জুমু’আ বক্তৃতা
০৬.১১.২০২০
আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জুমু’আর খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর রবিউল আউয়াল মাসে রসূল (সা)-এর ওপর দরুদ পাঠ নিয়ে আলোচনা করেন।
কাফির-মুশরিকরা নানাভাবে রসূলুল্লাহ (সা)-কে অপমান, অপদস্থ করার চেষ্টা করেছে এবং তা বর্তমানও অব্যাহত রয়েছে। তার মোকাবেলায় রসূল (সা)-এর উম্মতরা যুগে যুগে নিজেদের জীবন ও সবকিছু অপেক্ষা প্রিয়তম নবী (সা)-কে অধিক মুহাব্বতের প্রমাণ দিয়ে গেছেন। সম্প্রতি ফ্রান্সে ঘটে যাওয়া ব্যঙ্গচিত্রের মোকাবেলায় সারা বিশ্বের মুসলমানরা জেগে উঠেছে। আল্লাহপাক নিজেই তাঁর নবীকে মহা সম্মানে সম্মানিত করেছেন এবং তাঁর স্মরণ কিয়ামত পর্যন্ত বিস্তৃত করে দিয়েছেন। কালিমা তাইয়্যেবায় আল্লাহর নাম উচ্চারণের সাথে সাথে তাঁর রসূল (সা)-এর নামও উচ্চারিত হয়। আযানে, নামাযে সর্বত্রই এবং সর্বক্ষণ প্রিয়তম নবী (সা)-এর স্মরণ হয়ে থাকে, সর্বোপরি তাঁর ওপর দরুদ পাঠ তো রয়েছেই।
সূরা আহযাবের ৫৬ নং আয়াত উদ্ধৃত করে খতিব মহোদয় বলেন, মহান আল্লাহ ও তাঁর ফেরেশতামন্ডলি আমাদের নবীর প্রতি দরুদ পাঠান এবং নবীর প্রতি দরুদ পাঠানোর জন্য তিনি ঈমানদারদের প্রতি নির্দেশ প্রদান করেছেন। জীবনে একবার দরুদ পাঠ ফরজ। নামাযে দরুদ পাঠ সুন্নাতে মুয়াক্কাদা। সর্বোত্তম দরুদ নামাযে পড়া দরুদে ইবরাহিম (আ)। মুহাম্মদ (সা) দরুদ পাঠে পিতা ইবরাহিম (আ)-কে ভুলে যাননি। এটা পিতার প্রতি তাঁর শ্রদ্ধাবোধেরই পরিচায়ক। দরুদ পাঠ সম্পর্কিত অনেকগুলো হাদিস খতিব মহোদয় উদ্ধৃত করেন।
রসূলুল্লাহ (সা) বলেন, ‘কারো সম্মুখে আমার নাম উচ্চারিত হলে সে যদি দরুদ না পড়ে তাহলে সে একজন কৃপণ।’ তিনি আরো বলেছেন, ‘ঐ ব্যক্তির মুখ ধুলিমলিন হোক, যার সম্মুখে আমার নাম উচ্চারিত হলো অথচ দরুদ পড়লো না।’
রসূল (সা) বলেন, ‘যে একবার আমার ওপর দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তার ওপর দশটি রহমত বর্ষণ করেন। আবার বলেছেন, ‘যে আমার ওপর দরুদ পাঠ করে আল্লাহ তার ওপর রহমত বর্ষণ করেন, গুনাহ মাফ করেন ও নেকি প্রদান করেন।’
বারের সেরা শুক্রবার। এ দিনে আল্লাহর রসূল (সা)-এর ওপর বেশি বেশি করে দরুদ পাঠের কথা তিনি বলেছেন। এই দরুদ পাঠের জন্য ওযু-গোসলের প্রয়োজন নেই বা মেয়েদের অপবিত্রতাও বাধা নয়। সর্বক্ষণ দরুদ পাঠ করা যায়। সর্বোত্তম দরুদ নামাযে পঠিত দরুদে ইব্রাহিম (আ) এবং ছোট্ট আকারের দরুদ ‘সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াস সাল্লাম’। দরুদ পাঠ করলে আল্লাহপাক তাঁর রহমতের ফেরেশতা দ্বারা তা পৌঁছে দেন। মিলাদ অনুষ্ঠানে মুহাম্মদ (সা) হাজির হন বিশ্বাসে অনেক স্থানে চেয়ার ফাঁকা রাখাতে তিনি কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন।
সম্প্রতি স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের এক কর্মকর্তা তাঁর অফিসে আল্লাহর বিধান জারি করায় (পুরুষের টাকনুর ওপরে কাপড় পরা ও নারিদের পর্দা করা) তাঁকে ওএসডি করায় তিনি সমালোচনা করেন ও কর্মকর্তার প্রতি সহানুভূতি প্রকাশ করে বলেন, আল্লাহপাক তাঁকে এই কাজের উত্তম বিনিময় প্রদান করবেন। সাথে সাথে অধিদপ্তরের ঘুষ-দুর্নীতির সমালোচনা করেন।
ফ্রান্সসহ দেশে-বিদেশে প্রিয়তম নবী মুহাম্মদ (সা)-এর প্রতি সব ধরনের অবমাননায় প্রতিবাদ জানানো মুসলামানদের ঈমানী দায়িত্ব উল্লেখ করে সোচ্চার হওয়ার জন্য তিনি তাঁর মুছল্লিদের প্রতি আহবান জানান।
রসূল (সা)-এর প্রতি আবেগ-ভালোবাসা রবিউল আউয়ালকেন্দ্রিক না হয়ে জীবনের সকল স্তরে সকল সময়ে তাঁকে অনুসরণ ও ভালোবাসা প্রকাশের জন্য তিনি আল্লাহর কাছে তাওফিক কামনা করেন। আমিন। সংক্ষেপিত।
শ্রুতিলিখনে- প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী।
ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়ে ব্যক্তিগত ব্লগ
Comments
Post a Comment