Skip to main content

Posts

Showing posts from July, 2020

গুনাহের প্রকারভেদ

আল্লাহপাকের নাফরমানির নামই হলো গুনাহ। বান্দার পক্ষে মনিবের নাফরমানি কি কল্পনা করা যায়? ছোট হোক, বড় হোক আল্লাহর মর্জির খেলাপ মাত্রই গুনাহ। গুনাহের শ্রেণিবিভাগ করা বড় কঠিন। যেমন অধীনস্ত ব্যক্তি বসের হুকুমের শ্রেণিবিভাগ করতে পারে না। উর্ধতনের নির্দেশ পালনই নিয়ম। তারপরও আমরা কুরআন-হাদিস ও বিবেক-বুদ্ধি দ্বারা অপরাধের ছোট-বড় নিয়ে আলোচনা করবো ইনশা-আল্লাহ। যে কোনো ধরনের অধিকার ভঙ্গ হলো গুনাহ। তা আল্লাহর হোক বা বান্দার হোক। যেমন, আল্লাহর অধিকার হলো, মানুষ কেবল তাঁরই হুকুম মেনে চলবে এবং হুকুম মানার ক্ষেত্রে তাঁর সাথে কাউকে শরীক করবে না। এজন্য শিরককে বলা হয় সবচেয়ে বড় জুলুম বা বড় গুনাহ। ইসলামের দৃষ্টিতে হক দ্বিবিধ-আল্লাহর হক ও বান্দার হক। আল্লাহর হক নষ্টকারী বান্দা তাওবা করলে তাৎক্ষণিক ক্ষমা পাওয়া যায়। পক্ষান্তরে বান্দার হক নষ্টকারী ব্যক্তি যতক্ষণ না মজলুমের কাছ থেকে ক্ষমা না পায় ততক্ষণ আল্লাহ তাকে ক্ষমা করেন না। মনে করুন মূর্তিপূজারী একজন অমুসলিম জীবনভর আল্লাহর নাফরমানি করে আসছে; কিন্তু যখনই সে তাওবা করে ইসলাম গ্রহণ করছে তখনই তার পেছনের সকল গুনাহ ক্ষমা হয়ে যাচ্ছে। নামায না পড়া কবীরা গুনাহ এব...

বিপদাপদ দেয়ার মালিক আল্লাহ এবং দূর করার মালিকও তিনি

এই বিশ্ব পরিচালনার ক্ষেত্রে আল্লাহপাক একটি নিয়ম দান করেছেন, কিন্তু তিনি নিজে কোনো নিয়মের অধীন নন। তিনি যেটি ইচ্ছা করেন সেটিই হয়। এই অর্থে তিনি সার্বভৌম ক্ষমতার (চরম ক্ষমতা) অধিকারী এবং তাঁর ক্ষমতাকে চ্যালেঞ্জ করার মতো কেউ নেই। বর্তমানে করোনা বিশ্বব্যাপী এক আতঙ্ক। কোটি কোটি লোক এরই মধ্যে আক্রান্ত হয়েছেন। অত্যন্ত ছোঁয়াচে এই মহামারি অল্প সময়ের মধ্যে দ্রুত বিস্তার ঘটেছে। করোনাক্রান্ত কারো সংস্পর্শে আসলে সহজেই আর একজন আক্রান্ত হওয়াটা নিয়ম। কিন্তু ব্যতিক্রমও রয়েছে। হাজার হাজার মানুষ বস্তিতে বসবাস করছেন, পথে-ঘাটে চলাফেরা করছেন, কোনো মাস্ক ছাড়া বা স্বাস্থ্যবিধি না মেনেই চলছেন, তারপরও সুস্থ রয়েছেন। আবার সাধারণে চলাফেরা বা মেলামেশা নেই এবং স্বাস্থ্যবিধি মেনে অত্যন্ত সতর্ক জীবন-যাপন করেও আক্রান্ত হচ্ছেন, আসলে এর ব্যাখ্যাদান বড় কঠিন। সতর্ক জীবন-যাপন করা মু’মিনের দায়িত্ব ও কর্তব্য এবং এর বিনিময়ে সে ছওয়াব লাভ করবে। কিন্তু তারপরও যদি মু’মিন বিপদাপদে পড়েন তবে বুঝতে হবে আল্লাহপাক তাঁর বান্দার কল্যাণের নিমিত্তেই দিয়েছেন। আল্লাহপাকের স্পষ্ট ঘোষণা, ‘কোনো বিপদ কখনই আসে না আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। যে ব্যক্তি...

