Skip to main content

আল্লাহর বান্দা মিথ্যা সাক্ষ্য ও বাজে কাজ থেকে দূরে থাকে

কুরআনের পাঠ আল্লাহর বাণী : বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম ‘(আর রহমানের বান্দা হচ্ছে তারা) যারা মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না এবং কোনো বাজে জিনিসের কাছ দিয়ে পথ অতিক্রম করতে থাকলে ভদ্রলোকের মত অতিক্রম করে যায়’- সূরা ফুরকান ৭২। সূরা ফুরকানে আল্লাহ তাঁর নেক বান্দাদের অনেক গুণাবলীর কথা উল্লেখ করেছেন যা অর্জনের জন্য প্রয়োজন কঠোর ধৈর্য এবং বিনিময়ে দেবেন সুরম্য বালাখানা, যেখানে তারা থাকবে চিরকাল। ৭২ নং আয়াতে দু’টি গুণের কথা উল্লেখ করা হয়েছে। মিথ্যা সাক্ষ্য দেয় না অর্থাৎ যেটি সত্য বলে জানে না বা যেটি সম্পর্কে নিশ্চিত না সেটিকে সত্য বলে প্রচার বা আদালতে কারো বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষ্য প্রদান করে না। দ্বিতীয়ত, ইসলাম ছাড়া সকল ব্যবস্থাপনা মিথ্যা বা বাতিল এবং মিথ্যা জেনেও যারা এর পক্ষ অবলম্বন করে তারাও মিথ্যা সাক্ষ্য দানের পর্যায়ে পড়ে। মিথ্যা বলা ও মিথ্যা সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে আল্লাহর রসূল (সা)-এর অবস্থান ছিল অত্যন্ত কঠোর। তিনি বলেছেন, মিথ্যা সাক্ষ্য দেয়া শিরকের সমতুল্য বড় গুনাহ। মিথ্যা সকল কাজের মা। আমার উম্মতেরা সব পারে, পারে না মিথ্যা কথা বলতে ও বিশ্বাসঘাতকতা করতে। অথচ আজ এ উম্মাহর কী দুরবস্থা। সকল ক্ষেত্রে মিথ্যা, কেনা-বেচা, লেন-দেন, অফিস-আদালত সর্বত্রই; মনে হয় না এই জনপদ মুসলমানদের। আমাদের আদালতগুলোর অবস্থা বড় করুণ। সত্যটি বের করে আনা বিচারকের জন্য দুরূহ। পুলিশ রিমান্ডে আনার পর আদালতে খুনের ব্যাপারে স্বীকারোক্তি প্রদানের পর নিহত ব্যক্তির ফিরে আসার নজিরও এ দেশে রয়েছে। মিথ্যা সাক্ষ্যদান এবং এর সাথে সংশ্লিষ্ট সবাই জালেম ও শিরকের সমতুল্য বড় গুনাহের অংশীদার। কুরআন-হাদিস পড়ার পর আমার উপলব্ধি, জান্নাতে জালেমের কোনো অংশ নেই (যদি তাওবা না করে)। কিয়ামতের দিন মজলুমকে জুলুমের বদলা পরিশোধ করার পর জালেমের আর কোনো ছওয়াব অবশিষ্ট থাকবে না। শেষে মজলুমের গুনাহ তার ওপর অর্পণ করে ধাক্কাতে ধাক্কাতে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হবে। আমাদের চরিত্র বড় আজব। জুমু’আর দিন মসজিদ পূর্ণ হয়ে রাস্তায় দাঁড়ায়, কুরবানির সময় সচ্ছল প্রতিটি পরিবারে কুরবানি দিতে দেখা যায়। এ-সবই ধোঁকা, নিজেদেরকে আড়াল করার এক অপকৌশল। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের অপবিত্র দান বা ইবাদত কবুল করেন না। মু’মিন কোনো বাজে কাজ, অর্থহীন ও ফালতু কাজ, অপ্রয়োজনীয় কথা, শুনতে, দেখতে ও করতে অভ্যস্ত নয়; চলার পথে এমন কাজ পড়লে ভদ্রলোকের মত পাশ কেটে চলে যায়। রাস্তায় দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা-আবর্জনা থাকলে কোনো রুচিবান ব্যক্তি যেমন দাঁড়িয়ে তার স্বাদ আস্বাদন করে না, তেমনি একজন মু’মিন অপ্রয়োজনীয় কথা ও কাজ শোনা, দেখা ও করা থেকে বিরত থাকে। আসলে মূল্যবান সময় কাটানো নয়, ব্যবহারের বিষয়। যারাই সময়কে যথার্থ ব্যবহার করতে জানে তারাই দুনিয়া ও আখিরাতে সফল হন। আল্লাহপাক সবধরনের মিথা ও বাজে কাজ থেকে দূরে থাকার তাওফিক আমাদের দান করুন। আমিন। ২২.১১.২০২০

Comments