Skip to main content

Posts

Showing posts from September, 2020

দু’জাহানে মুক্তির জন্য শেষ নবী ও রসূল (সা)-এর অনুসরণ অপরিহার্য

দুনিয়া ও আখিরাত নিয়ে একজন বিশ্বাসীর জীবন। দুনিয়া হলো কর্মক্ষেত্র এবং আখিরাত তার ফলভোগের জায়গা। দুনিয়া ক্ষণস্থায়ী এবং আখিরাত স্থায়ী-অবিনশ্বর। দুনিয়ার কর্মের ভিত্তিতে মানুষ আখিরাতে চিরস্থায়ী সুখ জান্নাত অথবা ভয়াবহ কষ্ট ও যাতনার স্থান জাহান্নাম লাভ করবে। মানুষ আল্লাহপাকের বড় আদরের সৃষ্টি। তাকে খলিফার মর্যাদা দিয়ে সকল সৃষ্টির ওপর শ্রেষ্ঠত্ব দান করা হয়েছে। এজন্য ভালো-মন্দ বিচার-বিশ্লেষণের ক্ষমতা অর্থাৎ জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিবেকের পাশাপাশি সর্বোত্তম নেয়ামত হিসেবে আল্লাহ তাকে হেদায়াত দান করেছেন। সৃষ্টির প্রথম মানুষ হলেন প্রথম নবী। তারই ধারাবাহিকতায় সর্বশেষ নবী ও রসূল হলেন মুহাম্মদ (সা)। জগতবাসীর জন্য আল্লাহ তাঁকে রহমতস্বরূপ পাঠিয়েছেন (সূরা আম্বিয়া ১০৭)। আদম (আ)-কে সৃষ্টি করে জান্নাতে সাময়িকভাবে রাখা হলেও মূলত দুনিয়াকে আবাদ করার লক্ষ্যেই আল্লাহ তাঁকে তাঁর প্রতিনিধি হিসেবে এখানে প্রেরণ করেছেন। দুনিয়ায় আসার জন্য আদম (আ)-কে বলা হলে তিনি ভীত-সন্ত্রস্ত হয়ে পড়েন। সে সময়ে তাঁকে অভয়বাণী শোনানো হয়, আল্লাহর পক্ষ থেকে যে হেদায়াত যাবে যারা তা অনুসরণ করবে তাদের কোনো ভয়ের কারণ নেই এবং তাদের আদি বাসস্থান জা...

আল্লাহপাক ঐ ব্যক্তিকে ভালোবাসেন যে তার সন্তানদের মাঝে সমতা রক্ষা করে

হাদিসের পাঠ ২২.০৯.২০২০ ধানমন্ডি তাকওয়া মসজিদে আজ মাগরিবের নামায আদায় করলাম। নামাযের পূর্বে খুব সংক্ষিপ্তভাবে একটি হাদিস আলোচনা করলেন মসজিদের প্রথম ইমাম হাফেজ মাওলানা আব্দুল হাফিজ মারুফ। হাদিসটি নিম্নরূপ : 'আল্লাহপাক ঐ ব্যক্তিকে ভালোবাসেন যে তার সন্তানদের মাঝে সমতা রক্ষা করে'। এ প্রসঙ্গে তিনি একজন সাহাবির ঘটনা উল্লেখ করেন। জনৈক সাহাবী তাঁর এক সন্তানকে একটি বাগান দান করেন। সাক্ষী হিসেবে তারা আল্লাহর রসূল (সা) রাখার লক্ষ্যে তাঁর কাছে গিয়ে বিষয়টি বলেন। রসুলুল্লাহ (সা) শোনার পরে জানতে চাইলেন সব ছেলেমেয়েকে দেয়া হয়েছে কি না? জবাবে না বললে তিনি জানান, যেখানে সন্তানদের মাঝে সমতা বজায় রাখা হয় না তেমন ক্ষেত্রে তিনি সাক্ষী হতে পারেন না। তখন সেই সাহাবী বাগানটি ফিরিয়ে নেন। পিতা-মাতা জীবদ্দশায় উত্তরাধিকার আইনানুসারে ছেলে-মেয়েকে সম্পদ বন্টন করতে পারে না এবং বন্টন করলে সবাইকে সমপরিমাণ দিতে হবে। কারণ উত্তরাধিকার আইন কার্যকর হয় হয় মানুষের মৃত্যুর পর। ব্যতিক্রম হিসেবে কোনো সন্তান যদি পিছিয়ে পড়ে, শারীরিক ও মানসিক প্রতিবন্ধী হয় বা নাবালক হয় যে সবেমাত্র লেখাপড়া শিখছে অথচ অন্যান্য সন্তানরা প্রত...

