Skip to main content

Posts

Showing posts from 2020

আত্মোন্নয়ন

একজন মুসলিম হিসেবে আত্মোন্নয়ন বলতে আমরা দুনিয়া ও আখিরাতে কল্যাণ লাভের লক্ষ্যে নিজেকে গড়ে তোলা বুঝে থাকি। ইসলামে যেমন বৈরাগ্যবাদ নেই, তেমনি নিরেট দুনিয়াপুজারী স্বার্থপরতাও নেই। ইসলাম মধ্যপন্থা অবলম্বনকারী একটি দ্বীন। দুনিয়ায় ধন-সম্পদ, মান-ইজ্জত ও ক্ষমতায় বড় হওয়ার ক্ষেত্রে ইসলামে কোনো বাধা নেই। তবে অবশ্যই তা নীতি-নৈতিকতা ও আল্লাহর বিধানের সীমারেখার মধ্যে হতে হবে। ধনী-দরিদ্র, সাদা-কালো, মনিব-ভৃত্য, মালিক-শ্রমিক, শিক্ষিত-অশিক্ষিত ও নারী-পুরুষে কোনো ভেদাভেদ নেই এবং কোনো কিছুর মাঝে শ্রেষ্ঠত্বও নেই, শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে কেবল তাকওয়ায়; যে আল্লাহকে বেশি ভয় করে সেই আল্লাহর কাছে বেশি মর্যাদান। হাবশী গোলাম হযরত বেলাল (রা)ও ধনাঢ্য ব্যবসায়ী খলিফা হযরত ওছমান গণি (রা)-এর মধ্যে মর্যাদায় কোনো পার্থক্য ছিল না। মি’রাজ থেকে ফিরে এসে রসূল (সা) বলেন, জান্নাতে বিলালের পদধ্বনি শুনতে পেলাম। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের তাঁর কাছে প্রার্থনার ভাষা শিখিয়ে দিয়েছেন, ‘হে আমাদের রব! তুমি আমাদের দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ দান করো’। দুনিয়ায় কল্যাণ (ধন-সম্পদ, প্রভাব-প্রতিপত্তি ও মান-ইজ্জত) লাভের লক্ষ্যে যে কর্মপ্রচেষ্টা তা দ্বীনে...

মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি : সম্মান ও মর্যাদায় অনেক উচ্চে

আল্লাহর বাণী - বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনা-সামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে’- সূরা হুমাযা। মানুষের জীবন, অর্থ-সম্পদ ও মান-ইজ্জত-সম্মান অত্যন্ত পবিত্র। কোনোভাবেই ক্ষুণ্ণ করা যাবে না। মারপিট বা হত্যা করা অনেক পরের কথা, একটু গালিও দেয়া যায় না। আল্লাহর রসূল (সা) বলেছেন, গালি দেয়া ফাসেকি এবং হত্যা করা কুফুরি। এখানে আল্লাহ বলেছেন, যে ব্যক্তি প্রকাশ্যে মানুষকে অপমান করে, লাঞ্ছিত করে, হেয়-তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করে বা অসাক্ষাতে নিন্দা করে (গীবত) বা যে কোনোভাবে সম্মান বিনষ্ট করে তার ধ্বংস অনিবার্য। তার বাঁচার কোনো উপায় নেই। হ্যাঁ, কেবল তখনই সম্ভব, যখন যার সম্মান হানি করা হয় তার কাছ থেকে ক্ষমা চাওয়ার পাশাপাশি আল্লাহর কাছে তাওবা করা হয়। এদের পরিণতি বলা হয়েছে, তাদেরকে হুতামা অর্থাৎ চূর্ণ-বিচূর্ণকারী স্থানে নিক্ষেপ করা হবে। এর ভয়াবহতা ও আল্লাহর চরম ক্রোধ প্রকাশার্তে বলা হয়েছে, সেটি আল্লাহর আগুন, প্রচন্ডভাবে উত্তপ্ত-উৎক্ষিপ্ত। পরকালে বিশ্বাসী একজন মুসলমানের পক্ষে সন্ত্রাসী বা জঙ্গি হওয়ার প্রশ্নই ওঠে না। রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, ঐ ব্যক্তি মু’মিন নয়, মু’মিন...

ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত (সংশোধন হলে ক্ষমা)

‘আর যে সীমালঙ্ঘন করে, অতঃপর মন্দ কাজের পরিবর্তে ভালো কাজ করে, নিশ্চয়ই (তার প্রতি) আমি চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’- সূরা আন নামল ১১। আজ সকালে দৈনিক নয়া দিগন্তে (দিগন্ত ইসলামী জীবন) কুরআনের আয়াতটি পড়ার পরেই ভাবনার উদ্ভব হয়, আল্লাহপাক তাঁর বান্দার প্রতি কতখানি দয়ার্দ ও অনুগ্রহশীল তা একটু উপলব্ধি করলেই আল্লাহর প্রতি সহজেই আমরা বিনয়াবনত হতে পারি। ভুল করা মানবপ্রকৃতি কিন্তু ভুলকে স্বীকার না করে তার উপর অনড় হয়ে থাকা শয়তানের স্বভাব। শয়তান সব সময় প্ররোচিত করে, ভুল স্বীকার করা দুর্বলতা, তাই ভুল স্বীকারে বাধা প্রদান করে। শয়তান জাহান্নামে যাওয়ার পথে তার সঙ্গী-সাথী বাড়াতে চায়। আর শয়তানকে যে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে সে মূলত নিকৃষ্ট বন্ধুই পেয়ে থাকে। শয়তানকে সবাই ঘৃণা করে। মানুষের আচার-আচরণ ও কাজে-কর্মে আল্লাহর নাফরমানি করাকেই বলা হয় শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ। আল্লাহর বাণী, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাগুতকে অস্বীকার করো। এই আয়াতে আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের আশার বাণী শুনিয়েছেন, কেউ যদি তার জীবন থেকে মন্দ পরিহার করে ভালো কাজ করতে পারে তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করার নিশ্চয়তা দান করেছেন। এই ক্ষমার দরজা উন্মুক...

