Skip to main content

আমরা মা-বাবার ভাগ্যবান সন্তান

আমরা নয় ভাই-বোনের অনেকেই বার্ধক্যে উপনীত হয়েছি এবং এর মধ্যে একটি ভাই তাঁর মহান রবের কাছে ফিরে গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন)। আমরা আমাদের বৃদ্ধকাল পর্যন্ত বাবা-মার সান্নিধ্য লাভ  করলাম। আব্বা বেশ পরিণত বয়সে (২০১৫ সনে) তাঁর রবের কাছে ফিরে গেছেন এবং মা এখনো আমাদের মাঝে বর্তমান। আলহামদু লিল্লাহ। যে কেউ যখন শুনে, আমার মা বেঁচে আছেন তাৎক্ষণিক বলে উঠেন, স্যার/ভাই, আপনি তো ভাগ্যবান। সত্যিই আমরা সকল ভাই-বোন ভাগ্যবান। 

আমার মা অসুস্থ, স্মৃতিভ্রম ঘটেছে। আগে একটি দিন কথা না বললে মা অস্থির হয়ে উঠতেন। এখন আর পারেন না এবং কারো কথা স্মরণেও নেই। কাছে এসে ডাকলে সাড়া দেন এবং কাউকে কাউকে বুঝতেও পারেন। গতকাল মার কাছে এসে ডাকলে মা সাড়া দিলেন। পাশে থেকে একজন বললো, কে কথা বলছে? জবাব দিলেন, আমার বড় ছেলে হিলাল। মার এই সাড়া দেয়া সন্তানের জন্য বড়ো প্রাপ্তি। আমার মার সেবাযত্ন তাঁর পুত্রবধূ ও মেয়েরাই করেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। দোয়া করি, আল্লাহপাক আমার মার খেদমতের বিনিময়ে তাঁর বান্দিদের দুনিয়া ও আখেরাতে উত্তম কল্যাণ দান করুন। 

আল্লাহপাক তাঁর নিজের আনুগত্যের সাথেই বলেছেন, পিতামাতার সাথে সদাচরণ করো। রসুল সা. বলেছেন, প্রসন্নচিত্তে মার প্রতি দৃষ্টিদানের বিনিময়ে রয়েছে কবুল হজের সওয়াব। সত্যিই প্রতিটি ঘরেই রয়েছে জান্নাত। বাবা-মার মৃত্যুর পরও সন্তানের জন্য করণীয় রয়েছে। স্বয়ং আল্লাহই দোয়া শিখিয়ে দিয়েছেন। সেই দোয়া কি ব্যর্থ হতে পারে? পিতামাতাকে উদ্দেশ্য করে সন্তানের সকল নেক কাজের সওয়াব পিতামাতার সাথে সন্তানও পায়। তাই দিনক্ষণ ঠিক না করে একজন দরিদ্রকে এক বেলা খাবার দিয়ে বা ভিক্ষুককে ১০টা টাকা দিয়ে বলুন, হে পরওয়ারদেগার! এর সওয়াব আমার আব্বা ও আম্মার আমলনামায় দান করুন।  

মাঝে-মধ্যে সন্তানের বিরুদ্ধে পিতামাতার অভিযোগ কানে আসে। সত্যি সেই সন্তান দুর্ভাগা। সে তার দুনিয়া ও আখেরাত ধ্বংস করলো। যে দয়া করে না, সে দয়া পায় না। এটি হাদিস। এর বদলা সেই সন্তান দুনিয়াতেই পেয়ে যায়। যে ঘরে পিতামাতার সাথে সদ্ব্যবহার হয় সে ঘরে আল্লাহর রহমত বর্ষিত হয়। বাবা-মার জন্য খরচ, খরচ নয়, সর্বোত্তম বিনিয়োগ। আল্লাহ তায়ালা সকল বাবা-মাকে সন্তান দ্বারা তাদের চোখ শীতল করে দিন। আমিন।

Comments