করোনা সংক্রমণ বেড়ে যাওয়ার প্রেক্ষিতে সচেতনা সৃষ্টি ও করণীয় নির্ধারণের লক্ষ্যে আমেরিকাপ্রবাসী আমার ছেলে প্রকৌশলী মো. মাহমুদুর রহমান রনি গতকাল পরিবারের সদস্যদের সমন্বয়ে রাত দশটায় একটি জুম মিটিং-এর আয়োজন করে। সেখানে ১১ জন সদস্য শরীক হন। পিএইচডি গবেষণারত রনি তার নিজের গবেষণার পাশাপাশি করোনা নিয়ে বেশ কিছু কাজ করেছে। তার গবেষণা আমেরিকায় একটি সায়িন্টিফিক জার্নালে প্রকাশিতও হয়েছে। কিন্তু চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে উপনীত হতে পারেনি এবং তার গবেষণা অব্যাহত রয়েছে। ভারত ও বাংলাদেশে হঠাৎ করে ব্যাপক করোনা সংক্রমণের প্রেক্ষিতে সে খুব উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এবং পরিবারের সদস্যদের সচেতন করার লক্ষ্যেই তার এই আয়োজন।
বাংলাদেশে করোনার বিস্তৃতির কারণ অনুসন্ধানের লক্ষ্যে সে কিছু কাজ করতে চায়। গবেষণার লক্ষ্যে তার তথ্য প্রয়োজন। তথ্য সংগ্রহে ঢাকায় অবস্থানরত তার দুই ভাই লতিফুর রহমান, আতিকুর রহমান, খালাতো ভাই আহমেদ জুবায়ের, ফুফাতো ভাই তামিমসহ আরো অনেকের সহযোগিতা গ্রহণ করছে। তার টিমে সমন্বয়কের ভূমিকা পালন করছে লতিফুর রহমান (মোবাইল নং ০১৬৭৮-০৩৬৯৮৪)। হাসপাতাল থেকে সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরা রোগীদের প্রশ্নমালার মাধ্যমে তথ্য, হাসপাতালে রুমে ও রুমের বাইরে তাপমাত্রা এবং কোন্ শ্রেণি ও পেশার মানুষ ইত্যাদি বিষয়াবলী জানতে চায়। এটি একটি স্বেচ্ছাশ্রমের কাজ এবং স্বতস্ফুর্তভাবে তথ্য প্রদান করে সহযোগিতা দানের জন্য সংশ্লিষ্টদের প্রতি বিনীত অনুরোধ করা হয়।
বাংলাদেশে শীতকাল অপেক্ষা গ্রীষ্মকালে করোনার প্রকোপ বেড়েছে। কারণ হিসেবে রনি বলতে চায়, এসির ব্যবহারই এর মূল কারণ। ইতোমধ্যে করোনা ব্যাপকভাবে ছড়িয়ে পড়েছে (হয়তে ৮০% বা তার চেয়েও বেশি)। বিজ্ঞানী বিজন শীল অনেক পূর্বে বলেছিলেন ৪০% মানুষ করোনা ভাইরাস সংক্রমিত। সাধারণ মানুষ করোনা ভাইরাস বহন করছেন ও ছড়িয়ে দিলেও তারা নিজেরা অসুস্থ হচ্ছেন না। এর কারণ তাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা। করোনায় সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় রয়েছেন বয়স্ক ও অসুস্থ মানুষগুলো। ফলে এই লোকগুলো ঘরে অবস্থান করলেও নানাভাবে করোনা সংক্রমিতদের সংস্পর্শে আক্রান্ত হয়ে পড়ছেন। করোনা ভাইরাস সর্দি-জ্বরের মতো একটি ভাইরাস যা অত্যন্ত ধ্বংসাত্মক। সর্দি-জ্বরের যেমন চিকিৎসা নেই (ঔষধ খেলে সাতদিন না খেলে এক সপ্তাহ), করোনারও একই অবস্থা। উপসর্গ ধরে ডাক্তার সাহেবগণ কিছু চিকিৎসা প্রদান করছেন। তার মতে, প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণই উত্তম। একান্ত প্রয়োজন না হলে হাসপাতালে না যাওয়ার জন্য তার পরামর্শ।
রনির আলোচনার মূল কথা এসি পরিহার করতে হবে। একান্ত স্বল্প সময়ের জন্য হলেও এসি ব্যবহারের সময় মাস্ক পরিহার করে থাকতে হবে। ঘরে-বাইরে মাস্ক ব্যবহার, গরম খাবার, গরম পানির বাষ্পগ্রহণ, গরম পানিতে গোসল, দৈনিক কমপক্ষে আধাঘন্টা শারীরিক শ্রম/ব্যায়াম, শরীরে রৌদ্র লাগানো, দূরত্ব বজায় রেখে চলা, ঘন ঘন হাত ধোয়া নিয়মগুলো মেনে চললেই করোনা থেকে নিরাপদ থাকা সম্ভব। তার ধারণা করোনায় মৃত্যুর কারণ এসি এবং এজন্য সমাজের উচ্চবিত্ত ও মধ্যবিত্ত লোকদের মাঝে মৃত্যুহার বেশি। গতকালে সে তথ্য-উপাত্ত পরিবেশন করে দেখালো ইউরোপ-আমেরিকার মৃত্যুহার অপেক্ষা ভারত-বাংলাদেশে মৃত্যুহার অনেক কম। এর পেছনে মূল কারণ আবহাওয়া। বাংলাদেশের আবহাওয়ায় করোনায় অসুস্থ হওয়া বা মারা যাওয়া স্বাভাবিক নয়। এসি পরিহার করে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে পারলেই করোনা দূর করা সম্ভব। সর্বোপরি বিশ্বাসী জাতি হিসেবে আমাদের মানসিক শক্তিও অনেক প্রবল। আল্লাহর প্রতি অগাধ বিশ্বাস মানুষের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়িয়ে দেয়।
রনির এই চিন্তাভাবনা প্রতিষ্ঠিত করার জন্য প্রয়োজন আরো তথ্য সংগ্রহ ও গবেষণা। আমরা আমাদের সাধ্যমত সহযোগিতা করি এবং আল্লাহর কাছে দোয়া করি, তিনি যেন দয়া করে তাঁর বান্দাদের করোনা থেকে হেফাজত করেন। যারা আল্লাহর বান্দাদের কল্যাণে কাজ করে তারাই সেরা, সর্বোত্তম- আমাদের ধর্ম তাই বলে। আমরা হই মানবপ্রেমিক ও যথার্থ ধার্মিক। আল্লাহ আমাদের সহায় হোন। ১৯.০৪.২০২১
গতকালের জুম মিটিং আয়োজকের বক্তব্য।
ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়ে ব্যক্তিগত ব্লগ
Comments
Post a Comment