রাত ও দিনের আবর্তন আল্লাহপাকের নিদর্শনাবলীর অন্যতম

এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণী : ‘এবং তাঁর নিদর্শনসমূহের মধ্যে অন্যতম হচ্ছে রাতের বেলা তোমাদের নিদ্রা আর দিনের বেলা জীবিকা অর্জন। অবশ্যই শ্রবণশক্তিসম্পন্ন জাতির জন্য এতে আছে নিদর্শন’। সূরা রূম ২৩ ‘এবং আমি তোমাদের নিদ্রাকে করেছি বিশ্রাম, রাতকে করেছি আবরণ এবং দিনকে করেছি তোমাদের জীবিকা আহরণের সময়’। সূরা আন নাবা ৯-১১ ‘এবং তিনিই তোমাদের জন্য রাতকে করেছেন আবরণস্বরূপ, আরামের জন্য তোমাদের দিয়েছেন নিদ্রা এবং কার্যক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য দিয়েছেন দিন’। সূরা ফুরকান ৪৭ ‘তিনিই তাঁর দয়ায় তোমাদের জন্য ব্যবস্থা করেছেন রাত ও দিনের যাতে তোমরা বিশ্রামও নিতে পারো আবার জীবিকা অর্জনেও তৎপর হতে পারো এবং তোমরা যেন তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন করো’। সূরা আল কাসাস ৭৩ ‘তারা কি অনুধাবন করে না, আমি রাতের ব্যবস্থা করেছি যেন তারা বিশ্রাম নিতে পারে এবং দিনকে করেছি আলোকপ্রদ (যেন তারা জীবিকা অর্জনে তৎপর হতে পারে)? বিশ্বাসী ব্যক্তিগণের জন্য অবশ্যই এতে নিদর্শন রয়েছে’। সূরা আন –নমল ৮৬ সাধারণত রাতকে আল্লাহপাক বিশ্রাম (নিদ্রা) এবং দিনকে করেছেন কর্মক্ষেত্রে ঝাঁপিয়ে পড়ার জন্য। আল্লাহর রসূল (সা)-এর আমলও ছিল এমনটি। মুহাম্মদ (স...

আলেম সমাজের ঐক্য : মতবিরোধের ইসলামী পদ্ধতি

জুমের মাধ্যমে সেমিনার আজ সন্ধ্যা ৬-০০ টায় বাংলাদেশ ইনস্টিটিউট অব ইসলামিক থট (BIIT) –এর উদ্যোগে ‘আলেম সমাজের ঐক্য : মতবিরোধের ইসলামী পদ্ধতি’ শীর্ষক সেমিনারটি বড় সময়োপযোগী। উম্মাহর মাঝে ঐক্যের প্রচন্ড আকাঙ্ক্ষা রয়েছে এবং এব্যাপারে অগ্রণী ভূমিকা আলেম সমাজকেই রাখতে হবে। মতপার্থক্য সাহাবায়ে কেরাম এবং তৎপরবর্তী সময়েও ছিল। মতপার্থক্যের কারণেই বিভিন্ন মাযহাবের উদ্ভব হয়েছে। কিন্তু এই মতপার্থক্যের কারণে কখনই শত্রুতা বা দলাদলি বা উম্মাহর মাঝে অনৈক্য সৃষ্টি হয়নি। আলোচকদের মাঝে একজন বলেন, ইমাম শাফেয়ী (রহ) ইমাম আজম আবু হানিফা (রহ)-এর কবরসংলগ্ন মসজিদে নামায আদায়ের সময় রফে ইয়াদাইন ছেড়ে দেন। তাঁর অনুসারীরা জানতে চান, তিনি রফে ইয়াদাইন একেবারে ছেড়ে দিলেন কি না? জবাবে বলেন, না- এখানে যিনি শায়িত আছেন তাঁর সম্মানার্থে ছেড়ে দিয়েছি। এমন শ্রদ্ধাবোধ ছিল পরস্পরের প্রতি। মতপার্থক্য সবই সুন্নাত-মুস্তাহাব নিয়ে। উম্মাহর মাঝে অনৈক্য সৃষ্টি করা কুফুরি (এ প্রসঙ্গে আমার একটি প্রবন্ধ আছে)। আল্লাহপাক বলেন, তোমরা আল্লাহর রজ্জু শক্তভাবে ধারণ করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না। অথচ আমরা কী করছি? প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামায আমা...

মুসলিম সেই যে আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সা)-কে অন্ধভাবে অনুসরণ করে

জুমু’আর খুতবা ১৮.১২.২০২০ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম মাল্টিপ্ল্যান রেডক্রিসেন্ট সিটি (কুশিয়ারা, পদ্মা ও সুরমা ভবন), মিরপুর জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আহমাদুল্লাহ সাঈফ আজকের খুতবায় কুরআন ও হাদিসের প্রচুর উদ্ধৃতিসহ ঈমান বিষয়ে আলোচনা করেন। ঈমানের মূল হলো কালিমা তাইয়্যেবা (লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ)। তিনি বলেন, এর ওযন (বা গুরুত্ব) এতো যে এক পাল্লায় কালিমা তাইয়্যেবাহ এবং অপর পাল্লাহ বাকি সব রাখলেও কালিমা তাইয়্যেবার পাল্লা ভারি হবে। এই কালিমা ঘোষণার মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সা)-কে পূর্ণরূপে মেনে চলার ঘোষণা প্রদান করে। কেবল মৌখিক ঘোষণা নয়, ঈমানের সাথে আমলের নিবিড় সম্পর্ক রয়েছে। আখিরাতে সাফল্যের লক্ষ্যে কুরআনে ঈমানের সাথে আমলকে সংযুক্ত করা হয়েছে। মুসলিমের পরিচয় প্রসঙ্গে প্রশ্নের জবাবে আল্লাহর রসূল (সা) ঈমানের সাক্ষ্য দানের সাথে নামায কায়েম, যাকাত আদায়, রোযা পালন ও সামর্থ থাকলে হজ্জ পালনের কথা বলেন। ইসলাম নিয়ে যারা কটাক্ষ করে তিনি তাদের তীব্র সমালোচনা করে বলেন, কটাক্ষকারী আর ইসলামের সীমার মধ্যে থাকে না। যারা নিজেদের ব্যক্তিজীবনে ইসলাম অ...

নবী হলেন তাঁর জাতির সবচেয়ে কল্যাণকামী

‘(হে নবী!) তারা যদি এ কথার ওপর ঈমান না আনে তাহলে মনে হয় দুঃখ-কষ্টে এদের পেছনে পড়ে তুমি নিজেকেই বিনাশ করে দেবে’- সূরা কাহফ ৬। ফজর পড়ে সূরা কাহফ বড়তে গিয়ে ৬ নং আয়াতটিতে আটকে গেলাম। ভাবলাম, বন্ধুদের সাথে একটু শেয়ার করি। সকল নবীকে একই মিশন দিয়ে আল্লাহপাক দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। তাঁদের মৌলিক কাজ ছিল মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকা। সত্য, ন্যায় ও কল্যাণের পথে মানুষকে পরিচালনা করা। আল্লাহপাক তাঁদেরকে সুসংবাদদাতা ও ভয় প্রদর্শনকারী হিসেবে উল্লেখ করেছেন। তাঁদের দাওয়াত যারা কবুল করবে তাদের জন্য সুসংবাদ হিসেবে অফুরন্ত নেয়ামতেভরা জান্নাতের ওয়াদা করা হয়েছে; পক্ষান্তরে যারা অমান্য করবে তাদেরকে জাহান্নামের ভয় দেখানো হয়েছে। অধিকাংশ নবী-রসূল ও তাঁদের সঙ্গী-সাথীরা সীমাহীন নিপীড়নের সম্মুখীন হয়েছেন। নবী মুহাম্মদ (সা) ব্যতিক্রম নন। আল্লাহর পথে ডাকার সাথে সাথে তাঁর পরিবারের লোকজনসহ জাতির কাছ থেকে তিনি বাধাপ্রাপ্ত হন। অত্যাচারে টিকতে না পেরে সাথীদের আবিসিনিয়ায় পাঠিয়ে দেন। এতো অত্যাচার-জুলুম তাঁকে হতাশ করেনি, কিন্তু তিনি হতাশ ও দুঃখ ভারাক্রান্ত হয়েছেন তাঁর জাতির দাওয়াত প্রত্যাখ্যান করে জাহান্নামের পথে দ্রুত ধাবিত হওয়া...

