‘আর যে সীমালঙ্ঘন করে, অতঃপর মন্দ কাজের পরিবর্তে ভালো কাজ করে, নিশ্চয়ই (তার প্রতি) আমি চরম ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’- সূরা আন নামল ১১।
আজ সকালে দৈনিক নয়া দিগন্তে (দিগন্ত ইসলামী জীবন) কুরআনের আয়াতটি পড়ার পরেই ভাবনার উদ্ভব হয়, আল্লাহপাক তাঁর বান্দার প্রতি কতখানি দয়ার্দ ও অনুগ্রহশীল তা একটু উপলব্ধি করলেই আল্লাহর প্রতি সহজেই আমরা বিনয়াবনত হতে পারি। ভুল করা মানবপ্রকৃতি কিন্তু ভুলকে স্বীকার না করে তার উপর অনড় হয়ে থাকা শয়তানের স্বভাব। শয়তান সব সময় প্ররোচিত করে, ভুল স্বীকার করা দুর্বলতা, তাই ভুল স্বীকারে বাধা প্রদান করে।
শয়তান জাহান্নামে যাওয়ার পথে তার সঙ্গী-সাথী বাড়াতে চায়। আর শয়তানকে যে বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করে সে মূলত নিকৃষ্ট বন্ধুই পেয়ে থাকে। শয়তানকে সবাই ঘৃণা করে। মানুষের আচার-আচরণ ও কাজে-কর্মে আল্লাহর নাফরমানি করাকেই বলা হয় শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ। আল্লাহর বাণী, তোমরা আল্লাহর আনুগত্য করো এবং তাগুতকে অস্বীকার করো।
এই আয়াতে আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের আশার বাণী শুনিয়েছেন, কেউ যদি তার জীবন থেকে মন্দ পরিহার করে ভালো কাজ করতে পারে তাহলে আল্লাহ তাকে ক্ষমা করার নিশ্চয়তা দান করেছেন। এই ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত থাকার কারণে আল্লাহর অগণিত বান্দা পাপাচার পরিহার করে সুন্দর জীবনে ফিরে আসার সুযোগ পেয়েছে। তাওবা অর্থ প্রত্যাবর্তন করা। অর্থাৎ অসৎ পথ থেকে সৎ পথে ফিরে আসা।
আমাদের জীবনটা বড় অনিশ্চিত। যে কোনো সময় মৃত্যুর ডাক আসতে পারের। এখানে বয়স, পদমর্যাদা কোনো কিছুই বিবেচ্য নয়। আল্লাহর সাথে প্রত্যক্ষ নাফরানি (নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত) এখন থেকে শুরু করলেই ইনশা-আল্লাহ ক্ষমা পাওয়া যাবে। কিন্তু বান্দার হক নষ্ট ও অসদাচরণ বান্দার কাছ থেকে ক্ষমা চেয়ে পরিশুদ্ধ জীবন-যাপনের দিকে অগ্রসর হতে হবে।
অন্যায়-অবিচার ও ঘুষ-দুর্নীতির ফিরিস্তি অনেক দীর্ঘ। হ্যাঁ, হতাশ হওয়ারই কথা। অবশ্য আল্লাহ তাঁর রহমত থেকে নিরাশ হতে নিষেধ করেছেন। সব বিষয় আল্লাহর উপর সোপর্দ করে উপলব্ধিতে আসার সাথে সাথে বান্দার উচিত তাওবা করা। অর্থাৎ সকল অন্যায়-অবিচার থেকে ফিরে আসা। এই সিদ্ধান্ত নিতে পারলে বান্দার ঈমানই বলে দিবে তাকে কী করতে হবে? আল্লাহ অন্যত্র বলেছেন, পাপকে নেকিতে পরিবর্তন করে দিবেন। অর্থাৎ অন্যায় করার কথা যতবার স্মরণ হবে ততবার লজ্জিত ও অনুতপ্ত হওয়াটাই বান্দার জন্য নেকি। সে এমনভাবে তাওবা করে যাতে আল্লাহ সন্তুষ্ট হয়ে আখিরাতে তার পাওনাদারদের নিজ থেকেই প্রদান করবেন। অসম্ভব কিছু নয়।
আমাদের উচিৎ, এই ক্ষুদ্র জীবনে আর অপেক্ষা না করে দ্রুত আল্লাহর সকল নাফরমানি পরিহার করে তাঁর অনুগত বান্দা হয়ে যাওয়া এবং তাঁর দয়া, অনুগ্রহ ও ক্ষমার সুযোগ গ্রহণ করা। আল্লাহপাক আমাদেরকে তাঁর ক্ষমা লাভের সুযোগ দান করুন। আমিন। ২২.১২.২০২০
ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়ে ব্যক্তিগত ব্লগ
Comments
Post a Comment