আল্লাহ নিজে উদার এবং তিনি উদারতা পছন্দ করেন

আল্লাহপাক ক্ষমার আধার। ক্ষমা করার মধ্যেই যতো তাঁর আনন্দ। মজার ব্যাপার হলো, বান্দাহ যখন ভালো কাজের নিয়ত করে তখনই তার আমলনামায় নেকি লেখা হয়। আর যখন কাজটি বাস্তবে রূপ দেয় তখন তার ছওয়াব দশ থেকে সাতশ গুণ পর্যন্ত বাড়িয়ে দেন এবং সেটি দেন কাজের প্রতি তার নিষ্ঠা, আন্তরিকতা ও একাগ্রতার ওপর ভিত্তি করে। পক্ষান্তরে শাস্তিদানের ক্ষেত্রে তাঁর আচরণটা এমন যেন নিতান্ত ঠেকায় পড়ে তিনি তাঁর বান্দাকে শাস্তি দেন। বান্দা যতটুকু অন্যায় করে ঠিক ততটুকুই লিখে রাখেন এবং অপেক্ষা করেন বান্দার তাওবা পর্যন্ত। শুধুই কি তাই? বান্দাহ যখন নামাযের জন্য আসে, এক ওয়াক্ত থেকে আর এক ওয়াক্ত পর্যন্ত সময়কালের গুনাহ তিনি নিজ থেকেই ক্ষমা করে দেন। তিনি বলেছেন, ‘যে বিপদ আপদই তোমাদের ওপর আসুক না কেন, তা হচ্ছে তোমাদের নিজেদের হাতের কামাই, অবশ্য আল্লাহ তায়ালা তোমাদের অনেক অপরাধ এমনি ক্ষমা করে দেন’-সূরা আশ শূরা ৩০। আবার হাদিসে বলা হয়েছে ভালো কাজ মন্দ কাজকে মিটিয়ে দেয়। যে আল্লাহ তাঁর বান্দার প্রতি এতো দয়ার্দ, এতো উদার সেই আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ না হয়ে পারা যায়? বান্দাকে শাস্তিদানের জন্য আল্লাহর কোনো তাড়াহুড়ো নেই। বরং তিনি অপেক্ষা করেন তাঁ...

আল্লাহর ওপর নির্ভরশীলতার পাশাপাশি সতর্ক হতে হবে

(জু’মা বক্তৃতা) কুচিয়ামোড়া বাজার জামে মসজিদে ২৪ জুলাই কুষ্টিয়া সরকারি কলেজের উপাধ্যক্ষ (অব) প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে দেশ-বিদেশের করোনা পরিস্থিতি ও আসন্ন ঈদুল আযহা উপলক্ষে সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন। আল্লাহপাকের সৃষ্ট এক অতি ক্ষুদ্র জীবাণু করোনার ধ্বংসকারিতা এবং ইতোপূর্বে সংঘটিত মহামারি সম্পর্কে তিনি মুছল্লিদেরকে অবহিত করেন। বিশ্বে দেড় কোটিরও অধিক লোকের করোনা আক্রান্ত হওয়া ও ছয় লক্ষাধিক লোকের প্রাণহানি প্রসঙ্গে বলেন, করোনা সমগ্র বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। মাত্র কয় মাসের ব্যবধানে বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর ও গর্বিত রাষ্ট্রগুলোকে একযোগে আঘাত হেনে মানুষের চরম অসহায়ত্ব প্রকাশ করে দিয়েছে। কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে তিনি বলেন বিপদ-মুসিবত সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে আসে (সূরা তাগাবুন)। চীন থেকে উদ্ভব হওয়া করোনা আশে-পাশের ঘনবসতি ও দরিদ্র দেশগুলোকে বাদ দিয়ে সুদূর আমেরিকা ও ইউরোপে আঘাত হানা আল্লাহপাকেরই ফয়সালা বলতে হয় এবং তিনি তাঁর শ্রেষ্ঠত্ব প্রকাশের সাথে সাথে চান যে, তাঁর বান্দারা নাফরমানি পরিহার করে তাঁর অনুগত হোক। বাংলাদেশ একটি দরিদ্র, ঘনবসতি ও অসচেতন জনগোষ্ঠীর দেশ। ইউরোপ-আমেরিকায় যখন ...

বান্দাকে ক্ষমা করার আল্লাহর কতো কৌশল !

মানুষ আল্লাহপাকের বড় আদরের সৃষ্টি। আদম (আ)-কে সৃষ্টি করে তিনি তাঁকে বেহেশতেই রেখেছিলেন। একান্ত অবাধ্য ও নাফরমান না হলে মৃত্যুর পরে আবার জান্নাতেই তাদের স্থান দেবেন। বান্দাকে শাস্তি দানের জন্য আল্লাহ কোনো বাহানা তালাশ করবেন না, বরং ক্ষমা করার উপায় খুঁজবেন। বান্দাহর গুনাহ ঝেড়ে ফেলে নেকির পাল্লা ভারি করে দেয়ার জন্য আল্লাহপাক নানাভাবে সুযোগ দিয়েছেন। এ ছাড়া তাওবা করে ফিরে আসার সুযোগ অবারিত। বিশেষ দিনক্ষণ, মাস ফজিলতের দিক দিয়ে অনেক গুরুত্বপূর্ণ। যেমন, রমযান মাস বিশেষ করে শেষ দশক যার মধ্যে রয়েছে লাইলাতুল কদর। রসূল (সা) দশক ধরে ইতেকাফ করতেন। এমনি ফজিলত ও মর্যাদাপূর্ণ দশক হলো জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন। কুরআনে সূরা ফজরে আল্লাহপাক কসম করেছেন এই বলে-‘শপথ ফজরের ও দশ রাতের’। অনেক সাহাবী এবং তফসিরকারক দশ রাত বলতে জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিন বুঝিয়েছেন। অবশ্য রসূলুল্লাহ (সা) থেকে স্পষ্ট করে এমন কোনো কথা উল্লেখ নেই। এই মাসের ফজিলত সম্পর্কীয় হাদিস রয়েছে। নিম্নে উল্লেখ করা হলো- ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত, রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : ‘জিলহজ্জ মাসের প্রথম দশ দিনের মধ্যে কৃত নেক আমলের চেয়ে আল্লাহর নিকট অধি...

