Skip to main content

লকডাউন : দোকানপাট খোলা কিন্তু গণপরিবহন বন্ধ

প্রতিবারই লকডাউনে দেখা যায় ঢাকা থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে মানুষের স্রোত আবার লকডাউন শিথিল করে দোকানপাট খোলার ঘোষণার প্রেক্ষিতে ঢাকামুখি মানুষের স্রোত। গণপরিবহন বন্ধ থাকলেও মানুষের আসা-যাওয়া বন্ধ থাকে না। এতে সাধারণ মানুষকে অবর্ণনীয় কষ্ট ভোগের সাথে অনেক ব্যয়ও করতে হয়। আমার উপলব্ধি- গণপরিবহনে স্বাস্থ্যবিধি পুরোপুরি না হলেও অনেকাংশেই মানা হয়। মাস্ক ছাড়া বাসে উঠা যায় না এবং দুই সিটে একজন করে চলাচল করে। কিন্তু বাস বন্ধ থাকলে ট্রাকে বা নৌকায় ঠিকই ঠাসাঠাসি করে আসে। আবার ঈদ সামনে করে ঘরমুখো মানুষের ভীড় হবে। ২৯ তারিখ থেকে গণপরিবহনে লকডাউন উঠায়ে নিলে মানুষ স্বচ্ছন্দে যাতায়াত করতে পারতো। ঈদের আগে সময় যত কম হবে ভীড় তত বাড়বে। আগামী বৃহস্পতিবার থেকে গণপরিবহন চালু করার জন্য আমি সরকারের কাছে আবেদন করছি। উন্নত দেশসমূহেও লকডাউনে মানুষের ক্ষোভ সৃষ্টি হয় এবং কার্যকর করতে সরকারকে হিমসিম খেতে হয়। আমাদের মতো উন্নয়নশীল দেশে লকডাউনে মানুষের আয়-রোজগারের ওপর টান পড়ে এবং তারা ক্ষুব্ধ হয়ে উঠে। আসলে লকডাউন না, দরকার কঠোরভাবে স্বাস্থ্যবিধি পালন। মাস্ক পরা, ঘনঘন হাত ধোয়া ও দূরত্ব বজায় রেখে চলায় অভ্যস্ত করতে পারলে আল্লাহপাকের মেহেরবানিতে করোনা থেকে আমরা রক্ষা পেতে পারি। করোনা সহজে যাবে না। অন্যান্য রোগের মতো করোনাকেও সঙ্গি ধরে প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বন করে অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে হবে। আমাদের জীবনাচারে পরিবর্তন আনতে হবে। শারীরিক শ্রম/ব্যয়ামে যারা অবহেলা করে ও এসিতে বসবাস করে তারাই করোনায় আক্রান্ত, অসুস্থ ও মৃত্যুবরণ করছে। সাধারণ মানুষ যারা জীবিকার তাগিদে শারীরিক শ্রম দেয় তারা করোনায় আক্রান্ত হলেও অসুস্থ হয় না। আমি নিজে বাসের ড্রাইভার-হেল্পার ও রিক্সাচালকের সাথে কথা বলে করোনায় তাদের মধ্যে কেউ মারা গেছে শুনিনি। আবার বাসাবাড়িতে যেসব মহিলা কাজ করে ও বস্তিতে বসবাস করে তাদের মধ্যেও মৃত্যুর কথা শোনা যায় না। গ্রামে মানুষের মাঝে করোনাভীতি নেই। আমাদের গ্রামের আশেপাশে কয়েক গ্রামের মধ্যে করোনায় তিনজনের মৃত্যুর কথা আমার জানা এবং তিনজনই ঢাকায় আক্রান্ত হয়েছেন ও মারা গেছেন। আমি প্রতিদিনই করোনার আপডেট দিয়ে থাকি। তাতে ষাটোর্ধ বয়সে মৃত্যুর সংখ্যা বেশি এবং নারী অপেক্ষা পুরুষের মৃত্যুহার বেশি। গতকাল পর্যন্ত করোনায় মারা গেছেন ১১,১৫০ জন (পুরুষ ৮,১৮১ (৭৩.৩%) এবং নারী ২,৯৬৯ জন (২৬.৭%)। শিশু মৃত্যু বিরল। ঈদের পরে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান অন্তত গ্রামে প্রাইমারি ও মাধ্যমিক বিদ্যালয় খুলে দেয়া দরকার। এসেম্বলির সাথে দৈনিক আধা ঘন্টা রোদ্রে পিটি করলেই ইনশা-আল্লাহ করোনা থেকে সুরক্ষা পাবে। মহামারি বা যে কোনো ধরনের প্রাকৃতিক বিপর্যয় আল্লাহ তায়ালার পক্ষ থেকে তাঁর বান্দাদের জন্য সতর্কতা। আল্লাহর ভাষায়, এটি তোমাদের হাতের কামাই। সতর্কতা অবলম্বনের সাথে সাথে নিজেকে আল্লাহর কাছে ‍সঁপে দেয়ার মধ্যেই রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ। আল্লাহর অনেক বান্দা করোনার কারণে আল্লাহমুখি হয়ে পড়েছেন, করোনা তাদের জন্য রহমত। পবিত্র রমজান ও করোনার মতো মহামারি যাদেরকে অন্যায়-অত্যাচার ও আল্লাহর নাফরমানি থেকে ফেরাতে পারলো না তারা হতভাগা, কপালপোড়া, ওদের জন্যই রয়েছে জাহান্নাম। আল্লাহপাক আমাদেরকে করোনা থেকে হেফাজত করুন।

Comments