Don't Spoil your child.

এই গল্পটি শোনা আমার স্যার প্রফেসর ড. এম এ হামিদ থেকে। তিনি ছিলেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের স্যার। খুব অল্প বয়সে স্যার প্রফেসর হন। আমাকে যদি কেউ বলেন, তোমার সেরা স্যার কে? নিঃসন্দেহে আমি প্রফেসর ড. এম এ হামিদের নাম বলবো। তিনি ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি এবং বেশ কিছু বইয়ের লেখক ছিলেন। আমি স্যারের রুহের মাগফিরাত কামনা করছি। মাস্টার্সে স্যার আমাদের কৃষি অর্থনীতি পড়াতেন। দু'টি পিরিয়ড একত্রে নিতেন। সময়গুলো দ্রুত ফুরিয়ে যেত। অত্যন্ত হাসিখুশি, দরদী ও সরল প্রকৃতির মানুষ ছিলেন। স্যার প্রাণখুলে হাসতে পারতেন এবং চমৎকারভাবে কথা বলতেন। একদিন ক্লাসে স্যার ইংল্যান্ডে তাঁর ছেলের স্কুল ও শিক্ষকের গল্প শোনান। স্যার সেখানে পিএইচডি গবেষক। একদিন তাঁর স্ত্রীসহ ছেলের স্কুলে গিয়ে খোঁজ-খবর নেয়া শেষে বলেন, আমার স্ত্রী বাসায় থাকেন, আপনারা কোনো বই সাজেস্ট করলে তিনি ছেলেকে বাসায় একটু পড়াতে পারেন। এ কথার জবাবে শিক্ষক বলেন, Don't Spoil your child. ইংল্যান্ডে বাচ্চাদের খেলাচ্ছলে পড়ানো হয়। কোনো হোমটাস্ক নেই। সেখানকার শিশুদের মাঝে স্কুলভীতি নেই। স্কুলে যাওয়ার জন্য তারা থাকে উদগ্রীব। আমরা সম্...

মুসলমানের কল্যাণ কামনা করা

হাদিসের পাঠ জারীর ইবনে আব্দুল্লাহ (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ (সা)-এর হাতে সালাত কায়েম, যাকাত দেবার ও প্রত্যেক মুসলমানের জন্য কল্যাণ কামনা করার শর্তে বায়'য়াত গ্রহণ করেছি। বুখারী ও মুসলিম। বায়'য়াত শব্দের অর্থ বিক্রি করে দেয়া। অর্থাৎ কোনো ব্যক্তি যখন কারো হাতে কোনো বিষয়ে বায়'য়াত গ্রহণ করে তখন সে এ ওয়াদাই করে যে, সারাজীবন সে তার ওয়াদা মেনে চলবে। এখানে তিনটি বিষয়ে বায়'য়াত করা হয়েছে। প্রথমত, নামায কায়েম করবে এবং এব্যাপরে কোনো শৈথিল্য প্রদর্শন করবে না। দ্বিতীয়ত, যাকাত আদায় করবে। তৃতীয়ত, কোনো মুসলমানের ক্ষতি হতে পারে এমন কিছু করবে না এবং সর্বদা কল্যাণ কামনা করবে। দুর্ভাগ্য, মুসলমানদের মাঝে ভ্রাতৃত্ব ও কল্যাণ কামনা একেবারেই অনুপস্থিত। তদস্থলে পরস্পরের প্রতি হিংসা-বিদ্বেষ-ঘৃণা এবং ক্ষতি সাধনের প্রবণতা তীব্রভাবে অনুভূত হয়। একে অপরের মান-ইজ্জত-সম্মান ও সম্পদ লুণ্ঠনের প্রতিযোগিতায় লিপ্ত। এ সম্পর্কীয় অনেকগুলো হাদিস দেখলাম। আর আল্লাহপাক নিজেও মুসলমানদের পরস্পরের ভাই হিসেবে আখ্যায়িত করেছেন। হে আল্লাহ! আমাদের মধ্যে ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করে দাও এবং পরস্পরের জন্য ...

কালিমা তাইয়্যেবাহর মর্ম

'লা ইলাহা ইল্লাল্লাহু মুহাম্মাদুর রসুলুল্লাহ' (অর্থ : আল্লাহ ছাড়া কোনো ইলাহ নেই, মুহাম্মদ (সা) আল্লাহর রসূল)- এই ছোট্ট কালিমাটি পড়ে আমরা ইসলামে প্রবেশ করি অর্থাৎ আমরা মুসলিম হিসেবে পরিচয় লাভ করি। সকল নবী-রসূল এই একই দাওয়াত প্রদান করেছেন। এই কালিমা পাঠের মাধ্যমে একজন ব্যক্তি আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সা)-এর কাছে পূর্ণরূপে আত্মসমর্পণ করে। সে তার প্রবৃত্তি (নফস), পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র সকল প্রকার দাসত্ব অস্বীকার করে কেবল আল্লাহরই দাসত্বের ঘোষণা প্রদান করে। একজন ঘুষগ্রহীতা, মিথ্যা ও কূটকৌশল অবলম্বন করে অপরের প্রাপ্য আত্মসাৎকারী, ধোঁকা-প্রতারণাকারী কখনই আল্লাহর গোলাম হতে পারে না, সে মূলত তার নফসেরই দাসত্ব করে। একজন মুসলিমের কাছে ইসলামের দাবী- 'তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাগুতকে অস্বীকার করো'। আল্লাহর মোকাবেলায় যারা প্রবৃত্তি, সমাজ ও আত্মীয়স্বজনের ইচ্ছার কাছে নিজেকে সঁপে দেয় সে মূলত কালিমার মর্ম বুঝেনি বা কালিমাকে মানতে রাজি নয়। কালিমাবিশ্বাসী একজন মুসলিম (অনুগত) সর্বক্ষণ আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সা)-এর হুকুমের উপর অবিচল থাকে এবং কোনো প্রলোভন বা ভয়ভীতির কাছে নতি স্বীকার করে না। আখ...

