Skip to main content

Posts

Showing posts from June, 2020

ধর্মনিরপেক্ষতা

ধর্মনিরপেক্ষতা আমাদের অন্যতম রাষ্ট্রীয় মূলনীতি। তেমনি রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, গণতন্ত্র এবং সমাজতন্ত্রও রাষ্ট্রীয় মূলনীতি। এখানে আমি কোনো তাত্ত্বিক আলোচনা বা বিতর্কে যাচ্ছি না। এ সম্পর্কে সমাজের মানুষের সাধারণ বিশ্বাস ও ধারণা উল্লেখ করতে চাই। রাষ্ট্রধর্ম ইসলাম, এর অর্থ এমন নয় যে, রাষ্ট্র পরিচালিত হবে ইসলামের ভিত্তিতে। শতকরা নব্বই ভাগ মানুষের ধর্ম হিসেবে ইসলামকে স্বীকৃতি দেয়া হয়েছে মাত্র। ধর্মনিরপেক্ষতা বলতে যারা এর সমর্থক তারা জোর দিয়েই বলেন, ধর্মনিরপেক্ষতা অর্থ ধর্মহীনতা নয়; বরং রাষ্ট্র বিশেষ কোনো ধর্ম বা ধর্মের অনুসারীকে আনুকল্য দেবে না, চাকুরি বা বিচারের ক্ষেত্রে ধর্ম, বর্ণ, লিঙ্গ নির্বিশেষে সবাই সমান সুযোগ-সুবিধা লাভ করবে। তাদের শ্লোগান ‘ধর্ম যার যার রাষ্ট্র সবার’। সমাজতন্ত্রে বিশ্বাসীরা এখন আর কার্ল মার্কস প্রদত্ত ব্যাখ্যা ‘ধর্ম আফিম’ বিশ্বাস করে না এবং সমাজতন্ত্র বলতে সম্পদ উৎপাদন ও বন্টন ক্ষেত্রে সামাজিক সুবিচারনীতির কথা বলে থাকেন। বাংলাদেশে শতকরা নব্বই ভাগ মানুষ মুসলিম হলেও ইসলামের সৌন্দর্য থেকে আমরা বঞ্চিত। ইসলামের সৌন্দর্য বলতে, ইসলাম যে নৈতিক চরিত্রের কথা বলে আমি সেটিকেই বুঝাচ্ছ...

মু’মিন জীবনের লক্ষ্য

একজন ব্যক্তি প্রকাশ্যে কালিমা তাইয়্যেবার ঘোষণা দিয়ে বিশ্বাসীদের দলভুক্ত হন। আবার মুসলিম পিতা-মাতার ঘরে জন্মগ্রহণকারী যে কেউ প্রকাশ্যে অস্বীকৃতি না জানালে সেও বিশ্বাসীদের অন্তর্ভুক্ত। সমাজ তার সাথে একজন মু’মিন হিসেবেই আচরণ করে। বিস্তারিতভাবে বলতে গেলে কতকগুলো মৌলিক বিষয়ে (আল্লাহ, ফেরেশতা, কিতাব, রসূল, পরকাল ও তকদির) বিশ্বাস স্থাপন করাকেই ঈমান বলে এবং যারা বিশ্বাস করে তারাই মু’মিন। মানুষের জীবনের দু’টি দিক। এক. দুনিয়ার জীবন, দুই. পরকালের জীবন। মু’মিনের জন্য দু’টি জীবনই গুরুত্বপূর্ণ, যদিও দুনিয়ার জীবনটা আখিরাতের তুলনায় খুবই ক্ষণস্থায়ী। পক্ষান্তরে আখিরাতের জীবনটা স্থায়ী এবং সেখানে লাভ করবে, হয় অসংখ্য নেয়ামতেভরা জান্নাত, নয়তো সীমাহীন দুঃখ-কষ্টেভরা জাহান্নাম। আল্লাহপাক নিজেই তাঁর কাছে চাওয়ার ক্ষেত্রে তাঁর বান্দাদের শিখিয়ে দিয়েছেন, ‘হে আমাদের প্রভু! তুমি আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ দাও’। যদিও মু’মিন দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করে কিন্তু অস্থায়ী দুনিয়ার তুলনায় স্থায়ী আখিরাতই তার জীবনের মূল লক্ষ্য। আর বুদ্ধিমান মাত্র সেটিই চাইবে। নবুয়ত লাভের পর রসূল (সা)-এর দাওয়াতের মূল বিষয় ছিল কালিম...