পেছন ফিরে দেখা

আজ ২৩ সেপ্টেম্বর। ১৯৮২ সালের এই দিনে সাতকানিয়া সরকারি কলেজ, চট্টগ্রাম-এ প্রভাষক পদে যোগদানের মধ্য দিয়ে আমার সরকারি চাকুরি জীবন শুরু। বেতন ছিল ৭৫০/- টাকা (বেতন স্কেল ৭৫০-১৪৭০)। অধ্যক্ষ মরহুম আবুল খায়ের চৌধুরী অত্যন্ত আন্তরিকতার সাথে গ্রহণ করেন। হেডক্লার্ক ফরিদ সাহেব ছিলেন খুবই চৌকস ও আন্তরিক। অত্যন্ত দরদ দিয়ে সব কাজ সম্পন্ন করেন। বিছানাপত্রসহ পূর্ব কর্মস্থল বসুরহাট মুজিব মহাবিদ্যালয় থেকে সকালে রওনা হয়ে দুপুরে পৌঁছেছিলাম। স্থান হলো পুকুরপাড়ে শিক্ষকদের ডরমেটরিতে। ডরমেটরিতে রুমমেট হিসেবে পেলাম জয়নাল ভাই ও করিমুল হক ভাই (মরহুম)-কে। আমার সাথে সাথেই যোগ দিলেন উদ্ভিদবিজ্ঞানের ড. মো. সিরাজুল হক (ডিজি অফিসে পরিচালক পদে অবসর গ্রহণ করেন) ও ইংরেজির মো. সিরাজুল করিম (রাঙামাটি কলেজের অধ্যক্ষ হয়েছিলেন)। খুবই ঘনিষ্ট হলাম পাশে পরিবারসহ বসবাস করতেন বাংলার জহিরউদ্দিন মো. বাবর ভাইয়ের সাথে। সকল স্টেশনেই আমি আমার কর্তপক্ষ, সহকর্মী, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মচারী সবার ভালোবাসা নিয়েই কাটাতে পেরেছি। আমিও নিষ্ঠা, আন্তরিকতা, সততা ও সদাচরণে কখনই অবহেলা করেনি। পারিবারিক ঐতিহ্য ও ছাত্রজীবনে ইসলামের ওপর চলার সুযোগ পাওয়ায়...

আল্লাহ তাঁর সকল সৃষ্টির রিজিকের ব্যবস্থা করেন

জু’মা বক্তৃতা ২৫.০৯.২০২০ আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জু’মার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর রিজিক নিয়ে আলোচনা করেন। রিজিক কেবল খাদ্যশস্য নয়, বান্দার জন্য আল্লাহপাকের সকল অনুগ্রহের সমষ্টিই হলো রিজিক। সুস্বাস্থ্য, জ্ঞান, যোগ্যতা, অর্থবৃত্ত সবই রিজিক এবং এই রিজিক দেয়ার মালিক কেবল আল্লাহ। মানুষ মায়ের গর্ভে থাকাকালে তার রিজিকের ব্যবস্থা তিনি করেন। মাতৃগর্ভে সন্তানের জন্ম ও বেড়ে ওঠা প্রসঙ্গে তিনি বলেন ৪০ দিন শুক্র অবস্থায়, এরপর রক্ত, তারপর গোশত ও মানবশিশুর পৃথিবীতে আগমন এবং গর্ভে থাকাকালীন তার তাকদীর নির্ধারণ অর্থাৎ রিজিক, হায়াত ও ভালো-মন্দ নির্ধারণ সব আল্লাহই করে থাকেন। তাকদীরের ব্যাপারে মানুষের ভুল ধারণা রয়েছে। মানুষ মনে করে, চেষ্টা করে লাভ কী? তাকদীরে যেটা আছে সেটা তো হবেই। তাকদীরে কী আছে সেটি তো কারো জানা নেই। আল্লাহর কাছে অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ বলে কিছু নেই; সবই তাঁর কাছে বর্তমান। মূলত মানুষ যা করবে সেটি আল্লাহর জানা এবং আল্লাহ তাই লিখে রাখেন। মানুষকে চেষ্টা-সাধনা করার তাগিদ স্বয়ং আল্লাহ ...

ঘুষ-দুর্নীতি অভাবে নয় স্বভাবে

বাংলাদেশ এখন ঘুষ দুর্নীতিতে সেরা। যে যেখানে সুযোগ পাচ্ছে হাতিয়ে নিচ্ছে। পিয়ন-ড্রাইভার থেকে শুরু করে অধিকাংশ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও রাজনীতিক নেতৃবৃন্দ এখন লুটেরাদের ভূমিকায়। দুর্নীতি সব সময়েই ছিল। সব অফিসে তালাশ করে হয়তো ২/১জনকে পাওয়া যেত। এখন চিত্র পাল্টে গেছে। এখন ভালো মানুষ খুঁজে পাওয়া দুষ্কর। যাঁরা আছেন তাঁরা বড় অসহায় অবস্থায় আছেন। আর কিছু ভালো মানুষ আছেন সুযোগের অভাবে। সব বিভাগে সমভাবে এ অভিযোগ সত্য নয়। জনগণের সেবাপ্রাপ্তিতে ভোগান্তিও দুর্নীতি। মানুষ সেবা পেতে সরকারি অফিসে যেতে ভয় পায়। না জানি, কেমন আচরণ করে? রাজনীতির অঙ্গনে দুর্নীতিকে মানুষ স্বাভাবিক বিষয় হিসেবে মেনে নিয়েছে। এতে খুব বেশি উচ্চবাচ্য করে না। ভোট ডাকাতি, রিলিফের মাল চুরিকে তেমন কিছু আর মনে করে না। নৈতিক দিক দিয়ে এ-সব চরম অধপাতেরই ইঙ্গিত বহন করে। আগে মনে করা হতো বেতন-ভাতা কমের কারণে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দুর্নীতি করে। বেসরকারি পর্যায়ের তুলনায় সরকারি পর্যায়ে এখন বেতন-ভাতা অনেক উচ্চে। তারপরও দুর্নীতি অতীতের যে কোনো সময়ের তুলনায় অনেক বেশি এবং সমাজে দুর্নীতিবাজদের লজ্জাবোধও লোপ পেয়েছে। একটি অধিদপ্তরের ড্রাইভারে...