উম্মাহর ঐক্য : সংকীর্ণতাই বড় বাধা

ভিন্নতার মাঝে ঐক্য এক বড় চ্যালেঞ্জ। বিশ্বপ্রকৃতিতে রয়েছে নানা বর্ণ, নানা রূপ এবং এতেই রয়েছে সৌন্দর্য। হরেক রকমের ফুলের সমারোহে তো বাগান, সেখানে রয়েছে নানা রঙ, নানা গন্ধ। মানবজাতির অবস্থা বিবেচনা করলে দেখা যাবে সৃষ্টির সূচনা থেকে আজ পর্যন্ত, না কিয়ামত পর্যন্ত যতো মানুষ আসবে সবাই স্বতন্ত্র দৈহিক কাঠামো, কণ্ঠস্বর, চেহারা, আকার-আকৃতি নিয়ে পৃথিবীতে এসেছে বা আসবে। কোটি কোটি মানুষের মধ্যে একজনের সাথে আর একজনের কোনো মিল নেই। একজনের আঙ্গুলের ছাপের সাথে আর একজনের মিল নেই। শুধু কি তাই? প্রত্যেকের রুচি, পছন্দ, চিন্তা-ভাবনা, দৃষ্টিভঙ্গি সম্পূর্ণ স্বতন্ত্র। এ এক বিষ্ময়! আল্লাহর এই সৃষ্টির কর্ম-কুশলতা নিয়ে ভাবলে দৃষ্টি অবনত হয়ে আসে। সংসারে স্বামী-স্ত্রী, পিতা-পুত্র, ভাই-বোন, ব্যবসায়ে পার্টনার, রাজনীতিক-সামাজিক সংগঠন সকল ক্ষেত্রেই রয়েছে পরস্পর মতের ভিন্নতা। তারপরও আমাদের চলার ক্ষেত্রে ঐকমত্যে পৌঁছতে হয় এবং এই ভিন্নতার মধ্যে পরস্পর আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে সমঝোতা করে চলার তাগিদই রয়েছে আল্লাহর বিধানে। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য পরামর্শ ও আনুগত্য করাকে অপরিহার্য করে দিয়েছেন এবং এটি মানুষের ফিতরাতেও রয়েছে...

মৃত্যুপ্রস্তুতি

জীবমাত্রই মরণশীল। কী আস্তিক আর কী নাস্তিক মৃত্যু নিয়ে কারো মধ্যে কোনো সন্দেহ-সংশয় নেই। সকলেই স্বীকার করে। মৃত্যুপরবর্তী জীবন নিয়ে বিভিন্ন ধর্মাবলম্বী বা আস্তিক-নাস্তিকের মধ্যে বিশ্বাস ও ধারণায় পার্থক্য রয়েছে। নাস্তিকদের এ ব্যাপারে কোনো মাথাব্যথা নেই। তাদের বিশ্বাস, দুনিয়ার জীবনই শেষ এবং এরপরে আর কিছু নেই। ফলে দুনিয়ায় ভালো থাকার জন্য যা যা দরকার এবং মৃত্যু পরবর্তীতে মানুষ তাদেরকে স্মরণ করবে, তাদের নামে বিভিন্ন স্থাপনা থাকবে, পরবর্তী প্রজন্ম তাদেরকে নিয়ে গর্ব করবে, এর মধ্যেই তাদের জীবন ও কর্মকান্ড সীমাবদ্ধ। পক্ষান্তরে একজন মুসলিম বিশ্বাস করে দুনিয়ার জীবনই তার শেষ নয়, এরপর রয়েছে আখিরাতের জীবন এবং যেটি সীমাহীন অনন্তকালের জীবন। এই দুনিয়ার জীবন কর্মক্ষেত্র এবং আখিরাতের জীবন ফলভোগের। অর্থাৎ হয় অফুরন্ত নেয়ামতেভরা জান্নাত নয়তো ভয়াবহ আযাবেপূর্ণ জাহান্নাম-এই হলো মানবজীবনের শেষ ঠিকানা। ঈমান ও নেক আমলে সমৃদ্ধ ব্যক্তিবর্গের জন্য রয়েছে জান্নাত এবং কাফির-মুশরিক ও জালেমের জন্য রয়েছে দাউ দাউ করে জ্বলা জাহান্নামের আগুন। সেখান থেকে ফিরে আসার কোনো সুযোগ নেই। মৃত্যুপ্রস্তুতি বলতে মৃত্যুকে ঠেকিয়ে রাখার জন্...