প্রিয়তম নবী (সা)-এর মিশন

প্রথম মানুষ হযরত আদম (আ)-এর সৃষ্টি প্রসঙ্গে আল্লাহপাক ফেরেশতাদের কাছে তাঁর পরিকল্পনা পেশ করেন। আল্লাহর বর্ণনাটি এমন, ‘যখন তোমার রব ফেরেশতাদের বললেন, আমি পৃথিবীতে আমার খলিফা বানাতে চাই; তারা বললো, তুমি কি সেখানে এমন কাউকে খলিফা বানাতে চাও যে সেখানে বিপর্যয় সৃষ্টি করবে এবং রক্তপাত করবে, আমরাই তো তোমার প্রশংসা সহকারে তাসবিহ পড়ছি এবং তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি; তিনি বললেন, আমি যা জানি তোমরা তা জানো না’- সূরা বাকারা ৩০। এখানে মানুষের সাথে অন্যান্য সৃষ্টির পার্থক্য উপলব্ধি করা যায়। সকল সৃষ্টির ধর্ম ইসলাম এবং তারা আল্লাহর দেয়া নিয়মের অধীন ও সর্বক্ষণ তাঁরই প্রশংসা করছে। খলিফা (প্রতিনিধি) শব্দ থেকে বোঝা যায় মানুষের স্বাধীন সত্তা রয়েছে এবং আল্লাহর হুকুম মানা ও অমান্য করার ক্ষমতা তাকে দেয়া হয়েছে। আবার প্রতিনিধি হিসেবে নিজেকে আল্লাহর হুকুম পালনের মধ্যে সীমাবদ্ধ না রেখে সবাই যাতে মানে তেমন একটি পরিবেশ সৃষ্টি করাও তার দায়িত্ব। আল্লাহপাক আদম (আ)-কে মাটি থেকে সৃষ্টি করে নিজের পক্ষ থেকে রূহ ফুঁকে দেন এবং সকল সৃষ্টির মাঝে মানুষের সম্মান ও মর্যাদা সর্বোচ্চ প্রমাণ করার লক্ষ্যে ফেরেশতাদেরকে সেজদা করার...

সাম্প্রদায়িকতা

এই শব্দটি যেন ইসলামের সমার্থক হয়ে পড়েছে। কেউ যদি ইসলামে বিশ^াস করে ও সে অনুযায়ী জীবনযাপন করে এবং একটু অগ্রসর হয়ে ইসলামের প্রচার করে ও প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন দেখে তখনই সে সাম্প্রদায়িক ব্যক্তি হিসেবে একটি পরিচিতি লাভ করে। পক্ষান্তরে ইসলাম মানে না ও মাঝে মাঝে ইসলামের আচার-অনুষ্ঠান ও মূল্যবোধ সম্পর্কে একটু আধটু বিরূপ কথাবার্তা বলে বা সমালোচনা করে সে পরিচিতি পায় অসাম্প্রদায়িক চেতনার মানুষ হিসেবে। আবার অনেক সময় বলা হয় Progressive বা প্রগতিশীল চিন্তা-চেতনার অধিকারী। সাম্প্রদায়িকতা সাধারণত ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে তুলে ধরা হয়। যেমন, আমাদের উপমহাদেশে দু’টি প্রধান সম্প্রদায় হিন্দু ও মুসলিম এবং এদের পারস্পরিক দ্বন্দ্ব-সংগ্রাম ও মারামারি-হানাহানিকে সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা হিসেবে উল্লেখ করা হয়। সাম্প্রদায়িকতা কি কেবল ধর্মীয়? আমি বলবো, না। সাম্প্রদায়িকতা একটি গোষ্ঠী ও শ্রেণিচেতনা। একটি নির্দিষ্ট সীমা পর্যন্ত দোষের কিছু নেই। নিজ গোষ্ঠীর কল্যাণ সাধন, বিপদাপদে এগিয়ে আসা ও পরস্পরকে সহযোগিতা সম্ভব হয় গোষ্ঠী ও শ্রেণি চেতনার কারণে। যেমন, শিক্ষক সম্প্রদায়, যুব সম্প্রদায়, নারী সম্প্রদায়, কৃষক সম্প্রদায়, শ্রমিক সম্প্রদ...