ঘুষ দাতা ও গ্রহীতা উভয়ই দোযখী (কিছুটা স্মৃতিচারণসহ)

না, কথাটি আমার নয় বা কোনো বিশিষ্ট দার্শনিকেরও নয়; এই বাণীটি স্বয়ং মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সা)-এর। কথাটি দ্ব্যর্থহীন। ঘুষের সাথে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিটি যে জাহান্নামী, এব্যাপারে কোনো সন্দেহ-সংশয় নেই এবং সংশয় পোষণকারীর ঈমানদার হওয়ার ব্যাপারেই প্রশ্ন রয়েছে। ঘুষ গ্রহণকারী একজন জালেম এবং জাহান্নামই তার ঠিকানা (তবে তাওবা করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নিলে স্বতন্ত্র)। ঘুষ গ্রহণের পাশাপাশি সে যদি মসজিদ-মাদ্রাসায় দান করে, বড় কুরবানি দেয় ও হজ্জ করে এবং মনে করে এসব নেক আমল তাকে জান্নাতে পৌঁছে দেবে, তাহলে বুঝতে হবে সে আল্লাহর রসূল (সা)-এর ওপরই মিথ্যা আরোপ করলো; কারণ তিনি স্পষ্ট করেছেন যে ‘ঘুষ দাতা ও গ্রহীতা উভয়ই দোযখী’। অবশ্য কেউ তার বৈধ অধিকার পাওয়ার ক্ষেত্রে ভোগান্তি এড়াতে নিতান্ত ঠেকায় পড়ে কিছু দেয় তাহলে হয়তো ক্ষমা পেতে পারে। কুরআনে উল্লেখ রয়েছে, ‘তোমাদের জন্য প্রবাহিত রক্ত, শুকরের মাংস ও আল্লাহ ছাড়া অন্য কারো নামে যবেহ করা জন্তু হারাম করা হয়েছে। তবে কেউ যদি নিতান্ত ঠেকায় পড়ে গুনাহ করার প্রবণতা ছাড়াই কিছু খায় আল্লাহ গফুরুর রহীম’। অবৈধ সুবিধা হাতিয়ে নেয়ার জন্য নয়, বরং বৈধ পাওনা লাভের জন্য কিছু দেয়ার বি...

করোনা মুসলিম হিসেবে আল্লাহর হুকুম মেনে চলে

ভাবছেন, এ এক আশ্চর্য কথা। যেখানে নবী-রসূল ও তাঁদের অনুসারীরা মুসলিম, সেখানে করোনার মতো ক্ষতিকর এক রোগজীবাণু মুসলিম! হ্যাঁ, আল্লাহর সকল সৃষ্টিই মুসলিম এবং মুসলিম না হয়ে উপায়ও নেই। মানুষ, ফেরেশতা, চন্দ্র-সূর্য, গ্রহ-নক্ষত্র, কীট-পতঙ্গ, জীব-জানোয়ার, বৃক্ষ-লতা যা দেখছেন, জানছেন, অনুভব করছেন সবই মুসলিম। সবাই আল্লাহর বিধান মেনে চলছে। এমন কী নমরুদ-ফিরাউন, আবু জেহেল-আবু লাহাবও এক অর্থে মুসলিম। তাদেরও জন্ম-মৃত্যু, আহার-নিদ্রা-বিশ্রাম আল্লাহর দেয়া নিয়মের অধীন। এক কথায় আল্লাহর সকল সৃষ্টি তাঁর বিধান (প্রাকৃতিক) তারা পরিচালিত। কারো ব্যতিক্রম ঘটানোর সুযোগ নেই। সৃষ্টিগতভাবে মুসলিম হলেও মানুষের মধ্যে ভিন্ন একটি সত্ত্বা আছে যা অন্য কোনো সৃষ্টির নেই। সৃষ্টির সেরা ও আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে মানুষকে ভালো-মন্দ জ্ঞান ও বিবেক দান করা হয়েছে, সর্বোপরি তাকে নবী-রসূল ও কিতাবের মাধ্যমে হেদায়াত দান করা হয়েছে, যার ফলে তাকে তার সকল কার্যক্রমের জবাবদিহি করতে হবে। তার জন্য রয়েছে জান্নাত অথবা জাহান্নাম। আল্লাহর দেয়া প্রাকৃতিক বিধানের সাথে নৈতিক বিধান যারা মেনে চলে সত্যিকার অর্থে তারাই মুসলিম, অবশ্য নৈতিক বিধান মানা...

