Skip to main content

Posts

Showing posts from April, 2020

ক্ষমা করুন, বিনিময়ে ক্ষমা পাবেন

রমযান আল্লাহর ক্ষমাপ্রাপ্তির মাস। বান্দার অপরাধ ক্ষমা করার জন্য আল্লাহ অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করেন। রসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন, যে ব্যক্তি ঈমান ও এহতেছাবের সাথে রোযা রাখবে আল্লাহ তার অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দিবেন। এ মাসে আল্লাহ জান্নাতের দরজাসমূহ খুলে দেন এবং জাহান্নামের দরজা বন্ধ করে দেন। মানুষের চিরশত্রু শয়তানকে শৃঙ্খলাবদ্ধ করেন। আল্লাহপাক প্রতি রাতেই নিকটবর্তী আসমানে অবতরণ করে তাঁর বান্দাদের ক্ষমা চাওয়ার জন্য আহবান জানাতে থাকেন। আল্লাহর রসুল (সা) বলেছেন, ঐ ব্যক্তি হতভাগা যে রমযান মাস পেল অথচ নিজের গুনাহ মাফ করে নিতে পারলো না। বান্দার জন্য আল্লাহর ক্ষমার দরজা উন্মুক্ত। ক্ষমা পেতে হলে প্রয়োজন গুনাহ থেকে তাওবা (ফিরে আসা) করা এবং অনুতপ্ত হৃদয়ে তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়া। মানুষ আল্লাহর প্রতিনিধি। আল্লাহ চান তাঁর বান্দারা তাঁর গুণে গুণান্বিত হোক। মানুষ হবে উদার ও দরাজদীল এবং ক্ষমাশীল। কেউ জুলুমের শিকার হলে প্রতিশোধ গ্রহণের অধিকার তার রয়েছে। কিন্তু আল্লাহর পছন্দ প্রতিশোধ নয়, ক্ষমা করা। বলার ভঙ্গিটাও বেশ চমকপ্রদ। আল্লাহর ভাষায়, ‘ অন্যায়ের প্রতিবিধান সম পরিমাণ অন্যায়, কিন্তু কেউ যদি ক্ষমা কর...

রোযার মাধ্যমে পরস্পরে সহমর্মিতা ও সহানুভূতি প্রকাশ পায়

আল্লাহপাক পৃথিবীতে মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে পাঠিয়েছেন। তাই বলা হয়েছে তোমরা আল্লাহর রঙে রঞ্জিত হও, আল্লাহর গুণে গুণান্বিত হয়। প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব পালনের লক্ষ্যে আল্লাহর গুণ, ক্ষমতা, এখতিয়ার খুব সীমিত পরিমাণে মানুষকে দান করা করা হয়েছে। আল্লাহ রব, রাজ্জাক, হাকিম; আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষ আব্দুর রব, আব্দুর রাজ্জাক ও আব্দুল হাকিম হয়ে সমাজের মানুষ ও অন্যান্য সৃষ্টির লালন-পালন, রিজিকের বন্টন ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠা করবে, এটিই আল্লাহপাকের অভিপ্রায়। ধনী-দরিদ্র ও নারী-পুরুষ সবার জন্য (সুস্থ-সবল ও মুকিম হলে) একই সাথে রোযা পালন বাধ্যতামূলক। এই ইবাদতে কাউকে কোনো ছাড় দেয়া হয়নি। রোযা পালনের মাধ্যমে ক্ষুধার কষ্ট সবাই সমভাবে অনুভব করে। এটা বক্তৃতা দিয়ে বোঝানো নয় বরং বাস্তব অনুশীলনের মাধ্যমে সবাই উপলব্ধি করেন। লালন-পালনের দায়িত্ব মূলত আল্লাহর। ক্ষুধার্তকে খাদ্যদান,অসুস্থকে সেবাদান আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষকে প্রদানের মাধ্যমে মূলত আল্লাহকেই দেয়া হয়। স্কুলজীবনে কবিতা পড়েছিলাম- হাশরের দিনে বিচারে বসিয়া সুধাবে জগৎস্বামী, তুমি মোরে করো নাই সেবা যবে রুগ্ন যে ছিলাম আমি----। এ...

