবতীর্ণ প্রথম ওহী। ওহী অবতীর্ণ হওয়ার পর বেশ কিছুদিন ওহী আসা বন্ধ ছিল। এ সময়ে রসূলুল্লাহ (সা) বেশ হতাশ হয়ে পড়েন। হেরা গুহায় জিবরাইল (আ)-কে দেখা, পড়তে বললে আমি পারি না বলা এবং তাঁর সাথে আলিঙ্গন করা সবই ছিল রসূল (সা)-এর জীবনে নতুন অভিজ্ঞতা। ওহী কী, নবুয়ত কী, ফেরেশতা কী কিছুই তাঁর জানা ছিল না। ফলে স্বাভাবিকভাবে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে বাড়িতে ফিরে স্ত্রী খাদিজা (রা)-কে তাঁর ভয় ও জীবনের আশঙ্কার কথা বলেন। মুহাম্মদ (সা)-এর চরিত্রের উত্তম দিক বিশেষ করে আত্মীয়-স্বজনের সাথে ভালো ব্যবহার, সত্য কথা বলা, আমান...

দ্বীন প্রতিষ্ঠা ও সংঘবদ্ধ জীবনের অপরিহার্যতা

ইসলাম আল্লাহপ্রদত্ত এক পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। সৃষ্টির প্রথম মানুষ ও নবী আদম (আ) থেকে সর্বশেষ নবী মুহাম্মদ (সা) সকলেই একই দ্বীন (ইসলাম) প্রচার ও প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব পালন করেছেন এবং আল্লাহপাক তাঁর প্রদত্ত দ্বীন (ইসলাম) পূর্ণভাবে মেনে চলার জন্য তাঁর বান্দাদের নির্দেশ প্রদান করেছেন। তাঁর বাণী, ‘হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা পুরোপুরিই ইসলামে দাখিল হয়ে যাও এবং কোনো অবস্থাতেই শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না; অবশ্যই সে তোমাদের প্রকাশ্য দুশমন’- সূরা বাকারা ২০৮। একজন ব্যিক্তর ধর্মে মুসলিম, রাজনীতিতে ধর্ম নিরপেক্ষ/গণতন্ত্রী, অর্থনীতিতে পুঁজিবাদী/সমাজবাদী, সংস্কৃতিতে প্রবৃত্তিপুজারি/ভোগবাদী হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। চেতনা লাভের পর থেকে মৃত্যু এবং সূর্যোদয় থেকে সূর্যাস্ত ও সূর্যাস্ত থেকে সূর্যোদয় একজন ব্যক্তি সর্বক্ষণ আল্লাহর গোলাম এবং গোলামীর বাইরে যে জীবন সেটি শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণের জীবন। আল্লাহর বাণী, ‘যদি কেউ ইসলাম ছাড়া অন্য কোনো জীবন বিধান অনুসন্ধান করে তবে তার কাছ থেকে তা কখনো গ্রহণ করা হবে না, পরকালে সে হবে চরমভাবে ব্যর্থ’- আলে ইমরান ৮৫। এখন প্রশ্ন হচ্ছে, সমাজে আল্লাহর বিধান প্রতিষ্ঠিত না থাকলে প...

ফজিলতের মাস মুহাররম

জু’মা বক্তৃতা ২৮.০৮.২০২০ আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জু’মার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর মুহাররম মাস ও আশুরার ফজিলত এবং আশুরাকে কেন্দ্র করে নানা কুসংস্কার নিয়ে আলোচনা করেন। হিজরী সনের গণনা শুরু হয় রসূল (সা)-এর হিজরতের মধ্য দিয়ে এবং প্রথম মাস মুহাররম অত্যন্ত মর্যাদাসম্পন্ন। হাদিস উদ্ধৃত করে তিনি বলেন, মুহাররম মাস আল্লাহর মাস যেমনটি আল্লাহর ঘর, আল্লাহর কিতাব ও আল্লাহর রসূল। পুরো মাসটিই ফজিলতে পূর্ণ। রমযান মাসের পরে এ মাসের আমলসমূহের মধ্যে নফল রোযা, নফল নামায ও নফল দান-সাদাকা অধিক ফজিলতপূর্ণ। নফল রোযা মানুষকে জাহান্নাম থেকে দূরে রাখে। এই মাসের ১০ তারিখ আশুরা হিসেবে (আশুরা অর্থ দশ) পরিচিত, নানা ঘটনা এই দিনে সংঘটিত হওয়ায় দিনটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। রমযান মাসে রোযা ফরজ হওয়ার পূর্বে মুহাম্মদ (সা) আশুরার রোযা ফরজ হিসেবে পালন করতেন। আশুরা ইহুদীদের কাছে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এই দিনে মুসা (আ)সহ বনি ইসরাইল ফিরাউনের জুলুম থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন। আল্লাহপাক বনি ইসরাইলকে লোহিত সাগর অতিক্রম করে ফিলিস্তিন...

