Skip to main content

Posts

Showing posts from October, 2023

ফিলিস্তিনের মজলুম ভাই-বোনদের পাশে দাঁড়ানো আমাদের ঈমানের দাবি

 জুমা আলোচনা বাঁশেরদিয়াড় আল হেরা জামে মসজিদ তারিখ : ১৩.১০.২০২৩ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম বাঁশেরদিয়াড় আল হেরা জামে মসজিদ, খুব প্রাচীন না হলেও একেবারে কম নয়, বয়স ২৬ বছর (২রা ফেব্রুয়ারি ১৯৯৭ সনে প্রতিষ্ঠিত), অথচ বাড়ির নিকটবর্তী হওয়া সত্ত্বেও আজই আমার প্রথম জুমা আদায়। আমার  স্নেহধন্য নাহিদের আমন্ত্রণে আজ সেখানে নামাজ আদায় ও কিছু কথা বলার সুযোগ হয়।   মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম মকছেদ আলী ড্রাইভার মসজিদের আঙিনায় চিরদিনের জন্য শায়িত আছেন। আমরা তাঁর মাগফেরাত কামনা করি। বর্তমানে মসজিদের সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন আমার একান্ত স্নেহধন্য জনাব মো. ছাইদুর রহমান এবং সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন এক ভাইপো  জনাব আবু সাঈদ (ইউপি মেম্বর)। মসজিদের সাথে সংশ্লিষ্ট সকলের কল্যাণ কামনা করি। সমবেত মুসল্লিদের উদ্দেশ্যে আমার বক্তব্য - আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। গ্রামে বেশ কিছু মসজিদে আমি নামাজ আদায় করেছি। সম্প্রতি প্রচুর মসজিদ গড়ে উঠেছে। আল্লাহর ঘর শুরু করলে স্বল্প সময়ের মধ্যে তা সুন্দর মসজিদে রূপ নেয়। আলহামদু লিল্লাহ। অধিকাংশ মসজিদে মুসল্লিরা অনেক বিলম্বে আসেন। কিন্তু আপ...

ইন্না লিল্লাহর মর্ম বুঝেছে ফিলিস্তিনরা

 ফিলিস্তিনের হামাস ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যা করেছে তা এক বিস্ময়। মানুষের জ্ঞানে তা ব্যাখ্যা করা কঠিন। যেমনটি বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর আমেরিকাকে পরাস্ত করলো আফগানরা। আমি মনে করি সবই আল্লাহপাকের নিদর্শন। আমি করোনাকেও আল্লাহ তায়ালার নিদর্শন মনে করি। এই করোনায় সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বর্তমান বিশ্বের পরাশক্তি ইউরোপ ও আমেরিকা। তাদের জ্ঞান-বিজ্ঞান, আবিষ্কার শৌর্যবীর্য, সম্পদ সবকিছুকে আল্লাহ সাময়িকভাবে স্তব্ধ করে দিয়েছিলেন। কিন্তু তা থেকে তারা শিক্ষা গ্রহণ করেনি। জালেম কখনোই উপলব্ধি করে না। একজন মুসলমান হিসেবে আমি বিশ্বাস করি, মহান আল্লাহপাকের ইচ্ছার বাইরে কোনো কিছু সংঘটিত হয় না। মানুষের মৃত্যুর কথা শুনে আমরা পড়ে থাকি ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন। নিশ্চয়ই আমরা আল্লাহরই জন্য এবং তাঁরই কাছে ফিরে যাবো। এই উক্তির মধ্য দিয়ে আমরা ঘোষণা দেই, আমাদের নিজস্ব বলে কিছু নেই, আমরা পরিপূর্ণ আল্লাহতে সমর্পিত। আমরা না নিজের, পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রের, আমরা পরিপূর্ণ আল্লাহর। এই সমাজে যা করি তা আল্লাহর পক্ষে, তাঁর মর্জি ও নির্দেশক্রমে। আল্লাহ তায়ালা আমাদের সীমিত জ্ঞান ও যোগ্যতা দিয়েছেন তা তাঁর প্রতিনিধি ...