করোনা সম্পর্কে ভুল ধারণা

করোনা সমগ্র বিশ্বকে স্থবির করে দিয়েছে। আল্লাহর সৃষ্ট এক অতি ক্ষুদ্র জীবাণুর আক্রমণে বাঘা বাঘা নেতৃবৃন্দ, যাদের হুমকিতে সবাই থাকে তটস্থ, যারা যখন-তখন যুদ্ধের ঘোষণা ও নিষেধাজ্ঞা আরোপ করে অথচ আজ তারাসহ বিশ্ববাসী নিষিদ্ধের (লকডাউনের) কবলে। আল্লাহই যে সর্বশ্রেষ্ঠ, তিনি তা দেখিয়ে দিলেন। এ সব বিপদাপদ তিনি দেন যাতে তাঁর বান্দারা পাপাচার থেকে ফিরে আসে। মানুষ অতীতে দু ’ টি বিশ্বযুদ্ধ দেখেছে, কিন্তু এ যুদ্ধের মতো সে দু ’ টি এতো সর্বব্যাপী ছিল না। করোনা ভাইরাসের মোকাবেলায় তাদের পারমানবিক বোমা মোটেই সক্রিয় হলো না। মানুষের অহমিকা, বড়াই আল্লাহর মোকাবেলায় কতো তুচ্ছ তা যদি উপলব্ধি করতো তাহলে পৃথিবীটা বদলে যেত। করোনার চেয়ে আমরা শক্তিশালী, এটি ভুল, বড় ভুল। হ্যাঁ, মানুষ সৃষ্টির সেরা, সকলের ওপর কর্তৃত্ব করার ক্ষমতা আল্লাহ মানুষকে দিয়ে রেখেছেন। আবার মানুষকে বড় দুর্বল ও অসহায় করে সৃষ্টি করা হয়েছে। আল্লাহর অতি ক্ষুদ্র সৃষ্টির কাছেও সে অসহায় হয়ে পড়ে। তাই আল্লাহ মানুষকে শিখিয়েছেন, তাঁর সকল সৃষ্টির অনিষ্ট থেকে তাঁরই কাছে আশ্রয় চাইতে। আল্লাহপাক আমাদেরকে হেফাজত করুন। করোনা ভাইরাস সংক্রামক। মানুষে মানুষে এ...

করোনা শহীদ : প্রাসঙ্গিক কথা

আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে তাঁর দ্বীন প্রতিষ্ঠায় জীবন উৎসর্গকারীকে ইসলামের পরিভাষায় শহীদ বলা হয়। একজন শহীদের মর্যাদা অতি উচ্চে দুনিয়ার জীবনে ও আখিরাতে। দুনিয়ায় সে বীরের মর্যাদায় মানুষের ভক্তি, শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা পায়, আর আখিরাতে রয়েছে বিনা হিসাবে জান্নাত। দুনিয়ায় সুখি ও সুন্দর জীবনযাপনের লক্ষ্যে আল্লাহপাক হেদায়াতসহ অসংখ্য নবী-রসুল প্রেরণ করেছেন। সর্বোত্তম চরিত্রের অধিকারী নবী-রসুলদেরকে কোনো সময়ই কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী মেনে নিতে পারেনি। দুনিয়ার ইতিহাস হলো হক ও বাতিলের দ্বন্দ্ব এবং এ দ্বন্দ্ব চিরন্তন। কুরআন আমাদের সম্মুখে উপস্থাপন করেছে নমরুদের বিরুদ্ধে ইব্রাহিম (আ), ফিরাউনের বিরুদ্ধে মুসা (আ) এবং আরব জাহিলিয়াতের বিরুদ্ধে মুহাম্মদ (সা)-কে। দ্বন্দ্ব-সংগ্রামের কথা বলতে গিয়ে আল্লাহ বলেছেন, ‘ যারা ঈমানদার তারা আল্লাহর পথে চেষ্টা-প্রচেষ্টা চালায়, আর যারা কাফির তারা তাগুতের (খোদাদ্রোহীতা) পথে চালায়, তোমরা শয়তানের বিরুদ্ধে লড়াই করো, আর বিশ্বাস করো শয়তানের ষড়যন্ত্র আসলেই দুর্বল ’ । হক ও বাতিলের দ্বন্দ্ব-সংগ্রামে নিহত ব্যক্তিকে মৃত বলতে আল্লাহ নিষেধ করেছেন। আল্লাহর ভাষায়, ‘ যারা আল্লাহ...

