Skip to main content

Posts

Showing posts from September, 2022

আলেমগণ নবি-রসুলদের উত্তরাধিকার

শ্বশুরবাড়ি (নওদা ক্ষেমিরদিয়াড়, ভেড়ামারা) এসে মসজিদে ফজরের নামাজ শেষে কিছু নসিহত করার কথা বলা হলে সালাম বিনিময়ের পর নিম্নরূপ কথা- বার্তা বললাম।  দুই কাতার মুসল্লি প্রায় ৭০/৮০ জন হবে এবং সবাই বসে পড়লেন। আলহামদু লিল্লাহ।  ফজরের নামাজের মুসুল্লি প্রসঙ্গে বললাম, রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন : যারা এশা ও ফজরের নামাজ জামায়াতের সাথে আদায় করে তারা যেন সারাটি রাত ইবাদতের মধ্যে অতিবাহিত করে। তিনি আবার বড়ো শক্ত কথাও বলেছেন : আমাদের ও মুনাফিকদের মধ্যে পার্থক্য হলো এশা ও ফজরের সালাতে হাজির হওয়া। আল্লাহপাকের দরবারে শুকরিয়া যে, আপনাদের গোটা রাত ইবাদতের মধ্যে অতিবাহিত হয়েছে এবং আপনারা নির্ভেজাল মুসলমান। ফরজ নামাজ পাঁচ ওয়াক্ত জামায়াতের সাথেই আদায় করতে হবে। রসুলুল্লাহ সা বলেছেন : আজান শুনে যারা মসজিদে হাজির হবে না আমার ইচ্ছা জাগে আমার স্থলে কেউ ইমামতি করুক আর আমি তাদের বাড়ি ঘর আগুন দিয়ে জ্বালিয়ে দেই। দেইনি এ কারণে যে, সেখানে নারী ও শিশু থাকে। কতো বড়ো কঠিন কথা রহমাতুল্লিল আলামিন বাড়িঘর পুড়িয়ে দিতে চান। আলী রা. বলেছেন : মসজিদের প্রতিবেশীদের নামাজ মসজিদে গিয়েই পড়তে হবে। জিজ্ঞাসা করা হয়েছে, মসজিদের প্রতিব...

জুমা আলোচনা

হজরত উছমান বিন আফ্ফান জামে মসজিদ, মাধবপুর তারিখ : ২৩.০৯.২০২২ নামাজ মুসলমান হওয়ার দলিল ও প্রমাণ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম আল্লাহপাকের দরবারে লাখো শুকরিয়া যে তিনি তাঁর অগণিত বান্দার মধ্য থেকে দয়া করে আমাদেরকে তাঁর ঘরে হাজির হওয়ার তৌফিক দান করেছেন। বলা যায়, আমরা আল্লাহর বাছাইকৃত বান্দা। আলহামদু লিল্লাহ। আমি আপনাদের মসজিদ সম্পর্কে অবহিত। ইতোপূর্বে এই মসজিদে এসেছি। আপনাদের মসজিদের বয়স কম হলো না। প্রায় চল্লিশ বছর হয়ে আসলো। বাহাদুরপুর ইউনিয়নের ইতিহাসভিত্তিক স্মরণিকায় এই মসজিদের উল্লেখ রয়েছে। মসজিদ প্রতিষ্ঠায় যারা অগ্রণী ভূমিকা পালন করেছেন তন্মধ্যে মরহুম আফজাল হোসেন (প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি ও ইমাম), মরহুম মজের উদ্দিন শেখ (প্রথম মুয়াজ্জিন), আমার স্যার মরহুম নুর মোহাম্মদকে (পরবর্তী সভাপতি ও ইমাম) গভীর শ্রদ্ধাভরে স্মরণ ও তাঁদের মাগফেরাত কামনা করছি এবং তৎসঙ্গে শারীরিক সুস্থতা ও দীর্ঘায়ু কামনা করছি জনাব মো. আব্দুল করিম মোল্লা (প্রথম মুয়াজ্জিন) ও মো. আব্দুর রাজ্জাক মোল্লার (প্রতিষ্ঠাতা সেক্রেটারি)। সেসময়ে তাঁরা স্বেচ্ছায় ও স্বতঃস্ফুর্তভাবে আল্লাহর ঘরের আবাদ করেছেন। জনাব আব্দুল করিম মোল্লার বৈঠকখানায় শুরু...