এখন মোটামুটি সুস্থ

 তিন মাস পূর্বে অসুস্থ হয়ে প্রথমে ধানমন্ডি বাংলাদেশ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও পরে আগারগাঁও নিউরো সাইন্স হাসপাতালে ডা. কবিরুজ্জামান (অত্যন্ত আন্তরিক) সাহেবের নিকট দুবার চিকিৎসা নিয়েছি। সেবারে ইসিজি, ইকো ও ব্রেনের এমআরআই করা হয়। আমার বয়স ৭০ বছর। তখন থেকে ঔষধ Co-dopa 110 & Rivamer 1.5 খাচ্ছি। কো-ডোপা দৈনিক (সকাল, দুপুর ও রাত) তিনটা এবং রিভামির রাতে একটি করে। দুমাস পরে দেখা করার কথা (সেপ্টেম্বর মাসের শেষে)। মোটামুটি ভালো ছিলাম। আমার স্বাভাবিক জীবন যাপন। রাত সাড়ে দশটার দিকে ঘুমিয়ে পড়ি। ঘুমানোর পূর্বে এক গ্লাস পানি খাই। আগের তুলনায় বর্তমানে একটু ঘন ঘন পেশাব হয়। গতকাল রাত দুটোয় স্বাভাবিকভাবে বাথরুম থেকে এসে শোয়ার আধাঘন্টা পর আবার বাথরুমে যেতে হয় এবং খুব ঢেকুর উঠতে থাকে। এসময়ে মাথা ঘুরে ও বমি হয় এবং ঘাম ঝরে।  রনির আম্মা কিছুক্ষণ পরে আমার ছোট ভাই ডা. কামালের সাথে কথা বলে। কামাল স্যালাইন নেয়ার কথা বলে। আতিয়ার/শাহানুরকে ডেকে দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বলে। রাতে লুলু ওদের বললে দুজনই ইতিবাচক সাড়া দেয়। ফজর পড়ে আতিয়ার এসে কামালের সাথে পরামর্শ করে স্যালাইন এনে পুস করে এবং এখন ভালো বোধ করছ...

এক অকৃতজ্ঞ জাতি বনি ইসরাইল (ইহুদি জাতি)

 কুরআনের পাঠ  সুরা বাকারা ষষ্ঠ রুকু ৪৭-৫৯ আয়াত পঞ্চম থেকে চৌদ্দ রুকু বনি ইসরাইল জাতি সম্পর্কে উল্লেখ করা হয়েছে। ইহুদিদের বজ্জাতি নতুন না। ওরা পৃথিবীতে বিপর্যয় সৃষ্টিকারী এক জাতি। অসংখ্য নবি-রসুলকে তারা হত্যা করেছে।  ষষ্ঠ রুকুতে আমরা তাদের প্রতি আল্লাহ তায়ালা  প্রদত্ত নেয়ামত লক্ষ করবো। ৪৭ নং আয়াতে সমস্ত জাতির ওপর বনি ইসরাইলকে শ্রেষ্ঠত্ব দানের উল্লেখ করার পর আখেরাতকে ভয় করার জন্য আল্লাহ বলেন, সেদিন কেউ কারো কোনো উপকারে আসবে না, কারো সুপারিশ গৃহীত হবে না, বিনিময় নিয়ে কাউকে ছেড়ে দেওয়া হবে না এবং কোথাও থেকে কোনো সাহায্য লাভ করতে পারবে না। আল্লাহপাক তাদের ভ্রান্ত ধর্মবিশ্বাসের মূলোৎপাটন করে স্পষ্ট বলেছেন, আল্লাহর সাথে কারো কোনো বিশেষ সখ্যতা নেই। আল্লাহর কাছে মূল্য বহন করে ঈমান ও নেক আমল। বর্তমানে মুসলমানদের বিশ্বাসও ইহুদিদের মতোই। তাদের ধারণা, শেষ নবির উম্মত, তাঁর সুপারিশে সবাই জান্নাতে চলে যাবে। আর জাহান্নামে গেলেও সামান্য সময়ের জন্য। আল্লাহ বলেন, তোমরা যদি সত্যবাদী হও তাহলে মৃত্যু কামনা করো দেখি। ৪৭-৪৮ পরবর্তী ৪৯-৫০ আয়াতে আল্লাহপাক স্মরণ করে দিয়েছেন, ফেরাউন ও তার দলবলের...