কুরবানির বিধান

নিজের ও পরিবারের পক্ষ থেকে একটি পশুই যথেষ্ট কুরবানি একটি ওয়াজিব ইবাদত। আল্লাহপাকের সন্তুষ্টির লক্ষ্যে স্বতস্ফুর্তভাবে আমাদের কুরবানি করা উচিত। লৌকিকতা, প্রদর্শনী বা গোশত খাওয়া যেন উদ্দেশ্য না হয়। আল্লাহর হুকুমের কাছে পূর্ণ আত্মসমর্পনের নিদর্শন হলো কুরবানি যা পিতা ইব্রাহিম (আ) দেখিয়ে গিয়েছেন। আমরা সাধারণত পরিবারের সদস্যদের জনে জনে কুরবানি করে থাকি। প্রয়োজন নেই। একটি পরিবারের জন্য একটি পশুই যথেষ্ট। রসূলুল্লাহ (সা) মদীনায় থাকা অবস্থায় সাধারণত দু’টি দুম্বা কুরবানি করতেন। একটি তাঁর ও তাঁর পরিবারের পক্ষ থেকে এবং অপরটি উম্মতের পক্ষ থেকে। মৃত ও জীবিত সব উম্মত তাতে শামিল রয়েছে। মৃত ব্যক্তি জীবিত থাকাবস্থায় অসিয়ত করে গেলে ওয়ারিসদের অসিয়ত পূরণ করা কর্তব্য। তা না হলে আলাদা কুরবানির প্রয়োজন নেই। নিজের পক্ষ থেকে দেয়ার পর চাইলে মৃত ব্যক্তির পক্ষে দেয়া যায়। এ ছাড়া ছওয়াবে শরীক করে নেয়া যায়। জবেহকারী যদি বলে আমার ও আমার পরিবারের পক্ষ থেকে; তাহলে মৃত ও জীবিত সবাই শামিল হয়ে যায়। মা আয়িশা (রা) বলেন, রসূলুল্লাহ (সা) একটি শিংওয়ালা সুন্দর সাদা-কালো দুম্বা আনতে বললেন, অতঃপর দু’আ পড়লেন-- ‘আল্লাহর নামে, হে আ...

পরিবারে সময় দেয়া ইবাদত

মানবসভ্যতায় পরিবার একটি ক্ষুদ্র ইউনিট। কিন্তু অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আল্লাহপাক মানুষকে নির্দেশ প্রদান করেছেন নিজেকে ও পরিবারকে জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাতে। পরিবার প্রধানের কাছে অন্যান্যরা আমানত এবং তাদের ব্যাপারে তাকে জিজ্ঞাবাদ করা হবে। স্বামীকে কর্তৃত্বশীল করা হলেও কুরআনের বর্ণনানুসারে দু’জনের মর্যাদা পরস্পরের বন্ধু ও সহযোগী। হাদিসে বলা হয়েছে স্ত্রী স্বামীর সংসারে দায়িত্বশীল এবং দায়িত্বের ব্যাপারে তাকে জবাবদিহি করতে হবে। আমি এভাবে উপস্থাপন করতে চাই- ‘সংসারে স্বামী যদি হন রাষ্ট্রপতি তাহলে স্ত্রী হবে তার অধীন প্রধানমন্ত্রী; যেখানে উভয়ে পারস্পরিক পরামর্শের ভিত্তিতে সকল কাজ সম্পন্ন করবে। সংসারে বাবা-মা থাকলে এবং সন্তান বড় হলে তাদেরকেও পরামর্শে শরীক করতে হবে’। একটি আদর্শ পরিবারের রূপরেখা এমনই হওয়া দরকার। বিভিন্ন ক্যাটাগরির সদস্যের সমন্বয়ে পরিবার। সেখানে সকলের মর্যাদাকে সমুন্নত রাখতে হবে। বৃদ্ধ বাবা-মা যেমন ভক্তি-শ্রদ্ধা পাওয়ার দাবীদার তেমনি সর্বকনিষ্ঠ সদস্যটি স্নেহ-আদর-ভালোবাসা পাওয়ার হকদার। কারো অধিকার উপেক্ষা করার মতো নয়। রসূলুল্লাহ (সা) সতর্ক করেছেন-‘যারা বড়দের সম্মান ও ছোটদের স্নেহ ...

সব স্বপ্ন পূরণ হয় না

নড়াইল সরকারি কলেজে বদলী হওয়ার পর আমার জীবনে লেখালেখি শুরু। কুষ্টিয়ায় মসজিদ মিশনের সেক্রেটারি থাকাকালীন আমার সম্পাদনায় প্রথম একটি বই প্রকাশিত হয় এবং নড়াইলে তিনটি ও যশোরে একটি প্রকাশিত হয়। সংগঠন মানুষকে যোগ্য করে তুলে। মসজিদ মিশনে দায়িত্ব পালনের ফলেই আমার এ সুযোগ হয়েছিল বলে আমি মনে করি। যে সব সঙ্গী-সাথীকে নিয়ে আমি দায়িত্ব পালন করেছি তার মধ্যে অধ্যক্ষ মু. আব্দুস সাত্তার, অধ্যক্ষ আ ফ ম নাজমুস সালেহীন, এড. সা’দ আহমদ, প্রফেসর আ ব ম মখলেছুর রহমান, প্রফেসর মো. সাইফুল ইসলাম, কাজী জুলফিকার হায়দার, অধ্যাপক ইউসুফ সালেহ আজীজ, মো. নূরুজ্জামান, নড়াইলের মৌলভী আব্দুল মান্নান মল্লিক, আলহাজ্জ মো. লুৎফর রহমান, মো. নূরুল হুদা, আলহাজ্জ নওশের আলী, প্রিন্সিপ্যাল মাওলানা এ বি এম এ রব, ডা. সৈয়দ লিয়াকত হোসেন, সৈয়দ মাহমুদুর রহমান, আলহাজ্জ মো. সিরাজুল ইসলাম. ক্কারী শেখ আব্দুল ওহাব, মো. লুৎফর রহমান লায়েক এবং যশোরের আলহাজ্জ মাওলানা এ টি এম শোয়াঈব, আলহাজ্জ আব্দুল হামিদ মৃধা, শেখ জাফর উদ্দিন কচি প্রমুখ তাঁদের রবের কাছে ফিরে গেছেন। আমি গভীর শ্রদ্ধাভরে তাঁদের স্মরণ করছি ও মাগফিরাত কামনা করছি। আর যাঁরা জীবিত আছেন তাঁদের...