সক্রিয় জনশক্তি তৈরি সময়ের দাবি

ইসলাম আল্লাহপাক প্রদত্ত পূর্ণাঙ্গ জীবনব্যবস্থা। আল্লাহ তায়ালা অতীত, বর্তমান ও ভবিষ্যৎ সবকিছু সম্পর্কে অবগত। তিনি সকল সৃষ্টির রব। ফলে ইসলাম শ্বাশত ও সার্বজনীন। পৃথিবী মানবরচিত নানা মতবাদ ও আদর্শ দ্বারা পরিচালিত হয়ে আসছে এবং এর ফলে শোষণ-বঞ্চণা, জুলুম-নির্যাতনে পৃথিবী ক্ষত-বিক্ষত। সুদূর অতীত থেকে বিশ্ববাসী দেখে আসছে নানা গোষ্ঠী ও রাজতান্ত্রিক স্বৈরশাসন, সামরিক ও একনায়কতান্ত্রিক জুলুমতন্ত্র, গণতন্ত্রের নামে ব্যক্তি ও দলের স্বৈরশাসন, সমাজতান্ত্রিক একনায়কতন্ত্র ও উদার গণতন্ত্রের নামে ধোকা ও প্রতারণাপূর্ণ জুলুমতন্ত্র। উদার গণতন্ত্রে অনেক সময় নিজ দেশে সুশাসন ও নাগরিক অধিকার প্রতিষ্ঠা করলেও বিশ্বের দেশে দেশে স্বৈরশাসন টিকে রাখার জন্য এরাই অগ্রণী ভূমিকা পালন করে আসছে এবং বিশ্বের পরাশক্তি হিসেবে পরিচিত শিল্পোন্নত দেশগুলো বাজার দখলের জন্য ও মজুদ অস্ত্রসম্ভার বিক্রির লক্ষ্যে সবসময় যুদ্ধবিগ্রহ বাধিয়ে রাখছে। এসব সভ্যতা বৈষয়িক উন্নতি করলে নৈতিক দিক দিয়ে তারা চরমভাবে অধপতিত। অশ্লীলতা ও বেয়াহাপনার চরম প্রকাশ, এমনকি লুত আ.-এর জাতির মতো সমকামিতায় লিপ্ত হয়ে পড়েছে। তদুপরি অনুন্নত ও উন্নয়নশীল দেশগুলোয় যুদ্ধব...

শিরক ও হিংসা থেকে মুক্ত ব্যক্তি জান্নাতে যাবে

 জুমা আলোচনা গাছিয়া দৌলতপুর নতুন পাড়া জামে মসজিদ তারিখ : ১৬.০৯.২০২২ বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম জুমার দিন আমাদের ঈদের দিন। সপ্তাহের শ্রেষ্ঠতম দিন। গোসল করে উত্তম পোশাকে সজ্জিত হয়ে আজানের পরপরই আমাদের আল্লাহর ঘরে উপস্থিত হতে হবে। আল্লাহপাকের দরবারে লাখো শুকরিয়া যে তিনি দয়া করে আমাদেরকে তাঁর ঘরে হাজির হওয়ার তৌফিক দান করেছেন। আলহামদু লিল্লাহ। আজকের দিনের প্রধান কাজ জুমার সালাত আদায়। তাই আমাদের সবারই সেজন্য প্রস্তুতি থাকা দরকার। আমাদের পক্ষে একটি উট কুরবানি করা কি আদৌ সম্ভব? অথচ রসুলুল্লাহ সা. বলেছেন, মসজিদে প্রথম আগমনকারী ব্যক্তি একটি উট কুরবানির সওয়াব লাভ করবে। এরপর পর্যায়ক্রমে গরু, ছাগল কুরবানির সুসংবাদ শুনিয়েছেন। আবার প্রথম কাতারে আসন গ্রহণের ফজিলত প্রসঙ্গে বলেছেন, মানুষ যদি বুঝতো প্রথম কাতারে বসায় কতো সওয়াব তাহলে লটারি করার প্রয়োজন হতো। সামনের কাতার ফাঁকা রেখে পেছনে বসলে মানুষকে ডিঙিয়ে যেতে হয় যেটা আদবের খেলাপ এবং হাদিসে নিষেধ রয়েছে। জুমার দিনে খুতবা শ্রবণ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। মনোযোগের সাথে খুতবা শুনতে হয়। ফেরেশতারা মুসল্লিদের আগমনের ভিত্তিতে সওয়াব লিখতে থাকেন। খতিব মহোদয় খুতবা দান...