করোনায় আক্রান্ত মৃত ব্যক্তি ক্ষমাপ্রাপ্ত হয়েই তার রবের কাছে পৌঁছবে

করোনা আল্লাহর সৃষ্ট এক অতি ক্ষুদ্র রোগজীবাণু। সে আল্লাহর দেয়া নিয়মই অনুসরণ করে। আবার করোনা থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহর দেয়া নিয়মই আমাদের অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহপাক তাঁর সীমালঙ্ঘনকারী বান্দাদেরকে ফিরে আসার জন্য সুদূর অতীত থেকে নানাভাবে বালা-মুসিবত দিয়ে আসছেন। আমাদের জন্য জ্ঞানের নির্ভুল উৎস হলো আল্লাহর সর্বশেষ ও অবিকৃত কিতাব আল কুরআন। অতীত যুগের মানুষের বিভিন্ন ধরনের পাপাচার যেমন লুত (আ)-এর জাতির সমকামিতা, শোয়াইব (আ)-এর জাতির মাপে-ওজনে কম-বেশি করার অপরাধে শাস্তি দানের কথা আল্লাহ কুরআনে উল্লেখ করেছেন। আবার শাসকগোষ্ঠীর সতর্কতার জন্য স্বৈরশাসক নমরুদ ও ফিরাউনের চরম জুলুম-নির্যাতনের পরিণতিও অবহিত করেছেন। এছাড়াও শিল্প-সাহিত্য ও নানাভাবে উন্নত ও গর্বিত বিভিন্ন জাতিগোষ্ঠীর অহমিকা ও আল্লাহর নাফরমানির ফলশ্রুতিতে তাদেরকে (আদ ও সামুদ) সমূলে ধ্বংস করার কথা উল্লেখ করে মানবসমাজকে সতর্ক করেছেন। এবারে করোনার আক্রমণ সমগ্র বিশ্বজুড়ে। বলা যায় কেউ মুক্ত নয়। ধনী-দরিদ্র নয়, শিক্ষিত-অশিক্ষিত নয়,সবাই সমভাবে বিপর্যস্ত। পারমানবিক শক্তিধর এবং যাদের ইশারায় যখন-তখন দেশে দেশে যুদ্ধ-বিগ্রহ ও নির্মম হত্যাযজ্ঞ সং...

ছওয়াব নেই কিসে?