ক্ষমা করো, প্রভু হে

‘ হে আমাদের প্রতিপালক! যে বোঝা বহন করার সামর্থ্য আমাদের নেই তা আমাদের ওপর চাপিয়ে দিয়ো না। আমাদের প্রতি কমোল হও, আমাদের অপরাধ ক্ষমা করো এবং আমাদের প্রতি করুণা করো। তুমিই আমাদের অভিভাবক ’ -সূরা বাকারা ২৮৬ (অংশবিশেষ)। এ অংশটুকু একটি মোনাজাতের অংশ। সূরা বাকারা ২৮৬ আয়াতবিশিষ্ট কুরআন মজিদের সর্ববৃহৎ সূরা। এটি মাদানী সূরা হলেও শেষ তিনটি আয়াত হিজরতের পূর্বে মি ’ রাজের সময় নাজিল হয়। সেই সময়টি ছিল মুসলমানদের জন্য বড় দুঃসময়। আল্লাহর ক্ষমতা-এখতিয়ার ও সর্বময় ক্ষমতা, মৌলিক আকিদা-বিশ্বাস ও মু ’ মিনের পূর্ণ আত্মসমর্পণ (আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম), মানুষের সীমাবদ্ধতা ও পাপ-পুণ্যের প্রতিদানের কথা বলার পর আল্লাহ নিজেই শিখিয়ে দিয়েছেন কিভাবে তাঁর কাছে দুআ করতে হবে। এ চাওয়া ব্যর্থ হওয়ার মতো নয়। এখানে এ বিষয়টি স্পষ্ট করা হয়েছে যে, সব ধরনের বিপদাপদ ও সংকট আল্লাহর দেয়া। সূরা তাগাবুনে বলা হয়েছে, কোনো বিপদ কখনো আসে না, আল্লাহর অনুমতি ছাড়া। আল্লাহর সকল সৃষ্টির ওপর তাঁর কর্তৃত্ব সীমাহীন। বিপদাপদ বিশ্বাসী-অবিশ্বাসী সবার ওপর ক্রিয়া করে। বিশ্বাসীদের জন্য এটা এক পরীক্ষা। তাদেরকে গুনাহ থেকে পরিশুদ্ধ করে এবং গা...

আল্লাহর কাছে ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতের পুরস্কার আছে

'যে ব্যক্তি কেবল ইহকালের পুরস্কার চায়, তার জেনে রাখা উচিত, আল্লাহর কাছে ইহকাল ও পরকাল উভয় জগতের পুরস্কার আছে এবং আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও সবকিছু দেখেন'- সূরা আন নিসা ১৩৪। আল্লাহপাক সকল সৃষ্টির রব। সকলের প্রয়োজন পূরণ ও তাদের চেষ্টা-প্রচেষ্টার বিনিময় তিনি দান করেন। এক্ষেত্রে কে আল্লাহকে মানে, আর কে মানে না সেটা বিবেচনা ছাড়াই প্রদান করে থাকেন। কিন্তু আখিরাতের বিষয়টি সম্পূর্ণ ভিন্ন। সেখানে কেবল বিশ্বাসী ও নেক আমলকারী বান্দারাই প্রতিদান পাবেন। বুদ্ধিমান তারাই যারা আল্লাহর কাছে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ কামনা করে ও সেভাবে নিজেদের জীবন পরিচালনা করে। দুনিয়াপুজারী আল্লাহর নাফরমান বান্দাদের চাকচিক্য দেখে প্রভাবিত না হয়ে আল্লাহর কাছে তাঁর শেখানো ভাষায় বলি, পরোয়ারদেগার! 'তুমি আমাদেরকে দুনিয়া ও আখিরাতের কল্যাণ দান করো।'