হাদিসের পাঠ (তাওবা-ইস্তিগফার)

ইবনে আব্বাস (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, রসুলুল্লাহ (সা) বলেছেন: যে ব্যক্তি সবসময় আল্লাহর নিকট ইস্তিগফার করতে থাকে আল্লাহ তায়ালা তাকে প্রতিটি সংকট উত্তরণের সুব্যবস্থা করে দেন এবং প্রতিটি দুশ্চিন্তা থেকে মুক্ত করে দেন। আর তাকে এমন উৎস থেকে রিযিকের ব্যবস্থা করে দেন, যা সে ভাবতেও পারে না। আবু দাউদ। তাওবা অর্থ ফিরে আসা অর্থাৎ গুনাহ থেকে প্রত্যাবর্তন (সেই গুনাহের কাজ আর না করা)। ইস্তিগফার অর্থ ক্ষমা চাওয়া। গুনাহের জন্য লজ্জিত হয়ে আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়া। বান্দার দ্বারা গুনাহ সাধিত হওয়ার সাথে সাথে গুনাহ থেকে ফিরে আসা ও আল্লাহর কাছে মাফ চাওয়ার মাধ্যমে বান্দাহ পরিশুদ্ধ হয়ে যায়। ফলে সে আর সেই গুনাহের জন্য শাস্তিযোগ্য থাকে না। অবশ্য কারো প্রতি জুলুম করা হলে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির কাছ থেকেও মাফ চেয়ে নিতে হয়। ইস্তিগফারের মাধ্যমে বান্দাকে সংকট উত্তরণ, অন্তরে প্রশান্তি ও রিযিকের প্রতিশ্রুতি প্রদান করা হয়েছে। ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে বান্দার বিনয় প্রকাশ পায়, আর আল্লাহ বিনয়ী বান্দাকে পছন্দ করেন। আল্লাহর কাছে সবসময় ক্ষমা চাওয়ার মাধ্যমে তাঁর অনুগত ও বিনয়ী বান্দাহ হওয়ার তাওফিক আমাদের দান করুন। আমিন।

হাদিসের পাঠ (চরিত্রবান ব্যক্তিই সেরা)

আয়িশা (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমি রসুলুল্লাহ (সা)-কে বলতে শুনেছি : মু'মিন ব্যক্তি তাঁর উত্তম চরিত্রগুণে সেই সব আবেদ লোকের মর্যাদা লাভ করতে পারে, যারা দিনের বেলায় রোযা রাখে এবং রাত জেগে ইবাদত করে। আবু দাউদ। আজ মুসলমান নামধারী জনগোষ্ঠী চারিত্রিক ভ্রষ্টতায় নিমজ্জিত। এমন কোনো অপকর্ম নেই যা তারা না করে। মিথ্যা, শঠতা, ঘুষ-দুর্নীতি, ওজনে কম-বেশি, ভেজাল দান সবই করে। তারা পরস্পর বিশ্বাস ও আস্থা হারিয়ে ফেলেছে, হিংসা-বিদ্বেষ ও প্রতিশোধপরায়ণ হয়ে পড়েছে। শান্তি-স্বস্তি তাদের থেকে বিদায় নিয়েছে। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের কর্মময় জীবনে তোমার নবী (সা)-কে অনুসরণের মাধ্যমে সত্যিকার মুসলিম হওয়ার তাওফিক দান করো। আমিন।

আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে নেই

কুরআন-হাদিস পড়লে বান্দার প্রতি আল্লাহর দয়া-অনুগ্রহ উপলব্ধি করা যায়। তাঁর দয়া-অনুগ্রহের কোনো সীমা-পরিসীমা নেই। তবে বুঝতে হবে, তাঁর এই দয়া দুনিয়ার জীবনে সব মানুষের প্রতি কিন্তু আখিরাতে কাফিরদের (অমান্যকারী) প্রতি তিনি হবেন অত্যন্ত কঠোর। তাই দুনিয়াতেই তাঁর দয়া-অনুগ্রহ ও ক্ষমা লাভের চেষ্টা করতে হবে। শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। সে মানুষকে প্ররোচনা দেয়, এতো গুনাহ করেছিস তোর কোনো ক্ষমা নেই, তাই বেশি বেশি করে দুনিয়াটা ভোগ করে নে বা বলে, সময় আছে পরে তাওবা করে ভালো হয়ে যাস। দু'টিই ভুল। গুনাহ যত বড়ই হোক তাওবা করলে ক্ষমার সুযোগ রয়েছে। আর মৃত্যু অনিশ্চিত। প্রতিনিয়তই মৃত্যু লক্ষ্য করছি। তাই শয়তানের ধোকা দূরে ফেলে দিয়ে এখনই তাওবা করে আল্লাহর প্রিয়ভাজন হতে হবে। জীবনে নামায পড়েননি, রোযা রাখেননি বা নানাভাবে নিজের প্রতি জুলুম করেছেন (আল্লাহর হক), তাতে কী? তাওবা করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নেন, অতীতের সকল গুনাহ (আল্লাহর হক) আল্লাহ ক্ষমা করে দিবেন। কারণ তিনি ক্ষমাশীল ও দয়াময়। বান্দার হক নষ্ট করলে সম্ভব মত ফেরত দিয়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চান। খুবই আশাপ্রদ আল্লাহর উক্তি, 'যারা ঈমানদার নর ও নারীকে কষ...

কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে মাঠকর্মীদের সাথে মতবিনিময়

আমাদের টিম এবং আসিয়াবের কর্মকর্তাসহ কেন্দ্র পরিদর্শন শেষে আসিয়াবের প্রধান কার্যালয়ে কো-অর্ডিনেটর (এমএফপি) জনাব মো. রফিকুল ইসলামের পরিচালনায় এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়। সভায় তাদের ফাইন্ডিংস উপস্থাপন ও পরামর্শ প্রদান করেন এবং শাখা ব্যবস্থাপক ও মাঠপর্যায়ের কর্মকর্তাদের নানা বিষয়ে প্রশ্নের জবাব (সংশ্লিষ্টরা প্রদান করেন) শেষে আমার কিছু কথা বলার সুযোগ হয়। আসিয়াবের পক্ষ থেকে পরিচালিত ক্ষুদ্রঋণ কার্যক্রম সরজমিনে পরিদর্শন এবং আল্লাহর অসহায় বান্দাদের সহায়তায় পরিচালিত কার্যক্রমে শরীক হওয়ার সুযোগ দান করায় আল্লাহপাকের দরবারে শুকরিয়া জ্ঞাপন করি (আলহামদু লিল্লাহ) এবং আসিয়াব কর্তৃপক্ষকে জানাই ধন্যবাদ ও কৃতজ্ঞতা। সমাজের অসহায় মানুষ বিশেষ করে হতদরিদ্র মহিলাদের মাঝে ইসলামী শরীয়াভিত্তিক বিনিয়োগ কার্যক্রম পরিচালনা একটি বড় ধরনের চ্যালেঞ্জ এবং চ্যালেঞ্জ বাস্তবায়নের মূল দায়িত্ব আমাদের সামনে যারা বসে আছেন আপনারা। মানুষের কল্যাণসাধন করা আমাদের দায়িত্ব। ছওয়াবের নিয়তে ও ইবাদত মনে করে এ দায়িত্ব পালন করলে কাজটি সহজ হয়ে পড়বে এবং আল্লাহর সাহায্যও তাতে লাভ করা যাবে। আল্লাহর পথে যারা চলতে চায় সাধারণত আল্লাহ তাদের ...

আসিয়াব পরিচালিত কেন্দ্র পরিদর্শন

বাস্তব অভিজ্ঞতা লাভের উদ্দেশ্যে প্রশিক্ষণ কর্মশালার দ্বিতীয় দিন আমরা তাদের একটি কেন্দ্র পরিদর্শন করি। ৩১ জন নারীকে নিয়ে তাদের সেই কেন্দ্র। সেদিন উপস্থিত ছিলেন ২৮জন। সবাই হতদরিদ্র এবং অধিকাংশই নিরক্ষর। আসিয়াবের সাথে সম্পৃক্ত হওয়ার পরে তাদের অক্ষর পরিচিতি ঘটেছে ও স্বাক্ষর করতে শিখেছেন। তাদের একজন সভানেত্রী ও একজন সেক্রেটারি রয়েছেন। প্রতি সপ্তাহে আসিয়াবের পক্ষ থেকে একজন মহিলা কর্মী উপস্থিত হয়ে কিস্তি আদায় করেন। মাথা আবৃতসহ তাদের পোশাক ছিল বেশ শালীন। কুরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে তাদের কর্মসূচি শুরু হয় এবং প্রতি সপ্তাহে ইসলামের ব্যবহারিক বিভিন্ন বিষয়াবলী আলোচনা হয়। তাহারাত (পবিত্রতা), নামায, রোযা, পর্দা, সদাচরণ, সহীহ তেলাওয়াত ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা হয়। করোনা পরিস্থিতর কারণে কিছু সমস্যা হলেও তাদের কিস্তি আদায় বেশ সন্তোষজনক। ঋণের ব্যাপারে তাদের নিয়ম হলো ঋণগ্রহীতা হাজারে দশ টাকা ঝুঁকি (Insurance) হিসেবে জমা রাখেন। ২০ হাজার টাকা ঋণ গ্রহণ করলে ২০০ টাকা জমা রাখতে হয়। বিনিময়ে ঋণগ্রহীতা ও তার স্বামী/অভিভাবক কোনো একজন মারা গেলে সমুদয় ঋণ মাফ হয়ে যায় এবং দাফন-কাফনের জন্য তাৎক্ষণিক ৫ হাজার টাকা প্রদান কর...

আসিয়াবের প্রশিক্ষণ কর্মশালায় 'ক্ষুদ্র বিনিয়োগ কার্যক্রমে একজন কর্মীর দায়িত্ব ও কর্তব্য' শীর্ষক আলোচনা।

আমাদের প্রথম পরিচয়, আমরা মানুষ, সৃষ্টির সেরা। আল্লাহপাক আমাদেরকে জ্ঞান-বুদ্ধি ও বিবেক দিয়ে সৃষ্টি করেছেন। ভালো-মন্দ বোঝার শক্তি দান করেছেন, যা অন্য কোনো সৃষ্টিকে দেয়া হয়নি। কোনো মানুষ অন্যায় কিছু করলে আমরা বলি লোকটি অমানুষ। অর্থাৎ মানুষ হিসেবে এটি তার জন্য শোভনীয় নয়। সাথে সাথে মানুষের মাঝে লোভ-লালসা, হিংসা-বিদ্বেষও দেয়া হয়েছে। অন্যায়কারীকে আমরা বলি, লোকটি প্রবৃত্তির গোলাম হয়ে পড়েছে। অন্যায় কাজে প্ররোচনা দেয় শয়তান। শয়তান মানুষের প্রকাশ্য শত্রু। তবে সে ওয়াস-ওয়াসা সৃষ্টি করে, বাধ্য করতে পারে না। এ দুনিয়া একটি পরীক্ষাগার। ভালো-মন্দ দুটি করারই সুযোগ রয়েছে। বিবেকের পরও আল্লাহপাক মানুষকে হেদায়াত দান করেছেন। নবী-রসূল পাঠিয়েছেন। মানুষ ও আল্লাহর মাঝে আর কোনো সৃষ্টি নেই যে আমাদের চেয়ে বড়। আল্লাহপাক স্রষ্টা, সর্বশ্রেষ্ঠ, তুলনাহীন এবং বাকি সবাই তাঁর সৃষ্টি। মানুষকে তাঁর প্রতিনিধি করে মর্যাদার উচ্চাসনে আসীন করেছেন। তাই মানুষের সঙ্গে সদাচরণ মূলত আল্লাহর সাথেই সদাচরণ এবং মানুষের সঙ্গে দুর্ব্যবহার আল্লাহর সাথেই দুর্ব্যবহার। আমরা কবিতা পড়েছি-'হাশরের দিন বিচারে বসিয়া সুধাবে জগত স্বামী --- ...