তাকওয়া মসজিদে মাগরিব আদায়

আমার পছন্দের একটি মসজিদ। এই মসজিদকে কেন্দ্র করে অনেক সামাজিক কাজ হয়। এখানে রয়েছে একটি হিফজ মাদ্রাসা, এ্যালোপ্যাথি ও হোমিওপ্যাথি দাতব্য চিকিৎসালয় এবং নিয়মিত সাপ্তাহিক তাফসির ও বিভিন্ন দিবস উপলক্ষে আলোচনা হয়ে থাকে। মাইয়াতের গোসল ও ফ্রি কাপনের ব্যবস্থা রয়েছে। এছাড়া বিভিন্ন দুর্যোগে ব্যাপক ত্রাণসামগ্রী এখান থেকে বিতরণ করা হয়। মসজিদে কালেকশনও বেশ ভালো। গত জুমু'আয় দানবাক্সে আদায় হয়েছে নব্বই হাজার টাকা। খতিব মহোদয় ও দুই জন ইমাম খুবই যোগ্য ও আন্তরিক। তাঁদের সাথে আমার বেশ সখ্যতা রয়েছে। আলহামদু লিল্লাহ। মাগরিবের নামাযের পূর্ব দিয়ে প্রধান ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল হাফিজ মারুফ খুবই সংক্ষিপ্তভাবে নিয়মিত কিছু বলেন। আযান প্রসঙ্গে আজ তিনি বলেন, আযান দেবেন পুরুষ, বালেগ ও সুস্থ মানুষ। রসূল (সা)-এর সময় মুয়াজ্জিন হিসেবে হযরত বিলাল (রা), উম্মে মাকতুম (রা) প্রমুখের নাম তিনি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, রেকর্ড বাজিয়ে আযান দিলে আযান হবে না। নামাযের শেষে সম্মিলিত মোনাজাত খতিব মহোদয় আগেই ছেড়ে দিয়েছেন। আজকে লক্ষ্য করলাম, ইমাম সাহেব নামায শেষ করে মোনাজাত ছাড়াই তাঁর কামরায় চলে গেলেন। ২০১২ সনে হজ্জে গিয়ে ইমামের...

মুত্তাকীর পরিচয়

‘তোমরা পূর্ব বা পশ্চিম দিকে মুখ ফেরাও তাতে কোন পুণ্য নেই, বরং সৎকাজ হচ্ছে এই যে, মানুষ আল্লাহ, পরকাল, ফেরেশতা, আল্লাহর অবতীর্ণ কিতাব ও নবীদেরকে মনেপ্রাণে মেনে নেবে এবং আল্লাহর ভালোবাসায় উদ্বুদ্ধ হয়ে নিজের প্রিয় ধন-সম্পদ আত্মীয়-স্বজন, ইয়াতিম, মিসকিন, মুসাফির, সাহায্যপ্রার্থী ও দাসমুক্ত কাজে ব্যয় করবে। আর নামায কায়েম করবে এবং যাকাত আদায় করবে। যারা প্রতিশ্রুতি দিলে তা পালন করে, ক্ষুধা-দারিদ্র, বিপদে-আপদে এবং হক ও বাতিলের দ্বন্দ্ব-সংগ্রামে পরম ধৈর্য অবলম্বন করে-এরাই হচ্ছে সত্যবাদী এবং এরাই হচ্ছে প্রকৃত মুত্তাকী’-সূরা বাকারা ১৭৭ মুসলমানদের কিবলা পরিবর্তনে ইহুদী ও মুনাফিকদের সমালোচনার জবাবে আল্লাহ বলেন পূর্ব ও পশ্চিমের মালিক তিনি এবং স্রেফ আনুষ্ঠানিকতার মধ্যে কোনো কল্যাণ নেই। বেছে বেছে ধার্মিকতার কিছু বাহ্যিক আচার-অনুষ্ঠান পালন করা এবং তাকওয়ার কয়েকটি পরিচিত রূপের প্রদর্শনী করা আসলে সৎকাজ নয় এবং আল্লাহর কাছে এর খুব একটা মূল্যও নেই। বরং নিষ্ঠাপূর্ণ ঈমান ও ঈমানের বহিঃপ্রকাশ তার আমলের মাধ্যমে তাকওয়ার প্রকাশ ঘটে। এখানে আল্লাহতায়ালা প্রথমেই ঈমানের কতিপয় মৌলিক বিষয়ের কথা বলেছেন। ঈমান ও আমলের সম্...

মুসলিমের হক আত্মসাৎকারী দোযখে যাবে

হাদিসের পাঠ ১৪.১২.২০২০ আবু উমামা ইবনে সা’লাবা আল হারেসী (রা) থেকে বর্ণিত। রসূলূল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি মিথ্যা শপথ করে কোনো মুসলমানের হক আত্মসাৎ করে, আল্লাহ তার জন্য দোযখ অবশ্যম্ভাবী করে দেন এবং বেহেশত হারাম করে দেন। এক ব্যক্তি তাকে বললো, হে আল্লাহর রসূল (সা) সেটি যদি সাধারণ জিনিস হয়? তিনি উত্তরে বলেন, সেটি পিল গাছের ছোট শাখা হলেও’- মুসলিম। একজন মানুষের যেটি প্রাপ্য নয় সেটি পাওয়ার লক্ষ্যে কোনো ব্যক্তি যদি মিথ্যার আশ্রয় নেয় বা নানা কৌশল অবলম্বন করে তাহলে সে যেন তার স্থান দোযখে ঠিক করে নিল এবং জান্নাতকে হারাম করে নিল। মিথ্যার ব্যাপারে আল্লাহর রসূল (সা) কঠোর হুশিয়ারী উচ্চারণ করেছেন। বলেছেন, মিথ্যা সকল পাপের মা। কাউকে হাসানোর জন্য বা ছোট বাচ্চাদেরকেও মিথ্যা বলা যায় না। আমাদের সমাজে তাকওয়া-পরহেজগারি অধিকাংশ ক্ষেত্রে পোশাক ও আচার-অনুষ্ঠানে। অথচ আমাদের আচরণ, লেন-দেন, অপরের প্রাপ্য প্রদান এবং ব্যবহারিক জীবনে আল্লাহকে কমই ভয় করি। শোয়াইব (আ)-কে নিয়ে কয়েকদিন লেখাপড়া করলাম। তাঁর দাওয়াতের মূল বিষয় ছিল, আল্লাহর ইবাদত করো এবং তিনি ছাড়া আর কোনো ইলাহ নেই। অর্থাৎ তাঁর সাথে কাউকে শরীক করো না। ত...

আম্বিয়া আলাইহিমুস সালাম যেমন ছিলেন : সাইয়্যেদুনা শোয়াইব (আ)

আদম (আ)-কে দুনিয়ায় আসার কথা বলা হলে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। তাঁকে আশ্বস্ত করে বলা হয়, আমার পক্ষ থেকে যে হেদায়াত যাবে যারা তার অনুসরণ করবে তাদের কোনো ভয় নেই। সেই প্রতিশ্রুতি মোতাবেক আল্লাহপাক যুগে যুগে অসংখ্য নবী ও রসূল প্রেরণ করেন। আদম (আ) প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী এবং সর্বশেষ নবী ও রসূল হলেন মুহাম্মদ (সা)। আল্লাহপাক প্রতিটি জনপদে রসূল পাঠিয়েছেন। তাঁর বাণী, ‘প্রতিটি জাতির জন্য পথ-প্রদর্শনকারী রয়েছে’- সূরা আর রাদ ১৩। তিনি আরো বলেন, ‘আমি রসূল প্রেরণ না করে কাউকে শাস্তি দেই না’- বনি ইসরাইল ১৬৫। 'আমরা আপনার আগে এমন অনেক রসূল পাঠিয়েছি যাদের বৃত্তান্ত আপনাকে শুনিয়েছি এবং এমন অনেক রসূল পাঠিয়েছি, যাদের বৃত্তান্ত আপনাকে শুনাইনি'- সূরা নিসা ১৬৪। সঠিক সংখ্যা আল্লাহই ভালো জানেন। জনশ্রুতি রয়েছি, এক লক্ষ চব্বিশ হাজার বা দুই লক্ষ চব্বিশ হাজার। এর মধ্যে ২৫ জনের নাম কুরআন মজিদে পাওয়া যায়। সূরা আন’আমের ৮৩-৮৬ আয়াতে ১৮ জনের নাম উল্লেখ রয়েছে। ‘ইবরাহীমকে তাঁর জাতির মোকাবিলায় আমি এ যুক্তি-প্রমাণ প্রদান করেছিলাম। আমি যাকে চাই উন্নত মর্যাদা দান করি। প্রকৃত সত্য হচ্ছে এই যে, তোমার রব প্রজ্ঞাময় ও জ...