আমরা মানবিক হই

সাধারণ সর্দি-জ্বর হলেও মানুষ করোনা সন্দেহে আক্রান্ত ব্যক্তির সাথে অমানবিক আচরণ করছে। ফরিদপুরে একজন লোক জ্বরে আক্রান্ত হয়ে ভ্যানে হাসপাতালে যাওয়ার পথে ভ্যানচালক করোনা সন্দেহে রাস্তার পাশে নমিয়ে রেখে চলে গেলে তার প্রতি কেউ আর খেয়াল করেনি। ফলে দীর্ঘক্ষণ পড়ে থাকার ফলে তার মৃত্যু হয়। আরো সমস্যা হচ্ছে লাশ দাফন নিয়ে। করোনা আক্রান্ত ব্যক্তির মরদেহ রোগজীবাণু ছড়ায় না মর্মে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা ঘোষণা প্রদান করলেও মানুষ কোনো কবরস্থানে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তিকে দাফন বা কোনো এলাকাতে লাশসহ প্রবেশেও বাধা প্রদান করছে। গণস্বাস্থ্যের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরীও স্পষ্ট করে বলেছেন, ভয়-ভীতি ও শংকা ছাড়া প্রত্যেককে নিজ নিজ ধর্মীয় নিয়মানুসারে দাফন-কাফনের ব্যবস্থা করেন। মরদেহ কোনো অবস্থাতেই করোনা ভাইরাস ছড়ায় না। এমন পরিস্থিতির কারণে করোনা আক্রান্ত ব্যক্তি নিজেকে প্রকাশের ভয়ে লুকিয়ে রাখছে এবং এর ফলে করোনার বিস্তার রোধ দুরূহ হয়ে পড়বে। কখন কার ভাগ্যে কী ঘটবে কারো জানা নেই। আমরা কেউ ঝুঁকিমুক্ত নই। আমরা সব ধরনের সতর্ককতা ও সাবধানতা অবলম্বন করবো। তারপরও আমরা নিশ্চিত নই, আমাদের গৃহিত সুরক্ষা করোনা আক্র...

আল্লাহ ক্ষমাকারী

‘ যে ব্যক্তি কোনো গুনাহ করে অথবা নিজের ওপর জুলুম করে এবং এরপর আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনা করে, তাহলে সে আল্লাহকে ক্ষমাকারী ও পরম দয়ালু হিসেবেই পাবে'- সূরা আন নিসা ১১০। বান্দার প্রতি আল্লাহর দয়া-অনুগ্রহ অসীম। মানুষের দ্বারা ভুল-ত্রুটি হবে না, এটি মানবপ্রকৃতি নয়, মানুষ অন্যায় করবে কিন্তু সেই অন্যায়ের ওপর অনঢ় হয়ে থাকবে না, সে তার রবের কাছে ফিরে আসবে। ফিরে আসলেই সে আল্লাহর ক্ষমা লাভে ধন্য হবে। পক্ষান্তরে শয়তান ভুলকে স্বীকার না করে দম্ভ ও অহংকার প্রকাশ করে, ফলে তার ক্ষমা নেই। আল্লাহর কাছে ফিরে আসা (তাওবা) অর্থ সেই গুনাহ আর না করা। যেমন, সে নামায না পড়ে থাকলে নামায শুরু করবে, বেপর্দা চলাফেরা করলে পর্দা মেনে চলবে, মানুষের অধিকার হরণ করে থাকলে তা ফিরিয়ে দিবে ইত্যাদি। গুনাহ অর্থ আল্লাহর নাফরমানি করা। অর্থাৎ আল্লাহ ও তাঁর বান্দার হক নষ্ট করা। আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সা)-এর সকল হুকুম নিঃশর্তভাবে মেনে চলার (আমরা শুনলাম ও মেনে নিলাম) নামই ইসলাম এবং যারা মেনে চলে তারাই মুসলিম (আত্মসমর্পণকারী)। এই নিঃশর্ত আনুগত্য আমাদের ব্যাবহারিক জীবনেও আমরা লক্ষ্য করি। সরকার কর্তৃক নিয়োগপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ ...

