Skip to main content

ঘুষ-দুর্নীতি অভাবে নয় স্বভাবে

বাংলাদেশ এখন ঘুষ দুর্নীতিতে সেরা। যে যেখানে সুযোগ পাচ্ছে হাতিয়ে নিচ্ছে। পিয়ন-ড্রাইভার থেকে শুরু করে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ এখন লুটেরাদের ভূমিকায়। দুর্নীতি সব সময়েই ছিল। সব অফিসে তালাশ করে হয়তো ২/১জনকে পাওয়া যেত। এখন চিত্র পাল্টে গেছে। এখন ভালো মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যাঁরা আছেন তাঁরা বড় অসহায় অবস্থায় আছেন। আর কিছু ভালো মানুষ আছেন সুযোগের অভাবে। সব বিভাগে সমভাবে এ অভিযোগ সত্য নয়। জনগণের সেবাপ্রাপ্তিতে ভোগান্তিও দুর্নীতি। মানুষ সেবা পেতে সরকারি অফিসে যেতে ভয় পায়। না জানি, কেমন আচরণ করে? রাজনীতির অঙ্গনে দুর্নীতিকে মানুষ স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে মেনে নিয়েছে। এতে খুব বেশি উচ্চবাচ্য করে না। ভোট ডাকাতি, রিলিফের মাল চুরিকে তেমন কিছু আর মনে করে না। নৈতিক দিক দিয়ে এ-সব চরম অধপাতেরই ইঙ্গিত বহন করে। আগে মনে করা হতো বেতন-ভাতা কমের কারণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতি করে। বেসরকারি পর্যায়ের তুলনায় সরকারি পর্যায়ে এখন বেতন-ভাতা অনেক উচ্চে। তারপরও দুর্নীতি অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি এবং সমাজে দুর্নীতিবাজদের লজ্জাবোধও লোপ পেয়েছে। একটি অধিদপ্তরের ড্রাইভারের পক্ষে এতো টাকার মালিক হওয়া কিভাবে সম্ভব? অন্যদেরকে ভাগ না দিয়ে কি কখনো এটা সম্ভব? করোনা আসার পর ভেবেছিলাম, মানুষের সংশোধন হবে এবং দেশে ঘুষ-দুর্নীতি লোপ পাবে। না, করোনা টেস্ট নিয়েও দুর্নীতি। অতীতের ইতিহাস (কুরআনের উল্লেখ) থেকে দেখা যায় জাতিগতভাবে দুর্নীতি প্রসার লাভ করলে আল্লাহ সেই জাতিকে সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন। প্রশ্ন হচ্ছে, এখন কেন হচ্ছে না? শেষ নবী মুহাম্মদ (সা)-এর দুআর বরকত এবং আল্লাহর অনেক বান্দা ঝুঁকি নিয়ে হলেও মানুষকে আল্লাহর পথে ডাকার কারণে হয়তো আল্লাহ দুর্নীতিগ্রস্ত এ জাতিকে রেহাই দিচ্ছেন। কিন্তু কতক্ষণ? জাতির বিবেক ধ্বংস হয়ে গেছে। আর আমাদের ধর্মীয় বিশ্বাস ও মূল্যবোধ ইহুদি জাতির মতো হয়ে পড়েছে। ভাবখানা এমন, আমরা শেষ নবীর উম্মত, আমাদেরকে না নিয়ে মুহাম্মদ (সা) জান্নাতের পথে পা বাড়াবেন না। আর জাহান্নামে দিলেও মাত্র কয়েক দিনের জন্য। লক্ষ্য করলে দেখা যাবে, পাপাচারের ফলে এই মুসলিম নামধারীদের জীবনে বর্তমানে নেমে এসেছে ভয়াবহ জিল্লতি এবং আখিরাতে যে ভালো কিছু নেই আল্লাহ তা অগ্রিম জানিয়ে দিয়েছেন। ঘুষ-দুর্নীতির মাধ্যমে অর্জিত সম্পদ জাহান্নামে যাওয়ার উপকরণ বৈ আর কিছু নয়। দুর্নীতি করে কোনো আমল আল্লাহর দরবারে গৃহীত হয় না। সুন্দর দাঁড়ি, মানানসই পোশাক, নামায, রোযা, হজ্জ, যাকাত সবই পন্ডশ্রম ও মূল্যহীন হয়ে পড়ে। আল্লাহর ইবাদতের জন্য হালাল রুজি পূর্ব শর্ত। হালাল রুজি তালাশে এ জাতি অনেক পেছনে পড়ে গেছে। এ অবস্থা থেকে উত্তরণ ছাড়া দুনিয়া ও আখিরাত দু'টিই হারাতে হবে। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের সবধরনের দুর্নীতি থেকে মুক্ত হয়ে তোমার প্রিয়ভাজন বান্দা হওয়ার তাওফিক দান করো। আমিন। ২৫.০৯.২০২০

Comments