অতীত জাতিসমূহের ধ্বংসাবলী থেকে শিক্ষা

কুরআন আমাদের সম্মুখে অতীত জাতিসমূহের ইতিহাস বর্ণনা করেছে। ইতিহাসের মতো সন-তারিখ উল্লেখ না করে ঘটনা উল্লেখপূর্বক শিক্ষা গ্রহণের জন্য আহবান জানানো হয়েছে। কুরআন আদ্যপ্রান্ত একটি হেদায়াত গ্রন্থ। কুরআনের নিজেরই উল্লেখ : ‘ইহা মানবজাতির জন্য হেদায়াত’ আবার কখনো বলা হয়েছে ‘মুত্তকীদের জন্য হেদায়াত’। অবাধ্য ও অপরাধপ্রবণ জাতির ধ্বংসের কথা উল্লেখ করে আল্লাহ বলেছেন এতে রয়েছে শিক্ষার নিদর্শন, কিন্তু মানুষ খুব কমই শিক্ষা গ্রহণ করে। দু’জন নবীর সাথে তাঁদের জনপদের লোকদের আচরণ ও পরিণতি কুরআন থেকে পড়লাম। হযরত লুত (আ)-এর জাতির ঘটনাবলী রয়েছে সূরা আল আনয়াম ৮৬-৯০, আল আ’রাফ ৮০-৮৪, হুদ ৭৪-৮৩, আল হেজর ৫৮-৭৭, আল আম্বিয়া ৭৪-৭৫, আশ শোয়ারা ১৬০-১৭৩, আন নমল ৫৪-৫৮, আল আনকাবুত ২৮-৩০, ৩৩-৩৫, আস সাফফাত ১৩৩-১৩৮, আয যারিয়াত ৩২-৩৭, আল কামার ৩৩-৩৮, আত তাহরীম ১০। হযরত শোয়াইব (আ)-এর জাতির ঘটনা বর্ণিত হয়েছে সূরা আল আ’রাফ ৮৫-৯৩, হুদ ৮৪-৯৫, আল হেজর ৭৮-৭৯, আশ শোয়ারা ১৭৬-১৮৯, আল আনকাবুত ৩৬-৩৭। আল্লাহপাক অসংখ্য নবী-রসূল প্রেরণ করেছেন। অতীতে বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন জনপদে রসূল পাঠিয়েছেন। মূলত মানুষ যখন সীমালঙ্ঘন করে ও পাপাচারে লিপ্ত হয়...

এবারের কুরবানি

আল্লাহর রাহে যথাসর্বস্য বিলিয়ে দেয়ার প্রতীক হলো কুরবানি। করোনার কারণে সারা বিশ্বে বিপর্যয় নেমে এসেছে। মানুষ আর্থিক ও স্বাস্থ্যঝুঁকিতে পড়ে গেছে। ফলে পশু কুরবানি নিয়ে বিভিন্ন মহল থেকে প্রশ্ন তোলা হচ্ছে। ঈদের দিন নেসাব পরিমাণ সম্পদের মালিককে কুরবানি দেয়া একটি ওয়াজিব ইবাদত। কুরবানির কোনো বিকল্প নেই। কুরবানির অর্থ দুস্থদের মাঝে দান করে দিলে কুরবানি আদায় হবে না। করোনা পরিস্থিতির কারণে অনেকে কুরবানির বিকল্প হিসেবে ঐ অর্থ দুস্থদের মাঝে বিলি করে দেয়ার কথা বলেন। এমন কথাবার্তা ইসলাম বিদ্বেষীদের মুখ থেকেই বেরিয়ে আসে। কোনো ধর্মপ্রাণ মানুষ এমন কথা ভাবতেই পারে না। ইসলামের দু’টি পর্বের সাথে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডেরও যোগসাজস রয়েছে। দেশে কেনাকাটা বাড়ে এবং অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার হয়। কুরবানির চাহিদা মেটানোর জন্য দেশে গড়ে ওঠেছে অনেক খামার। সাধারণত নিম্ন ও মধ্যবিত্ত শ্রেণি এই পেশার সাথে জড়িত আছেন। অগণিত মানুষের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা হয়েছে। নেতিবাচক প্রচারণার কারণে খামারের সাথে সংশ্লিষ্ট অনেকেই দারুণভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবেন। কুরবানির গোশত কুরবানিদাতার সাথে গরীব-মিসকিনদেরও হক রয়েছে। এমন অনেকে আছেন, এই বিশেষ দিন ...

