মাগরিবের পূর্বে মসজিদ উত তাকওয়ায় মসজিদের সম্মানিত ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল হাফিজ মারুফ মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে নিম্নোক্ত নসিহতপূর্ণ বক্তব্য রাখেন-
পবিত্র রমজান মাস ছিল আমাদের জন্য প্রশিক্ষণের মাস যাতে বাকি এগারোটা মাস এই শিক্ষা ধারণ করে নিজের পরিশুদ্ধির পাশাপাশি মানুষের প্রতি দয়ার্দ্র আচরণ করতে পারি। রমজান মাসে মানুষ প্রচুর দান-সাদাকা করে। কেউ প্রকাশ্যে করে আবার কেউ গোপনে করে। প্রকাশ্যে ভালো কাজ করলে সেটা দেখে অন্যরা উদ্বুদ্ধ হলে বাড়তি লাভ। সবই নির্ভর করে নিয়তের উপর। তিনি তাঁর নিজের অভিজ্ঞতা উল্লেখ করে বলেন, অনেকে এমন ছিলেন যাঁরা গোপনে তাঁর কাছে জানতে চেয়েছেন কোনো অসহায় লোকজন আছেন কি না যাদেরকে সাহায্য করা দরকার। অনেক মানুষ গোপনে খাবারের প্যাকেট বিতরণ করেছেন।
ইমাম সাহেব বলেন, মানুষের প্রয়োজন সারা বছরই থাকে। আমরা রমজানকেন্দ্রিক না হয়ে সারা বছরই মানুষের পাশে দাঁড়াই। সাধারণ দান সবসময়ই করা যায়। এছাড়া জাকাতের অর্থ অগ্রিম দেয়া যায়। প্রয়োজন মাফিক আপনি জাকাত প্রদান করে সেটি লিখে রাখুন এবং রমজান মাসে জাকাত হিসাব করে সেটি বাদ দিয়ে বাকিটা দিতে পারেন। তাতে জাকাত আদায়ে কোনো সমস্যা হবে না।
আমি একটি অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে চাই-
আজ তাকওয়া মসজিদে মাগরিব ও এশার নামাজে আমি লক্ষ করি একজন বৃদ্ধা মহিলা অল্প কিছু শাক ও লেবু নিয়ে বসে আছে। বিক্রি নেই। ধানমন্ডির মতো ধনাঢ্য পরিবেশে তার শাক ও লেবু বিক্রি স্বাভাবিক নয়। আমার কাছে ভালো লাগলো যে সে মানুষের কাছে হাত না পেতে পরিশ্রম করে কিছু আয় করতে চাচ্ছে। এশার নামাজ পড়ে বাসায় ফেরার সময় আমার বেয়াইসহ তার সামনে দাঁড়িয়ে খোঁজ খবর নিলাম। মহিলার মুখে হাসি এবং কৃতজ্ঞতা বোধ রয়েছে। ১০০ টাকা দিয়ে পরামর্শ দিলাম, যে বস্তিতে বাস করে সেখানে কম দামে বিক্রি করার যাতে তার পুঁজিটা ফেরত আসে। আমার ধারণা একজন ভিক্ষুককে দেয়ার চেয়ে এমন দান সওয়াবের বিবেচনায় কম হবে না। এদের কাছ থেকে দ্রব্য সামগ্রী ক্রয় করলেও সওয়াব রয়েছে। মানুষের কল্যাণ হয় এমন সকল কর্মে রয়েছে সওয়াব এবং অকল্যাণ হয় এমন সকল কাজে রয়েছে গুনাহ। আল্লাহ তায়ালা আমাদের গুনাহ পরিহার করে চলার তৌফিক দান করুন। আমিন। ১৮.০৫.২০২২
Comments
Post a Comment