বাসায় জামাতের সাথে ফজর পড়ে সাধারণত আধা ঘন্টা হাঁটি। এতক্ষণ নামায পড়লাম, কয়েকটি হাদিস পড়া হলো, কুরআনের মশক হলো, তারপর হাঁটাহাঁটি। আধাঘন্টা সময় ব্যয় হলো। এই সময়টাতে কুরআন তেলাওয়াত বা ইসলামী সাহিত্য পাঠ করা যেত। তাতে প্রচুর নেকির কথা আমাদের জানা আছে। কিন্তু সকালে হাঁটায় ছওয়াব আছে তাতো জানা নেই। হাঁটতে হাঁটতে চিন্তা করলাম। কেন ছওয়াব হবে না। মুসলমানের কোনো কাজ তো আর ইবাদতের বাইরে নয়, যে ইবাদতের জন্য আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টি করেছেন। স্বাস্থ্য আল্লাহপাকের দেয়া এক বড় নেয়ামত। আমাদের ইবাদত-বন্দেগী সবকিছু নির্ভর করে সুস্থতার ওপর। বান্দাকে সুস্থ রাখার দায়িত্ব কি একান্তই আল্লাহর, না বান্দাহ হিসেবে আমাদেরও দায়িত্ব আছে। সুস্থ থাকার জন্য শারীরিক শ্রম অবশ্যম্ভাবী। ওযুসহ পাঁচ ওয়াক্ত নামায সুস্থতার বড় নেয়ামক। আল্লাহপাক ইহসানকারীকে ভালোবাসেন। আল্লাহর বান্দাদের সাথে ইহসান করার আগে নিজের প্রতি করাটাই তো ইসলামের দাবী। সকালে হাঁটা যেহেতু সুস্বাস্থ্যের জন্য জরুরি তাই আমার বিশ্বাস, সকালে হাঁটা/শারীরিক পরিশ্রমের মধ্যে রয়েছে প্রভূত ছওয়াব। বাসায় আমরা কয়েকজন থাকি। রান্নাবান্না সাধারণত মেয়েরাই করে থাকেন। সেখানে সন্ত...

আসুন, আল্লাহর কৃতজ্ঞ বান্দাহ হই

আল্লাহপাকের অসংখ্য রহমতে আমরা আবৃত হয়ে আছি। শুধু একটু উপলব্ধি দরকার। হয়তো ভাবছেন, আপনার ঢাকা শহরে কোনো বাড়ি নেই বা চেষ্টা করেও আমেরিকা, কানাডা বা অস্ট্রেলিয়ায় পাড়ি জমাতে পারছেন না বা হন্যে হয়ে পছন্দ মত একটি চাকুরি যোগাড় করতে পারছেন না বা বিয়ের বয়স হয়েছে বিয়ে করতে পারছেন না; এমন হাজারো নেই-এর কারণে আপনি অতৃপ্তিতে ভুগছেন বা হতাশ হয়ে পড়েছেন বা আল্লাহর প্রতি আস্থা হারিয়ে ফেলেছেন। আচ্ছা, নেই-এর পাশাপাশি আপনার কী আছে এবারে একটু ভাবুন তো। দেখবেন, আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করে শেষ করতে পারবেন না। আল্লাহপাকের সীমাহীন অনুগ্রহ সবার জীবনেই রয়েছে, শুধু একটু উদার দৃষ্টিতে খেয়াল করতে হবে। বিষয়টি বোঝার স্বার্থে আমি আমার জীবন থেকেই একটু দেখি। ১. আমি আল্লাহপাকের এমন এক বান্দাহ যাকে দয়া করে আল্লাহ মুসলিম পিতা-মাতার ঘরে জন্ম দিয়েছেন, ফলে ইসলামকে জানা, বোঝা ও মানা আমার জন্য সহজ হয়েছে। মুসলিম ঘরে জন্ম লাভের পরও এমন অনেক হতভাগা রয়েছে যারা আল্লাহর দেয়া হেদায়াতকে মূল্য না দিয়ে তাঁর নাফরমানি করে যাচ্ছে। আল্লাহ অনুগ্রহ করে আমাকে তাদের দলভুক্ত না করে তাঁর হেদায়াতপ্রাপ্ত বান্দাদের অন্তর্ভুক্ত করেছেন। একজন মানুষ হিসেব...