করোনাকালে বিয়ে

সম্প্রতি করোনার মাঝে যশোরে বিয়ের গায়ে হলুদ উপলক্ষে পারলার থেকে সেজে মটর সাইকেল শোভাযাত্রা করে কনে গায়ে হলুদ অনুষ্ঠানে উপস্থিত হয়। সেই শোভাযাত্রার পুরোভাগে থেকে কনে মটর সাইকেলে চড়ে নেতৃত্ব প্রদান করে। পত্র-পত্রিকায় সেই খবর সচিত্র ছাপা হয় এবং ফেসবুকে তা বেশ আলোচিত-সমালোচিত হয়। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও সামাজিক রীতিনীতি বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে সমাজে অশ্লীলতা ও বেয়াহাপনা ছড়িয়ে দেয়ার এক অপপ্রয়াস বলেই অভিজ্ঞ মহল মনে করেন। লজ্জাশীলতা নারীচরিত্রের ভূষণ। বিয়ের কথা শুনলে স্বাভাবিকভাবে নারীর মাঝে লাজুকতা সৃষ্টি হয়। অনেক সময় বিয়ের মাহফিলে নারী কবুল শব্দ উচ্চারণ করে বেশ অস্ফুট স্বরে। ধর্মীয় মূল্যবোধ ও রুচিবোধসম্পন্ন জনমানসকে আধুনিকতার নামে অশ্লীল ও উচ্ছৃঙ্খলার দিকে ঠেলে দেয়ার লক্ষ্যেই মূলত এ ধরনের তৎপরতা। করোনাকালে মাস্ক ব্যবহার ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে চলার কথা। এখনো শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ এবং মসজিদসমূহে স্বাস্থ্যবিধি মেনে নামায আদায় করা হচ্ছে। অথচ তারা ধর্মীয় মূল্যবোধ এবং সরকারি বিধিবিধান ও সামাজিক রীতিনীতি উপেক্ষা করে একটি মহড়া দিয়ে শহর প্রদক্ষিণ করে। আমাদের সমাজে এমন অনেকে আছেন যারা নামায-রোযা-যাকাত-হজ...

ভাঙ্গা ও গড়া

বিশ্বজগতের মালিক হলেন আল্লাহ তায়ালা। আমরা তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে এ বাগানের মালির ভূমিকায় রয়েছি। মালিক হিসেবে আল্লাহ চান এ পৃথিবীতে মানুষ তাঁর বিধান মেনে সুখি-সুন্দর জীবন যাপন করুক। সমাজ ও রাষ্ট্রে যারা দায়িত্ব পালন করেন মালী হিসেবে তাদেরই দায়িত্ব সমাজ ও রাষ্ট্র সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা এবং জবাবদিহি তাদেরকেই করতে হবে। কোনো বাগানের মালিক যখন দেখেন তার নিযুক্ত মালী যথাযথভাবে বাগানের পরিচর্যা করছেন তখন অহেতুক তিনি মালী পরিবর্তন করেন না। কিন্তু মালির অবহেলা, অদক্ষতার কারণে বাগান যখন ধ্বংস হওয়ার উপক্রম হয় তখন প্রথমে সতর্ককরণ এবং সংশোধন না হলে মালী পরিবর্তন করে তিনি নতুন মালী নিয়োগ করেন। সেক্ষেত্রে মালির দীর্ঘদিনের সেবা বা পূর্বপুরুষের অবদান কোনো কিছু গুরুত্ব বহন করে না। কারণ বাগান মালিকের মূল বিষয় বাগানের পরিচর্যা ও তার সাধের বাগান রক্ষা করা। বিশ্বজগত আল্লাহর বাগান। মানুষের মাঝে কতক ব্যক্তি বা দলকে বাগানের পরিচর্যায় তিনি দায়িত্ব প্রদান করেন এবং অনেক সময় বংশপরম্পরায় মালির দায়িত্ব তারা পালন করেন। তবে গড়ার চেয়ে ভাঙ্গনের কাজে যখন তারা অগ্রসর হয় অর্থাৎ দেশে গুম, খুন, জুলুম-নির্যাতন, দুর্নীতি ...

