Skip to main content

জাতীয় প্রেসক্লাবে অনুষ্ঠিত হলো এক মনোজ্ঞ সেমিনার

৩ নভেম্বর ২০২২ বৃহস্পতিবার বিকেল ৩টায় ইসলামী দাওয়াহ ইনস্টিটিউটের (আইডিআই) উদ্যোগে ‘রসুলুল্লাহ সা.-এর দাওয়াতের কৌশল : প্রেক্ষিত বাংলাদেশ’ শীর্ষক এক সেমিনার জাতীয় প্রেসক্লাবের শহিদ আব্দুস সালাম হলে তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সম্মানিত অধ্যক্ষ ড. আবু ইউসুফ খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন বরেণ্য ইসলামী চিন্তাবিদ সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুর রউফ। প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বিশিষ্ট দায়ী ইলাল্লাহ ও শিক্ষাবিদ কুষ্টিয়া ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের দাওয়াহ এন্ড ইসলামিক স্টাডিজের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আবুল কালাম পাটওয়ারী। বিশেষ অতিথি হিসেবে আলোচনা করেন সাবেক চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রেডক্রিসেন্ট সোসাইটি ও সাবেক ভিসি, মানারাত ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের সাবেক চেয়ারম্যান প্রফেসর ড. আব্দুর রব।

সঞ্চালনা করেন ইসলামী দাওয়াহ ইনস্টিটিউটের (আইডিআই)-এর সেক্রেটারি মুহাদ্দিস মাহমুদুল হাসান। সেমিনারে আলোচনা করেন যশোর পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের সাবেক অধ্যক্ষ প্রকৌশলী সৈয়দ আব্দুল আজিজ, বিশিষ্ট গবেষক কর্নেল (অব.) ফারুক হোসেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতি বিভাগের শিক্ষক প্রফেসর ড. আতাউর রহমান, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ফকিহ মুফতি মাওলানা মহিউদ্দিন, বাংলাদেশ সুপ্রিমকোর্টের আইনজীবী ব্যারিস্টার আহমেদ আব্দুল্লাহ খান সাবিত, তামিরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার সিনিয়র প্রভাষক শায়খ আব্দুল জব্বার জাহাঙ্গীর, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) সাধারণ সম্পাদক জনাব শহীদুল ইসলাম ও অধ্যক্ষ মাওলানা মো. মোশাররফ হোসেন।

প্রধান অতিথি বিচারপতি মুহাম্মদ আব্দুর রউফ বলেন, ইসলামের আবির্ভাব কখন থেকে- এ প্রশ্নে কেউ মনে করেন হজরত ইব্রাহিম আ. থেকে, আবার কেউ বলেন, হজরত মুহাম্মদ সা. থেকে; আসলে সৃষ্টির ধর্মই হলো ইসলাম। অর্থাৎ যখন থেকে আল্লাহর সৃষ্টি তখন থেকেই আল্লাহর মনোনীত ধর্ম হলো ইসলাম। হজরত আদম আ. প্রথম মানুষ ও প্রথম মুসলিম। সকল মানুষের কাছে ইসলামের সুমহান আদর্শ অত্যন্ত সহজ ভাষায় ও দরদের সাথে তুলে ধরার জন্য তিনি আহবান জানান।

প্রবন্ধকার ড. আবুল কালাম পাটওয়ারী ১৯ পৃষ্ঠাব্যাপী প্রবন্ধের চুম্বক অংশ তুলে ধরে বলেন, সকল পরিবেশে অত্যন্ত হিকমত ও উত্তম নসিহতের মাধ্যমে মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকতে হবে। রসুল সা.-এর দাওয়াতে প্রথম সাড়া দেন তাঁর স্ত্রী খাদিজা রা. এবং তাঁর চাচাতো ভাই বালক আলী রা. ও  ক্রীতদাস জায়েদ বিন হারিসা রা.। এখানে রসুল সা.-এর দাওয়াতের কৌশল ও পন্থা হলো দাওয়াত হতে হবে নিজ পরিবার থেকে। এরপর দাওয়াত দেন তাঁর ঘনিষ্ঠ বন্ধু ও আরবের সবচেয়ে চরিত্রবান ব্যক্তিদের অন্যতম হজরত আবু বকর রা.-কে এবং তাঁর প্রচেষ্টায় মুসলমান হন ওসমান রা. আব্দুর রহমান রা. সা’দ ইবনে আবি আক্কাস রা. যুবাইর ইবনে আওয়াম, তালহা ইবনে আব্দুল্লাহ প্রমুখ। এসবই ব্যক্তিগত টার্গেটভিত্তিক দাওয়াত এবং এভাবে গোপন দাওয়াতের মাধ্যমে মোট ৬০ জন মানুষ ইসলাম গ্রহণ করেন, যার মধ্যে ১২ জন মহিলা ও ১৪ জন গোলাম ছিল।

অতিথিদের আলোচনার সারসংক্ষেপ হলো- দাওয়াত দিতে হবে হেকমতের সাথে, এটা ঠিক কিন্তু এর অর্থ নীরব হয়ে থাকা নয়, পরিবেশ-পরিস্থিতি যাই হোক না কেন সর্বাবস্থায় ইসলামের দাওয়াত অব্যাহত রাখতে হবে এবং এটিকে ওয়াজিব হিসেবে মনে করে সকল শ্রেণি-পেশা, ধর্ম-বর্ণ-লিঙ্গ, শিক্ষিত-অশিক্ষিত, ধনী- দরিদ্র সকলের কাছে ইসলামের দাওয়াত পৌঁছাতে হবে। দাওয়াতের ধরন পাল্টাবে। প্রকাশ্যে সম্ভব না হলে গোপনে দিতে হবে। দায়ী ইলাল্লাহকে প্রথমে নিজেকে ইসলামের আলোকে সজ্জিত হতে হবে অর্থাৎ তার আচার-আচরণ, লেনদেনে ইসলামের প্রতিফলন ঘটবে। সাথে সাথে দায়ী ইলাল্লাহকে হতে হবে বিনয়ী এবং মানুষকে আশার বাণী শোনাতে হবে। দাওয়াত হতে হবে কুরআনকেন্দ্রিক এবং মৌলিক বিষয়ে। সর্বদা বিতর্ক এড়িয়ে চলতে হবে এবং মনের ভেতরে পরস্পরের মধ্যে হিংসা-বিদ্বেষ রাখা যাবে না। এদেশের মানুষ ইসলাম পছন্দ করে এবং পরকালের প্রতি তাদের বিশ্বাস ও ভয় রয়েছে। সেমিনারে উপস্থিতি ছিল খুবই সন্তোষজনক এবং হলে ছিল মানুষের উপচেপড়া ভীড়। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের প্রতি রহম করুন।

Comments