কুরবানির শিক্ষা ৬ সুন্নাতি আবিকুম ইব্রাহিম

কুরআন মজিদে বেশ কিছু নবী-রসূল সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে। তন্মধ্যে হযরত ইব্রাহিম (আ) উল্লেখযোগ্য। তাঁর সম্পর্কে কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে সূরা বাকারা ১২৪-১৩৬, ২৫৮, ২৬০, আলে ইমরান ৬৫০৬৭, আন নেসা ১২৫, আল আনয়াম ৭৪-৯০, আত তাওবা ১১৪, হুদ ৬৯-৭৬, ইউসুফ ৬, ইব্রাহিম ৩৫-৪১, আল হিজর ৫১-৬০, আন নাহল ১২০-১২৩, মারইয়াম ৪১-৪৯, আল আম্বিয়া ৫১-৫৩, আল হাজ্জ ২৬-২৭, আশ শোয়ারা ৬৯-৮৭, আল আনকাবুত ১৬-২৭, ৩১-৩২, আস সাফফাত ৮৩-১১১, সোয়াদ ৪৫-৪৭, আয যোখরুফ ২৬-২৭, আয যারিয়াত ২৪-৩২, আল হাদীদ ২৬, আল মোমতাহেনা ৪। হজ্জের আনুষ্ঠানিকতার মাঝে কুরবানি অন্যতম। মদীনায় হিজরতের পর রসূল (সা) দু’টি উৎসব ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আযহা চালু করেন। ঈদুল আযহায় দুই রাকাত নামাযের পর বড় ইবাদত হলো সমর্থবান ব্যক্তি কর্তৃক আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে পশু কুরবানি করা। হযরত ইব্রাহিম (আ) আল্লাহর নির্দেশক্রমে তাঁর কলিজার টুকরো সন্তান ইসমাইল (আ)-কে কুরবানি করার লক্ষ্যে গলায় ধারালো ছুরি চালালে আল্লাহপাক একটি পশু কুরবানির বিনিময়ে ইসমাইল (আ)-কে বাঁচিয়ে দেন। এটি ছিল এক অভাবনীয় ঘটনা এবং আল্লাহপাক সন্তুষ্ট হয়ে পরবর্তি কালের লোকদের জন্য স্মরণ হিসেবে পশু যবেহকে জারি কর...

কুরবানির মাসালা-মাসায়েল :

কুরবানি সম্পর্কে ইতোপূর্বে কয়েকটি পর্বে লিখেছি। আজকে মাসালা নিয়ে আলোচনা করবো। বলে রাখি, আমি কোনো ফকিহ নই। ফিকাহর কিতাবপত্র পাঠ ও ফকিহদের আলোচনা শুনে ফেসবুক বন্ধুদের অবহিত করি মাত্র। ফিকাহ বিষয়ে মতপার্থক্য রয়েছে বলেই তো চারটি মাজহাবের সৃষ্টি হয়েছে। চারটি মাজহাব ও আহলে হাদিস সবাইকে আমি সত্যাশ্রয়ী মনে করি। আমার নিজস্ব একটি দৃষ্টিভঙ্গি রয়েছে এবং মতপার্থক্যগত বিষয়ে আমি উদার দৃষ্টিভঙ্গি পোষণ করি ও যে কোনো একটি মত গ্রহণের এখতিয়ার রয়েছে বলে মনে করি। আল্লাহপাকের সন্তুষ্টি অর্জনই প্রতিটি ইবাদতের মূল উদ্দেশ্য। কুরবানি সম্পর্কে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমাদের রক্ত ও গোশত আল্লাহর কাছে পৌঁছে না, পৌঁছে তোমাদের তাকওয়া’। ইসমাইল (আ)-এর পরিবর্তে একটি পশু কুরবানির মধ্য দিয়ে আল্লাহ বলেছেন, ‘পরবর্তীকালের লোকদের জন্য দৃষ্টান্ত হিসেবে জারি করে দিলাম’। পিতা ইবরাহিম (আ)-এর চরম আত্মত্যাগের স্মরণই আমাদের এই কুরবানি। গোশত খাওয়া, প্রদর্শনী বা হারাম উপার্জনে কুরবানির প্রশ্নই উঠে না। সূরা কাউছারে আল্লাহ বলেছেন, ‘তোমার প্রভুর উদ্দেশ্যে নামায পড়ো ও কুরবানি করো’। নামায না পড়ে কুরবানি করায় কোনো লাভ হবে কি? এ প্রশ্ন থাকতেই পা...

কুরবানির বিনিময়েই সম্ভব দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ

কুরবানির শিক্ষা-৩ দুনিয়া ও আখিরাত কোনোটাই ইসলাম উপেক্ষা করে না। মুসলমানদের প্রার্থনা : ‘হে আমাদের প্রভু! তুমি আমদের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ দাও’। অবশ্য দুনিয়ার জীবন ক্ষণস্থায়ী, পক্ষান্তরে আখিরাতের জীবন স্থায়ী। বুদ্ধিমান সেই, যে দুনিয়ার জীবনের চেয়ে পরকালকে অগ্রাধিকার দেয়। পক্ষান্তরে নিরেট মুর্খ, বোকা ও হতভাগা সেই যে দুনিয়া অর্জন করতে গিয়ে পরকালকে বিসর্জন দেয়। পরকাল বিসর্জন দেয়া অর্থ, দুনিয়া পেতে হালাল-হারাম ও ন্যায়-অন্যায়ের পার্থক্য ভুলে যাওয়া। দুনিয়া ও আখিরাত আমরা যেটিই পেতে চাই তার জন্য ত্যাগ স্বীকার অবশ্যম্ভাবী। যে ছেলেটি পরীক্ষায় ভালো রেজাল্ট করে কর্মজীবনে সাফল্য অর্জন করেছে; সে ছেলেটির সাফল্যের পেছনে জড়িয়ে আছে অনেক শ্রম ও কষ্ট-সাধনা। যে ব্যবসায়ী আজ সাফল্যের শীর্ষে তার পেছনের ইতিহাস অত সুখকর নয়, রয়েছে অনেক সাধনা ও ত্যাগ-তিতিক্ষা। রাজনীতিক অঙ্গনেও একই কথা। অনেক জেল-জুলুম, নিপীড়ন-নির্যাতন সহ্য করেই তার এই উত্থান। এ অঙ্গনে ত্যাগী কর্মীর মূল্যায়নের কথা খুব জোরেশোরে শোনা যায়। সন্তান জন্ম, লালন-পালন ও সংসারে কষ্টকর ভূমিকা পালনের কারণেই মা’র এতো মর্যাদা। বাড়ির যে বউটির ত্যাগ-কুরবানি য...