সাহাবায়ে কেরামের রা. মর্যাদা

ইসা আ.-এর অনুসারী হাওয়ারিদের প্রশংসা করে আল্লাহপাক বলেছেন, (ইসা আ. কর্তৃক তাঁর অনুসারীদের সম্বোধন করে বলা) ‘আল্লাহর দিকে কে আছ আমার সাহায্যকারী? জবাবে হাওয়ারিরা বলেছিল, 'আমরা আছি আল্লাহর সাহায্যকারী’- সুরা সফ ১৪। তেমনি দীন প্রতিষ্ঠার কাজে রসুলুল্লাহ সা.- এর সাহায্যকারী ছিলেন সাহাবায়ে কেরাম। দুনিয়ায় ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হওয়া এবং আমাদের পর্যন্ত পৌঁছা ও মুসলমান হওয়ার সৌভাগ্য লাভ সবই সম্ভব হয়েছে সাহাবায়ে কেরামের চরম আত্মত্যাগের বদৌলতে। পবিত্র মক্কার জমিন সাক্ষ্য দেবে রসুলুল্লাহ সা. ও তাঁর সাহাবায়ে কেরামের চরম আত্মত্যাগ ও কাফের- মুশরিকদের সীমাহীন জুলুম-নির্যাতনের। নবুয়ত লাভের পর কয়েকজন ব্যক্তি রসুলুল্লাহ সা.-এর ওপর ইমান এনেছিলেন। তন্মধ্যে আবু বকর রা. অন্যতম। ইমান আনার পর তিনি ছায়ার মতো রসুল সা.-এর সাথে ছিলেন। তাঁর সকল অর্থসম্পদ দীনের প্রচার ও প্রসারে ব্যয় করেছেন এবং বিলাল রা.সহ দাস শ্রেণির লোকদের খরিদ করে স্বাধীন করে দিয়েছেন। বড়ো কঠিন ছিল সেই দিনগুলো। মক্কায় অবস্থানকালে মা খাদিজা রা. ও আবু বকর রা.-এর সহযোগিতা ছিল সর্বোচ্চ। মি’রাজ থেকে প্রত্যাবর্তনের পর কাফির-মুশরিকদের সাথে অনেক মুসলিমের ইম...