আল্লাহর ভয় ও মুসলমান হওয়া পরস্পর সম্পর্কযুক্ত

আল্লাহর বাণী : বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা আল্লাহকে ভয় করো যেভাবে করা উচিত এবং মুসলমান না হয়ে কখনো মৃত্যুবরণ করো না’- সূরা আলে ইমরান ১০২। তাকওয়া শব্দের অর্থ বেঁচে থাকা বা বিরত থাকা। অর্থাৎ আল্লাহর নাফরমানি বা গুনাহ থেকে বেঁচে থাকা। এর আর একটি অর্থ আল্লাহর ভয়। আল্লাহর ভয়ই মানুষকে গুনাহ বা তাঁর নাফরমানি থেকে দূরে রাখে। সব মানুষই আল্লাহকে কম-বেশি ভয় করে। এখানে বলা হয়েছে, ভয় করার মতো ভয় বা যেভাবে ভয় করা উচিত। অন্যত্র বলা হয়েছে, আল্লাহকে ভয় করো যতখানি সাধ্যে কূলায়। অর্থাৎ সর্বশক্তি দিয়ে আল্লাহকে ভয় করো। হ্যাঁ, সাধ্যের বাইরে আল্লাহর হুকুম মানা বা তাঁর নাফরমানি থেকে দূরে থাকতে না পারলে গুনাহ নেই। আল্লাহর মর্যাদা, তাঁর বড়ত্ব, তাঁর ক্ষমতা-এখতিয়ার আমাদেরকে উপলব্ধি করতে হবে এবং সেভাবেই তাঁকে ভয় করতে হবে ও মানতে হবে। আমাদের সমাজে কর্মচারী তার বসকে ভয় করে, সন্তান তার পিতা-মাতাকে ভয় করে এবং স্ত্রী তার স্বামীকে ভয় করে। এই ভয় করার পেছনে রয়েছে শ্রদ্ধাবোধ ও ক্ষমতা। কর্মচারী তার বসকে ভয় করে এ কারণে যে তাকে অমান্য করলে চাকুরি হারানোর ভয় আছে; সন্তান ভয় করে তার পিতা-মাতাকে, কারণ অমান্...

কাফির-মুশরিকরাই পারে কুরআনের মাহফিল পন্ড করতে

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘এসব কাফেররা বলে, এ কুরআন তোমরা কখনো শুনবে না। আর যখন তা শুনানো হবে তখন হট্টগোল বাধিয়ে দেবে। হয়তো এভাবে তোমরা বিজয়ী হবে। আমি এসব কাফেরদের কঠিন শাস্তির মজা চাখাবো এবং যে জঘন্যতম তৎপরতা তারা চালিয়ে যাচ্ছে তার পুরো বদলা তাদের দেবো। প্রতিদানে আল্লাহর দুশমনরা যা লাভ করবে তা হচ্ছে দোযখ। সেখানেই হবে তাদের চিরদিনের বাসস্থান। তারা আমার আয়াতসমূহ অস্বীকার করতো। এটা তাদের সেই অপরাধের শাস্তি। সেখানে এসব কাফেররা বলবে, ‘হে আমাদের রব, সেই সব জিন ও মানুষকে আমাদের দেখিয়ে দাও যারা আমাদের পথভ্রষ্ট করেছিলো। আমরা তাদের পদদলিত করবো, যাতে তারা লাঞ্ছিত ও অপমানিত হয়। যারা ঘোষণা করেছে, আল্লাহ আমাদের রব, অতঃপর তার ওপরে দৃঢ় ও স্থির থেকেছে নিশ্চিত তাদের কাছে ফেরেশ্তা আসে এবং তাদের বলে, ভীত হয়ো না, দুঃখ করো না এবং সেই জান্নাতের সুসংবাদ শুনে খুশি হও, তোমাদেরকে যার প্রতিশ্রুতি দেয়া হয়েছে। আমরা এই দুনিয়ার জীবনেও তোমাদের বন্ধু এবং আখেরাতেও। সেখানে তোমরা যা চাবে তাই পাবে। আর যে জিনিসেরই আকাঙ্ক্ষা করবে তাই লাভ করবে। এটা সেই মহান সত্তার পক্ষ থেকে মেহমানদারীর আয়োজন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়াবান’। সূরা...

ইসলামে তালাক

ইসলাম ফিতরাতের ধর্ম। মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি যেটা দাবী করে ইসলাম সেটি অস্বীকার করে না। মানুষের যৌন চাহিদা প্রকৃতিগত এবং এই চাহিদা পূরণের জন্য আল্লাহপাক বিবাহের বিধান দান করেছেন। বিবাহ বহির্ভূত যৌন চাহিদা পূরণের সকল প্রক্রিয়াকে ইসলাম হারাম ঘোষণা করেছে। বয়োপ্রাপ্তির সাথে সাথে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হওয়ার জন্য ইসলাম নারী-পুরুষকে উৎসাহ দান করেছে এবং বিবাহকে সহজ করেছে। এমন কি অসচ্ছল হলে আল্লাহর পক্ষ থেকে সচ্ছলতা দানেরও ওয়াদা রয়েছে। বিবাহের মৌলিক উদ্দেশ্য চারিত্রিক হেফাজত এবং স্বামী-স্ত্রীর পরিতৃপ্তি লাভ। আল্লাহর বাণী, ‘তাঁর নিদর্শনের মধ্যে একটি হচ্ছে, তিনি তোমাদের জন্য তোমাদের মধ্য থেকে জুড়ি (বিপরিত লিঙ্গের) সৃষ্টি করেছেন, যাতে করে তোমরা তাদের কাছে সুখ শান্তি লাভ করতে পারো, তিনি তোমাদের মাঝে ভালোবাসা ও সৌহার্দ সৃষ্টি করে দিয়েছেন, অবশ্যই এর মাঝে চিন্তাশীল সম্প্রদায়ের জন্যে অনেক নিদর্শন রয়েছে’-সূরা রূম ২১। বিবাহের মাধ্যমে স্বামী-স্ত্রীর ওপর কিছু ফরজ দায়িত্ব ও কর্তব্য অর্পিত হয়। তন্মধ্যে পরস্পরের যৌন চাহিদা পূরণ মৌলিক দায়িত্ব। পরস্পরের প্রতি প্রেম-ভালোবাসা, আস্থা-বিশ্বাস ও স্বতস্ফুর্ত সহযোগিতার মধ্...