শবে বরাত

শবে বরাতের সেই জৌলুস আর নেই। নানা আচার-অনুষ্ঠান, হালুয়া-রুটি বিতরণ, বাড়ি বাড়ি মিলাদ, রাত জেগে ইবাদত-বন্দেগি, কবর জিয়ারত কতো কিছু আমরা দেখেছি। আমাদের নবম ও দশম শ্রেণিতে কবি গোলাম মোস্তফার লেখা ‘ শবে বরাত ’ কবিতা পাঠ্য ছিল। ‘ জান-সালামত বন্টন করা পূণ্য রাত ’ ভাগ্যরজনী হিসেবেই আমাদের সমাজে চালু ছিল। শবে বরাতে সরকারি ছুটির পাশাপাশি বাজারে গোশ্তের চাহিদা ও দাম বেড়ে যেত। মানুষের মধ্যে জানা-শোনা বেড়ে যাওয়ার কারণে শবে বরাতের আগের আবেদন এখন আর নেই। তারপরও যতটুকু আছে তার ভিত্তিতে বলা যায়, এটি একটি নফল ইবাদতের রাত এবং নফল ইবাদত মসজিদে নয় ঘরে করাটাই উত্তম। দেশের করোনা পরিস্থিতির কারণে সরকারের পক্ষ থেকে শবে বরাত উপলক্ষে মসজিদে উপস্থিত না হয়ে ঘরে ইবাদত-বন্দেগী করার জন্য অনুরোধ জানানো হয়েছে। আল্লামা শফী এবং দেওবন্দের মুহতামিম আবুল কাসেম নোমানি তাঁদের পক্ষ থেকে মুছল্লিদেরকে ঘরে নামায পড়া এবং করোনা মোকাবেলায় নিজ নিজ সরকারকে সহযোগিতা করার জন্য আহবান জানিয়েছেন। শবে বরাত সম্পর্কীয় হাদিসগুলো নিয়ে পক্ষ-বিপক্ষে অনেক কথা রয়েছে। আমি সেদিকে যাব না। হাদিসগুলোর মর্ম হলো, এ রাতে আল্লাহপাক তাঁর বিপুল পরিমা...

মৃত্যু : এক অনিবার্য সত্য

জীব মাত্রই মৃত্যু রয়েছে। আল্লাহর ভাষায়, ‘ প্রত্যেক প্রাণীই মৃত্যুর স্বাদ ভোগ করবে ’ -সূরা আলে ইমরান ১৮৫। কী আস্তিক, আর কী নাস্তিক কেউ তা অস্বীকার করে না। পার্থক্য হলো, আস্তিক মৃত্যু পরবর্তী জীবন বিশ্বাস করে এবং সেই আলোকে সে দুনিয়ার জীবনটা পরিচালনা করে। মৃত্যু এজন্যই, যাতে নেক ও বদ আমলের বিনিময়ে মানুষ জান্নাত বা জাহান্নাম ভোগ করতে পারে। মৃত্যু এ দুনিয়ার সকল আনন্দ, ভোগ-বিলাস মুহূর্তেই শেষ করে দেয়। মৃত্যুর কথা স্মরণ হলে মানুষ ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়ে এবং বাঁচার জন্য প্রাণপণ চেষ্টা করে। একজন কাফিরের জন্য মৃত্যু যতখানি ভয়ের, মু ’ মিনের জন্য ততখানি নয়। এ দুনিয়ায় মু ’ মিনের নামায-রোযা ও সকল নেক আমলের পেছনে একটিই লক্ষ্য, মৃত্যুর পরে সে যেন আল্লাহর ক্ষমা ও জান্নাত পায়। জান্নাতের সুখ-স্বাচ্ছন্দ্য ও জাহান্নামের ভয়াবহ আযাব সম্পর্কে সে পুরোপুরি অবহিত; তাই মৃত্যুকে নয়, জাহান্নামের আযাবকে সে ভয় পায়। মু ’ মিন হয় সাহসী, চলার পথে সব ধরনের সতর্কতা ও সাবধানতা অবলম্বন করে সে তার নির্দিষ্ট লক্ষ্যপানে এগিয়ে যায় এবং সে জানে মৃত্যুর বিষয়টি একান্তই আল্লাহর হাতে। আল্লাহর বাণী, ‘ আল্লাহই মানুষের জীবন দে...