পর্দা নারী-পুরুষ সবার জন্য ফরজ

(পর্দার বিধান ২৪ নং সুরা নুর ২৭-৩১, ৫৮-৬০ এবং (৩৩ নং সুরা) আহজাব ৫৩-৫৫, ৫৯ আয়াতে উল্লেখ করা হয়েছে। এর পূর্বে আহজাবের ৫৯ নং আয়াত আলোচনা করেছিলাম। আজকে সুরা নুর ৩০ নং আয়াত আলোচনা করা হলো। পর্দা সম্পর্কে একটি ছোট্ট বই লেখার ইচ্ছাও রয়েছে। আল্লাহপাক সাহায্য করুন।) ‘(হে নবি!) মুমিন পুরুষদের বলো, তারা যেন নিজেদের দৃষ্টি সংযত রাখে এবং তাদের লজ্জাস্থানসমূহের হেফাজত করে। এটি তাদের জন্য উত্তম পন্থা। যা কিছু তারা করে আল্লাহ তা জানেন’- সুরা নুর ৩০। পর্দা সম্পর্কীয় বিধান হিজরতের পঞ্চম বছরে অবতীর্ণ হয়। আল্লাহর বিধান (শরিয়ত) স্বতঃস্ফুর্তভাবে মেনে চলার মতো মনমানসিকতা তৈরি হওয়ার পরই আল্লাহ তায়ালা রসুলুল্লাহ সা.-এর ওপর পর্দার বিধান নাজিল  করেছেন এবং সেটি কার্যকর করার মতো শক্তিও রসুল সা. অর্জন করেছিলেন। মুসলিম দাবিদার সকলের ওপর ইসলামের ফরজ বিধান পালন বাধ্যতামূলক এবং পালন না করা কুফরি (অমান্য করা) ও শাস্তিযোগ্য অপরাধ। আল্লাহর আদালতে সকলকে জবাবদিহি করতে হবে ব্যক্তিগতভাবে এবং জান্নাত-জাহান্নাম মূলত ব্যক্তির ইমান ও আমলের ওপর নির্ভর করবে। ইসলাম একটি রাষ্ট্রীয় দীন এবং ইসলাম প্রতিষ্ঠিত হলে তা মানা সহজ হয়ে যা...

আমলের প্রতিদান

আমল দু’ধরনের - নেক আমল ও বদ আমল। ঈমান ও নেক আমলে যারা সমৃদ্ধ তারাই জান্নাতি। ঈমান ও নেক আমল পরস্পর পরিপূরক। ঈমানের বহিঃপ্রকাশ ঘটে নেক আমলের মধ্য দিয়ে। বলা যায় বীজ ও বৃক্ষ। জমিনে বীজ বপন করা হলে সেখান থেকে চারা গজায় এবং এটাই স্বাভাবিক। যদি বীজ থেকে চারা না গজায় তাহলে বুঝতে হবে বীজটা নষ্ট বা কোনো পাথরখণ্ডের নিচে চাপা পড়েছে। যে লোক আল্লাহ, পরকাল, রসুল ও কিতাবের প্রতি বিশ্বাস করে তার পক্ষে কখনোই কোনো মন্দ কাজ সম্ভব নয়। তার দ্বারা আল্লাহর হক (নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত) এবং বান্দার হক পুরোপুরি আদায় হওয়াই স্বাভাবিক।  নেক আমল কাকে বলে? আল্লাহর সন্তুষ্টির লক্ষ্যে সকল ধরনের কাজই নেক আমল। আমাদের মাঝে নেক আমলের একটি সংক্ষিপ্ত ধারণা রয়েছে। নামাজ-রোজা, হজ-জাকাত, তাসবিহ-তাহলিল বা মসজিদ-মাদ্রাসা গড়ে তোলা ইত্যাদি ধর্মীয় লেবেলযুক্ত কাজই কেবল নেক আমল। আমলে সালেহ বা নেক আমলের ধারণা অত্যন্ত বিস্তৃত। সুরা আসরে (মক্কায় অবতীর্ণ এবং প্রাথমিককালে) ধ্বংস ও বিপর্যয় থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহপাক চারটি গুণের কথা বলেছেন। সেখানে ঈমানের সাথে নেক আমলের কথা বলা হয়েছে। সেসময়ে আমাদের ধারণামত নেক আমল কিছুই ছিল না এবং আল্লাহ ...