চলতে ফিরতে দেখা

 ইটের লরির সাথে চারজন শ্রমিকের সাথে একজনকে দেখলাম বয়সে একটু কম। জিজ্ঞেস করলাম, পড়ালেখা করো? জবাব দিল, হ্যাঁ। আবার জিজ্ঞেস করলাম, কোন্ ক্লাসে পড়ো? বললো, ক্লাস সেভেনে। ছেলেটার চেহারায় লাবণ্য আছে এবং দেখতেও সুন্দর। বললাম, লেখাপড়া ও ইটটানা কোনটা বেশি কঠিন? তার জবাব, দুটোই কঠিন। আসলে লেখাপড়ার ক্ষেত্রে ঝরে পড়ার জন্য দারিদ্র্যের পাশাপাশি লেখাপড়াকে কঠিন মনে করাটাও দায়ী। বাবা-মার অভিযোগ, ছেলেমেয়েরা লেখাপড়া করতে চায় না। স্কুল ফাঁকি দেওয়া ও প্রাইভেট টিউটরের কাছে না যেতে চাওয়া একটা সাধারণ ব্যাপার। বাবা-মারা সন্তানের লেখাপড়া নিয়ে দারুণ পেরেশান। আসলে ছেলেমেয়েদের সম্মুখে আমরা ভালো কিছু উপস্থাপন করতে ব্যর্থ হচ্ছি। সকল বাবা-মা চান তার সন্তান লেখাপড়া করুক। ছেলেমেয়ে আগ্রহী হলে অর্থসংকট বাধা হয় না। সন্তানের জন্য বাবা-মা তাদের কষ্টকে কিছু মনে করে না। পিতা ভ্যান চালিয়ে এবং মা অপরের বাড়িতে কাজ করে হলেও সন্তানকে লেখাপড়ার সুযোগ করে দেয়। আমি অনেক ছেলেমেয়েকে জিজ্ঞেস করে দেখেছি, জবাব দেয় নিজেদের গাফিলতির কারণেই লেখাপড়া হয়নি।বাবা-মাকে দোষারোপ করার মতো কোনো সন্তান পায়নি। স্কুলের শিক্ষার্থী শুধু নয় কলেজ বিশ্ববি...

কুরআনের পাঠ

 সুরা বাকারা পঞ্চম রুকু ৪০-৪৬ আয়াত চতুর্থ রুকু পর্যন্ত সকল মানুষকে সম্বোধন করে কথা বলার পর পঞ্চম থেকে চৌদ্দ রুকু বনি ইসরাঈল সম্পর্কে ধারাবাহিক আলোচনা করা হয়েছে। ইসরাইল ইয়াকুব আ.-এর উপাধি। এর অর্থ আব্দুল্লাহ (আল্লাহর বান্দা)। তিনি আল্লাহর পক্ষ থেকে এই উপাধি লাভ করেছেন। ইয়াকুব আ. ইসহাক আ.-এর পুত্র এবং ইব্রাহিম আ.-এর নাতি। ইয়াকুব আ.-এর বংশধরদের বলা হয় বনি ইসরাইল। এই বংশে অনেক নবি-রসুলের আগমন হয়েছে। মুসা আ. এই বংশেরই নবি ও এখানে তাঁর অনুসারী ইহুদি জনগোষ্ঠীকে লক্ষ্য  করেই কথা বলা হয়েছে। বনি ইসরাইলকে আল্লাহপাক প্রভূত নেয়ামত দান করেছেন। স্বৈরশাসক ফেরাউনের কবল থেকে মুক্তি, নিরাপদে সাগরপাড়ি, মান্না ও সালওয়া দিয়ে খাদ্যের ব্যবস্থা সর্বোপরি তাদের বংশে নবুয়ত দান। কিন্তু তারা বারবার আল্লাহর নাফরমানি করে আল্লাহকে প্রদত্ত অঙ্গীকার ভঙ্গ করেছে। আল্লাহর নেয়ামত ও তাঁকে দেওয়া ওয়াদা স্মরণ করে দিয়ে আল্লাহকে ভয় করে চলার জন্য আহবান জানানো হয়েছে। তাদেরকে মুহাম্মদ সা.-এর ওপর অবতীর্ণ কিতাবের প্রতি ঈমান আনার জন্য বলা হয়েছে। এটা অভিনব কোনো কিতাব নয় বরং তাদের কিতাবের সত্যতা সমর্থনকারী। আসলে ওরা দুনিয়া পূজার...