আমার অনুভব

আমি আশা করি, আমার আল্লাহ আমাকে ক্ষমা করবেন। এই আশাবাদী হওয়ার পেছনে আমার কোনো বড় নেক আমল নয়। বরং আমি আমার মহান আল্লাহকে অনুভব করি অত্যন্ত দয়ার্দ ও ক্ষমাশীল হিসেবে। আমার এই অনুভব আমার মহান রবের প্রতি আরো বেশি বিনয়ী করেছে। আমি জানি, আল্লাহ তাঁর অবাধ্য বান্দাদেরকেই কেবল শাস্তি দেবেন। তিনি তাঁর অনুগত বান্দাদের শাস্তি দেয়ার জন্য কোনো বাহানা তালাশ করবেন না, বরং ক্ষমা করার নানা উপায় খুঁজবেন। আমি এটাও জানি, অনুগত বান্দারা স্বেচ্ছায় আল্লাহর নাফরমানি করে না বা করতে পারে না। শয়তানের প্ররোচনা ও নফসের তাড়নায় কোনো সময় অন্যায় হয়ে গেলে তারা তাৎক্ষণিক তাওবা (ফিরে আসে) করে। আর আল্লাহপাক তাওবাকারীকে খুব পছন্দ করেন। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের প্রতি কখনো জুলুম করেন না। তিনি জুলুম করাকে তাঁর নিজের প্রতি হারাম করে নিয়েছেন এবং জালেমকে খুব ঘৃণা করেন। জালেমের জন্য (তাওবা ছাড়া) জাহান্নামই হলো স্থায়ী ঠিকানা। আমার প্রতি আমার আল্লাহর অনুগ্রহ যে, তিনি আমাকে তাঁর বান্দাদের প্রতি জুলুম থেকে হেফাজত করেছেন এবং আমি চেষ্টা করি, সকলের সাথে সদাচরণ করার। হে আল্লাহ! তুমি আমাকে, আমার পরিবার ও সকল বিশ্বাসী বান্দাকে তোমার পথে ...

বিদয়াতের ভয়াবহ পরিণতি

মুহাম্মদ (সা) আল্লাহপাকের সর্বশেষ রসূল, তাঁর পরে আর কোনো নবী বা রসূল নেই। তাঁর মাধ্যমে আল্লাহ তাঁর দ্বীনের পরিপূর্ণতা দান করেছেন। সর্বশেষ কিতাব আল কুরআন যা কিয়ামত পর্যন্ত হেফাজতের দায়িত্ব আল্লাহ নিজেই গ্রহণ করেছেন। রসূল (সা)-এর ওপর সর্বশেষ ওহী সূরা মায়েদার ৩নং আয়াতে আল্লাহ জানিয়ে দিয়েছেন, ‘আজ আমি তোমাদের জন্য তোমাদের দ্বীন পরিপূর্ণ করে দিলাম, আর তোমাদের ওপর আমার নেয়ামতও পুরো করে দিলাম, তোমাদের জন্য জীবন বিধান হিসাবে ইসলামকে মনোনীত করলাম’। মানুষকে আল্লাহ সৃষ্টি করেছেন তাঁর গোলামী করার জন্য। গোলামী (ইবাদত) করার সকল নিয়ম-কানুনের পূর্ণতা দানের ক্ষেত্রে রসূলুল্লাহ (সা) সামান্যতম ত্রুটি রেখে যাননি। বিদায় হজ্জের বিশাল জনসমূদ্রে দাঁড়িয়ে তিনি ঘোষণা করেছিলেন, দ্বীনকে পরিপূর্ণভাবে তাঁদের কাছে পৌঁছেছেন কি না? সমস্বরে সবাই বলেছিলেন, হ্যাঁ। মুহাম্মদ (সা) রসূল হিসেবে যা করেছেন, বলেছেন ও অনুমোদন করেছেন এবং খুলাফায়ে রাশেদীন, সাহাবায়ে কেরাম ও তৎপরবর্তী সময়ে (তাবেয়ীন ও তাবে তাবেয়ীন) যা আমল করে দেখিয়ে দিয়েছেন সেটিই সুন্নাহ এবং এর বাইরে যা কিছু অতিরিক্ত বা নূতনত্ব সেটি বিদয়াত। বিদয়াত সুন্নাতের সম্পূর্ণ...