দাওয়াতে দ্বীন ও সমাজকল্যাণ

মু’মিন মাত্রই একজন দ্বায়ী ইলাল্লাহ। আল্লাহর দ্বীন প্রতিষ্ঠাই ছিল সকল নবী-রসূলের মৌলিক কাজ। সর্বশেষ নবী প্রেরণের উদ্দেশ্য বর্ণনা করতে গিয়ে আল্লাহপাক সূরা তাওবা, সূরা ফাতাহ ও সূরা সাফ তিন জায়গায় বলেছেন, ‘তিনি আপন রসূলকে হেদায়াত ও সত্য দ্বীনসহ প্রেরণ করেছেন যাতে সকল দ্বীনের ওপর এক বিজয়ী করতে পারেন, যদিও মুশরিকরা তা অপছন্দ করে’- সূরা সাফ ৯। ইকামতে দ্বীনের প্রাথমিক কাজ হলো মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা। সকল নবী-রসূল দাওয়াতের কাজে সর্বক্ষণ নিয়োজিত ছিলেন এবং এই কাজে প্রচন্ডভাবে বাধারও সম্মুখীন হয়েছেন। নবী-রসূলগণ ছিলেন সমাজের সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী এবং জাতির সর্বাধিক কল্যাণকামী। জাহান্নামের দিকে ধাবমান ব্যক্তিকে সেখান থেকে ফিরিয়ে এনে জান্নাতমুখী করে দেয়ার চেয়ে আর কল্যাণকর কাজ কী হতে পারে? শুধু নবী-রসূল নন তাঁদের প্রতি ঈমান পোষণকারী মু’মিনরাও ছিলেন কল্যাণকামী। আমরা সূরা ইয়াসিনের দ্বিতীয় রুকুতে লক্ষ্য করেছি, তিনজন রসূলের দীর্ঘ প্রচেষ্টায় একজন ব্যক্তি ঈমান আনেন। ঈমান আনার পর তিনি তাঁর জাতির কাছে ছুটে এসে ঈমানের দাওয়াত দেন। অথচ তাঁর জাতি দাওয়াত কবুল না করে তাঁকে হত্যা করে। সেই মুহূর্তেও তিনি ত...

দ্বায়ী ইলাল্লাহর কোনো শত্রু নেই

প্রশ্ন উঠতে পারে, আল্লাহপাকের অগণিত নবী-রসূল ও তাঁদের সঙ্গী-সাথী এবং পরবর্তীকালে ইসলামী নেতৃবৃন্দ ও উলামায়ে কেরামের ওপর সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন কি এ কথার যথার্থতা প্রমাণ করে? আমাদের প্রিয়তম নবী ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের ওপরও কি কম নির্যাতন হয়েছে? সবই সত্য। কিন্তু আমি বলতে চাই, এতো হত্যা, জেল-জুলুম, নিপীড়ন-নির্যাতন কোনো কিছুই তাঁদের ব্যক্তিগত কারণে নয়। মুহাম্মদ (সা) তাঁর পুরো যৌবনকাল (সুদীর্ঘ ৪০টি বছর) তাঁর সমাজে বসবাস করেছেন, কখনো তিনি বিরোধীতার সম্মুখীন হননি। বরং জাতির কাছে সর্বদা সমাদর পেয়েছেন, তিনি ছিলেন তাদের মাথার মুকুট। কিন্তু যেদিনই তিনি মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবান জানান সেদিনই তিনি জাতির শত্রুতে পরিণত হন। তাতে বোঝা যায়, আরবের কাফির-মুশরিকদের শত্রুতা ব্যক্তি মুহাম্মদ (সা)-এর সাথে নয়, বরং তাদের শত্রুতা মুহাম্মদ (সা)-এর রব মহান আল্লাহর সাথে। আরবের কাফিরদের শত্রুতা ছিল আল্লাহর দ্বীনের সাথে। দ্বীনের প্রচার থেকে মুহাম্মদ (সা)-কে বিরত রাখার জন্য তাঁকে নানাবিধ প্রলোভন দেয়া হয়েছে, আবার কখনো ছাড় দিয়ে কিছু গ্রহণ-বর্জনের কথা বলা হয়েছে; ব্যর্থ হওয়ার পর মুহাম্মদ (সা) ও তাঁর সাথীদের ওপর অত্যাচ...

ইসলামই আল্লাহর মনোনীত একমাত্র ধর্ম (জীবনব্যবস্থা)

জু’মা বক্তৃতা ২১.০৮.২০২০ আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জু’মার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর মসজিদের মর্যাদা, পবিত্রতা সংরক্ষণ, খুতবার গুরুত্ব, রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়াবলী নিয়ে আলোচনা করেন। জু’মায় সমসাময়িক বিষয়াবলী সম্পর্কে মুছল্লিদেরকে অবহিত করা খতিবের দায়িত্ব। রসূলুল্লাহ (সা) থেকে এটি চলে আসছে। মসজিদের পবিত্রতা বিধানের প্রতি গুরুত্বারোপ করে বৃষ্টির দিন জুতা-সেন্ডেল থেকে যাতে ময়লা পানি মসজিদের মেঝেতে না পড়ে সেজন্য তিনি মুছল্লিদের সচেতন হওয়ার আহবান জানান। মসজিদ পবিত্র স্থান এবং মু’মিনদের হৃদয়ে এর স্থান অনেক উচ্চে। তিনি মসজিদে প্রবেশ ও বের হওয়ার ক্ষেত্রে কিছু আদবের কথা উল্লেখ করেন। মসজিদে এসে প্রথমে বিসমিল্লাহ পাঠ, পরে রসূল (সা)-এর শানে সংক্ষিপ্ত দরুদ পাঠ (আচ্ছালাতু ওয়া আচ্ছালামু আলা রসূলুল্লাহ), মসজিদে প্রবেশের দুআ পাঠ (আল্লাহুম্মাফ তাহলি আবওয়াবা রহমাতিক, অর্থ হে আল্লাহ! আমার জন্য তোমার রহমতের দরজাসমূহ খুলে দাও), ডান পা আগে দিয়ে মসজিদে প্রবেশ ও ইতেকাফের নিয়ত করা এবং সময় থাকলে দু’রা...