মৃত্যুভয় অমূলক

মৃত্যু অনিবার্য। এড়িয়ে চলার কোনো সুযোগ নেই। যাদের প্রাণ আছে এমন সকলকেই মৃত্যুর স্বাদ গ্রহণ করতে হবে। মৃত্যু নিয়ে আস্তিক-নাস্তিক কারো মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই। সন্দেহ-অবিশ্বাস রয়েছে মৃত্যু পরবর্তী জীবন নিয়ে। নিরেট নাস্তিক ছাড়া মৃত্যু পরবর্তী জীবন সম্পর্কে সকলেরই কোনো না কোনোভাবে ধারণা বা বিশ্বাস রয়েছে। ইসলামের দৃষ্টিতে মৃত্যু দুনিয়ার জীবনের সমাপ্তি মাত্র এবং এক অনন্তকালের যাত্রা। কিয়ামত সংঘটন, বিচার অনুষ্ঠান এবং জান্নাত-জাহান্নামের ধারণা আমাদের বিশ্বাসেরই অংশ। ইসলামে যেসব মৌলিক বিশ্বাসের কথা বলা হয়েছে তন্মধ্যে তকদির অন্যতম। তকদিরের বিষয়টি আমাদের কাছে গোপন রয়েছে। মানুষ আল্লাহ তায়ালার প্রতিনিধি। প্রতিনিধি হিসেবে কার্যসম্পাদনে তাকে ক্ষমতা দেয়া হয়েছে। কিন্তু তার চূড়ান্ত রূপ লাভ করবে আল্লাহর অনুমোদনের পর। দুনিয়াটাকে আল্লাহপাক লোভনীয় করে সৃষ্টি করেছেন। এর প্রতি মায়া-মুহাব্বত প্রকৃতিজাত। দুনিয়ার আরাম-আয়েস, সুখ-শান্তি ভোগ-ব্যবহারে ইসলামে কোনো বাধা নেই, তবে একটি সীমা নির্ধারণ করে দেয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে যারা অবস্থান করবে অর্থাৎ আল্লাহর অনুগত হয়ে জীবন-যাপন করবে তাদের জন্য রয়েছে মৃত্যু...

করোনা কি আমাদেরকেই খুঁজছে?

আল্লাহর সৃষ্ট এক অতি ক্ষুদ্র জীবাণু করোনার ধ্বংসলীলা অব্যাহত রয়েছে। বিশ্বে আক্রান্ত কোটি ছুঁই ছুঁই করছে এবং প্রতিদিন লক্ষাধিক আক্রান্ত হচ্ছে। নিহত প্রায় সাড়ে চার লাখ। থামার কোনো লক্ষণ নেই। মানবজাতির সকল গর্ব ও অহঙ্কার ধুলোয় মিশে গেছে। পারমানবিক বোমা সব নিষ্ক্রীয় রয়েছে। মানবকল্যাণে ঐ সব মারণাস্ত্রের কোনো ভূমিকা নেই। করোনা নিয়ে গবেষণার কোনো অন্ত নেই। আমাদের সোজা-সাপটা হিসাব, সবই আল্লাহর হুকুম। বিপদাপদ সবই আসে তাঁর পক্ষ থেকে (সূরা তাগাবুন) এবং আসে আমাদের কর্মফল হিসেবে। অতীতেও মানুষ যখন সীমালংঘন করেছিল এবং পৃথিবীতে জুলুম-নির্যাতনের প্রসার ঘটিয়ে মানুষের জীবনটাকে দূর্বিসহ করে তুলেছিল তখন আল্লাহপাক তাদেরকে সতর্ক করার জন্য নানাবিধ বিপদ-মুসিবতে নিমজ্জিত করেছিলেন। প্রিয় নবী (সা) বলেছেন, যমীনে অশ্লীলতার প্রসার ঘটলে সে জনপদে আল্লাহপাক বালা-মুসিবত নাযিল করেন। তাতে বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবাই ক্ষতিগ্রস্ত হন এবং কিয়ামতের দিন ভিন্ন ভিন্ন আমল নিয়ে সবাই উত্থিত হবেন। বর্তমান বিশ্বে জুলুম-নির্যাতন এবং নগ্নতা-অশ্লীলতার সয়লাব বয়ে চলেছে। আল্লাহর পক্ষ থেকে সতর্কীকরণ অবশ্যম্ভাবী হয়ে পড়েছিল। চীনের উহান শহরে করোন...