সদকা

সদকা করুন। সদকায় আল্লাহর ক্রোধ দূর হয়, গুনাহ মাফ হয় ও বিপদাপদ দূর হয়। বলবেন, টাকা-পয়সা কোথায় পাব? টাকা-পয়সা দান সদকার সাথে আরো নানা উপায়ে সদকার ছওয়াব পাওয়া যায়। ১. ভালো কথা সদকা। ২. স্বামী-স্ত্রীর পরস্পর হাসি-তামাশা সদকা। ৩. সন্তানকে আদর-সোহাগ করা সদকা। ৪. পিতা-মাতার সাথে শ্রদ্ধাভরে কথা বলা সদকা। ৫. পরিবারের ভরণ-পোষণ করা সদকা। ৬. মায়ের কাজে সন্তানের বা স্ত্রীর কাজে স্বামীর সহযোগিতা করা সদকা। ৭. আত্মীয়-স্বজন ও পাড়া-পড়শির খোঁজ-খবর নেয়া সদকা। ৮. অসুস্থ ব্যক্তিকে দেখতে যাওয়া ও সহযোগিতা করা সদকা। ৯. ক্ষুধার্তকে খাদ্যদান ও পিপাসার্তকে পানি দান করা সদকা। ১০. পথিককে পথ দেখিয়ে দেয়া সদকা। ১১. পথ থেকে কষ্টদায়ক জিনিস সরিয়ে ফেলা সদকা। ১২. গাছ লাগানো সদকা। মোটকথা সকল কল্যাণকর কাজই সদকাতুল্য এবং সব কাজেই রয়েছে নেকি। মু’মিনের কল্যাণকর কাজ যা অব্যাহত থাকে তার ছওয়াব মৃত্যুর পরও পেতে থাকবে। কারো অনুপ্রেরণায় কেউ যদি নামায আদায় করে বা কোনো ধরনের নেক কাজ করে তাহলে যে কাজটি সম্পন্ন করছে তার ছওয়াবের সাথে সাথে যার প্রেরণায় সে কাজটি করছে সেও ছওয়াব পেতে থাকবে। আমরা পরস্পরকে ভালো কাজে উদ্বুদ্ধ করে নে...

কুরবানি চিরন্তন

মানবসৃষ্টির সূচনালগ্ন থেকে কুরবানি চলে এসেছে। সূরা মায়েদা ২৭ নং আয়াতে আল্লাহপাক আদম (আ)-এর দুই পুত্র হাবিল ও কাবিলের কুরবানি পেশের কথা বলেছেন। সেখানে একজনের কুরবানি কবুল হওয়ার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। যার কুরবানি কবুল হয়নি সে হিংসার বশবর্তী হয়ে অপর ভাইকে হত্যা করার কথা বলে। জবাবে ভাইটি বলেন, ‘আল্লাহ তায়ালা কেবল মুত্তাকীদের কাছ থেকেই কুরবানি কবুল করেন’। হত্যা করার কথা বললে জবাবে সেই ভাই আরো বলেন, ‘তুমি হত্যার উদ্দেশ্যে হাত বাড়ালেও আমি বাড়াবো না, কারণ আমি আল্লাহকে ভয় করি’। এখানে এটিও উল্লেখ্য, নরহত্যার মত জঘন্য কাজ কোনো মুত্তাকী লোকের দ্বারা সম্ভব নয়। কুরবানির নিয়ম-কানুন পরিবর্তন হলেও আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে কুরবানি মানব ইতিহাসের আদিকাল থেকে চলে আসছে। আমাদের প্রতিবেশি হিন্দুদের মাঝেও বলিদান প্রথা চালু আছে। আমরা এখন যে কুরবানি করি তা আজ থেকে চার হাজার বছর পূর্বে হযরত ইব্রাহিম (আ) কর্তৃক আপন ছেলেকে কুরবানি করার স্মরণ হিসেবে প্রতিকী পশু কুরবানি করা। কুরবানি স্রেফ কোনো উৎসব নয়; কুরবানি হতে হবে আল্লাহর সন্তুষ্টি এবং নিজের মধ্যে আল্লাহর ভয় জাগ্রত করার লক্ষ্যে। এ প্রসঙ্গে সূরা হজ্জ ৩৭ নং আয়াত...

