Skip to main content

লকডাউন নয়, চাই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে কড়াকড়ি আরোপ

৫ এপ্রিল থেকে লকডাউন চলছে। বর্তমানে দোকানপাট ও বাজার খুলে দেয়া হলেও গণপরিবহন বন্ধ। আজকের প্রজ্ঞাপনে বলা হয়েছে জেলার অভ্যন্তরে ৬ মে থেকে গণপরিবহন চললেও দূরপাল্লার বাস ১৬ মে পর্যন্ত বন্ধ থাকবে। সাথে ট্রেন ও লঞ্চ। প্রয়োজনে আমি বাজারে যাই। সেখানে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা কমই হয়। বিক্রেতা বিশেষ করে ফুটপাতে যারা ব্যবসা করে তাদের মুখে প্রায়ই মাস্ক থাকে না, আবার কারো থাকলে থুতনির সাথে। ক্রেতাদেরও সবার মুখে মাস্ক নেই। অথচ বাসগুলো ঠিকই স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলে। মাস্ক ছাড়া তারা কোনো যাত্রী উঠায় না এবং দুই সিটে একজন করে নেয়। সামনে ঈদ। দূরপাল্লার বাস, ট্রেন, লঞ্চ বন্ধ। কিন্তু মানুষ ঠিকই বাড়ি যাবে এবং তাদের এই যাত্রাটা হবে খুবই ঝুঁকিপূর্ণ। আজ পদ্মায় স্পিডবোট দূর্ঘটনায় ২৬ জনের প্রাণহানি ঘটেছে। মাইক্রো, কার, ট্রাক, নৌকা যাতেই যাক সেসব ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলা সম্ভব নয় যতটা সম্ভব বাস, ট্রেন ও লঞ্চে। আশা করি সরকার বিষয়টি ভেবে দেখবেন।


‘জনস্বাস্থ্যে লকডাউনের প্রভাব’ শীর্ষক এক সেমিনারে ৯ জন স্বাস্থ্যবিশেষজ্ঞ বলেছেন, লকডাউন স্বাস্থ্যসেবায় মারাত্মক ঝুঁকি সৃষ্টি করেছে। ২০২০ সনে মোট মৃত্যু ছিল ৮ লক্ষাধিক এবং করোনায় মারা যায় ৮ হাজার, যা মোট মৃত্যুর ১ শতাংশ। লকডাউনের কারণে ৯৯ শতাংশ রোগী ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। তাঁরা বলেন, ২০২০ সনে হার্টএ্যাটাকে মারা যায় ১,৮০,৪০৮, যা ২০১৯ সনের তুলনায় ২০% বেশি। ব্রেনস্ট্রোকে মারা যায় ৮৫,৩৬০, যা ২০১৯ সনের তুলনায় দ্বিগুণ। ২০২০ সনে কিডনি জটিলতায় মারা যায় ২৮ হাজার, যা আগের বছরের তুলনায় তিনগুণ। লকডাউনের কারণে মানুষ চিকিৎসাসেবা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। হাসপাতালে রোগী ভর্তি কম হওয়ার পেছনে কারণ লকডাউন। বাস-ট্রেন-লঞ্চ চলাচল বন্ধ থাকায় ঢাকা পর্যন্ত আসা সাধারণ মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। ফলে ২০১৯ সনের তুলনায় ২০২০ সনে মৃত্যুহার অনেক বেশি।

সাধারণ মানুষ ভাইরাস ছড়ায় কিন্তু তারা তেমন অসুস্থ হয় না বা মারাও যায় না। তারা রোদে পুড়ে, বৃষ্টিতে ভিজে চলায় অভ্যস্ত এবং কঠোর পরিশ্রম করে। ফলে দেশি মুরগির মতো রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা অনেক বেশি। আর আমরা যারা এসিতে টেবিল চেয়ারে বসে কাজ করি তারা শারীরিক শ্রমবিমুখ, অনেকটা ব্রয়লারের মুরগি, সামান্য শীত বা গরমেই কাবু। করোনা আমাদের জীবনযাত্রায় পরিবর্তনের ডাক দিচ্ছে। বুনিয়াদী প্রশিক্ষণে টানা দুই মাস বেশ দৌড়ঝাপের ট্রেনিং নেয়া হয়েছিল। ট্রেনিং প্রমাণ করে সুস্থতার জন্য শারীরিক শ্রম অত্যাবশ্যক। কিন্তু কর্মজীবনে সেই ট্রেনিং-এর কার্যকারিতা নেই। সাধারণ মানুষের বিশ্বাস, করোনা তাদের সমস্যা নয়, এটি ধনী লোকদের রোগ। ফলে স্বাস্থ্যবিধি মেনে চলার ক্ষেত্রে তাদের মধ্যে স্বতস্ফুর্ততা নেই। আবার করোনা ঢাকাকেন্দ্রিক। এটি নিয়ে আরো গবেষণা, আরো চিন্তা-ভাবনা দরকার।

করোনা আল্লাহর সৃষ্ট এক অতি ক্ষুদ্র রোগজীবাণু। আমি সবসময় বলে আসছি, মানুষকে সতর্ক করার জন্যই আল্লাহ করোনার মতো মহামারি দিয়েছেন। আমার বিশ্বাস, তাওবা করলে অর্থাৎ আল্লাহর দিকে ফিরে আসলে সহজেই তিনি আমাদেরকে হেফাজত করবেন। হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে তোমার পথে চলাটা সহজ করে দাও ও মুসলিম অবস্থায় মৃত্যু দিও।

Comments