দ্বায়ী ইলাল্লাহর বৈশিষ্ট্য

হেরা গুহায় ওহীপ্রাপ্ত হওয়ার কয়েকদিন পরই সূরা আল মুদ্দাস্সিরের শুরুতে আল্লাহপাক তাঁর নবীকে (সা) ডেকে বলেন, ‘ওঠো মানুষকে সাবধান করো। তোমার রবের শ্রেষ্ঠত্ব ঘোষণা করো’। আল্লাহপাক দয়া করে যাদের হেদায়াত দান করেছেন তাদের কর্তব্য হলো আল্লাহর যে সব বান্দাহ তাঁকে ভুলে আছে ও তাঁর নাফরমানি করছে তাদেরকে জাহান্নামের পথ থেকে ফিরিয়ে আনা। এ পেরেশানি তাদের মাঝে থাকতেই হবে। নবুয়ত লাভের পর রসূল (সা)-এর প্রথম ও প্রধান কাজ ছিল মানুষের কাছে আল্লাহর দ্বীনের দাওয়াত পৌঁছে দেয়া। এব্যাপারে তিনি সামান্যতম অবহেলা করেননি। সব ধরনের নিন্দাবাদ, গালমন্দ, নির্যাতন উপেক্ষা করে দিনরাত তিনি মানুষকে দাওয়াত দিয়েছেন। তাঁর দাওয়াতে যারা সাড়া দিয়েছেন তারা জানতে চেয়েছিল, ‘আমাদের কাজ কী’? জবাবে তিনি বলেছিলেন, ‘আমার যে কাজ তোমাদেরও তাই’। মুসলমান মাত্রই একজন দ্বায়ী ইলাল্লাহ। এই দাওয়াত প্রদান থেকে সে একটি মুহূর্ত নীরব থাকতে পারে না। তার কথা, লেখনী, আমল-আখলাক সকল ক্ষেত্রে প্রকাশ পাবে যে, সে মানুষকে আল্লাহর দিকে আহবানকারী। সূরা আছরে আল্লাহপাক কসম খেয়ে বলেছেন, ধ্বংস থেকে বাঁচার উপায় হলো ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ হওয়ার সাথে সাথে মানুষকে ...

দাওয়াতে দ্বীনের বিষয়বস্তু

সৃষ্টির সেরা মানব জাতিকে আল্লাহপাক বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা সমৃদ্ধ করেছেন। সাথে সাথে ভালো ও মন্দ দু’টি প্রবণতা এবং ভালোকে ভালো ও মন্দকে মন্দ জানা তার প্রকৃতিতে দান করেছেন। তারপরও লোভ-লালসা ও শয়তানের প্ররোচনায় মানুষ পৃথিবীতে নানাবিধ অন্যায়-অবিচার করে। বিবেক-বুদ্ধি দানের পরও আল্লাহপাক প্রথম মানুষ আদম (আ)-কে হেদায়াতসহ একজন নবী হিসেবে প্রেরণ করেছেন এবং জানিয়ে দিয়েছেন, যারা হেদায়াত অনুসরণ করবে তাদের কোনো ভয় নেই। তারই ধারাবাহিকতায় অসংখ্য নবী ও রসূল আল্লাহ দুনিয়ায় প্রেরণ করেছেন এবং সর্বশেষ নবী ও রসূল হলেন মুহাম্মদ (সা)। নবী-রসূলদের শিক্ষা ভুলে গিয়ে মানুষ পৃথিবীতে সৃষ্টি করেছে নানা অনাচার। মানবসৃষ্টির সূচনালগ্নে আদম (আ)-এর ছেলে কাবিল কর্তৃক ভাইকে হত্যার মধ্য দিয়ে পৃথিবীতে শুরু হয় আল্লাহর নাফরমানি। শয়তানের চ্যালেঞ্জ (মানুষকে আল্লাহ থেকে গাফেল করবে) আল্লাহপাক মেনে নিয়ে ভালো ও মন্দ করার স্বাধীনতা দিয়েই মানুষ ও শয়তানকে পৃথিবীতে পাঠিয়েছেন। আসলে মানব জাতির জন্য আল্লাহ এই পৃথিবীকে করেছেন একটি পরীক্ষাগার এবং প্রশ্নও প্রকাশ করে দিয়েছেন। কল্যাণ ও অকল্যাণ স্পষ্ট করেছেন এবং ঘোষণা করেছেন, তাঁর প্রদত্ত হেদায়...

