Skip to main content

মহামারিতে আযাব সবার জন্য




হযরত ইবনে ওমর (রা) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলল্লাহ (সা) বলেছেন, আল্লাহ যখন কোনো জাতির ওপর আযাব অবতীর্ণ করেন, তখন সে জাতির মধ্যে যত লোক বর্তমান থাকে, তাদের প্রত্যেকের ওপর সে আযাব আপতিত হয়। অনন্তর তাদের আমল অনুযায়ী পুনরুত্থান করা হবে। বুখারি শরিফ ৬৬১২।
সমাজে জুলুম-নির্যাতন ও নানাবিধ পাপাচার প্রসার লাভ করলে অনেক সময় শাস্তি বা সতর্কতার জন্য আল্লাহ কোনো জাতির ওপর আযাব অবতীর্ণ করেন। যেমন, কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, যে লুত (আ)-এর জাতিকে সমকামিতার জন্য ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। আবার শোয়াইব (আ)-এর জাতি মাপে ও ওজনে ব্যাপক অনিয়মের জন্য ধ্বংস হয়েছিল।
বর্তমান পৃথিবী অনাচারের সকল সীমা লঙ্ঘন করে গেছে। রসুল (সা) বলেছেন, কোনো সমাজে অশ্লীলতা ব্যাপকভাবে দেখা দিলে সেখানে নতুন নতুন রোগ-ব্যাধি দেখা দেয়। ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা বিশ্বে অশ্লীলতার সয়লাব চলছে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর হবু স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বিবাহবহির্ভূত মা হয়েছেন। সমকামিতাকে আইনসিদ্ধ করা হয়েছে। এত অনাচার আল্লাহ সহ্য করবেন কিভাবে?
এছাড়া জুলুম-নির্যাতনের কোনো সীমাপরিসীমা নেই। মজলুমের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠেছে। অতীতে কোনো জাতি-গোষ্ঠী বা এলাকা আক্রান্ত হলেও এবারে সমগ্র বিশ্ব একযোগে আক্রান্ত হয়েছে।
নূহ (আ)-এর প্লাবন থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য কেনান উঁচু পাহাড়ে উঠতে চেয়েছিল। কিন্তু সে রক্ষা পায়নি। দরকার ছিল আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করার। কিন্তু সে সেদিকে অগ্রসর হয়নি। তাই সে ধ্বংস হয়েছে। সাথে সাথে পরকালেও সে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
মানবজাতির একটি অংশ করোনা ভাইরাসে আল্লাহমুখী হয়েছে। আযাব দেয়ার পেছনে বান্দার ফিরে আসাটাও আল্লাহর উদ্দেশ্য। আল্লাহর এ সব বান্দারা চিকিৎসাশাস্ত্রের সকল নিয়ম-কানুন অনুসরণের পাশাপাশি তাদের রবের কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করছে। এটিই তাদের বড় প্রাপ্তি। তারা তকদিরের উপর বিশ্বাসী। এমতাবস্থায় তাদের মৃত্যু হলে সেটি হবে শাহাদতের মৃত্যু। হাদিসের শেষাংশে সেটিই বলা হয়েছে। তাদের আমল অনুযায়ী পুনরুত্থান হবে।
হাজারো সুরক্ষার পরেও করোনায় যে কেউ আক্রান্ত হতে পারে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী, স্বাস্থ্যমন্ত্রী, স্বাস্থ্য কর্মকর্তা, রাজপরিবার, স্পেনের রাজকুমারীর মৃত্যু আমাদের বলে দিচ্ছে কোনো ধরনের সুরক্ষাই চূড়ান্ত হয়। ব্যক্তি ও সামষ্টিক সুরক্ষার পাশাপাশি মানব জাতির প্রয়োজন ছিল তার রবের দিকে ফিরে আসা এবং গুনাহের জন্য তাঁর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করা।
শুধু বস্তুগত উপকরণ নয়, আল্লাহর পরম উপর নির্ভরশীলতাই পারে এই ভয়াবহ বিপর্যয় থেকে মুক্তি। আল্লাহপাক আমাদের হেফাজত করুন।


Comments