হতদরিদ্রের পরিচয়

দরিদ্র বলতেই আমরা বুঝি যার টাকা-পয়সা নেই, ধন-সম্পদ নেই, স্বর্ণ-রৌপ্য বা ব্যাংক-ব্যালেন্স বলতে কিছুই নেই। আবার ঠিকমত খেতে পারে না, পরতে পারে না, মাথা গুঁজার নেই কোনো ঠাঁই। রসূলুল্লাহ (সা)-এর প্রশ্নের জবাবে সাহাবায়ে কেরাম (রা) এমনই জবাব দিয়েছিলেন এবং এটিই স্বাভাবিক। কিন্তু রসূল (সা)-এর জবাবটা ছিল ভিন্ন। এই পৃথিবীতে ধনী ও দরিদ্র আপেক্ষিক। বাংলাদেশের সবচেয়ে ধনী ব্যক্তিটিও পৃথিবীর সেরাদের তুলনায় নিজেকে বড় অসহায় ভাবতে পারে। আবার দরিদ্র মানুষটিও ভাবতে পারে বিল্ডিং না থাকলেও তার তো একটি কুঁড়েঘর আছে; দুটি চোখ, হাত-পা আছে ও কথা বলতে পারে। সে অন্ধ, খোঁড়া ও বোবার তুলনায় নিজেকে সুখী ভেবে আল্লাহর কৃতজ্ঞ হতে পারে। ধনী-দরিদ্রের সঠিক সংজ্ঞা দেয়া কঠিন, বলা যায় অনেকটা মানসিক। আল্লাহর রসূল (সা) বলেছেন, ‘মনের ঐশ্চর্যই প্রকৃত ঐশ্চর্য’। সম্পদের প্রতি মোহ, লোভ-লালসা স্বাভাবিক এবং এই মোহ মানুষকে পরিশ্রমী ও বড় হওয়ার জন্য প্রেরণা যোগায়। জীবনে ধনী হওয়া দোষের কিছু নয়। বরং দরিদ্র হয়ে থাকা ও কর্মবিমুখ থাকাকে ঘৃণা করা হয়েছে। আল্লাহর রসূল (সা)-এর একটি উক্তি, ‘দারিদ্র মানুষকে কুফুরিতে পরিণত করে’। তৎকালে অর্থবৃত্ত,...

অনিশ্চিত আমাদের এ জীবন

প্রতিনিয়তই মৃত্যু দেখছি। গতরাতে নারায়নগঞ্জ শহরে এক মসজিদে এশার নামায শেষে এসি বিস্ফোরণে ৩৮ জন অগ্নিদগ্ধকে হাসপাতালে নেয়ার পর আজ মাগরিব পর্যন্ত মসজিদের মুয়াজ্জিনসহ ১৬ জন ইন্তেকাল করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রাজেউন)। মসজিদ আল্লাহর ঘর, একটি নিরাপদ জায়গা। আল্লাহর ইবাদতের উদ্দেশ্যে মুসল্লিগণ মসজিদে গিয়েছিলেন। সেখানে তাদের মৃত্যু হবে, না তারা আর না তাদের পরিবার-পরিজন কেউ কল্পনাও করেনি। বড় হৃদয়বিদারক এ মৃত্যু। আল্লাহপাক তাদেরকে শহীদ হিসেবে কবুল করে আখিরাতের নিশ্চিত জীবনে উচ্চ মর্যাদা দান করুন, যেখানে মৃত্যু কখনো স্পর্শ করবে না এবং মানুষ মৃত্যুভয় থেকে সম্পূর্ণ মুক্ত থাকবে। করোনা আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর পাশাপাশি নানাবিধ রোগ-ব্যাধি, হঠাৎ করে হার্টএ্যাটাক বা ব্রেনস্ট্রোক, বিমান-বাস ও ট্রেন দুর্ঘটনাসহ নানাবিধ দুর্ঘটনায় মানুষ প্রতিদিন এ দুনিয়ার জীবন ছেড়ে আখিরাতের জীবনে পাড়ি জমাচ্ছে। না চাইলেও যেতে বাধ্য হচ্ছে। কোনো উপায় নেই। এসব মৃত্যুকে তকদিরের ওপর ছেড়ে দিয়ে মানুষ সান্ত্বনা খুঁজে। এর বাইরেও রয়েছে মৃত্যু, হঠাৎ করে গুম-খুন হয়ে যাওয়া। এটি বড় পীড়াদায়ক, অসহনীয় এবং মানুষ তা মেনে নিতে পারে না...

খেয়ানতকারী/আত্মসাৎকারীর পরিণতি জাহান্নাম

যুদ্ধ শেষে ফেরার পথে একজন ব্যক্তি তীরের আঘাতে মারা যায়। সাহাবায়ে কেরাম বলাবলি করলেন, লোকটি কত সৌভাগ্যবান যে সে শহীদ হয়ে গেল। মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ (সা) বললেন, তোমাদের সাথী জাহান্নামী। সাহাবায়ে কেরাম (রা) তাজ্জব হয়ে গেলেন। কারণ যুদ্ধের ময়দানে সেই ব্যক্তি তাঁদেরই সাথে ছিলেন। রসূল (সা) বললেন, সে খেয়ানত করেছে। তার মাল-সামান তল্লাশি করে গণিমতের একটি চাদর পাওয়া গেল। খয়বরের যুদ্ধে গণিমতের মাল (চাদরটি) জমা না দিয়ে সে সেটি রেখে দিয়েছিল। একটি চাদর আত্মসাৎ করার অপরাধে যদি সারা জীবনের আমল বিনষ্ট হয়ে জাহান্নামে যেতে হয় তাহলে যারা পুকুর চুরি নয়, সাগর চুরি করে তাদের পরিণতি কী হবে? রসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন, সরকারি দায়িত্ব পালনকারী কোনো ব্যক্তি যদি এক টুকরো সূতা বা তার চেয়েও ক্ষুদ্র কোনো জিনিস খেয়ানত করে তাহলে খেয়ানতের বোঝা মাথায় করে সে উত্থিত হবে। মেগা প্রকল্পে মেগা দুর্নীতি। ছোট বড় যে যত দুর্নীতি করবে কোনো কিছুই গোপন করা সম্ভব নয়। দুনিয়ার জীবনে ক্ষমতার জোরে বা ছলচাতুরি করে পার হলেও আখিরাতে ঠিকই ধরা খাবে। পদ্মা সেতুতে যারা দুর্নীতি করবে হয়তো দেখা যাবে পদ্মা সেতু মাথায় করে কাঁপতে কাঁপতে জাহান্নাম...

অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে স্বচ্ছতা

বহুবিধ কর্মের সমষ্টি মানুষের জীবন। খন্ডিতভাবে কোনো সময় রাজনৈতিক জীবন, কোনো সময় অর্থনৈতিক জীবন আবার কোনো সময় ধর্মীয় জীবনকে অগ্রাধিকার দিয়ে মনে করা হয় এটিই মানুষের জীবনের প্রধান দিক। ফলে মানুষ ও সমাজজীবনে সৃষ্টি হয় বিশৃঙ্খলা। যখন মনে করা হয় অর্থনীতিই মানুষের জীবনের মৌলিক বিষয়, তখন ন্যায়-অন্যায় ভুলে গিয়ে সে অর্থনৈতিক সমৃদ্ধির দিকে ধাবিত হয় এবং সমাজটা তখন শোষণ-জুলুমে ক্ষত-বিক্ষত হয়। আবার যখন রাজনীতিকেই কেউ তার জীবনে বড় মনে করে, সে তখন স্বৈরাচারে পরিণত হয় এবং আল্লাহর বান্দাদেরকে নিজের গোলামে পরিণত করে। আবার ধমকের্ই (দার্শনিকদের ধারণা মতে ধর্ম) নিজের জীবনের সবকিছু মনে করে তখন সে ক্রমান্বয়ে সংসারত্যাগী সন্যাসীতে পরিণত হয়। আসলে আল্লাহপ্রদত্ত দ্বীন ইসলামে জীবনকে এভাবে খন্ড-বিখন্ড করার সুযোগ নেই। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদেরকে হেদায়াত দানের জন্য যুগে যুগে অসংখ্য নবী-রসূল প্রেরণ করেছেন। তাঁরা ছিলেন আল্লাহর পক্ষ থেকে সুসংবাদ দানকারী ও ভীতি প্রদর্শনকারী। এ সমস্ত দায়ী ইলাল্লাহ সবাই ছিলেন মানবজাতির জন্য মডেল। সবারই সুনির্দিষ্ট পেশা ছিল। কেউ কৃষক, কেউ মজুর, আবার কেউবা ব্যবসায়ী। নিজ হাতে উপার্জন করাকে স...

রাজত্ব আল্লাহর হাতে

এ প্রসঙ্গে আল্লাহর বাণী, ‘(হে নবী), তুমি বলো, হে রাজাধিরাজ (মহান আল্লাহ), তুমি যাকে ইচ্ছা তাকে সাম্রাজ্য দান করো, আবার যার কাছ থেকে চাও কেড়েও নাও, যাকে ইচ্ছা তুমি সম্মানিত করো, যাকে ইচ্ছা তুমি অপমানিত করো; সব রকমের কল্যাণ তো তোমার হাতেই নিবদ্ধ; নিশ্চয়ই তুমি সবকিছুর ওপর একক ক্ষমতাবান’- সূরা আলে ইমরান ২৬। এই আয়াতে স্পষ্ট যে, কাউকে রাজত্ব দেয়া না দেয়া একান্তভাবে নির্ভর করে আল্লাহর মর্জির ওপর। যেহেতু বিষয়টি আল্লাহর হাতে তাহলে স্বাভাবিকভাবে আশা করা যায় জমিনে ঈমানদার বান্দাদের উপস্থিতি থাকলে দেশ পরিচালনার ভার তারাই লাভ করবে। কিন্তু আমরা লক্ষ্য করি, দেশে দেশে রাজত্ব করছে আল্লাহর নাফরমান বান্দারা (যাদের অধিকাংশই জালেম)। আসলে এব্যাপারে আল্লাহর নিয়মটি আমাদের জানা দরকার। তার আগে আমরা জানতে চাইবো রাজত্বের সাথে সম্মান ও দ্বীনদারীর সম্পর্ক কতটুকু। উপরোক্ত আয়াতে বোঝা যায় দুনিয়ার জীবনে মান-ইজ্জত-সম্মানের সাথে রাজত্বের গভীর সম্পর্ক রয়েছে। কর্তৃত্বের আসনে আসীন ব্যক্তির যাম-যশ-খ্যাতি-সম্মান চতুর্দিকে ছড়িয়ে পড়ে ও সেই ব্যক্তি প্রশংসায় ভাসতে থাকে এবং কর্তৃত্বের আসন থেকে ছিটকে পড়লে তার জীবনে নেমে আসে লাঞ...