রসুল সা.-এর মর্যাদা

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম  'হে ঈমানদারগণ! আল্লাহ ও তাঁর রসুলের চেয়ে অগ্রগামী হয়ো না। আল্লাহকে ভয় করো। আল্লাহ সবকিছু শোনেন ও জানেন। হে ঈমানদারগণ! নিজেদের আওয়াজ রসুলের আওয়াজের চেয়ে উঁচু করো না এবং উচ্চস্বরে নবির সাথে কথা বলো না, যেমন তোমরা নিজেরা পরস্পর বলে থাকো। এমন যেন না হয়, তোমাদের অজান্তেই তোমাদের সব কাজ-কর্ম ধ্বংস হয়ে যায়’- সুরা হুজুরাত ১-২। এই সুরার ৪র্থ আয়াতের হুজুরাতকে নাম হিসেবে গ্রহণ করা হয়েছে। মাদানি সুরা। তবে পূর্ণ সুরা একত্রে নাজিল না হয়ে বিভিন্ন সময়ে অংশবিশেষ নাজিল হয়েছে। বিষয়বস্তুর সাদৃশ্যের কারণে এখানে একত্রিত করা হয়েছে। ৪র্থ আয়াত সম্পর্কে সিরাত গ্রন্থে উল্লেখ পাওয়া যায়, হিজরি ৯ম সনে বনি তামিম গোত্রের এক প্রতিনিধি দল এসে রসুল সা.-এর পবিত্র স্ত্রীগণের হুজরা বা গৃহের বাইরে থেকে ডাকাডাকি করে।  এই সুরার বিষয়বস্তু হচ্ছে মুসলমানদের এমন আদব-কায়দা, শিষ্টাচার ও আচরণ শিক্ষাদান, যা তাদের ইমানদারসুলভ চরিত্র ও ভাবমূর্তির উপযুক্ত এবং মানানসই। ব্যাখ্যা : মুসলমানদের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় কাজের ভিত্তি হবে সুরা হুজুরাতের প্রথম আয়াত। সকল কাজের শুরুতে মুসলিম ব্য...

আমরা মা-বাবার ভাগ্যবান সন্তান

আমরা নয় ভাই-বোনের অনেকেই বার্ধক্যে উপনীত হয়েছি এবং এর মধ্যে একটি ভাই তাঁর মহান রবের কাছে ফিরে গেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন)। আমরা আমাদের বৃদ্ধকাল পর্যন্ত বাবা-মার সান্নিধ্য লাভ  করলাম। আব্বা বেশ পরিণত বয়সে (২০১৫ সনে) তাঁর রবের কাছে ফিরে গেছেন এবং মা এখনো আমাদের মাঝে বর্তমান। আলহামদু লিল্লাহ। যে কেউ যখন শুনে, আমার মা বেঁচে আছেন তাৎক্ষণিক বলে উঠেন, স্যার/ভাই, আপনি তো ভাগ্যবান। সত্যিই আমরা সকল ভাই-বোন ভাগ্যবান।  আমার মা অসুস্থ, স্মৃতিভ্রম ঘটেছে। আগে একটি দিন কথা না বললে মা অস্থির হয়ে উঠতেন। এখন আর পারেন না এবং কারো কথা স্মরণেও নেই। কাছে এসে ডাকলে সাড়া দেন এবং কাউকে কাউকে বুঝতেও পারেন। গতকাল মার কাছে এসে ডাকলে মা সাড়া দিলেন। পাশে থেকে একজন বললো, কে কথা বলছে? জবাব দিলেন, আমার বড় ছেলে হিলাল। মার এই সাড়া দেয়া সন্তানের জন্য বড়ো প্রাপ্তি। আমার মার সেবাযত্ন তাঁর পুত্রবধূ ও মেয়েরাই করেন। আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। দোয়া করি, আল্লাহপাক আমার মার খেদমতের বিনিময়ে তাঁর বান্দিদের দুনিয়া ও আখেরাতে উত্তম কল্যাণ দান করুন।  আল্লাহপাক তাঁর নিজের আনুগত্যের সাথেই বলেছেন, পিতামাতার স...

মৃত্যু আমাদের কতো নিকটবর্তী!