এক বিস্ময় : বিগত পঞ্চাশ বছরে এতবড় হামলার সম্মুখীন হয়নি ইসরাইল।

 ফিলিস্তিনের ভূমি দখল করে উপর্যুপরি হামলা, হত্যা ও একের পর এক ভূমি দখল করে অবৈধ বসতি স্থাপন এবং মুসলমানদের প্রথম কিবলা আল আকসায় নামাজে বাধাদান ও এর মর্যাদা ক্ষুন্ন করাসহ দেশে দেশে ফিলিস্তিনী নেতৃবৃন্দকে হত্যার প্রতিশোধ হিসেবে ইসরাইলের ওপর এক বড়ো ধরনের হামলা করতে সক্ষম হলো সে দেশের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সামরিক শাখা। সত্যি এটা একটা বিস্ময়! এর ব্যখ্যাদান বড়ো কঠিন। আল্লাহপাকই ভালো জানেন। এ পর্যন্ত প্রাপ্ত খবরে জানা যায় ইসরায়েলের সাতশ জন নিহত হয়েছে। গাজা এলাকায় বিমান হামলায় ৩৭০ জন ফিলিস্তিনি শহিদ হয় এবং কয়েক হাজার আহত হয়। শতাধিক ইসরাইলিকে বন্দী করে হামাস নিয়ন্ত্রিত এলাকায় নিয়ে আসে।এটিই তাদের বড়ো সাফল্য। পাঁচ সহস্রাধিক ফিলিস্তিনি ইসরাইলের কারাগারে বন্দী রয়েছে। যুদ্ধবিরতি ও বন্দী বিনিময়ে এটি কার্যকর ভূমিকা রাখবে ইনশা-আল্লাহ। ইসরায়েলের পার্লামেন্ট এই ঘটনার প্রতিশোধে সর্বাত্মক যুদ্ধের  সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে। ফলে ইসরায়েলের সরকার যেকোনো সময়ে যেকোনো স্থানে হামলা করার অনুমতি পেল। হামাসের সামরিক হামলায় বিশ্বব্যাপী মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। ইউরোপ-আমেরিকা তাৎক্ষণিক নিন্দা জানিয়েছে।...

নামাজই যেন সব

 ইসলামের বুনিয়াদ কালেমা, নামাজ, রোজা, হজ ও জাকাত। কালেমা তাইয়্যেবার ঘোষণা প্রদানের মধ্য দিয়ে একজন ব্যক্তি ইসলামের সীমার মধ্যে প্রবেশ করে। সে যে এই ঘোষণায় সত্যবাদী তার প্রমাণ দিতে হয় মৌলিক চারটি ইবাদত পালনের মাধ্যমে। তার মধ্যে সর্বপ্রথম যে কাজটি সামনে আসে সেটা হলো নামাজ। মনে করুন দুপুর ১২ টায় এক লোক ইমান আনলো এবং ইমান আনার কিছুক্ষণ পরেই জোহরের আজান হলো- হাই আলাসসালা, হাই আলাল ফালা (তোমরা নামাজের দিকে এসো, কল্যাণের দিকে এসো।) এই আহবানে সাড়া দেয়া ব্যক্তিই মূলত মুসলিম। সকল নবি-রসুলের উপর নামাজ ফরজ ছিল। রসুলুল্লাহ সা. নবুয়ত লাভের পর থেকেই নামাজ পড়েছেন যদিও পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ফরজ হয় মিরাজের রাতে। কাবায় নামাজ পড়ার কারণে তাঁর ঘাড়ে উটের নাড়িভুড়ি চাপিয়ে দেওয়ার কথা আমাদের জানা আছে। কুরআনে নানাভাবে নামাজের গুরুত্ব তুলে ধরা হয়েছে। সুরা আল মুদ্দাসসিরে বলা হয়েছে নামাজ না পড়া মানে জাহান্নামে যাওয়া। সুরা বাকারায় বলা হয়েছে পরকাল অবিশ্বাসীদের কাছেই কেবল নামাজ কঠিন কাজ। সুরা মুমিনুনে সফলকাম ব্যক্তির প্রথম গুণ বলা হয়েছে খুশুখুজুর সাথে নামাজ পড়ে। সকল অবস্থাতেই নামাজ আদায় করতে হয়। যুদ্ধের ময়দানেও নামাজ আ...

