Skip to main content

বিপদাপদ দেয়ার মালিক আল্লাহ এবং দূর করার মালিকও তিনি

এই বিশ্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহপাক একটি নিয়ম দান করেছেন, কিন্তু তিনি নিজে কোনো নিয়মের অধীন নন। তিনি যেটি ইচ্ছা করেন সেটিই হয়। এই অর্থে তিনি সার্বভৌম ক্ষমতার (চরম ক্ষমতা) অধিকারী এবং তাঁর ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ নেই। বর্তমানে করোনা বিশ্বব্যাপী এক আতঙ্ক। কোটি কোটি লোক এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন। অত্যন্ত ছোঁয়াচে এই মহামারি অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত বিস্তার ঘটেছে। করোনাক্রান্ত কারো সংস্পর্শে আসলে সহজেই আর একজন আক্রান্ত হওয়াটা নিয়ম। কিন্তু ব্যতিক্রমও রয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বস্তিতে বসবাস করছেন, পথে-ঘাটে চলাফেরা করছেন, কোনো মাস্ক ছাড়া বা স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছেন, তারপরও সুস্থ রয়েছেন। আবার সাধারণে চলাফেরা বা মেলামেশা নেই এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অত্যন্ত সতর্ক জীবন-যাপন করেও আক্রান্ত হচ্ছেন, আসলে এর ব্যাখ্যাদান বড় কঠিন। সতর্ক জীবন-যাপন করা মু’মিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং এর বিনিময়ে সে ছওয়াব লাভ করবে। কিন্তু তারপরও যদি মু’মিন বিপদাপদে পড়েন তবে বুঝতে হবে আল্লাহপাক তাঁর বান্দার কল্যাণের নিমিত্তেই দিয়েছেন। আল্লাহপাকের স্পষ্ট ঘোষণা, ‘কোনো বিপদ কখনই আসে না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করে আল্লাহ তার দিলকে হেদায়াত দান করেন। আল্লাহ সব কিছু জানেন’- সূরা তাগাবুন ১১। কোনো বিপদ নিজ থেকে আসে না বা কেউ চাপিয়েও দিতে পারে না। ‘যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান পোষণ করে আল্লাহ তার দিলকে হেদায়াত দান করেন’- এই বাক্যের মধ্যে রয়েছে মু’মিনের জন্য বড় প্রশান্তি। সে মনে করে, আমার আল্লাহ আমাকে বিপদ দিয়েছেন এবং নিশ্চিতভাবে এর মধ্যে কল্যাণ রয়েছে। মু’মিনের মুখ থেকে বেরিয়ে আসে, ‘যখন আমি অসুস্থ হয়ে পড়ি, তিনি আমাকে সুস্থ করেন’- সূরা শোয়ারা ৮০। তাই সুস্থতার জন্য সে তার রবের কাছেই ধর্ণা দেয়। আল্লাহ সব কিছু জানেন। কোনো কিছু তাঁর অগোচরে হয় না। তিনি যেটি ইচ্ছা করেন সেটিই হয়। তাই মু’মিন যখন বিপদাপদে পড়ে সে আল্লাহর সান্নিধ্যে চলে আসে। আল্লাহর ভাষায়, সে বিনয়াবনত হয়। মু’মিন তাঁর মনিব ও মালিককে খুব করে অনুভব করে, কাতরভাবে তাঁরই কাছে চায়। আল্লাহর কাছে চাওয়াটা তিনি খুবই পছন্দ করেন। মানুষের কাছে চাইলে মানুষ বিরক্ত হয়। কিন্তু আল্লাহ ব্যতিক্রম। না চাইলেই তিনি অসন্তুষ্ট হন এবং বান্দার দুআ কবুলের জন্য তিনি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। তাঁর বাণী, ‘যে ডাকে আমি তার ডাক শুনি ও জবাব দেই’-বাকারা ১৮৬। মু’মিনের ভরসার জায়গাটি হলো তার মনিব ও মালিক মহান আল্লাহ। আল্লাহ বারবার বলেছেন, ‘মু’মিনদের উচিৎ কেবল তাঁরই ওপর ভরসা করা’। তিনি সর্বোত্তম অভিভাবক। কতো সুন্দরভাবেই না আল্লাহর রসূল (সা) বলেছেন, ‘মু’মিনের ব্যাপারটি বড়ই অদ্ভূত। আল্লাহ তার জন্য যে ফয়সালাই করুন না কেন তা সর্বাবস্থায় তার জন্য কল্যাণকর হয়ে থাকে। বিপদাপদে সে ধৈর্য অবলম্বন করে। এটি তার জন্য কল্যাণকর। সুখ-শান্তি ও সচ্ছলতা আসলে সে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করে। এটিও তার জন্য কল্যাণকর। মু’মিন ছাড়া আর কারো ভাগ্যেই এরূপ হয় না’-বুখারি ও মুসলিম। বিপদাপদে আমরা গাফিল না হয়ে কাতরভাবে মহান রবের দরবারে তাঁরই শেখানো ভাষায় ফরিয়াদ করি। পরোয়ারদেগার! তুমি আমাদের ওপর এমন বিপদ চাপিও না যা সহ্য করতে না পারি। তুমি আমাদের প্রতি রহম করো। তুমি আমাদের ক্ষমা করো। আমাদের প্রতি দয়া করো। তুমিই আমাদের একমাত্র বন্ধু। ২৬.০৭.২০২০

Comments