বিপদ-মুসিবত সবই আল্লাহর পক্ষ থেকে

কুরআনের পাঠ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘আল্লাহর অনুমোদন ছাড়া কখনো কোনো বিপদ-মুসিবত আসে না। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান রাখে আল্লাহ তার দিলকে হেদায়াত দান করেন। আল্লাহ সবকিছু জানেন’- সূরা তাগাবুন ১১। নাযিলের সময়কাল ও নামকরণ : অধিকাংশের মতে সূরাটি মাদানী এবং হিজরতের পর পরই অবতীর্ণ। সূরার ৯নং আয়াত ‘যালিকা ইয়াওমুত তাগাবুন’ থেকে নামকরণ করা হয়েছে। কিয়ামতের দিবসটিকে উদ্দেশ্য করে বলা হয়েছে, সে দিনটি হবে পরস্পরের হার-জিতের দিন। দুনিয়ার নাম-যশ-খ্যাতি, সৌন্দর্য, মেধা, প্রভাব-প্রতিপত্তি ও অর্থবিত্ত কোনো কিছুই সেদিন হারজিতের মাপকাঠি হবে না। ঈমান ও নেক আমলে যে সমৃদ্ধ সেদিন সেই সত্যিকার জয়ী হবে। আর যে ব্যর্থ হবে সে চিরদিনের জন্য হেরে যাবে। ব্যাখ্যা : মক্কায় বছরের পর বছর জুলুম-নির্যাতন সহ্য করার পর সবকিছু ছেড়ে মদীনায় আশ্রয় নিয়েছিলেন রসূল (সা) ও তাঁর সাথীরা। মুহাজিররা ছিলেন সম্বলহীন ও চরম বিপদগ্রস্ত এবং বিপদ মদীনাবাসীদেরও কম ছিল না। বিপুল পরিমাণ মুহাজিরকে আশ্রয় প্রদান ও তাঁদের ভরণ-পোষণ ছাড়াও সমগ্র আরব তাঁদের শত্রু হয়ে পড়েছিল এবং এই উদীয়মান শক্তিকে চিরতরে নিশ্চিহ্ন করে দেয়ার জন্য আরবরা ছিল বদ্ধপ...

মুসলিম ঘরের সন্তানদের ইসলাম বৈরিতার কারণ ও প্রতিকার

আমরা প্রায়ই শুনি ও দেখি পিতা-মাতা দ্বীনদার অথচ তাদের সন্তান-সন্ততি দ্বীন মানে না বা অনেকেই আছেন দ্বীনের কট্টর দুশমন। অথচ মু’মিনদের প্রার্থনা, ‘হে আমাদের রব! তুমি আমাদের স্ত্রী (স্বামী) ও সন্তানদেরকে নয়ন শীতলকারী বানাও এবং আমাদের করে দাও মুত্তাকীদের ইমাম’- সূরা আল ফুরকান ৭৪। একজন মুসলিম পিতা-মাতার কাছে তাদের সন্তানের ইসলামের প্রতি উদাসীন বা বিরোধী হওয়া বড়ই কষ্টের। এমন পিতা-মাতা খুব কমই আছে যারা চায় তাদের পুঁজি (সন্তান-সন্ততি) সব ব্যাংকে জমা থাকুক এবং যখন যেটা প্রয়োজন হবে কাজে লাগাবে। ইসলাম বিজয়ী হলে ইসলামের পক্ষের সন্তানকে সামনে ধরবে, আবার ইসলামের শত্রুরা বিজয়ী হলে ইসলাম না মানা ছেলেকে এগিয়ে দিবে। এমন চরিত্র কারো যদি থেকে থাকে তাহলে সে একজন নিরেট মুনাফিক বৈ আর কেউ নন। ঈমান গ্রহণকারী একজন ব্যক্তির প্রথম কাজ হলো তার স্ত্রী/স্বামী, সন্তান-সন্ততি ও নিকটবর্তী লোকজনকে দ্বীনের দাওয়াত দেয়া। আল্লাহর বাণী, ‘হে ঈমানদার লোকেরা! তোমরা নিজেদের ও পরিবার-পরিজনদের জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচাও, যার জ্বালানি হবে মানুষ আর পাথর’- সূরা আত্ তাহরীম ৬। রসূল (সা) আল্লাহপাকের সেই নির্দেশ অনুসারে প্রথমেই তাঁর পর...

আল্লাহর ক্ষমার দিকে ধাবিত হই

প্রতিনিয়তই আমরা মৃত্যু দেখছি। বিশেষ করে করোনার কারণে সামান্য জ্বর হলেও আমাদের মধ্যে এক অজানা ভয় কাজ করছে। করোনা ও নানাবিধ রোগব্যাধিতে আমাদের অনেক প্রিয়জন তাঁদের রবের কাছে ফিরে গেছেন। আমাদের কখন ডাক আসে কেউ তা জানি না। তবে এটি জানি, এই পৃথিবী আমাদের স্থায়ী ঠিকানা নয়। এক অসীমের পানে আমাদের যেতেই হবে। প্রিয়জন মারা গেলে করোনা পরিস্থিতির কারণে পূর্বের মত জানাযা ও দাফন-কাফনে শরীক হওয়ার সুযোগ এখন আর হচ্ছে না। ফেসবুকে ইন্না লিল্লাহ পড়া ও দুআ করার মধ্যে অনেকটা সীমিত হয়ে পড়েছে। ‘ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেয়ূন’ এই বাক্য উচ্চারণের মধ্য দিয়ে আমরা প্রতিনিয়ত স্বীকারোক্তি প্রদান করছি ‘নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য এবং তাঁরই কাছে ফিরে যাব’। আল্লাহ তাঁর গাফেল বান্দাদের তাঁর পথে ফিরে আসার লক্ষ্যেই বিপদ-মুসিবত দেন। আমরা মনে করি, এই করোনার কারণে আল্লাহর অনেক বান্দাহ সম্বিত ফিরে পেয়েছেন। তারা তাওবা করে নিজেদেরকে পরিশুদ্ধ করে নিয়েছেন। হ্যাঁ, যারা পারেনি তারা কপালপোড়া, তাদের বদনসিব; ঐ শ্রেণির মানুষ নবী-রসূলদের দাওয়াতেও সাড়া দিতে পারেনি। কুরআনের ভাষায় ওরা অন্ধ (ওরা চোখে দেখে না), ওরা বধির (কানে শুনে না);...