আল্লাহর পথে ব্যয়, ক্রোধ সংবরণ ও ক্ষমা করার মধ্য দিয়ে আমরা মুহসিন বান্দা হই

 জুমা আলোচনা কাজিপাড়া জামে মসজিদ তারিখ : ০৬.১০.২০২৩ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম কাজিপাড়া জামে মসজিদ, অনেক প্রাচীন মসজিদ, বয়স আটষট্টি বছর (১৫ই জুন ১৯৫৫ সনে প্রতিষ্ঠিত), অথচ ইতোপূর্বে আমার যাওয়া হয়নি। আজই প্রথম জুমা আদায়। আমার একটু বিলম্ব হয়ে গিয়েছিল। খতিব মহোদয় খুতবা দানরত অবস্থায় আমি উপস্থিত হলে মুয়াজ্জিন সাহেব খতিব মহোদয়কে কানে কানে বললে খতিব মহোদয় আমাকে আলোচনা করার সুযোগ দান করেন। খতিব মহোদয়ের সাথে আজই আমার প্রথম পরিচয়। অবশ্য তিনি আমার আব্বাকে চিনতেন।  মসজিদের প্রতিষ্ঠাতা মরহুম আফিল উদ্দিন সরদার (১৯০৭-২৬.০৭.১৯৯৮) নিজ বাড়ির আঙিনায় জমি দান করে এই মসজিদটি গড়ে তুলেন। তাঁর মেজ ছেলে জনাব মতিউর রহমান (মুকতার) বর্তমানে মসজিদের সভাপতি এবং  সেক্রেটারি ও ক্যাশিয়ার হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন যথাক্রমে জনাব মো. হাফিজুর রহমান ও জনাব মো. জিয়াউল হক। এর পূর্বে সুদীর্ঘ দশ বছর সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন এলাকার বিশিষ্ট সমাজকর্মী জনাব মো. মোফাককার হোসেন (বাবুল ডাক্তার)। তাঁর সময়ে মসজিদটির ব্যাপক সংস্কার করা হয় এবং দ্বিতল মসজিদ করে উপর-নিচ পুরোটাই টাইলস, বাথরুম, ওজুখানা সবমিলে এক দৃষ্...

মুত্তাকি হওয়ার জন্য ঈমানের সাথে আমলও শর্ত

 কুরআনের পাঠ  সুরা বাকারার প্রথম রুকু ১-৭ আয়াত পরপর চারদিন ফজরের পূর্বে সুরা বাকারার চারটি রুকু তেলাওয়াত, অর্থ ও ব্যাখ্যা পড়লাম এবং সেটি সংক্ষিপ্ত পরিসরে আমার পাঠকদের কাছে পেশও করলাম। আলহামদু লিল্লাহ। কুরআন মজিদ খুললে আমরা প্রথমে পাই সুরা ফাতিহা। সেখানে আল্লাহ তায়ালার প্রশংসা শেষে তাঁর কাছে প্রার্থনা শেখানো হয়েছে, 'আমাদের সরল সঠিক পথ দেখাও।' আমাদের প্রার্থনার জবাবে আল্লাহ তায়ালা কুরআন মজিদ পেশ করে বলেন, হেদায়াতের জন্য এই হলো আল্লাহর কিতাব, এর মধ্যে কোনো সন্দেহ নেই। এর দুটি অর্থ হতে পারে- এক. এটি কোনো মানুষের তৈরি নয়, মহা পরাক্রমশালী আল্লাহর কিতাব। দ্বিতীয়. এটি নির্ভুল জীবন যাপনের বিধান, এর মধ্যে কোনো সন্দেহ সংশয় নেই। এটি আল্লাহর কিতাব- এব্যাপারে কুরআন মজিদে একাধিক জায়গায় চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দিয়েছেন, এই সুরার তৃতীয় রুকুতেও চ্যালেঞ্জ করা হয়েছে। দ্বিতীয়ত, এই কুরআনের মধ্যে কোনো ভুলত্রুটি নেই। ত্রুটি তালাশ করতে ইসলামের শত্রুদের চেষ্টার কোনো কমতি ছিল না। কোনরকম পরিবর্তন, পরিমার্জন ও সংস্করণ ছাড়াই কুরআন মজিদ অবিকৃতভাবে আমাদের কাছে রয়েছে এবং কেয়ামত পর্যন্ত কোনো সংস্করণ লাগবে না। অথচ আমাদে...