আমি নিজেই আজকে মৃত্যু নিয়ে দু'টি পোস্ট দিলাম। একটি আমাদের অগ্রজ ইঞ্জিনিয়ার জালাল ভাই ও অপরটি আমার ফুফু শাশুড়ির। দু’টিই আকস্মিক মৃত্যু এবং চিকিৎসার সুযোগও পাননি। করোনা, এক্সিডেন্ট, হার্টএ্যটাক, ব্রেনস্ট্রোক কতোভাবেই না মানুষের মৃত্যু ঘটছে। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞানের শিক্ষক (অব) ও রাজশাহী মহানগরী মসজিদ মিশনের সভাপতি অধ্যাপক মো. নূরুল ইসলাম স্যার ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ইন্তেকাল করেন। মসজিদ মিশনের দায়িত্ব পালন করার কারণে স্যারের সাথে আমার পরিচয় ছিল।  এতো পোস্ট দিচ্ছি, জানাজা ও দাফনে শরীক হচ্ছি এবং প্রতিদিন মৃত্যুজনিত পোস্টে ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন পড়ছি, কিন্তু আমাদের মধ্যে কোনো উপলব্ধি নেই। প্রতিটা মৃত্যু ও ইন্না লিল্লাহ পড়ার মধ্য দিয়ে একটিই বার্তা আমরা পাই যে আমরা কেউ এখানে স্থায়ী নই। আমরা শীঘ্রই আল্লাহর কাছে ফিরে যাবো।  আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের জন্য অত্যন্ত দয়ার্দ্র, তিনি তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করতে চান। আমরা প্রতিনিয়তই আল্লাহর নাফরমানি করছি। তওবা করে পরিশুদ্ধ হলে আশা করা যায় আল্লাহ তায়ালা ক্ষমা করবেন। আর যদি সে সুযোগ না পাই তাহলে...

মসজিদ উত তাকওয়ার অনন্য বৈশিষ্ট্য

ধানমন্ডি মেয়ে-জামাইয়ের বাসায় আসলে তাকওয়া মসজিদে নামাজ আদায় করা হয়। লেকের পাড়ে খোলামেলা এবং চতুর্দিকে রাস্তা এক মনোরম পরিবেশে মসজিদটি প্রতিষ্ঠিত। মসজিদটি বেশ দৃষ্টিনন্দন। তার চেয়েও বেশি প্রশংসার দাবিদার সামাজিক কর্মকাণ্ডের জন্য।  মসজিদ উত তাকওয়া শুধু সেজদাগাহেরই নাম নয়। নামাজের পাশাপাশি শিক্ষা ও প্রশিক্ষণ এবং নানাবিধ সমাজকল্যাণমূলক কাজকর্ম পরিচালিত হয় এই মসজিদ থেকে। এই মসজিদের নিচতলা পুরোটাই মহিলাদের জন্য সংরক্ষিত এবং জুমায় মুসল্লিতে পূর্ণ হয়ে যায়।  এখানে একটি উন্নতমানের মাদ্রাসা, এলোপ্যাথিক ও হোমিওপ্যাথিক চিকিৎসালয়, মুর্দার গোসল ও কাফনের ব্যবস্থা, সাপ্তাহিক তাফসিরুল কুরআন, বিভিন্ন দিবসে অনুষ্ঠানাদি এবং শীত, বন্যা ও নানা প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে পর্যাপ্ত ত্রাণ বিতরণ করা হয়। মাগরিবের পূর্বে সংক্ষিপ্ত হাদিস পাঠ এবং ফজরের পরে পঠিত আয়াতসমূহের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করা হয়। এককথায় এক জীবন্ত মসজিদ। সমাজকল্যাণমূলক কার্যক্রমের কারণে এখানকার মুসল্লিরা উদার হস্তে দান করেন। গত ২রা  সেপ্টেম্বর জুমায় দানবক্সে আদায় হয়েছে এক লক্ষ সাতানব্বই হাজার টাকা।  ★ কুরআন থেকে পাঠ আজকে ফজরে দ্বিতীয় ইমাম হা...