কঠোর ও চরমপন্থা অবলম্বন না করা

হাদিসের পাঠ ০৩.০৭.২০২০ ১. হযরত আবু বুরদাহ তাঁর দাদা আবু মুসা আশয়ারী (রা) থেকে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেন, নবী করীম (সা) বলেছেন, ‘তোমরা সহজ পন্থা অবলম্বন করো, কঠিন পন্থা অবলম্বন করো না এবং মানুষকে শান্তি ও স্বস্তি দাও, মানুষের মধ্যে ঘৃণা ও বিদ্বেষ ছড়িও না’- বুখারি শরিফ ৫৬৮৭। ২. হযরত আয়েশা (রা) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, ‘রসূলুল্লাহ (সা)-কে যখনই দু’টি ব্যাপারে ইখতিয়ার প্রদান করা হয়েছে, তখন তিনি দু’টির মধ্যে যেটি সহজতর ছিল, সেটি গ্রহণ করেছেন, তবে শর্ত হলো, তা যেন গুনাহের কাজ না হয়। তা গুনাহের কাজ হলে তিনি তা হতে সবচেয়ে বেশি দূরে অবস্থান করতেন। নবী করীম (সা) কোনো ব্যাপারে স্বীয় স্বার্থে কখনও প্রতিশোধ নেননি। তবে কোনো লোক যখন আল্লাহর নিষিদ্ধ কাজ করে ফেলতো, তখন আল্লাহর উদ্দেশ্যে সেই লোককে বিধান অনুযায়ী শাস্তি প্রদান করতেন’- বুখারি শরিফ ৫৬৮৯ ফজর বাদে আমাদের বাসায় নিয়মিত হাদিস পাঠ ও সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়। সেখানে আমরা সদস্য চারজন। সাথে সূরা মশকও হয়ে থাকে। উপরের হাদিস দু’টি আজ পাঠ করা হয়। আমার ছোট ছেলে আতিক মাঝে-মধ্যে শেয়ার করে। আজকের বিষয়টি আমি একটু আলোচনা করতে চাই। ইসলাম ফিতরাতের ধর্ম। স্বভা...

সামনে রয়েছে কুরবানি

কুরবানি অর্থ ত্যাগস্বীকার, আর একটি অর্থ নৈকট্যলাভ। পৃথিবীর ইতিহাস অজস্র ত্যাগ ও কুরবানিতে পূর্ণ। কুরবানি নিয়ে ধারাবাহিক লেখার ইচ্ছা রয়েছে। আমার প্রতি অনেকের পরামর্শ ছোট ছোট করে লেখার। তাঁদের যুক্তি, বড় লেখা এখন আর কেউ পড়তে চায় না। কিন্তু আমার যেন তা হয়ে উঠে না। প্রচুর লেখা জমেছে। চার শতাধিক। অনেকটা নেশা হয়ে গেছে। স্বয়ংক্রিয়ভাবে লেখার উপকরণ চলে আসে। পত্র-পত্রিকায় মাঝে-মধ্যে ছাপা হয়। সাধারণত টাকা-পয়সা পাওয়া যায় না। গতকাল হঠাৎ করে একজন ফোন দিয়ে জানালেন, ‘স্যার, আমরা আপনার একটি লেখা ছাপিয়েছি, ১০০০/- টাকা পাঠাব এবং বিকাশ নং দিন’। বললাম, যে নম্বরে ফোন দিয়েছেন সেটিই আমার বিকাশ নম্বর এবং তৎক্ষণাত টাকাটা চলে আসলো। খুব ভালো লাগলো। বলে রাখি, আমার কোনো লেখা কোথাও প্রকাশ করতে (পত্র-পত্রিকা, ফেসবুক বা যে কোনো ক্ষেত্রে) অনুমতির প্রয়োজন নেই বা আমার নাম উল্লেখ বা কৃতজ্ঞতা প্রকাশেরও দরকার নেই। আল্লাহর অধিক বান্দার কাছে পৌঁছুক, এতেই আমি সন্তুষ্ট। আমার লেখার উপজীব্য ইসলাম। লেখালেখি আমার পক্ষে দাওয়াতের একটি ক্ষুদ্র প্রয়াস। আমাদের এসব ছিটেফোটা আমল আল্লাহপাক যদি দয়া করে কবুল করেন, তাহলে সেটিই হবে বড় প্রাপ...

বান্দার জন্য আল্লাহর ক্ষমা অবারিত

চতুর্দিকে শুধুই মৃত্যু। আমরা যারা ফেসবুকে একটু একটিভ, তারা প্রতিনিয়তই দেখছি। ফেসবুক খুললেই আমরা পড়ছি ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজেউন’ (আমরা আল্লাহরই জন্য এবং তাঁরই কাছে ফিরে যাব)। পরিচিত-অপরিচিত সবারই মাগফিরাত কামনা করছি। করোনায় মৃত্যু, লঞ্চডুবিতে মৃত্যু, নানাভাবে মৃত্যু এ যেন মৃত্যুর মিছিল। এ মিছিলে আমরাও যাত্রী। কিন্তু আমরা কি তা স্মরণে আনতে পারছি? আমরা আল্লাহর কাছে ফিরে যাব, কিন্তু সঙ্গে কি কিছু নিতে পারছি? আমরা সম্পদ উপার্জন করছি, শুধু কি আমাদের জন্য? না, আমরা উপার্জন করছি আমাদের পিতা-মাতা, স্বামী-স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, ভাই-বোন, আত্মীয়-স্বজন ও আরো কত জনের জন্য। সব ঠিক আছে এবং সবই ছওয়াবের। এই উপার্জনের মধ্যে যদি হারাম কিছু থাকে, যাদের জন্য করছি তাদের কেউ কি দায়িত্ব নেবে? না, আল্লাহর সম্মুখে আমাকেই জবাবদিহি করতে হবে। করোনা চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিচ্ছে, নিজে ঝুঁকি নিয়ে কেউ কারো জন্য এগিয়ে আসছে না। মারা গেলে ঠিকমত গোসল, জানাযা ও দাফন-কাফনও হচ্ছে না। এমন কী নিজ এলাকায় দাফন করতেও নানা বিড়ম্বনা। আল্লাহ তাঁর বান্দাদের জন্য অত্যন্ত দয়ার্দ। তাঁর দয়া-অনুগ্রহ অপরিসীম। এই করোনা আল্ল...