করোনা বয়ে এনেছে মানুষের জন্য হেদায়াত

মানুষ গোমরাহীর মধ্যে ডুবে থাকবে এবং দেশে দেশে চলবে সীমাহীন জুলুম-নির্যাতন ও বয়ে চলবে নানাবিধ পাপাচার তা আল্লাহপাকের কাম্য নয়। তাইতো গোমরাহীর চরম পর্যায়ে মানুষকে পথ প্রদর্শনের জন্য তিনি যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রসুল পাঠিয়েছেন। মুহাম্মদ (সা)-এর মাধ্যমে নবুয়তের ধারা সমাপ্ত করে তাঁর কাছে প্রেরিত শিক্ষা কিয়ামত পর্যন্ত অবিকৃত করে রেখেছেন। পৃথিবীতে কোনো ধর্মগ্রন্থ অবিকৃত নেই বা সেটি সংরক্ষণের কোনো ব্যবস্থাও আল্লাহ রাখেননি। অতীতে যে সব ভাষায় কিতাব নাযিল হয়েছে তা সবই মৃত, কোনো ধর্মগ্রন্থের হাফেজ নেই বা সেই সব ভাষায় কেউ কথাও বলে না। অথচ কুরআন জীবন্ত। সূচনালগ্ন থেকে অসংখ্য হাফেজে কুরআন মুখস্ত করে রাখার সাথে ঘরে ঘরে কুরআন রয়েছে এবং সকল ভাষায় কুরআন অনূদিত হয়ে এর শিক্ষা ছড়িয়ে পড়েছে। কুরআনের ভাষা আল্লাহপাক সহজ করে দিয়েছেন। মাতৃভাষা না হওয়া সত্ত্বেও একজন অশিক্ষিত মানুষও মাত্র এক মাসের চেষ্টায় কুরআন তেলাওয়াত (Reading) করতে সক্ষম হয়। এটি কুরআনের এক অলৌকিক মুজেজা। আর কুরআনের মত বিশাল একটি গ্রন্থ ২/১ জন নয় লক্ষ লক্ষ আল্লাহর বান্দার মুখস্ত রাখা প্রমাণ করে এটি সাধারণ কোনো কিতাব নয়, এটি মহাপরাক্রমশালী ও সুব...

আল্লাহর জিজ্ঞাসা- ‘তার ধন-সম্পদ কোন্ কাজে আসবে যখন সে ধ্বংস হয়ে যাবে?’- সূরা আল লাইল ১১

মানুষ ধন-সম্পদের মায়ায় বড় কাতর। যার যত বেশি আছে সে তত চায়। এমন কি কবরে পৌঁছার আগ পর্যন্ত (সূরা তাকাসুর) সে চায়। রসুলুল্লাহ (সা) কত সুন্দরভাবেই না বলেছেন। মানব সন্তানকে এক উপত্যকা পরিমাণ স্বর্ণ দিলে সে আর একটি চায়। মাটি ছাড়া কোনো কিছু তাকে তৃপ্ত করতে পারে না। লিও টলস্টয়ের একটি গল্প পড়েছিলাম-একজন মানুষের কতটুকু জমির প্রয়োজন? লোকটিকে বলা হয়েছিল, সূর্যাস্ত পর্যন্ত যতটুকু আয়ত্ত করতে পারবে ততটুক তাকে দেয়া হবে। যত সামনে এগোয় ততই তার আকাঙ্খা বেড়ে যায়। সূর্য গড়িয়ে পড়লে সে সম্বিত ফিরে পায় এবং ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে শেষ পর্যন্ত ফিরে এসে প্রাণ হারায়। তাকে তখন সাড়ে তিন হাত মাটির নীচে দাফন করা হয়। এই সাড়ে তিন হাত জমিই তার প্রয়োজন। গল্পের সার কথা। সারা বিশ্বকে আল্লাহপাক তাঁর এক অতি ক্ষুদ্র জীবাণু দ্বারা নাড়া দিয়েছেন। মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েছে। মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। মৃত্যুহার খুব বেশি না হলেও মানুষের অন্তরে আল্লাহপাক ভয় ঢুকিয়ে দিয়েছেন। সমগ্র বিশ্ব স্থবির হয়ে পড়েছে। করোনা আক্রান্তকে সবাই ভয় পাচ্ছে। অনেক সম্পদ, মান-ইজ্জত-সম্মান, সন্তান-সন্ততি থাকা সত্ত্বেও বেওয়ারিশ হিসেবে দাফনের ঘট...