দাওয়াতে দ্বীন

আল্লাহ তায়ালার দরবারে লাখো শুকরিয়া যে, তিনি দয়া করে আমাদেরকে মুসলমানের ঘরে জন্ম দিয়েছেন এবং ইসলামকে জীবনাদর্শ হিসেবে গ্রহণ করে এর ওপর চলার তাওফিক দান করেছেন। আলহামদু লিল্লাহ। আমরা লক্ষ্য করি, আমাদেরই আশে-পাশে আল্লাহর অগণিত বান্দাহ রয়েছে যারা ইসলামকে জানে না, বুঝে না এবং এর ওপর না চলে জাহান্নামের পথে দ্রুত ধাবিত হচ্ছে। এদের ব্যাপারে কি আমাদের কিছু করণীয় নেই? একজন অশিক্ষিত ও হতদরিদ্র মানুষের জন্য ঈমান, হালাল রুজি ও নামায-রোযার মতো মৌলিক ইবাদত জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য যথেষ্ট হতে পারে। কিন্তু আল্লাহ যাদেরকে জ্ঞান-বুদ্ধি-যোগ্যতা ও মোটামুটি চলার মতো ব্যবস্থা করেছেন, তাদের জন্য কি শুধু ঈমান ও নেক আমল যথেষ্ট হতে পারে? এ প্রসঙ্গে আল্লাহ কী বলেন? ছোট্ট সূরা আল আসরে আল্লাহপাক কসম খেয়ে বলেছেন, ধ্বংস ও বিপর্যয় থেকে বাঁচতে হলে মানুষের মধ্যে চারটি গুণ থাকতেই হবে। তন্মধ্যে ব্যক্তিগতভাবে দু’টি গুণ ঈমান ও নেক আমল এবং আরো দু’টি গুণ হলো, ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ ব্যক্তিবর্গ মানুষকে হকের পথে ডাকবে ও ধৈর্যধারণের উৎসাহ যোগাবে। এতে বোঝা যায়, পথহারা মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকা তিনি তাঁর বান্দাদ...

নারীর সম্মান ও মর্যাদা

আল্লাহপাক প্রতিটি জীবকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন। নর ও নারী মিলে এই পৃথিবীতে পূর্ণতা। উভয়কেই আল্লাহ সম্মানিত করেছেন। নর ও নারী যেই ঈমান আনবে ও নেক আমল করবে আল্লাহপাক তাকে পুরস্কৃত করবেন। নর ও নারীর মর্যাদা প্রসঙ্গে আল্লাহ বলেছেন, ‘ঈমানদার নর ও নারী পরস্পরের বন্ধু ও সহযোগী’। কেউ কারো দাসও নয়, আবার প্রভুও নয়। সম্পর্ক বন্ধুত্বের, ভালোবাসার, তবে পারিবারিক শৃঙ্খলা বিধানের জন্য পুরুষকে পরিবারের কর্তৃত্বশীল করা হয়েছে। তারা পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে সকল কাজ সম্পন্ন করবে। আমার দৃষ্টিতে একজন পুরুষ হলেন পরিবার নামক রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান এবং স্ত্রী তাঁর অধীন প্রধানমন্ত্রী। ইসলাম নারীকে মা, স্ত্রী, কন্যা ও ভগ্নি হিসেবে তার সম্মান ও মর্যাদা অনেক উচ্চে নির্ধারণ করেছে। মায়ের পদতলে সন্তানের বেহেশত এবং পিতা অপেক্ষা মা’র মর্যাদা তিনগুণ বেশি। কুরআনে বলা হয়েছে, তারা উভয়ে (মাতা ও পিতা) বার্ধক্যে উপনীত হলে উহ্ শব্দটি উচ্চারণ করো না এবং সব সময় নত হয়ে চলার তাগিদ দেয়া হয়েছে। স্ত্রী হিসেবে নারী পুরুষের বন্ধু ও সাথী। তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তি উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম। স্ত্রীর নিকট উত্তম হতে হলে অবশ্...