আসুন জান্নাতের পথে-

 তোমরা দৌড়াও তোমাদের রবের ক্ষমা ও সেই জান্নাতের দিকে যার প্রশস্ততা আসমান ও জমিন  সমান এবং তা প্রস্তুত করা হয়েছে মুত্তাকিদের জন্য। যারা সচ্ছল ও অসচ্ছল উভয় অবস্থায় খরচ করে, যারা নিজেদের ক্রোধ সংবরণ করে এবং মানুষকে ক্ষমা করে দেয়; আল্লাহ মুহসিন বান্দাদের ভালোবাসেন। সুরা আলে ইমরান ১৩৩-১৩৪। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের আহবান জানিয়েছেন  নিজের পক্ষ থেকে ক্ষমা ও জান্নাত প্রাপ্তির জন্য প্রতিযোগিতা করতে। মানুষ কতো কিছুর জন্যই না প্রতিযোগিতা করে-অর্থ-বৃত্ত, প্রভাব-প্রতিপত্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব। দুনিয়ার জীবনটা বড়ো সংকীর্ণ, মৃত্যু খবর প্রতিনিয়ত কানে আসে। মৃত্যুর সাথে সাথে ধন-সম্পদ, কর্তৃত্ব সবকিছু রেখে একেবারে শূন্য হাতে বিদায় নেয়ার দৃশ্য আমাদের সচেতন করে না। আমরা শুধু চাই এবং এই চাওয়ার কোনো শেষ নেই, কবরের মুখ পর্যন্ত পৌঁছেও চাই; রসুলুল্লাহ সা.-এর ঘোষণা, মাটি ছাড়া কোনো কিছু এই মানুষকে পরিতৃপ্ত করতে পারে না।   জান্নাতের বিশালতা বলতে গিয়ে আল্লাহ তায়ালা  বলেছেন, সেই জান্নাতের প্রশস্ততা আসমান ও জমিন সমান। আর আল্লাহর এই বিশাল জান্নাত কেবল মুত্তাকিদের জন্য। আর মুত্তাকি ...

মুনাফিকরা ঈমানদারদের ধোঁকা দেয় না, নিজেরা নিজেদেরকে ধোঁকা দেয়

 কুরআনের পাঠ সুরা বাকারার দ্বিতীয় রুকু ৮-২০ আয়াত পুরো রুকু মুনাফিকদের সম্পর্কে আলোচনা করা হয়েছে। মুনাফিকরা দাবি করে যে তারা আল্লাহ ও আখেরাতের দিনের ওপর ঈমান এনেছে। কিন্তু আল্লাহপাক বলেন, তারা আসলে মুমিন নয়। আল্লাহ ও ঈমানদারদের ধোঁকা দিতে চায়। কিন্তু আসলে তারা নিজেরাই নিজেদেরকে ধোঁকায় নিক্ষেপ করেছে। মদিনায় ইসলাম রাষ্ট্রীয় দীনের মর্যাদা লাভ করলে তারা সুযোগ সুবিধার আশায় নিজেদেরকে মুসলমান পরিচয় দিতো। ওদের হৃদয়ে রয়েছে রোগ আর আল্লাহ সেটিকে আরো বাড়িয়ে দিয়েছেন। মিথ্যা বলার কারণে তাদের জন্য রয়েছে যন্ত্রণাদায়ক শাস্তি। জমিনে বিপর্যয় সৃষ্টি করাই মুনাফিকদের কাজ। যখন তাদের বলা হয়, তোমরা ফাসাদ সৃষ্টি করো না, তখন তারা নিজেদের সংশোধনকারী বলে দাবি করে। মুনাফিকরা বড়ো স্বার্থপর। রসুলুল্লাহ সা.-এর মদিনায় হিজরতের প্রাক্কালে আব্দুল্লাহ ইবনে উবাইকে তাদের শাসক নির্বাচনের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছিল। কিন্তু রসুলু সা.-এর হিজরত করার ফলে তার সব স্বপ্ন ভেঙে যায়। অবস্থা এমন দাঁড়ায় যে মুসলমান না হলে সামাজিক মান মর্যাদা থাকে না। স্রেফ স্বার্থের কারণে তারা বাধ্য হয়ে ইসলাম গ্রহণ করলেও তাদের অন্তরে ছিল চরম বিদ্বেষ।...