মহামারিতে আযাব সবার জন্য

হযরত ইবনে ওমর (রা) কর্তৃক বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলল্লাহ (সা) বলেছেন, আল্লাহ যখন কোনো জাতির ওপর আযাব অবতীর্ণ করেন, তখন সে জাতির মধ্যে যত লোক বর্তমান থাকে, তাদের প্রত্যেকের ওপর সে আযাব আপতিত হয়। অনন্তর তাদের আমল অনুযায়ী পুনরুত্থান করা হবে। বুখারি শরিফ ৬৬১২। সমাজে জুলুম-নির্যাতন ও নানাবিধ পাপাচার প্রসার লাভ করলে অনেক সময় শাস্তি বা সতর্কতার জন্য আল্লাহ কোনো জাতির ওপর আযাব অবতীর্ণ করেন। যেমন, কুরআনে বর্ণিত হয়েছে, যে লুত (আ)-এর জাতিকে সমকামিতার জন্য ধ্বংস করে দেয়া হয়েছিল। আবার শোয়াইব (আ)-এর জাতি মাপে ও ওজনে ব্যাপক অনিয়মের জন্য ধ্বংস হয়েছিল। বর্তমান পৃথিবী অনাচারের সকল সীমা লঙ্ঘন করে গেছে। রসুল (সা) বলেছেন, কোনো সমাজে অশ্লীলতা ব্যাপকভাবে দেখা দিলে সেখানে নতুন নতুন রোগ-ব্যাধি দেখা দেয়। ইউরোপ-আমেরিকাসহ সারা বিশ্বে অশ্লীলতার সয়লাব চলছে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রীর হবু স্ত্রী অন্তঃসত্ত্বা। নিউজিল্যান্ডের প্রধানমন্ত্রী বিবাহবহির্ভূত মা হয়েছেন। সমকামিতাকে আইনসিদ্ধ করা হয়েছে। এত অনাচার আল্লাহ সহ্য করবেন কিভাবে? এছাড়া জুলুম-নির্যাতনের কোনো সীমাপরিসীমা নেই। মজলুমের কান্নায় আকাশ-বাতাস ভারি হয়ে উঠ...

হতাশ হবেন না।

‘ বলো (আমার একথা) হে আমার বান্দারা, যারা নিজেদের আত্মার ওপর জুলুম করেছো আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চয়ই আল্লাহ সমস্ত গুনাহ মাফ করে দেন। নিশ্চয়ই তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু। তোমরা ফিরে এসো তোমাদের রবের দিকে এবং তাঁর অনুগত হয়ে যাও তোমাদের আযাব আসার পূর্বেই। তখন কোনো দিক থেকেই আর তোমরা সাহায্যপ্রাপ্ত হবে না। আর অনুসরণ করো তোমাদের রবের প্রেরিত কিতাবের সর্বোত্তম দিকগুলোর- তোমাদের ওপর আকস্মিকভাবে আযাব আসার পূর্বেই- যে সম্পর্কে তোমাদের খবর থাকবে না ’ - সূরা আয যুমার ৫৩-৫৫। ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদের সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মুফতি সাইফুল ইসলামের ইউটিউবে করোনা ভাইরাসকে সম্মুখে রেখে গতকালে প্রদত্ত সূরা আয যুমার ৫৩-৫৫ আয়াতের আলোচনা শুনছিলাম। তখনই ভেবেছিলাম ফেসবুক বন্ধুদের সাথে আলোচনাটি শেয়ার করবো। ‘ মন্দা উত্তরণে করণীয় ’ বিষয়ে একটি লেখা নিয়ে সারাটি দিনই ব্যস্ত ছিলাম, তাই বেশ বিলম্ব হয়ে গেল। (আমার সেই লেখাটি ফেসবুকে দেয়া আছে)। সূরা আয যুমারের এই তিনটি আয়াতে মানব জাতিকে আশার বাণী শোনানো হয়েছে। হে আমার বান্দারা, বড় স্নেহ-আদর ও ভালোবাসার ডাক। আসলে মানুষ আল্লাহর বড় প্রিয় সৃষ্টি, সকল ...