তাকওয়া মসজিদে জু’মা আদায় ও খতিব মহোদয়ের খুতবা (বক্তৃতা) (১৪.০৮.২০২০)

দীর্ঘ ৫/৬ মাস পর ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে আজ জু’মা আদায় করলাম। ধানমন্ডিতে মেয়ের বাসার সন্নিকটে তাকওয়া মসজিদ এবং আমাদের বাসার সন্নিকটে মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে সাধারণত জু’মা আদায় করি। দু’টি মসজিদেরই জু’মা আলোচনা ভালো লাগে ও শেয়ার করার চেষ্টা করি। পুরোটা পারি না, সংক্ষিপ্ত আকারে দিয়ে থাকি। এতে আমার লাভ, খুতবা মনোযোগের সাথে শ্রবণ করা হয় এবং আমি মনে করি এটি খুতবার দাবীও। কাঁঠালবাগ মসজিদের মতই তাকওয়া মসজিদেও সাড়ে বারোটায় উপস্থিত হয়ে প্রথম ফ্লোরে জায়গা না পেয়ে পরের তলায় স্থান নিতে হয়। স্বাস্থ্যবিধি মেনে এখানে নামায আদায় হয়। আজকে একটু ব্যতিক্রম লক্ষ্য করলাম। সাধারণত সাড়ে বারোটায় খতিব মহোদয় আলোচনা শুরু করেন। আজকে শুরু করলেন ১২-৪০ মিনিটে এবং মাঝে সুন্নাত পড়ার কোনো সুযোগ দিলেন না। আমি এতে অত্যন্ত খুশি এবং ইতোপূর্বে উল্লেখ করেছি যে, পরে সুন্নাত পড়ার সময় দেয়াতে একটি বিরাট সংখ্যক মুছল্লির কাছে খুতবা শ্রবণ গুরুত্ব পায় না। আমি খুতবা বলতে মাতৃভাষায় আলোচনা ও ছানি খুতবা দু’টি মিলেই বুঝি। খুতবা বা বক্তৃতা অবশ্যই মানুষের বোধগম্য হতে হবে। খুতবা একটি নছিয়ত, যার মাধ্যমে রসূলুল্লাহ (সা) তাঁর উম্মতকে দ্ব...

নৈতিক গুণাবলীসম্পন্ন মু’মিনরাই সফলকাম

‘নিশ্চিত কল্যাণ লাভ করেছে ঈমান গ্রহণকারী লোকেরা যারা নিজেদের নামাযে ভীতিমিশ্রিত বিনয় অবলম্বন করে, যারা বেহুদা কাজ থেকে দূরে থাকে, যারা যাকাতের পন্থায় কর্মতৎপর, যারা নিজেদের লজ্জাস্থানের হেফাজত করে, তবে নিজেদের স্বামী-স্ত্রী এবং (পুরুষের বেলায়) নিজেদের মালিকানাধীন (দাসী)-দের ওপর (এ বিধান প্রযোজ্য) নয়। এ ক্ষেত্রে (হেফাজত না করা হলে) তারা কিছুতেই তিরষ্কৃত হবে না। অবশ্য এ ছাড়া অন্য কিছু চাইলে তারাই হবে সীমালঙ্ঘনকারী। যারা তাদের আমানত ও ওয়াদা-চুক্তির রক্ষণাবেক্ষণ করে এবং নিজেদের নামাযসমূহের পূর্ণ হেফাজত করে। এ লোকগুলোই হচ্ছে (মূলত যমীনে আমার যথার্থ) উত্তরাধিকারী, জান্নাতুল ফেরদাউসের উত্তরাধিকারী; সেখানে চিরকাল থাকবে’- সূরা আল মু’মিনুন ১-১১ সূরা আল মু’মিনুন মক্কীযুগের মাঝামাঝি সময়ে অবতীর্ণ। সে সময়ে যারা ঈমান এনেছিলেন বাহ্যত তারা নানাভাবে বিপদগ্রস্ত হয়ে পড়েছিলেন। সমাজের অপেক্ষাকৃত সজ্জন ও যুবকরাই রসূল (সা.)-এর দাওয়াতে সাড়া দিয়েছিলেন। তাদের এই সাড়া দেয়াকে অনেকে চরম বোকামী ও ভুল সিদ্ধান্ত বলে মনে করেছিল এবং নির্বুদ্ধিতার কারণেই নাকি তারা বিপদের মুখে পড়েছিল। নিজেদের আত্মীয়-স্বজন-বংশ ও পাড়া-প্...