টেনশনমুক্ত জীবন

সমস্যাসঙ্কুল এই দুনিয়ায় আমরা চাইলেই কি টেনশন মুক্ত থাকতে পারি? এ প্রশ্ন সবারই। আমাদের রয়েছে রোগ-শোক, আছে রুটি-রুজির চিন্তা, সন্তানের ভবিষ্যৎ নিয়ে উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা, বার্ধক্য বয়সে নিজেকে নিয়ে ভাবনা-চিন্তা, জীবনে সাধিত অনেক ত্রুটি-বিচ্যুতি-গুনাহ নিয়ে চিন্তা, মৃত্যুপরবর্তী জীবনে শাস্তি নিয়ে ভাবনা, এমন হাজারো সমস্যা সব সময় আমাদের মনের কোনে উঁকি-ঝুঁকি মারে। একজন ছাত্রের পরীক্ষায় ভালো ফলাফল নিয়ে রয়েছে উদ্বেগ, ছাত্রজীবন শেষে কর্মসংস্থানের চিন্তা, যুবক-যুবতির বিয়ে-সাদী নিয়ে ভাবনা, স্বামী-স্ত্রী, পিতা-মাতার সাথে সন্তান-সন্ততির সম্পর্ক, ভাই-বোনদের পারস্পরিক সম্পর্ক, অফিসে বস ও অধীনস্থদের সম্পর্ক-এই পৃথিবীতে কতো যে সমস্যা তা গুণে শেষ করা যাবে না এবং এ সকল বিষয়ই আমাদেরকে টেনশনে ফেলে দেয়। অথচ এই টেনশন আমাদের শরীর ও মনের ওপর দারুণ বিরূপ প্রভাব ফেলে। আজকাল হার্ট এ্যাটাক ও ব্রেনস্ট্রোক দারুণভাবে বেড়ে গেছে। বিশেষজ্ঞরা বলেন, টেনশন ফ্রি থাকতে পারলে এ সব রোগ থেকে নিজেকে অনেকখানি দূরে রাখা সম্ভব। বর্তমানে করোনা থেকে উত্তরণের জন্য রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধির কথা বলা হয়। এটাও নির্ভর করে টেনশনফ্রি থাকার ওপর। ম...

যুক্তরাষ্ট্রে বিক্ষোভ দমনে সেনা মোতায়েনের বিরোধী বর্তমান ও সাবেক প্রতিরক্ষামন্ত্রী

