Skip to main content

কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে মাঠকর্মীদের সাথে মতবিনিময়

আমাদের টিম এবং আসিয়াবের কর্মকর্তাসহ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আসিয়াবের প্রধান কার্যালয়ে কো-অর্ডিনেটর (এমএফপি) জনাব মো. রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তাদের ফাইন্ডিংস উপস্থাপন ও পরামর্শ প্রদান করেন এবং শাখা ব্যবস্থাপক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নানা বিষয়ে প্রশ্নের জবাব (সংশ্লিষ্টরা প্রদান করেন) শেষে আমার কিছু কথা বলার সুযোগ হয়। আসিয়াবের পক্ষ থেকে পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সরজমিনে পরিদর্শন এবং আল্লাহর অসহায় বান্দাদের সহায়তায় পরিচালিত কার্যক্রমে শরীক হওয়ার সুযোগ দান করায় আল্লাহপাকের দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করি (আলহামদু লিল্লাহ) এবং আসিয়াব কর্তৃপক্ষকে জানাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সমাজের অসহায় মানুষ বিশেষ করে হতদরিদ্র মহিলাদের মাঝে ইসলামী শরীয়াভিত্তিক বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব আমাদের সামনে যারা বসে আছেন আপনারা। মানুষের কল্যাণসাধন করা আমাদের দায়িত্ব। ছওয়াবের নিয়তে ও ইবাদত মনে করে এ দায়িত্ব পালন করলে কাজটি সহজ হয়ে পড়বে এবং আল্লাহর সাহায্যও তাতে লাভ করা যাবে। আল্লাহর পথে যারা চলতে চায় সাধারণত আল্লাহ তাদের সাহায্য করেন। আমরা রাতারাতি কোনো কিছু করতে পারবো না। আমরা জানবো, অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করবো এবং অগ্রসর হবো। আল্লাহপাক আমাদের নিয়ত ও চেষ্টা-প্রচেষ্টা দেখবেন। আমরা আমাদের প্রচেষ্টায় ত্রুটি করবো না ইনশা-আল্লাহ। আল্লাহ তায়ালার সাহায্যের ব্যাপারে আমরা আশাবাদী। সুদ হারামের পাশাপাশি আমাদের পারিবারিক জীবন ও পর্দাপ্রথা আজ হুমকির মুখে। দিনে দিনে অশ্লীলতার প্রসার ঘটছে। এটি রোধ করার প্রতি আমাদের গুরুত্ব দিতে হবে। আমি মনে করি, এটি আমাদের প্রধান কাজ হবে। আমাদের মা-বোনদের মাঝে ছড়িয়ে দেয়া হচ্ছে যে নারীর অধিকার প্রতিষ্ঠায় ইসলাম বাধা। ইসলাম নারীকে যে অধিকার দিয়েছে তার পুরোটাই তাদেরকে জানাতে হবে। ইসলাম নারী-পুরুষের সম্পর্ক বলেছে বন্ধুত্বের, ভালোবাসার। আল্লাহ বলেছেন, 'ঈমানদার নর ও নারী পরস্পরের বন্ধু ও সাথী।' কেউ কারো প্রভুও নয় আবার গোলামও নয়। পারিবারিক শৃঙ্খলা বিধানের জন্য পুরুষকে কর্তৃত্বশীল করা হয়েছে এবং ঈমানদার নারী স্বামীর অনুগত হয়ে থাকে। স্বামী-স্ত্রী পরস্পরের সাথে সদাচরণ করতে তারা বাধ্য। আখিরাতে স্বামীর ব্যাপারে স্ত্রীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে। আল্লাহর রসূল (সা) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম। স্বামী-স্ত্রী, শ্বশুর-শাশুড়ি ও সন্তান-সন্ততি নিয়েই আমাদের পরিবার এবং আমরা সবাইকে নিয়েই সুখি জীবন যাপন করতে চাই। বোঝাতে হবে আজকের বধু আগামীদিনের শাশুড়ি। পরিবারের মুরুব্বীরা ভক্তি-শ্রদ্ধা প্রাপ্তির হকদার। দারিদ্র্যের মাঝেও পারিবারিক সুখ-শান্তি জীবনকে আনন্দময় করে তুলে এবং বিপরীত অবস্থা জাহান্নামে পরিণত করে। দাম্পত্য ও পারিবারিক কলহ আত্মহত্যার অন্যতম কারণ। আমরা শুধু পরিবারে আর্থিক সচ্ছলতাই বিবেচনা করবো না, সাপ্তাহিক বৈঠকে নৈতিক শিক্ষাদানের মাধ্যমে আদর্শ পরিবার গঠনেও সহায়তা করবো। তাদের স্বাস্থ্য, শিক্ষাসহ সকল বিষয়ে পরামর্শ দান করবো। পর্দার বিষয়ে বাড়াবাড়ি না করে হতদরিদ্র মহিলারা যাতে সতর আবৃত করে শালীনভাবে চলাফেরা করে সেজন্য তাদেরকে উদ্বুদ্ধ করবো। কোনো ব্যাপারেই আমরা তাড়াহুড়ো করবো না। এটি আল্লাহর সুন্নাহ নয়। আল্লাহর রসূল (সা)-এর উক্তি আমরা স্মরণ করি, জমিনে যারা আছে তাদের সাথে সদাচরণ করো, তাহলে আসমানে যিনি আছেন তিনিও তোমাদের সাথে সদাচরণ করবেন। আল্লাহর এইসব অসহায় বান্দারা আরো বেশি সদারণ পাওয়ার দাবিদার। তারা আমাদের প্রতি নয় বরং আমরা তাদের প্রতি বিনয়ী হবো। তার অর্থ এই নয় যে, তাদের কাছ থেকে কিস্তি আদায় ও দায়িত্ব পালনে শৈথিল্য প্রদর্শন করবো। আমি বোঝাতে চাচ্ছি, অহেতুক বকাবকি ও গালমন্দ থেকে আমরা বিরত থাকবো। বর্তমানে পেশাগত কাজে দক্ষতা বাড়ানোর লক্ষ্যে নানা ধরনের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা রয়েছে। আমি নিজে এক নাগাড়ে দুই মাসের বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ গ্রহণ করেছি। নৈতিক শিক্ষা (আল্লাহর ভয়) না থাকার কারণে এই প্রশিক্ষিত জনশক্তি খুব দক্ষতার সাথে অন্যায় করছে। তাই আমরা সব সময় পেশাগত দক্ষতার পাশাপাশি নৈতিক শিক্ষার প্রতি গুরুত্ব প্রদান করবো ইনশা-আল্লাহ। এই দুই দিন আপনাদের সাথে মেলামেশা ও কাজের মাধ্যমে আমরা বেশ অভিজ্ঞতা সঞ্চয় করেছি এবং সাথে সাথে আন্তরিক আতিথেয়তা লাভে ধন্য হয়েছি। আপনাদেরকে অভিনন্দন ও কৃতজ্ঞতা জ্ঞাপন এবং কল্যাণ কামনা করে শেষ করছি। আল্লাহ হাফেজ।

Comments