Skip to main content

আমরা কি সত্যই হতভাগা?

রমজান শেষ হয়ে যাচ্ছে। প্রশ্ন জাগে- আমরা কি নিজেদেরকে গুনাহমুক্ত করে জান্নাতে যাওয়ার উপযুক্ত হতে পেরেছি? সেটি নির্ভর করে আমাদের আচার-আচরণ, লেন-দেন ও কর্মকাণ্ডের ওপর। আল্লাহর নাফরমানি যদি ছেড়ে আসতে পারি তাহলেই বোঝা যাবে রোজা পালন আমাদের সার্থক হয়েছে।


রসুলল্লাহ (সা) একদিন মিম্বরে আরোহণ করার সময় তিনবার আমিন বলেন। সাহাবায়ে কেরামের জিজ্ঞাসার জবাবে তিনি বলেন, এইমাত্র জিবরাইল (আ) আমাকে বলে গেলেন- যে লোক রমজান মাস পেল অথচ নিজের গুনাহ ক্ষমা করে নিতে পারলো না সে যেন ধ্বংস হয়, আমি বললাম, আমিন। (হাদিসে কুদসি)
আসলে রমজান মাস পেয়ে যে নিজে গুনাহ থেকে মুক্ত অর্থাৎ পরিশুদ্ধ (মুত্তাকি) হতে পারলো না সে প্রকৃতই হতভাগা, কপালপোড়া, নিজেকে ধ্বংসই করলো।

রমজান মাস অতিক্রম করতে চলেছে অথচ আমাদের চরিত্রের কোনো পরিবর্তন নেই। অশ্লীলতা, বেয়াহাপনা সমানে চলছে। পর্দা নারী পুরুষ সবার জন্য ফরজ। নামাজ রোজা যেমন ফরজ পর্দা মেনে চলাটা তেমনই ফরজ। ফেসবুকেও বেপর্দা নারীর ছবি অহরহ দৃষ্টিতে আসে। এরা যে জাহান্নামে যাবে সেটি মিরাজের রাতে আল্লাহ তায়ালা তাঁর নবি (আ)-কে চাক্ষুষ দেখিয়ে দিয়েছেন। শুধু কী তাই? পর্দাহীন নারীর স্বামী/অভিভাবক দায়ূস, সেও জাহান্নামী। এমন লোকের নামাজ রোজা সবই পণ্ড শ্রম, অর্থহীন।

আল্লাহ তাঁর সৃষ্টির প্রতি জুলুম করেন না এবং তাঁর নিজের জন্য জুলুম হারাম করে নিয়েছেন। সাথে সাথে তাঁর বান্দাদের প্রতি জুলুমও হারাম করে দিয়েছেন। জালেমের ঠিকানা হলো জাহান্নাম। তারপর ইমানদার নর ও নারীর ওপর জুলুম অকল্পনীয়। এক শ্রেণির মানুষ ইসলাম ও ইমানদার জনগোষ্ঠীকে নিজেদের প্রতিপক্ষ বানিয়ে নিয়েছে। তাদের সম্পর্কেই আল্লাহ তায়ালা বলেছেন, 'যারা ইমানদার নর ও নারীকে কষ্ট দেয় অতঃপর তাওবা করে না তাদের জন্য রয়েছে জাহান্নামের আজাব, আছে ভস্ম হওয়ার শাস্তি'- সুরা বুরুজ। এই রমজানও তাদেরকে নিবৃত্ত করতে পারেনি। সত্যই তারা হতভাগা, বদনসিব তাদের।

নামাজে শৈথিল্য, আচার-আচরণে রুক্ষতা, লেনদেনে সততার অভাব, ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি ও আমানতদারিতে গাফিলতি সকল ক্ষেত্রে দুর্বলতা দৃশ্যমান; কোনো পাপাচারই দূর হয়নি। রমজানের রোজার আবেদন ছিল বান্দার মধ্যে সকল ক্ষেত্রে পরিশুদ্ধি আনয়ন। আর যদি তা সম্ভব না হয়, তাহলে অর্থহীন এই রোজা পালন ও রাত্রি জাগরণ, এসব আনুষ্ঠানিকতায় আল্লাহর কোনোই প্রয়োজন নেই।

আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে সঠিক উপলব্ধি দান করুন এবং একজন ন্যায়বান মানুষ হিসেবে দুনিয়ায় চলার তৌফিক দান করুন। আমিন। ২৮ রমজান, ১১.০৫.২০২১

Comments