নৈতিক মানস গঠনে বিশ্বনবী মুহাম্মদ (সা)

মানুষ নৈতিক জীব। অন্যান্য জীব থেকে মানুষের পার্থক্যই তার নৈতিকতা। জ্ঞান-বুদ্ধি-বিবেক ও ভালো-মন্দের পার্থক্য করার ক্ষমতা মানুষকে শ্রেষ্ঠত্বের মর্যাদায় আসীন করেছে। মানুষ যখন নৈতিকতা হারিয়ে ফেলে তখন সে পশুত্বের স্তরে নেমে যায়, না তারও অধম হয়ে পড়ে। আরবসহ সমগ্র বিশ্বে মানুষের নৈতিক চরম অধপতনের ফলে যখন সমাজ মনুষ্যবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছিল সে সময়ে আল্লাহপাক দয়া করে নবী ও রসূল হিসেবে পাঠান আমাদের প্রিয়তম নবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সা)-কে। রসূল (সা)-এর আগমনকালে সমাজ (ঐতিহাসিকরা যেটিকে বলেছে আইয়ামে জাহিলিয়াত বা অন্ধকার যুগ) অধপতনের শেষ পর্যায়ে পৌঁছে গিয়েছিল, মানুষ ভুলে গিয়েছিল সকল নীতিবোধ, আচরণে মানুষ ও পশুতে কোনো পার্থক্য ছিল না; মানবপ্রকৃতি যেটিকে ঘৃণা করে ও অন্যায় বলে জানে এমন সকল অপকর্ম যেমন, চুরি-ডাকাতি-ছিনতাই, যিনা-ব্যাভিচার, জুলুম-নির্যাতন-হত্যা, মিথ্যা-শঠতা, ধোঁকা-প্রতারণা, প্রতিশ্রুতি ভঙ্গ, খেয়ানত, দুর্বলের উপর সবলের অত্যাচার, নারীর প্রতি অবিচার সবই সেই সমাজে চালু ছিল। এমনি সমাজে মুহাম্মদ (সা) ছিলেন ব্যতিক্রম। সততা-বিশ্বস্ততা ও আমানতদারিতার কারণে তিনি তাঁর জাতির কাছ থেকে আল-আমিন ও আস...

বেশি বেশি সালাম বিনিময়ে পরস্পরের সম্পর্কের উন্নয়ন ঘটে

জুমু’আর খুতবা ২৭.১১.২০২০ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম মাল্টিপ্ল্যান রেডক্রিসেন্ট সিটি (কুশিয়ারা, পদ্মা ও সুরমা ভবন), মিরপুর জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আহমাদুল্লাহ আজকের খুতবায় কুরআন ও হাদিসের প্রচুর উদ্ধৃতিসহ সালাম নিয়ে আলোচনা করেন। আল্লাহপাক আদম (আ)-কে সৃষ্টি করে জান্নাতেই সালাম শিখিয়েছেন। তিনি আদম (আ) বলেন: যাও, ফেরেশতাদের সালাম দাও। আদম (আ) ফেরেশতাদের ‘আসসালামু আলাইকুম’ বলে সালাম দিলে জবাবে ফেরেশতারা বলেন, ‘ওয়া আলাইকুম আসসালাম ওয়া রহমাতুল্লাহ’। আল্লাহপাক নিজে নবীদের সালাম দিয়েছেন, তাঁর এক নাম সালাম এবং ফেরেশতারা মু’মিনদেরকে সালামের মাধ্যমে জান্নাতে প্রবেশ করাবেন। সালামের অর্থ শান্তি নিরাপত্তা এবং রসূল (সা) বেশি বেশি করে সালামের প্রচলনের জন্য তাঁর উম্মতের প্রতি তাগিদ দিয়েছেন। তিনি বলেছেন, ‘তোমরা ততক্ষণ জান্নাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না তোমরা মু’মিন না হও এবং ততক্ষণ মু’মিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা পরস্পরকে মুহাব্বত না করো। পরস্পরের মধ্যে মুহাব্বাত ও ভালোবাসা বৃদ্ধির জন্য বেশি বেশি করে সালামের প্রচলন করো’। সাহাবীদের মধ্য থেকে একজন এসে রসূল (সা)-কে ‘আসসালামু আল...

মুহাম্মদ (সা) সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারী

কুরআনের পাঠ আল্লাহর বাণী : বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘(হে নবী), আমি তো তোমাকে কেবল সুসংবাদদাতা ও সতর্ককারীরূপেই পাঠিয়েছি’- সূরা ফুরকান ৫৬। কথাটি মূলত কাফিরদের উদ্দেশ্যেই বলা। মক্কায় নবুয়তের মাঝামাঝি সময়ে সূরা ফুরকান অবতীর্ণ। নবুওয়াত লাভের পর মুহাম্মদ (সা) তাঁর জাতির কল্যাণকামী হিসেবেই দ্বীনের দাওয়াত পেশ করছিলেন। অথচ তাঁর জাতির লোকেরা দাওয়াত শুধু প্রত্যাখ্যানই নয় বরং সত্য ও সঠিক পথে ডাকার জন্য তাঁর ও তাঁর সাথীদের ওপর নিপীড়ন-নির্যাতন চালাচ্ছিল। জাতির লোকদের এমন আচরণের ফলে তাদের পরিণতি কতো ভয়াবহ হবে রসূল (সা) তা স্পষ্ট উপলব্ধি করছিলেন। ফলে তিনি ভীষণ পেরেশানি অনুভব করতেন। আল্লাহর পক্ষ থেকে সান্ত্বনা দিয়ে বলা হয়, পেরেশানি নয় মানুষের কাছে স্পষ্ট পৌঁছে দেয়ায় তাঁর রসূল (সা)-এর দায়িত্ব। আল্লাহর রসূল (সা)-এর দাওয়াতের মূল বিষয় ছিল তাওহীদ, রেসালাত ও আখিরাত। তাঁর দাওয়াত কবুল করলে আখিরাতে চিরশান্তির স্থান জান্নাত, পক্ষান্তরে অমান্য করলে ভয়াবহ শাস্তি জাহান্নাম। তাঁর দাওয়াতে সাড়া দানকারী বিশ্বাসীদের জন্য তিনি সুসংবাদদাতা এবং অবিশ্বাসীদের জন্য ছিলেন সতর্ককারী। এই কাজের বিনিময়ে রসূল (সা)-এর বৈষয়িক ...

আল্লাহর বান্দা মিথ্যা সাক্ষ্য ও বাজে কাজ থেকে দূরে থাকে

কুরআনের পাঠ আল্লাহর বাণী : বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘(আর রহমানের বান্দা হচ্ছে তারা) যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং কোনো বাজে জিনিসের কাছ দিয়ে পথ অতিক্রম করতে থাকলে ভদ্রলোকের মত অতিক্রম করে যায়’- সূরা ফুরকান ৭২। সূরা ফুরকানে আল্লাহ তাঁর নেক বান্দাদের অনেক গুণাবলীর কথা উল্লেখ করেছেন যা অর্জনের জন্য প্রয়োজন কঠোর ধৈর্য এবং বিনিময়ে দেবেন সুরম্য বালাখানা, যেখানে তারা থাকবে চিরকাল। ৭২ নং আয়াতে দু’টি গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না অর্থাৎ যেটি সত্য বলে জানে না বা যেটি সম্পর্কে নিশ্চিত না সেটিকে সত্য বলে প্রচার বা আদালতে কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করে না। দ্বিতীয়ত, ইসলাম ছাড়া সকল ব্যবস্থাপনা মিথ্যা বা বাতিল এবং মিথ্যা জেনেও যারা এর পক্ষ অবলম্বন করে তারাও মিথ্যা সাক্ষ্য দানের পর্যায়ে পড়ে। মিথ্যা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে আল্লাহর রসূল (সা)-এর অবস্থান ছিল অত্যন্ত কঠোর। তিনি বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া শিরকের সমতুল্য বড় গুনাহ। মিথ্যা সকল কাজের মা। আমার উম্মতেরা সব পারে, পারে না মিথ্যা কথা বলতে ও বিশ্বাসঘাতকতা করতে। অথচ আজ এ উম্মাহর কী দুরবস্থা। সকল ক্ষেত্র...

