Skip to main content

হে আল্লাহ! তুমি আমাদের ক্ষমা করো ও মুসলমান অবস্থায় মৃত্যু দিও।

ফেসবুকে ঢুকলে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ে মৃত্যু সংবাদ। আমি সাধারণত এড়িয়ে যাই না। অন্তত 'ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলায়হি রজেউন' লিখি। কবর জিয়ারত হয় না। ইন্না লিল্লাহি পড়ার মধ্য দিয়ে সামান্য হলেও নিজের মৃত্যুর কথাটি স্মরণ হয়। সমাজে জুলুম-নির্যাতন, অন্যায়-অবিচার যেহারে বেড়েছে তাতে মনে হয় না আমরা কোনো বিশ্বাসী জাতি। জীবন-সম্পদ, মান-মর্যাদা সবই ভূলুণ্ঠিত। কারো কথা ও আচরণে কোনো মানুষ যদি কষ্ট অনুভব করে তাহলে এমন ব্যক্তিকে মোমিন, মুসলমান মনে করার কোনো কারণ নেই। এটি আমার কথা নয়, আমার আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সা)-এর কথা। আল্লাহ তায়ালার বাণী, 'নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনাসামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে'- সুরা হুমাজা। মানুষকে যারা অপমান করে, হেয় করে, ক্ষতি করে, জুলুম করে তাদের বাঁচার কোনো সুযোগ নেই। ওদের জন্যই রয়েছে হুতামা, আল্লাহর আগুন। রসুলল্লাহ (সা) বলেছেন, 'ঐ ব্যক্তি মোমিন নয়, মোমিন নয়, মোমিন নয় যার হাত ও মুখের অনিষ্ট থেকে অন্যরা নিরাপদ নয়।' যে সমাজে ৯০% মানুষ মুসলমান দাবী করে সে সমাজে গুম, খুন, জুলুম-নির্যাতন কল্পনাতীত। আল্লাহ ও তাঁর রসুল (সা)-এর বাণী মিথ্যা নয়, মিথ্যা আমাদের মুসলিম পরিচয়। আল্লাহপাক ধারণা-অনমান করা, দোষ-ত্রুটি তালাশ করা, কারো বিরুদ্ধে গোয়েন্দাগিরি করতে নিষেধ করেছেন। সুরা হুজুরাতে আচরণ সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে। রসুলল্লাহ (সা) দু'জন মানুষ কথা বলতে থাকলে আর একজনের শুনতে যাওয়াকে স্পষ্টভাবে নিষেধ করেছেন। কিন্তু আজকে হচ্ছেটা কী? মানুষের প্রাইভেসি বা গোপনীয়তা বলে কিছু নেই। অপরের চিঠি পড়া, টেলিফোন/মোবাইলে আড়িপাতা সবই কবিরা গুনাহ। মানুষের ব্যক্তিগত/গোপনীয় বিষয় কেউ জানার চেষ্টা করলে আল্লাহর রসুল (সা) তার চোখ ফুটো করে দিতে বলেছেন। ইসলাম উদার ও সহনশীল দীন। এখানে বারবার ক্ষমার কথা উচ্চারিত হয়েছে। আল্লাহ যেমন ক্ষমাশীল ও উদার তেমনি তিনি তাঁর বান্দাদের মাঝেও এই গুণ দেখতে চান। মজলুম হলে বদলা গ্রহণের সুযোগ থাকলেও যে ব্যক্তি ক্ষমা করবে তাকে পুরস্কৃত করার দায়িত্ব আল্লাহ নিজে গ্রহণ করেছেন। রসুলল্লাহ (সা) বলেছেন, যে তার ভাইয়ের অপরাধ ক্ষমা করবে আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার অপরাধ ক্ষমা করবেন। তিনি আরো বলেছেন, যে তার ভাইয়ের দোষ-ত্রুটি গোপন রাখবে আল্লাহ কেয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন। আমাদের সমাজ ক্ষমা, সহনশীলতা, উদারতার গুণ ভুলে গেছে। হিংসা-বিদ্বেষ ও প্রতিশোধের নেশায় উন্মাদ হয়ে পড়েছে। হিংসা ও বিদ্বেষ শুধু কবিরা গুনাহ নয়, হিংসা ব্যক্তির সকল নেক আমল ধ্বংস করে দেয় যেমন আগুন শুকনা কাঠ জ্বালিয়ে নিশ্চিহ্ন করে দেয়। রমজান মাস ও বিশেষ বিশেষ রাতে আল্লাহ তাঁর অগণিত বান্দাকে ক্ষমা করেন। কিন্তু হিংসা পোষণকারী সেই ক্ষমা থেকে বঞ্চিত হয়। আমাদের দেশে ক্ষমা নয় হিংসার চাষ হয়। হিংসা আরব জাহিলিয়াতকেও হার মানিয়েছে। ফলে শান্তি ও নিরাপত্তা থেকে আমরা বঞ্চিত। সামনে ক্ষমার মাস রমজান। রমজানে আল্লাহ তাঁর অগণিত বান্দাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেন। আমাদের জেলখানায় ধারণক্ষমতার বাইরে আসামি। অথচ ইউরোপ- আমেরিকায় কয়েদির অভাবে কারাগার বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। হে আল্লাহ! তুমি আমাদের ক্ষমা করো এবং হিংসা ও বিদ্বেষমুক্ত বাংলাদেশ দান করো। ০৯.০৪.২০২১

Comments