‘অবশ্য কষ্টের সাথে আরাম রয়েছে; নিশ্চয়ই কষ্টের সাথে আছে আরাম; অতপর যখনই তুমি অবসর পাবে তখনই তুমি (ইবাদতের) পরিশ্রমে লেগে যাও- এবং তুমি তোমার মালিকের অভিমুখী হও’- সূরা আলাম নাশরাহ ৫-৮
দাওয়াতের সূচনালগ্নে নবী মুহাম্মদ (সা)-এর ওপর দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-মুসিবত যখন তাঁকে বড় পেরেশান করে দিচ্ছিলো ঠিক সে সময়ে সান্ত্বনা হিসেবে এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়। আমাদের মনে রাখতে হবে, কুরআনের কোনো সূরা বা আয়াত কোনো পেক্ষাপটে নাযিল হলেও তার আবেদন চিরন্তন ও সার্বজনীন। রসুল (সা)-কে উদ্দেশ্য করে বলা হলেও সব মানুষের জন্য এ সান্ত্বনা সমভাবে প্রযোজ্য।
কষ্টের সাথে আরাম বা দুঃখের সাথে সুখ দু’বার এসেছে এবং কষ্টের পরে আরাম না বলে বলা হয়েছে কষ্টের সাথে আরাম। কষ্ট ও আরাম পাশাপাশি জড়িয়ে আছে। অর্থাৎ দুঃখের পরে সুখ দূরে নয়। বান্দাহ যেন দুঃখ-কষ্ট দেখে হতাশ না হয়ে পড়ে।
দুঃখ-কষ্ট বা বিপদ-মুসিবত যা কিছু তা দেয়ার মালিক আল্লাহ এবং দূর করার মালিকও তিনি। এসবই আল্লাহর পক্ষ থেকে পরীক্ষা। তাই পরম ধৈর্যাবলম্বন করে আল্লাহর ওপর নির্ভরশীল হতে হবে এবং তাঁরই কাছে সাহায্য প্রার্থনা করতে হবে।
বর্তমান বিশ্ব করোনা মহামারিতে পর্যদস্তু। সকল মানুষই ভয়-ভীতির মধ্যে রয়েছে। চাকুরি, ব্যবসা-বাণিজ্য ও মৃত্যুভয় মানুষকে বড় অসহায় করে তুলেছে। এটি কোনো স্থায়ী বিষয় নয়। সহসা দূর হয়ে যাবে ইনশা-আল্লাহ। মানুষ তার অভীষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য নিরলস প্রচেষ্টা চালাবে এবং তৎসহ আল্লাহর সাহায্য কামনা করবে।
বান্দাকে সাহায্য দানে আল্লাহ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী নয় আল্লাহ তাঁর সকল বান্দাকে সাহায্য করেন। তাঁর কথা-‘যে দুনিয়ার ছওয়াবের আশায় কাজ করে তাকে আমি দুনিয়া থেকে দেই’। বিশ্বাসী বান্দাহ দুনিয়া ও আখিরাতের উদ্দেশ্যে কাজ করে এবং সে সেভাবেই পায়।
মানুষ বিপদ-মুসিবতে নিপতিত হলে সাহায্যপ্রার্থী হয়। এখানে আল্লাহপাক তাঁর নবীকে নছিয়ত করেছেন ‘যখনই অবসর পাও ইবাদতের কঠিন শ্রমে নিজেকে নিয়োজিত করো’। আমাদেরও উচিৎ দুঃখ-কষ্ট থেকে উত্তরণের জন্য আল্লাহকে বেশি বেশি ডাকা অর্থাৎ নফল নামায-রোযায় নিজেকে নিয়োজিত করা। আল্লাহমুখী হওয়া অর্থাৎ সর্বক্ষণ আল্লাহকে স্মরণ করা তাঁরই কাছে তাওবা-ইস্তেগফার করা। সব সময় আমাদের অন্তরে যেন জাগে- প্রভু হে! তুমি আমাদের ক্ষমা করো। ১৩.০৬.২০২০
ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়ে ব্যক্তিগত ব্লগ
Comments
Post a Comment