জর্জ ওয়াশিংটন ও আব্রাহিম লিংকনের আমেরিকা আজও বর্ণবাদ মুক্ত হতে পারেনি। আর প্রকৃত সত্য হলো, পৃথিবী কখনই বৈষম্যমুক্ত ছিল না বা হয়নি। কেবল নবী মুহাম্মদ (সা)-ই ভাষা, বর্ণ, লিঙ্গ, পেশা ও ধনী-দরিদ্র সব ধরনের বৈষম্য দূর করে এক সাম্য ও ভ্রাতৃত্বের সমাজ গড়ে তুলতে সক্ষম হয়েছিলেন। সেখানে শাসক ও শাসিত এবং দাস ও মনিব সব একাকার হয়ে পড়েছিল। তাঁর গঠিত সমাজই পৃথিবীতে বৈষম্যহীন সমাজ গঠনে যুগে যুগে মানুষকে প্রেরণা যুগিয়েছে। সমাজের মানুষকে নানা কায়দায় বিভক্ত করে রাখা হয়েছে। নারী-পুরুষের বিভক্তি, শাসক-শাসিতের বিভক্তি, ধনী-দরিদ্রের বিভক্তি তো রয়েছেই। হাজারো বিভক্তির মধ্যে রাজনৈতিক বিভক্তিও অনেক বড় যা মানুষের সৎবৃত্তি ধ্বংস করে পরস্পরের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ, মারামারি, হানাহানির চরম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে। সম্প্রতি শ্বেতাঙ্গ পুলিশ কর্তৃক এক কৃষ্ণাঙ্গ নিহত হওয়ার প্রেক্ষিতে সমগ্র আমেরিকা উত্তাল হয়ে পড়েছে। উগ্রবাদী শ্বেতাঙ্গ যা করেছে তা সকল আমেরিকানকে প্রকাশ করে না। সেখানেও মানবতাবাদী লোকের আধিক্য আমরা লক্ষ্য করেছি। দেশের প্রেসিডেন্টকে একটি রাজ্যের পুলিশ প্রধানকে বলতে শুনেছি ‘ভালো কথা বলুন নয়তো চুপ থাকুন’ এবং ‘দ...

করোনা পরবর্তী পৃথিবী

জলে, স্থলে ও আকাশে পৃথিবীর উন্নতি বিস্ময়কর। সাথে জ্ঞানের সকল শাখায় মানুষের পদচারণাও ঈর্ষণীয়। কোথায় নেই তার উন্নতি, চিকিৎসা জগতেও কী কম? কত জটিল সব অস্ত্রোপচার! আবার এই মানুষকে ধ্বংস করার আয়োজনই বা কম কী? কিন্তু মানুষ অর্জন করতে ব্যর্থ হয়েছে মানবিক মূল্যবোধ। ফলে আমরা যেন ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে এসে দাঁড়িয়েছি। আমরা ভুলে গিয়েছি, আমাদেরই এক কবির গাওয়া- ‘জগত জুড়িয়া এক জাতি আছে সে জাতির নাম মানুষ জাতি;--- কালো আর ধলো সে বাহিরে কেবল ভিতরে সবারই সমান রাঙা’। বৈচিত্র্যপূর্ণ আল্লাহর সৃষ্টি, তিনি মানুষকে নানা ভাষা ও বর্ণে বিভক্ত করে সৃষ্টি করেছেন স্রেফ পরিচিতির জন্য; সবাই আদমের সন্তান এবং আদম মাটির তৈরী। নারী-পুরুষ বা নানা বর্ণ ও ভাষায় মানুষের মাঝে কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই, শ্রেষ্ঠত্ব কেবল নীতি-নৈতিকতায়। কিন্তু দুর্ভাগ্য, মানুষ নানাভাবে বিভক্ত হয়ে পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ ও হানাহানিতে লিপ্ত হয়ে পড়েছে। আমেরিকার নেতৃত্বে মধ্যপ্রাচ্যে বেশ কয়েকটি যুদ্ধে আফগানিস্তান, ইরাক, সিরিয়া ও লিবিয়াসহ বিভিন্ন দেশে বিপুল পরিমাণ বনি আদম হতাহতের পরও যুদ্ধের উন্মাদনা একটুও হ্রাস পায়নি। সমগ্র বিশ্ব যেন আর একটি ভয়াবহ যুদ্ধের দ...