পর্দা অপরিহার্য

নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত যেমন ফরজ, তেমনি পর্দা মানাও ফরজ। পর্দাহীনতা কবিরা গুনাহ এবং জাহান্নামে যাওয়ার কারণ হতে পারে। পর্দাহীনতা অশ্লীলতারই নামান্তর। কোনো সমাজে অশ্লীলতা ছড়িয়ে পড়লে সেই সমাজে আল্লাহ বালা-মুসিবত নাজিল করেন বলে রসুলুল্লাহ (সা) হুশিয়ার করেছেন। দেশে দেশে করোনা ভাইরাস আল্লাহর পক্ষ থেকে এক সতর্কবার্তা। মাত্র ৩/৪ মাসে ১১ লক্ষ মানুষ আক্রান্ত হয়ে পড়েছে, ৫৯ হাজার লোক মৃত্যুবরণ করেছে এবং সমগ্র বিশ্ব আজ স্থবির। বিজ্ঞানের জয়যাত্রা, পারমানবিক ক্ষমতার দম্ভ, অঢেল ধন-সম্পদের অহংকার আল্লাহর এক সৈনিক ক্ষুদ্র জীবাণুর কাছে পরাস্ত। করোনা ভাইরাসের কারণে আল্লাহর অনেক বান্দাহ হেদায়াতের পথে ফিরে এসেছেন। আলহামদু লিল্লাহ। আমি আমার মা-বোনদের উদ্দেশ্যে কিছু বলতে চাই। সর্বোত্তম সৃষ্টি নারীর জন্য আল্লাহ জান্নাতপ্রাপ্তিকে সহজ করে দিয়েছেন। মৌলিক ইবাদতসমূহ পালন এবং পর্দার মধ্যে চলে একজন নারী সহজেই জাহান্নাম থেকে মুক্তি পেতে পারে। পর্দা নারীর ভূষণ, এটি তার প্রকৃতিতেই আল্লাহ দিয়ে রেখেছেন। শয়তানই মূলত নারীকে পর্দাহীনতার দিকে ঠেলে দেয়। আমি পর্দা বলতে নেকাব পরার কথা বলছি না। প্রিয়তম নবী মুহাম্মদ (সা) ...

মন্দা উত্তরণে করণীয়

করোনা ভাইরাস আমাদের স্বাস্থ্যঝুঁকির পাশাপাশি অর্থনীতিতে বড় ধরনের সংকট সৃষ্টি করেছে। মৃত্যুর মিছিল দীর্ঘ থেকে দীর্ঘতর হচ্ছে। এ পর্যন্ত করোনায় আক্রান্ত হয়েছে ৯,৩৫,৫৮২ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৪৭,২৩২ জনের। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর রাষ্ট্র আমেরিকায় করোনা আক্রান্ত রোগীর সংখ্য ২,০৩,৬০৮ জন, মৃতের সংখ্যা পাঁচ হাজার এবং একদিনে মৃত্যুর রেকর্ড ১,০৪১ জন। আমেরিকার সাথে ইউরোপের অবস্থাও বড় করুণ এবং ইউরোপে মৃতের সংখ্যা ৩০ হাজার। এক ইতালিতেই মারা গেছেন ১৩,১৫৫ জন। করোনা ভাইরাসের কারণে সারা বিশ্বে চলছে লকডাউন এবং অর্থনৈতিক কর্মকান্ড স্থবির হয়েছে পড়েছে। বর্তমানে করোনা ভাইরাস বিশ্বব্যাপী। বাংলাদেশে ইউরোপ-আমেরিকার মত অবস্থা না হলেও করোনা ভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কায় গত ২৬ তারিখ থেকে ১১ এপ্রিল পর্যন্ত চলছে সরকারি ছুটি ও লকডাউন। ফলে অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্থবিরতা নেমে এসেছে। দেশের রপ্তানিমুখি শিল্প গার্মেন্টস খাতসহ সকল শিল্প-কারখানা বন্ধ। পরিবহন খাতসহ বিভিন্ন পেশায় নিয়োজিত শ্রমজীবী মানুষ ও ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী শ্রেণি সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই শ্রেণির মানুষের হাতে কোনো ক্রয়ক্ষমতা নেই। তারা বড় বিপদগ্রস্ত। ব...