মুসলমান সাম্প্রদায়িক নন আবার ইসলামের দুশমন মুসলমানের বন্ধু নন

জুমার খুতবা ২৬.০২.২০২১ বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম মাল্টিপ্ল্যান রেডক্রিসেন্ট সিটি (কুশিয়ারা, পদ্মা ও সুরমা ভবন), মিরপুর জামে মসজিদের সম্মানিত ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা আহমাদুল্লাহ সাঈফ আল্লাহর হামদ ও রসুলুল্লাহ (সা)-এর ওপর দরুদ পাঠের পর আজকের খুতবায় ইমানের ওপর ধারাবাহিক আলোচনার অংশ হিসেবে সুরা আলে ইমরানের ১১৮-১২০ আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, আপনজন অর্থাৎ নিজ জামায়াতের (মুসলমানদের) বাইরে অমুসলিমদের অন্তরঙ্গ বন্ধু হিসেবে গ্রহণ করতে আল্লাহপাক স্পষ্ট নিষেধ করেছেন। এরা সুযোগ পেলেই মুসলমানদের ক্ষতি করবে। মুসলমান তাদের ভালোবাসলেও তারা কখনো মুসলমানদের প্রতি ভালোবাসা পোষণ করে না। এখানে কথাগুলো মদিনার ইহুদিদের প্রসঙ্গে বলা হলেও সকল কুফুরি শক্তি ইসলামের শত্রুতায় একাট্টা। ফলে তাদের থেকে সতর্ক থাকতে আল্লাহ নির্দেশ করেছেন। মুসলমান সকল নবি-রসুলকে (ইবরাহিম (আ), মুসা (আ), ইসা (আ)সহ সকলকে) বিশ্বাস করে এবং সবার প্রতি ভক্তি-শ্রদ্ধা-ভালোবাসা পোষণ করে। কিন্তু আহলে কিতাব (ইহুদি, খ্রীষ্টান) ও মুশরিকরা মুহাম্মদ (সা)-কে কখনই মানে না। তারা প্রকাশ্যে যতটুকু ইসলামের বিরোধিতা করে তার চেয়ে অনেক বেশি অন্তরে হিংসা ও বিদ্বেষ পোষণ করে। মুসলমানদের কাছে লৌকিকভাবে প্রশংসা বা ভালো কথা বললেও সেখান থেকে আলাদা হলে ক্রোধে নিজেদের আঙ্গুল কামড়াতে থাকে। মুসলমানদের বিপদ-মুসিবতে ওরা উৎফুল্ল হয় এবং ভালো কিছু দেখলে তাদের খারাপ লাগে। আল্লাহপাক মুসলমানদের আশ্বস্ত করেছেন, তারা যদি সবর ও আল্লাহকে ভয় করে চলতে পারে তাহলে তাদের ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত কখনই কোনো ক্ষতি করতে পারবে না। তাদের কর্মকাণ্ড আল্লাহর অগোচরে নেই, তিনি সবকিছু পরিবেষ্টন করে আছেন। ইসলামের দুশমনরা চায়, মুসলমানদের শিরকে লিপ্ত করে ইমানহারা করতে। চেষ্টা করে সামাজিকতা, বন্ধুত্ব ও নানা প্রলোভনে তাদের পুজা-পার্বনে শরীক করাতে যা পুরোটাই শিরক। তাদের পুজাকে স্বাগত জানানো বা নানাভাবে অংশগ্রহণ সবই শিরকের সাথে সম্পর্কিত। রাষ্ট্রীয়ভাবে নিরাপত্তা দান ও সহযোগিতা সেটি ভিন্ন। কারো ধর্মপালনে বাধাদান ইসলাম স্বীকার করে না। ইসলাম সাম্প্রদায়িকতা ঘৃণা করে। ধর্ম, বর্ণ, ভাষা, দেশ কোনোভাবে মানুষে মানুষে বিভেদ সৃষ্টি করে ন্যায় ও ইনসাফ বিরোধী কিছু করা যাবে না। এ প্রসঙ্গে তিনি সুরা মায়েদার ২ ও ৮ নং আয়াত উদ্ধৃত করেন। সকল মানুষের প্রতি ইনসাফ করা ইসলামের দাবী। খতিব মহোদয় বলেন, মুসলমানদের সকল কর্মকাণ্ড পরিচালিত হবে ইমানের ভিত্তিতে। বন্ধুত্ব হতে হবে আল্লাহর জন্য আবার শত্রুতাও হবে আল্লাহর জন্য। যারা শিরক করে ও আল্লাহর নাফরমানি করে তারা আল্লাহর শত্রু, সাথে সাথে তারা মুসলমানেরও শত্রু। এই বোধ-উপলব্ধি অবশ্যই মুসলমানদের থাকতে হবে। ইমানের জন্য ক্ষতিকর সকল কর্মকাণ্ড থেকে দূরে থাকার জন্য তিনি তাঁর মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানান।(সংক্ষেপিত) শ্রুতিলিখন : প্রফেসর তোহুর আহমদ হিলালী।