Skip to main content

যারা দুনিয়ার উদ্দেশ্যে কাজ করে আল্লাহ তাদের পরকালে বঞ্চিত করেন

দরসুল কুরআন আল্লাহর বাণী : ‘আল্লাহতায়ালা তাঁর বান্দাদের সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ বিষয় সম্পর্কেও অবহিত আছেন, তিনি যাকে চান রিযিক দেন, তিনি প্রবল পরাক্রমশালী। যে ব্যক্তি পরকালের ফসল কামনা করে আমি তার জন্য তা বাড়িয়ে দেই, আর যে ব্যক্তি দুনিয়ার জীবনের ফসল কামনা করে আমি তাকে তার কিছু অংশ দান করি, কিন্তু পরকালে তার জন্য কোনো অংশ থাকে না’-সূরা আশ শূরা ১৯-২০। বান্দাহ বলতে বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবাইকে বলা হয়েছে। এখানে লতিফ শব্দ দ্বারা বোঝানো হয়েছে যে, বান্দার প্রতি দয়া-অনুগ্রহ, মায়া-মমতা ও বদান্যতার সাথে তার অতি সুক্ষ্ণাতিসুক্ষ্ণ বিষয়ের প্রতিও আল্লাহ দৃষ্টি রাখেন। অর্থাৎ বান্দার কী প্রয়োজন সেটি সে নিজেও জানে না অথচ আল্লাহ তা দিয়ে যাচ্ছেন। রিযিক বন্টনের ব্যাপারে আল্লাহ সবাইকে সমভাবে দেন না। কাউকে জ্ঞান-মেধা, কাউকে ধন-সম্পদ, কাউকে সন্তান-সন্ততি, আবার কাউকে সৌন্দর্য ও সুস্থতা; এই পার্থক্যের হেকমত আল্লাহই ভালো জানেন। এই দেয়ার ক্ষেত্রে আল্লাহ কারো মুখাপেক্ষী নন, তিনি সর্বেসর্বে এবং দেয়া থেকে তাঁকে বিরত রাখার ক্ষমতাও কারো নেই। এই দুনিয়ায় বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবাইকে তিনি দেন। বিশ্বাসী বান্দাকে আল্লাহ দুনিয়া ও আখিরাতে দান করেন এবং আখিরাতে তা বাড়িয়ে দেন কমপক্ষে দশগুণ; অতিরিক্ত লক্ষ-কোটি গুণ। পক্ষান্তরে যে কেবল দুনিয়ার ফসল কামনা করে আল্লাহ তাকে দুনিয়ায় কিছু দান করেন। এই দুনিয়ায় শ্রেষ্ঠ ধনীকে আল্লাহ যা দেন তা আখিরাতের তুলনায় অতি নগণ্য। যারা পরকালের পরিবর্তে কেবল দুনিয়া পেতে চায় তাদের কাছে হারাম-হালালের কোনো পার্থক্য থাকে না। অর্থের লোভে একসাথে সাত খুনেও তারা পিছপা হয় না। এই শ্রেণির লোক আর আল্লাহর বান্দা থাকে না, তারা হয়ে পড়ে নফসের দাশ নয়তো কোনো তাগুতের গোলাম। তাগুতকে টিকিয়ে রাখার জন্য ন্যায়-অন্যায় বোধ ভুলে গিয়ে আল্লাহর বান্দাদের ওপর চালায় চরম জুলুম-নির্যাতন। এরা ইসলামকে প্রতিপক্ষ মনে করে এবং এরাই আবু জেহেল-আবু লাহাবের যথার্থ উত্তরসূরী। আবু জেহেল-আবু লাহাবের মতো কুরআনের কথায় এরা অস্থির হয়ে পড়ে এবং কোথাও পর্দানশীন মহিলা একত্রিত হলেও তারা তাদের ওপর হামলে পড়ে। এই যালেমদের সম্পর্কেই আল্লাহ বলেছেন, ‘যারা ঈমানদার নর ও নারীকে কষ্ট দেয়, অতঃপর তাওবা করে না, তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আযাব, আছে ভস্ম হওয়ার শাস্তি’-(সূরা বুরুজ)। এরা পরকালের বিনিময়ে দুনিয়ার জীবনকে খরিদ করে নিয়েছে। দুনিয়ায় তাদের কিছু ভালো কাজ রয়েছে কিন্তু তাদের নিয়ত ও আমলের কারণে আল্লাহ তা বরবাদ করে দিবেন এবং যালেমদের জন্য জাহান্নামই হবে ঠিকানা। কেবল দুনিয়া নয়, পরকালের উদ্দেশ্যে কাজ করার তাওফিক আল্লাহ আমাদের দান করুন। ১৮.১১.২০২০

Comments