আমাদের লেখাপড়া ও জীবন যাপন হোক কুরআনকেন্দ্রিক-

আজ পড়লাম সুরা বাকারার তৃতীয় রুকু (২১-২৯ আয়াত)। সারসংক্ষেপ তুলে ধরছি। আল্লাহ তায়ালা সমগ্র মানবজাতিকে সম্বোধন করে বলেছেন, তোমরা সেই রবের ইবাদত করো যিনি তোমাদের ও তোমাদের পূর্ববর্তীদের সৃষ্টি করেছেন। যিনি জমিনকে শয্যা ও আকাশকে ছাদ হিসাবে এবং আকাশ থেকে পানিবর্ষণ করে জমিনকে শস্যশ্যামল করেছেন। একথা জানার পর আল্লাহর প্রতিপক্ষ আর কাউকে দাঁড় করিও না। এখানে আল্লাহ তায়ালা স্পষ্ট করেছেন তাঁকে রব মেনে ইবাদত করলে মানুষ আখেরাতে নিষ্কৃতি পাবে। আল্লাহকে স্রষ্টা মানার ক্ষেত্রে কারো মধ্যে  আপত্তি নেই। নমরুদ-ফেরাউনরাও আল্লাহকে স্রষ্টা মেনেছে। তাদের জিজ্ঞেস করা হয়েছে, আসমান-জমিন কে সৃষ্টি করেছে? তারা বলেছে, আল্লাহ। রব মানার ক্ষেত্রে তাদের আপত্তি ছিল। রব মানা অর্থ আল্লাহপাককে হুকুমকর্তা হিসাবে মানা। ইবাদত করো, অর্থ আল্লাহকে হুকুমকর্তা হিসেবে মানো, তাঁর আনুগত্য করো এবং তাঁর প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা ও ভালোবাসা প্রকাশ করো অর্থাৎ পূজা-অর্চনা করো একমাত্র আল্লাহর। এসব ক্ষেত্রে কাউকে আল্লাহর প্রতিপক্ষ করো না। ২১ ও ২২ আয়াত। আল্লাহপাক মানুষের হেদায়াতের জন্য সর্বশেষ কিতাব হিসেবে পাঠিয়েছেন আল কুরআনকে। কুরআন যে আল্লা...

মানুষ আল্লাহর খলিফা। মর্যাদায় সেরা

কুরআনের পাঠ  আজকে ফজরের বেশ পূর্বে উঠা হয়। প্রতিদিন নয়। সুযোগটা কাজে লাগালাম সুরা বাকারার ৪র্থ রুকু ৩০-৩৯ আয়াত অর্থ ও ব্যাখ্যাসহ পড়ার মধ্য দিয়ে। এখানে হজরত আদম আ.-কে নিয়ে ফেরেশতাদের সাথে তাঁর কথপোকথন, আদম আ.-এর মর্যাদা, পৃথিবীতে তাঁর আগমন ইত্যাদি আলোচনা করা হয়েছে। অবশ্য কুরআন মজিদে আরো অনেক জায়গায় আদম আ. সম্পর্কে উল্লেখ রয়েছে।  ফেরেশতা আল্লাহর বিশাল সাম্রাজ্যের কর্মচারী। ফেরেশতা ও জিন জাতি পূর্ব থেকেই ছিল। মানুষ  সৃষ্টি প্রসঙ্গে ফেরশতাদের সাথে আল্লাহর কোনো পরামর্শ নয় বরং একটা নতুন সৃষ্টি সম্পর্কে তাঁর কর্মচারীদের অবহিত করা। ফেরেশতা আল্লাহ তায়ালার এক অনুগত সৃষ্টি যাদের নাফরমানি করার কোনো ক্ষমতা নেই অর্থাৎ তাদের কোনো স্বাধীন সত্তা নেই। আল্লাহপাক মানুষকে খলিফা (প্রতিনিধি) করে পাঠিয়েছেন। খলিফা শব্দ শুনে তাদের মনে প্রশ্ন জাগে- কেন স্বাধীন এখতিয়ার সম্বলিত স্বতন্ত্র এক সৃষ্টি? তারা নিজেরাই আল্লাহর হুকুম মেনে চলছেন এবং সর্বদা তাঁরই প্রশংসা করছেন। জবাবে আল্লাহ বলেন, আমি যা জানি তোমরা তা জানো না। আল্লাহ তায়ালা আদম আ.-কে সকল সৃষ্টির নাম শিখিয়ে দেন এবং ফেরশতাদের সম্মুখে উপস্থাপন করেন...