তাওবা পূর্বের গুনাহকে নেকিতে বদলে দেয়

কুরআনের পাঠ আল্লাহর বাণী : বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘কিন্তু যারা তাওবা করেছে, ঈমান এনেছে ও নেক আমল করেছে, আল্লাহতায়ালা এমন সব লোকদের গুনাহসমূহকে তাদের নেক আমল দ্বারা বদলে দেবেন, আল্লাহতায়ালা ক্ষমাশীল ও পরম দয়ালু’- সূরা ফুরকান ৭০। ক্ষমা, হ্যাঁ ক্ষমা মানুষকে পাপ-পঙ্কিল পথ থেকে নেকি ও কল্যাণের পথে ফিরে আসতে সহায়তা করে। সূরাটি মক্কী সূরা এবং নবুয়তের মাঝামাঝি সময়ে অবতীর্ণ। ইসলাম গ্রহণকারী নারী-পুরুষ অতীতের গুনাহের কারণে বড় পেরেশান থাকতেন। আল্লাহপাক তাদের পেরেশানি দূর করে দিয়েছেন। এটি ছিল এক সাধারণ ক্ষমা ঘোষণা (General Amnesty)। এই ক্ষমার দরজা কিয়ামত পর্যন্ত খোলা রয়েছে। আল্লাহ তাঁর বান্দার ফিরে আসার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। বান্দাহ ভালো কাজের নিয়ত করলেই ছওয়াব লেখা হয় এবং নেক আমল করলে ছওয়াব ১০ থেকে ৭০০ গুণ বাড়িয়ে দেয়া হয় বা তার চেয়েও বেশি। কিন্তু মন্দ কাজে নিয়ত করলে কোনো গুনাহ নেই। মন্দ কাজ করে তাওবা করলে গুনাহের ক্ষমার সুযোগ রয়েছে। তাওবা না করলে যতটুকু অপরাধ ততটুকু গুনাহ লেখা হয়। ক্ষমার বিষয়ে হাদিসে অনেক বর্ণনা রয়েছে। আবু হুরাইরা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, একদিন মসজিদে নববীত...

স্ত্রী ও সন্তান দ্বারা চোখকে শীতল করে দাও

কুরআনের পাঠ আল্লাহর বাণী : তারা প্রার্থনা করে, ‘হে আমাদের রব! তুমি আমাদের স্ত্রী (স্বামী) ও সন্তানদেরকে নয়ন শীতলকারী বানাও এবং আমাদের করে দাও মুত্তাকীদের ইমাম’- সূরা আল ফুরকান ৭৪। আল্লাহর কাছে তাঁর নেক বান্দাদের বিশেষ মোনাজাত। নেক স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহতায়ালার বড় নেয়ামত। এই দুআর মাধ্যমে একজন মু’মিন তার স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির ঈমান ও সৎকাজের তাওফিক কামনা করেন। স্বামী/স্ত্রী ও সন্তানদের দৈহিক সৌন্দর্য ও শিক্ষা-দীক্ষা নয় বরং সদাচার ও সচ্চরিত্রতা থেকে যথার্থ প্রশান্তি লাভ করা যায়। একজন সত্যিকার মু’মিন কখনো চাবে না, তার স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির মতো প্রিয়জন জাহান্নামের আগুনে দগ্ধ হোক। এটি তার জন্য চোখের জ্বালা। বড় অস্বস্তির কারণ। তাই তার সর্বক্ষণ প্রচেষ্টা থাকে তাদেরকে আল্লাহর পথে নিয়ে আসার এবং সাথে সাথে স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততির জন্য তার মহান রবের কাছে সে কাতর ফরিয়াদ জানায়। স্বামী/স্ত্রী ও সন্তান-সন্ততি আল্লাহর পথে চললে গৃহটি হয়ে পড়ে জান্নাতের একটি টুকরা; বিপরিত পক্ষে দুনিয়ায় বাস করেও যেন জাহান্নামের শাস্তি ভোগ অনুভূত হয়। পারিবারিক কলহ মানুষের সুখ-শান্তি ও বেঁচ...

বিপদ মুসিবত উত্তরণে রাসূল (সা) এর নীতি ও আদর্শ

মানুষ আল্লাহর এক অপূর্ব সৃষ্টি, জ্ঞান ও বিবেক-বুদ্ধিসম্পন্ন এবং সকল সৃষ্টির সেরা। আল্লাহর সৃষ্টিজগতের সর্বোত্তম মর্যাদার অধিকারী তাঁরই প্রতিনিধি (খলিফা)। জ্ঞান-বুদ্ধির পাশাপাশি আল্লাহর পক্ষ থেকে সর্বোত্তম নেয়ামত হিসেবে নবী-রসূল ও কিতাবের মাধ্যমে প্রদান করা হয়েছে হেদায়াত। হযরত আদম (আ)-কে বেহেশত থেকে চলে আসার জন্য যখন বলা হয় তখন তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। সে সময় আল্লাহ তাঁকে প্রতিশ্রুতি প্রদান করেন, তাঁর পক্ষ থেকে যে হেদায়াত যাবে যারা তা অনুসরণ করবে তাদের কোনো ভয় নেই (সূরা বাকারা ৩৮)। আল্লাহপাক আদম (আ)-কে তাঁর ত্রুটি ক্ষমা করে একজন নবী হিসেবে দুনিয়ায় পাঠান এবং তিনি প্রথম মানুষ ও প্রথম নবী। তাঁরই ধারাবাহিকতায় আল্লাহতায়ালা অসংখ্য নবী-রসূল পৃথিবীতে পাঠান এবং সর্বশেষ নবী ও রসূল হলেন আমাদের প্রিয়তম নবী মুহাম্মদ (সা)। আল্লাহতায়ালা সকল জাতির মাঝে নবী-রসূল পাঠিয়েছেন এবং সকলের দাওয়াত ছিল অভিন্ন। আল্লাহর বাণী, ‘প্রত্যেক জাতির মধ্যে আমি একজন রসূল পাঠিয়েছি এবং তার মাধ্যমে সবাইকে জানিয়ে দিয়েছি যে, তোমরা আল্লাহর বন্দেগী করো এবং তাগুতের বন্দেগী পরিহার করো’- সূরা নাহল ৩৬। আল্লাহপাক মানুষকে সৃষ্টি ক...