ঘুষ গ্রহণের শাস্তি

ইসলামে হত্যা, চুরি, ডাকাতি, রহাজানি যা জনজীবনকে বিপর্যস্ত করে সেসব অপরাধের পারলৌকিক শাস্তির পাশাপাশি দুনিয়ার জীবনেও কঠোর দন্ডের ব্যবস্থা রয়েছে। হত্যার বদৌলে হত্যা, চুরির অপরাধে হাত কেটে দেয়া এবং ডাকাতি, রাহাজানি, লুটতরাজ ইত্যাদি অপরাধে এক হাত ও বিপরিত এক পা (ডান হাত ও বাম পা) কর্তনের কথা বলা হয়েছে। আল্লাহপাক মানুষের জীবন, সম্পদ ও সম্মানকে পবিত্র ও নিরাপদ করেছেন। যে কোনোভাবে ক্ষতিসাধন করা কবিরা গুনাহ এবং শাস্তিযোগ্য অপরাধ। হতে পারে কাউকে শারীরিকভাবে আঘাত করে, গালি দিয়ে, ওজনে কম দিয়ে, ভেজাল দিয়ে বা যে কোনো পন্থায় ক্ষতিসাধন করা অপরাধ। চুরি প্রসঙ্গে কুরআনে বলা হয়েছে, ‘পুরুষ কিংবা নারী চুরি করলে তাদের হাত কেটে দাও। এটা তাদের কৃতকর্মের ফল এবং আল্লাহর নির্দেশিত আদর্শ দন্ড। আল্লাহ পরাক্রমশালী ও প্রজ্ঞাময়’-সূরা মায়েদা ৩৮। সমাজের মানুষ যাতে চুরির অপরাধে শাস্তির বিষয়টি উপলব্ধি করতে পারে সেজন্য চোরের কর্তিত হাত (কব্জি পর্যন্ত কাটা হাত) ঘাড়ের সাথে ঝুলিয়ে রাখার কথাও হাদিসে বলা হয়েছে। যে কোনো ধরনের চুরিতে হাত কাটা নয়। সে সব বিস্তারিত বিষয় এবং এখানে আমরা আলোচনায় যাব না। আমরা বুঝি, চুরি অর্থ মানুষের...

নগরীতে স্বাভবিকত্ব এখনো আসেনি

স্বাভাবিকত্ব বলতে করোনা পূর্ববর্তী যানজটের নগরী বোঝাচ্ছি। যানজটে ঢাকাবাসী থাকে নাকাল। ঘন্টার পর ঘন্টা রাস্তায় আটকে থাকার বিড়ম্বনা ভুক্তভোগীরাই উপলব্ধি করে। করোনা ঢাকাবাসীকে যানজট থেকে রেহাই দিয়েছে। কয়দিন চলবে সেটিই বিবেচ্য। দীর্ঘদিন পর আজ সস্ত্রীক মিরপুর ১২ নং গিয়েছিলাম ছোট বোনের বাসায়। মেট্টোরেলের কাজ চলার কারণে মিরপুর ১২ নং যেতে ভয়ানক জ্যামে পড়তে হয়। কিন্তু আজ জ্যামছাড়াই স্বল্প সময়ে বেশ স্বাচ্ছন্দ্যে যাতায়াত করলাম। নির্দিষ্ট সময়ে কাজ সম্পন্ন না হওয়ার একটি সংস্কৃতি আমাদের গড়ে উঠেছে। বারবার সময় বাড়ার সাথে সাথে বরাদ্দও বাড়ে। রাজধানীতে সকল অফিস ও উচ্চ আদালত থাকায় বিচারপ্রার্থী ও দর্শনার্থীদের ভীড় যানজটের অন্যতম কারণ বলে ইতোপূর্বে লিখেছিলাম। করোনা আমাদেরকে অনলাইনে কাজের অভিজ্ঞতা দান করেছে। অফিস-আদালতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা-কর্মচারী বাদে দর্শনার্থী/তদবিরকারী কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রণ করলে ঘুষের আদান-প্রদান ও যানজট কমবে বলে আমি বিশ্বাস করি। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী জনগণের সেবাদানে বাধ্য। সামান্য অবহেলা/শৈথিল্য প্রদর্শনের কোনো সুযোগ নেই। শুধু আইন দিয়ে নয়, নৈতিক মটিভিশনের দ্বারা বেশির ভাগ লোকই...

দুনিয়ার ক্ষণস্থায়ী জীবন অপেক্ষা আখিরাতের স্থায়ী জীবনই মু’মিনের কাম্য

তোমাদের যা কিছু দেয়া হয়েছে তা দুনিয়ার জীবনের ক্ষণস্থায়ী সামগ্রী মাত্র। আর আল্লাহর কাছে যা কিছু রয়েছে তা উত্তম ও স্থায়ী। তা সেই সব লোকের জন্য যারা ঈমান আনে ও তাদের রবের ওপর নির্ভর করে, যারা বড় বড় গুনাহ ও অশ্লীল কার্যকলাপ থেকে বেঁচে থাকে এবং ক্রোধ হলে ক্ষমা করে, যারা তাদের রবের ডাকে সাড়া দেয়, নামায কায়েম করে এবং নিজেদের সব কাজ পরস্পর পরামর্শের ভিত্তিতে সম্পন্ন করে, আমি যা রিযিক দিয়েছি তা থেকে খরচ করে এবং তাদের বিরুদ্ধে বাড়াবাড়ি করা হলে তার মোকাবেলা করে। খারাপের প্রতিদান সমপর্যায়ের খারাপ। কিন্তু যে ক্ষমা করে দেয় এবং আপস করে চলে তাকে পুরস্কৃত করা আল্লাহর দায়িত্ব। আল্লাহ যালেমদের পছন্দ করেন না। সূরা আশ শূরা ৩৬-৪০ দুনিয়ার জীবনে আমাদের অবস্থান, স্থায়িত্ব ও ভোগ-ব্যবহার নিয়ে চিন্তা করলে আল্লাহর ঘোষণা খুব সহজেই উপলব্ধি করা যায়। সীমাহীন এই বিশ্বজগতে আমাদের পৃথিবী খুবই ক্ষুদ্র, কতো ক্ষুদ্র কল্পনা করাও কঠিন। পৃথিবীর বিশালায়তনের তুলনায় বাংলাদেশের অবস্থান এবং সেই বাংলাদেশে আমার অবস্থান অতি নগণ্য। আবার বিশ্বজগত ও পৃথিবীর জন্ম এবং মানুষের আবির্ভাব এবং এর স্থায়িত্বও আমার জানা নেই। তবে আমি আমার অভিজ্...

