ইমান মানুষের অন্তরে প্রশান্তি দান করে

 জুমা আলোচনা

১৮.১১.২০২২

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম 

আফতাবনগর বায়তুল মামুর জামে মসজিদে জুমার খুতবায় মাওলানা মুস্তাফিজুর রহমান আল্লাহপাকের শানে হামদ ও রসুলুল্লাহ সা.-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর বর্তমান সময়ের বিভিন্ন জাহিলিয়াত তুলে ধরেন এবং প্রকৃত মুসলমান হয়ে জীবন যাপনের উপায় নিয়ে আলোচনা করেন। 

খতিব মহোদয় বলেন, আমরা অতীতের চেয়ে ভালো খাই, ভালো পরিধান করি, আমাদের ভালো বাসস্থান রয়েছে এবং নানাবিধ সুযোগ-সুবিধাও ভোগ করছি, কিন্তু এতকিছুর পরও আমাদের মাঝে প্রশান্তি নেই। আছে পরস্পর হিংসা-বিদ্বেষ, আছে অপরকে দাবিয়ে রাখার প্রবণতা। হত্যা-রাহাজানিসহ দেশে রয়েছে নানাবিধ অনাচার, বেড়েছে পারিবারিক অশান্তি ও বিবাহ বিচ্ছেদের মতো ঘটনা। এমন অবস্থা থেকে পরিত্রাণের উপায় হলো ইমানের ক্ষেত্রে মজবুতি আনয়ন। ইমান মানুষের মধ্যে প্রশান্তি নিয়ে আসে। ইমান অন্তরে আল্লাহর ভয় জাগ্রত করে ও মানুষকে পাপাচার থেকে দূরে রাখে এবং বিপদ-মুসিবতে পরম ধৈর্য দান করে। আল্লাহপাকের বাণী, 'তোমরা মনমরা হয়ো না, বিষণ্ণ হয়ো না, তোমরাই বিজয়ী হবে যদি তোমরা মুমিন হও'- সুরা আলে ইমরান ১৩৯।

আল্লাহর উপর নির্ভরতাও মানুষকে প্রশান্তি দান করে। তাঁর বাণী, 'নিশ্চয়ই যারা বলে, আল্লাহ আমাদের প্রভু, অতঃপর একথার উপর অটল-অবিচল থাকে, তাদের প্রতি ফেরেশতা নাজিল হয়ে বলে, আপনারা ভয় পাবেন না, চিন্তিতও হবেন না। আপনারা খুশি হয়ে যান৷ সেই জান্নাতের জন্য যার ওয়াদা আপনাদের দেয়া হয়েছে- সুরা হামিম আস সাজদা ৩০।

আজকের সমাজে মানুষের মাঝে যতো অশান্তি ও পেরেশানি তার কারণ হলো ইমানহীনতা ও আল্লাহর উপর নির্ভরশীতার অভাব। তিনি বলেন, ইমানের খোরাক হলো কুরআনের জ্ঞান। কুরআন তেলাওয়াতের পাশাপাশি কুরআনকে জানতে হবে ও বুঝতে হবে এবং তার ভিত্তিতে আমল করতে হবে। কুরআন একটি হেদায়াত গ্রন্থ। কুরআন আমাদের নিজে পড়তে হবে এবং সন্তানদের কুরআন জানার ব্যবস্থা করে দিতে হবে। মা-বোনদের কুরআন জানার সুযোগ করে দেয়ার জন্য খতিব মহোদয় আহবান জানান। সন্তানের জন্মের সময় তিনি এক কানে আজান ও অপর কানে একামত দেয়ার কথা বলেন। আজান ও একামত দেয়া হলে শয়তানের অনিষ্ট থেকে সন্তান নিরাপদ হয়ে যায়। তাই মাকে আজান ও একামত শেখাতে হবে।

আমাদের শিক্ষাব্যবস্থায় দীন শেখার কোনো উপায় নেই। তিনি বলেন, নিজ উদ্যোগে আমাদের দীন শিখতে হবে ও সন্তানকে দীন শেখাতে হবে। দীন শেখার বড়ো কেন্দ্র মসজিদ এবং এজন্য মসজিদকে আমাদের প্রাণবন্ত করতে হবে। সন্তানকে সাথে করে মসজিদে আনার জন্য তিনি তাঁর মুসল্লিদের বলেন। মসজিদের উন্নয়নে সহযোগিতার হাত প্রসারিত করার জন্য তিনি সবাইকে অনুরোধ জানান। সংক্ষেপিত।