Skip to main content

করোনা অপ্রতিরোধ্য, সতর্ক হই

গত দুইদিন আক্রান্তের সংখ্যা সাত হাজারের ওপর। এই সংখ্যা আরো অনেক বাড়তে পারে। আমরা অনেকেই করোনার উপসর্গ নিয়ে চলি এবং একান্ত বাধ্য না হলে টেস্ট করি না। করোনার দ্রুত বৃদ্ধির পেছনে সময়মত টেস্ট না করা এবং গোপন করার প্রবণতাও অনেকাংশে দায়ী। আর পাঁচটা রোগের মতো করোনাও একটি রোগ এবং ভাইরাসজনিত হওয়ার কারণে দ্রুত বিস্তার ঘটে। বছরাধিক হওয়াতে মানুষ এর প্রতিরোধ অনেকখানি জেনে গেছে। তবে করোনা বহুরূপী। এখনো মানুষ পুরোপুরি আয়ত্ব করতে পারেনি। করোনার প্রকোপ ঢাকাকেন্দ্রিক এবং আরো কিছু জেলায় এর প্রকোপ লক্ষণীয়। করোনার বিস্তার রোধে লকডাউন একটি কার্যকর ব্যবস্থা হিসেবে বিশ্বব্যাপী গৃহিত। উদ্দেশ্য মানুষকে ঘরে আটকে রাখা। আসলে রোগীর সংস্পর্শে আসাতে করোনা ছড়ায়। কিন্তু আমাদের দেশে লকডাউনে মানুষ এক সপ্তাহের ছুটি পেয়ে ঈদের আমেজে বাড়ি ছুটেছে। গ্রামে করোনা ছিল না। এখন সর্বত্র করোনা পৌঁছে গেল। করোনা প্রতিরোধে সবচেয়ে কার্যকর পন্থা হলো স্বাস্থ্যবিধি পালন। অর্থাৎ মাস্ক ব্যবহার ও ঘন ঘন হাত ধোয়া। করোনা রোগীকে ঘরে রেখে চিকিৎসা দানই উত্তম। একান্ত বাধ্য না হলে হাসপাতালে না নেয়ায় ভালো। ঘরে প্রিয়জনরা যে দরদ ও আন্তরিকতা নিয়ে সেবা দান করবে সেটি হাসপাতালে সম্ভব নয়। স্বাস্থ্যবিধি পালন করে সেবাদানে কোনো ভয় নেই। করোনা রোগীর জন্য প্রয়োজন এটাস্ড বাথরুমসহ একটি কক্ষ। তার কাপড়-চোপড়, থালা-বাসন সবকিছু আলাদা হবে। বাসার অন্যান্য সদস্যরা তার থেকে দূরে অবস্থান করবে এবং অবশ্যই মাস্ক পরে সেবা প্রদান করবে এবং সাথে সাথে হাত সাবান দিয়ে ধুয়ে নেবে। মনে রাখতে হবে করোনা যেমন সংক্রামক, সেখানে যেতে এবং সেখান থেকে বের হতে আল্লাহর রসুল (সা) নিষেধ করেছেন, সাথে সাথে তিনি এটাও বলেছেন, ছোঁয়াছে বলে কিছু নেই। হাদিস ঘটনাকেন্দ্রিক। তিনি যদি সেখানে যেতে ও সেখান থেকে বের হতে নিষেধ করে থেমে যেতেন তাহলে করোনা রোগী সেবা থেকে বঞ্চিত হত। তাই প্রয়োজনীয় সতর্কতা অবলম্বনকারী সেবক/সেবিকার জন্য কোনো ভয়ের কারণ নেই। সর্বোপরি আল্লাহর হুকুম ছাড়া কিছুই ঘটে না। তাহলে প্রশ্ন উঠতে পারে, এতো সতর্কতা কেন? সতর্কতা অবলম্বন আল্লাহরই হুকুম। আমাদের দেশে করোনায় মৃত্যুহার খুবই সামান্য। গতকাল করোনায় শনাক্ত ৭০৭৫ ও মৃত্যু ৫২ এবং মোট শনাক্ত ৬,৪৪,৪৩৯ ও মৃত্যু ৯,৩১৮ জন। পূর্বে মৃত্যুহার ১.৫ হলেও বর্তমানে শতকরা ১-এর নিচে। গতকাল রাতে ডা. জাহাঙ্গীর কবির ও মাওলানা আজহারীর লাইভ প্রোগ্রামে স্বাস্থ্যবিষয়ক দেড় ঘন্টার প্রোগ্রামে ডা. জাহাঙ্গীর কবির জানালেন, যারা কায়িক পরিশ্রম/ব্যায়াম করেন তাদের করোনায় আক্রান্ত ও মৃত্যু নেই বললেই চলে। তিনি কৃষক, শ্রমিক মেহনতি মানুষের উদাহরণ দিলেন। মাওলানা আজহারী রসুলুল্লাহ (সা)-এর জীবনাচার উল্লেখ করলেন, শারীরিক পরিশ্রমের পাশাপাশি তিনি সন্ধ্যা রাতে (এশার পর) ঘুমিয়ে পড়তেন, দীর্ঘ রাত তাহাজ্জুদ নামাজ আদায় করতেন ও সকালে ঘুম থেকে উঠে কর্মব্যস্ত হয়ে পড়তেন। তিনি ডা. জাহাঙ্গীর কবিরের সাথে একমত হয়ে বলেন, রমজানের ফরজ ছাড়াও তিনি প্রচুর রোজা রাখতেন। সপ্তাহে সোম ও বৃহস্পতিবার, প্রতি মাসে (আইয়ামে বীজ) তিনটি রোজা, শাওয়ালে ৬টি রোজাসহ তিনি অনেক নফল রোজা রাখতেন। করোনা থেকে বাঁচতে হলে আমাদের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়াতে হবে। সেজন্য প্রয়োজন শারীরিক পরিশ্রম/ব্যায়াম, পর্যাপ্ত ঘুম, পুষ্টিসমৃদ্ধ খাদ্যগ্রহণ এবং আল্লাহ তায়ালার ওপরে নির্ভরশীলতা। আল্লাহপাক আমাদেরকে করোনাসহ সকল বিপদাপদ থেকে হেফাজত করুন। ০৬.০৪.২০২১

Comments