করোনা পরিস্থিতি : উত্তরণের উপায়

করোনা কেবল স্বাস্থ্য সমস্যা নয়, করোনা বহুবিধ সমস্যায় আমাদেরকে নিপতিত করেছে। শিক্ষা, ব্যবসা-বাণিজ্য, শিল্প, পর্যটন, যোগাযোগ সকল ক্ষেত্রে আমাদেরকে পিছিয়ে দিয়েছে। বাংলাদেশের মতো গরীব দেশ দীর্ঘস্থায়ী এর ধকল সহ্য করার মতো ক্ষমতা রাখে না। ফলে চেষ্টা চলছে করোনাকে মানিয়ে নিয়ে চলার। তাই আজ থেকে সকল সরকারি অফিস পূর্ণদ্যোমে চলার ঘোষণা দেয়া হয়েছে। সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারী নিয়মিত বেতন-ভাতা পেয়ে থাকলেও দেশের বেসরকারি খাতে চরম দুরবস্থা চলছে। অনেকে ব্যবসা-বাণিজ্য গুটিয়ে ফেলতে বাধ্য হয়েছে এবং অনেকে চাকুরি হারিয়ে বেকার হয়ে পড়েছে। তাই সবকিছু খুলে দেয়া ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। প্রতিনিয়তই আমরা মৃত্যু দেখি। মৃত্যুকে এড়িয়ে চলার কোনো সুযোগ নেই। আমরা মাত্র সতর্ক থাকতে পারি। সাপের কামড়ে মৃত্যু, পানিতে ডুবে মৃত্যু, রোড এক্সিডেন্ট, অগ্নিকান্ড ও নানাবিধ রোগে মানুষ দুনিয়া থেকে প্রতিনিয়ত বিদায় গ্রহণ করছে। এজন্য আমরা আমাদের সাধ্যমত সতর্কতা অবলম্বন করতে পারি। সাপের ভয়ে আমরা রাতে বিছানাটা ঝেড়ে এদিক-ওদিক দেখে থাকি (বিশেষ করে গ্রামে কাঁচা ঘরে), পানিতে ডোবার ভয়ে বাচ্চাদেরকে দূরে রাখি, সাঁতার না জানলে নৌকায় উঠতে রাজি হয়ন...

তারা আল্লাহর প্রতি সন্তুষ্ট এবং আল্লাহও তাদের প্রতি সন্তুষ্ট

জু’মা বক্তৃতা ০৭.০৮.২০২০ আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জু’মার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর সাহাবায়ে কেরামের (রা) মর্যাদা এবং মায়ের প্রতি ভক্তি ও তাঁর হেদায়াতের জন্য হযরত আবু হুরাইরা (রা)-এর মনের আকুতি তুলে ধরেন। করোনাকালে বাড়ি থেকে আসার পর ঢাকায় এই প্রথম জু’মা আদায়। এক সময় ঘরকে মসজিদে রূপান্তর করে নিলেও এখন পাঁচ ওয়াক্ত নামায মসজিদে জামায়াতের সাথে আদায় করছি। আলহামদু লিল্লাহ। অবশ্য বাড়ি থেকেই মসজিদে নামায আদায় শুরু করেছিলাম। ঢাকায় মসজিদসমূহে পুরোপুরি স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা হয়। মসজিদে প্রবেশের সময় শরীরের তাপ পরীক্ষার (আমার ছিল ৯৭.৫) সাথে হাতে জীবাণুনাশক স্প্রে করা হয়। মুছল্লিদের অধিকাংশই মাস্ক পরিহিত (২/১ জন বাদ) এবং হাতে জায়নামায ও নিরাপদ দূরত্ব বজায় রেখে কাতারে (অর্থাৎ মাঝখানে একজন দাঁড়াতে পারবে) সবাই দাঁড়ায়। ফলে মসজিদ থেকে করোনা সংক্রমণের ভয় নেই বললেই চলে। সতর্কতা অবলম্বন বান্দার দায়িত্ব এবং হেফাজতের মালিক আল্লাহ। আমরা তাঁরই ওপর ভরসা করি। কাঁঠালবাগ জামে মসজিদ শহরের বড় মসজিদসমূহের একটি। নীচতলায় এ...