Skip to main content

মুবাহালা কী?

সুরা আলে ইমরানের ৬১ নং আয়াতে আল্লাহপাক তার রসুল (সা)-কে মুবাহালা করার নির্দেশ প্রদান করেছেন। কোনো বিষয়ে সত্য-মিথ্যা নিয়ে দুই পক্ষের মধ্যে বিবাদ হলে এবং যুক্তিতর্কে মিমাংসায় উপনীত না হতে পারলে তারা সকলে মিলে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে, যে পক্ষ মিথ্যাবাদী সে যেন ধ্বংসপ্রাপ্ত হয়। আল্লাহর নামে কসম করে বলবে, আমি বা আমরা যদি মিথ্যা বলে থাকি তাহলে আমি বা আমরা যেন আল্লাহর গজবে নিপতিত হই। আল্লাহর অভিশাপ আমাদের ওপর পড়ে এবং আমরা যেন ধ্বংস হয়ে যাই। কুরআনে উল্লেখ করা হয়েছে, উভয় পক্ষ নিজেরা ও সন্তান-সন্ততিসহ উপস্থিত হয়ে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করবে। ঘটনার পটভূমি হলো, নাজরানের খৃষ্টানদের কাছে রসুলুল্লাহ (সা) এই মর্মে ফরমান পাঠান, (১) তোমরা ইসলাম গ্রহণ করো, (২) অথবা জিযিয়া দিয়ে বশ্যতা স্বীকার করো, (৩) অথবা যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত হও। খৃষ্টানরা তাদের মধ্য থেকে তিনজনকে প্রতিনিধি হিসেবে পাঠায়। তাদের ধর্মীয় বিষয়াবলী নিয়ে রসুলুল্লাহ (সা)-এর সাথে বাদানুবাদ হয়। সমাধানের লক্ষ্যে রসুলুল্লাহ (সা) মুবাহালা করার জন্য তাদেরকে আহবান জানান এবং নিজে ফাতিমা (রা), আলী (রা) ও হাসান-হোসাইন (রা)-কে সঙ্গে নিয়ে মুবাহালা করার জন্য প্রস্তুত হয়ে পড়েন। রসুলুল্লাহ (সা)-এর আত্মবিশ্বাস ও দৃঢ়তা দেখে প্রতিনিধি দলেন নেতা শোরাহবিল ভীত হয়ে পড়েন। তিনি তাঁর সঙ্গীদ্বয়কে বলেন, ইনি আল্লাহর নবি। নবির সাথে মুবাহালা করলে আমাদের ধ্বংস অনিবার্য। সঙ্গীদ্বয় বলেন, তাহলে উপায় কী? তখন তিনি বলেন, নবির শর্তানুযায়ী সন্ধি করাই উত্তম। সন্ধিতে উভয় পক্ষ সম্মত হলে রসুলুল্লাহ (সা) তাদের ওপর জিযিয়া কর ধার্য করে মিমাংসায় উপনীত হন। সম্প্রতি সোনারগাঁও এক রিসোর্টে মাওলানা মামুনুল হক স্ত্রীসহ গেলে দেশের বিভিন্ন মিডিয়া ও ব্যক্তিবর্গ তাঁর ওপর নারীঘটিত অপবাদ দেয়। তার প্রেক্ষিতে মাওলানা মামুনুল হক আল্লাহর নামে কসম করে বলেন, ‘আমার সাথে যিনি ছিলেন তিনি আমার বৈধ স্ত্রী। আমি যদি মিথ্যা বলি তাহলে আমার ওপর আল্লাহ তায়ালার অভিশাপ এবং আমি যেন ধ্বংস হয়ে যাই। তিনি চ্যালেঞ্জ করে বলেন, যারা আমার ওপর অপবাদ দিচ্ছে তারাও আমার মতো আল্লাহর নামে কসম করে বলুক।’ এখন পর্যন্ত চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করতে কাউকে এগিয়ে আসতে দেখা যায়নি। এটি একটি আল্লাহর বিধান। সত্যকে মিথা প্রমাণ ও মিথ্যাকে সত্য প্রমাণ করার নানা কূটকৌশল থাকতে পারে। এটি নিশ্চিত উভয় পক্ষ সত্যবাদী নন। কিন্তু উভয় পক্ষ প্রত্যেকে প্রকৃত সত্য জানে। আল্লাহর নামে কসম খেয়ে বিবেকের বিরুদ্ধে বা প্রকৃত সত্যের বিরুদ্ধে দাঁড়ানো বেশ কঠিন। উভয় পক্ষের মধ্যে যেই বা যারা মিথ্যাচার করছেন আল্লাহ তায়ালা তাদেরকে তাওবা করার তৌফিক দান করুন। অন্যথায় মিথ্যাবাদীকে ধ্বংস করার মধ্য দিয়ে প্রকৃত সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করুন। আমিন। ০৭.০৪.২০২১

Comments