জুমার খুতবা (০২.০৯.২০২২)

মতানৈক্য ও বিচ্ছিন্নতা এক নয় বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম মাল্টিপ্ল্যান রেডক্রিসেন্ট সিটি (কুশিয়ারা, পদ্মা ও সুরমা ভবন), মিরপুর জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আহমাদুল্লাহ সাইয়াফ শুরুতে আল্লাহপাকের হামদ ও রসুল সা.-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশ করেন। আজ বিশ্বব্যাপী মুসলিম উম্মাহ নানাভাবে লাঞ্ছনা-অপমান, নিপীড়ন-নির্যাতনের শিকার। কোথাও তারা সম্মান ও মর্যাদায় অধিষ্ঠিত নয়। আমাদের দেশেও ইসলামপন্থী জনগোষ্ঠী ও উলামায়ে কেরাম নানাভাবে নির্যাতিত হচ্ছেন। খতিব মহোদয় এর মূল কারণ হিসেবে উম্মাহর অনৈক্যকে দায়ী করেন। আল্লাহ তায়ালা মুসলমানদেরকে ঐক্যবদ্ধ থাকার তাগিদ দিয়েছেন, ‘তোমরা আল্লাহর রজ্জু শক্তভাবে ধারণ করো এবং পরস্পর বিচ্ছিন্ন হয়ো না’- সুরা আলে ইমরান ১০৩। আল্লাহপাক মুসলিম উম্মাহকে ঐক্যবদ্ধ দেখতে চান। যারা অনৈক্য সৃষ্টি করে তাদের ব্যাপারে কঠোর হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন (সুরা আলে ইমরান ১০৫-১০৮)। আমাদের সমাজে অনেকের জিজ্ঞাসা, আমাদের আল্লাহ এক, রসুল এক, কুরআন এক, কিবলা এক- এতকিছু এক হওয়ার পরও মতপার্থক্য কেন? আবার অনেকে বলেন, আমরা কুরআন ও হাদিস সরাসরি মানলে আর মতপার্থক্য থাকে না। আসলে মতপার্থক্য ও...

মজলুম জুলুমের প্রতিদান পুরোপুরিই পাবে

আজকে ফজরের নামাজ শেষে সুরা বুরুজ পড়ছিলাম। গর্তওয়ালাদের কাহিনী। না না তাদের কোনো অপরাধ ছিল না। কুরআনের ভাষায় মহাপরাক্রমশালী আল্লাহর প্রতি ঈমান আনাই ছিল তাদের অপরাধ (বুরুজ - ৮)। এই অপরাধে আগুনেভরা গর্তে ঈমানদারদের ছুঁড়ে মেরে কাফেররা উল্লাস করেছে।  এ দৃশ্য এখনো বর্তমান। হক ও বাতিলের দ্বন্দ্ব চিরন্তন। বরেণ্য আলেমরা কারাগারে। তাঁদের অপরাধ? তাঁরা তো হলমার্ক, ডেসটিনি, সোনালী ব্যাংক, শেয়ার মার্কেট,  নারী পাচার, অর্থ পাচার কোনো অপরাধের সাথেই জড়িত নয়। আল্লাহর প্রতি ঈমান আনয়ন কি তাঁদের অপরাধ? তাঁরা মানুষকে আল্লাহর দিকে ডাকেন, সুদ, ঘুষ, জেনা-ব্যাভিচারের বিরুদ্ধে বলেন, সত্য ও ন্যায়ের পথে আহবান জানান। উলামায়ে কেরাম নবি-রসুল নন। কিন্তু নবি-রসুলদের উত্তরাধিকার। নবি-রসুলদের যে দায়িত্ব উত্তরাধিকার হিসেবে আলেমদের দায়িত্বও মূলত তাই। নবি-রসুলদের বিরোধিতা করেছে নমরুদ-ফেরাউন-আবু জেহেল ও আবু লাহাবরা। আজকের যুগে নমরুদ-ফেরাউনদের উত্তরাধিকার বনাম নবি-রসুলদের উত্তরাধিকার আলেমসমাজের বিরোধিতার মধ্যে কোনো পার্থক্য দেখি না। নবি-রসুলরা ছিলেন সর্বোত্তম মানুষ এবং নিরীহ প্রকৃতির। কিন্তু কাফেররা তাঁদের সহ্য করেনি...