Skip to main content

কুরআনের পাঠ (সূরা হুজুরাত)

কয়েকদিন সূরা হুজুরাত পড়লাম। এই সূরায় মু’মিনদেরকে আচরণ শেখানো হচ্ছে। (১-৩) কখনই আল্লাহ ও তাঁর রসূলের (সা) অগ্রগামী হওয়া যাবে না। ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্র সর্বত্র অনুগামী হয়ে চলতে হবে। যে কোনো কাজের ক্ষেত্রে সর্বাগ্যে দেখতে হবে আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সা)-এর হুকুম কী? কথা বলার সময় আওয়াজ অবশ্যই রসূল (সা) অপেক্ষা নীচু হতে হবে। এখনো তাঁর নাম উচ্চারিত হলে বা হাদিস পাঠ করা হলে অবশ্য নীরবতা অবলম্বন করতে হবে এবং ভক্তি-শ্রদ্ধা প্রকাশে যাতে বিঘ্ন না ঘটে সেজন্য সতর্ক থাকতে হবে। সমাজে মানুষের যতো সম্মানই থাকুক না (পিতা-মাতা, শাসক, নেতা-নেত্রী, মুরুব্বী) তা কখনই রসূলের (সা) সম্মানের সাথে তুলনীয় নয়। অন্যান্যদের ক্ষেত্রে বড়জোর বেয়াদবী বা গুনাহ হবে কিন্তু রসূলের (সা) সাথে সামান্য বেয়াদবী ঈমানহারা হয়ে যাবে অর্থাৎ সকল আমল বরবাদ হয়ে যাবে। যাদের আওয়াজ নিম্নগামী হয় অর্থাৎ রসূল (সা)-এর প্রতি মুহাব্বত প্রকাশ পায় তাদের জন্য রয়েছে আল্লাহর ক্ষমা ও পুরস্কার। (৪-৫) নবী (সা)-এর মাধ্যমে শেখানো হচ্ছে বিশিষ্ট ব্যক্তিকে ডাকার ক্ষেত্রে ভদ্রতা হলো তাঁর বেরিয়ে আসা পর্যন্ত অপেক্ষা করা। তাঁদের অনেক ব্যস্ততা রয়েছে এবং বিশ্রামও প্রয়োজন। পূর্বাহ্নে সময় নিয়ে সাক্ষাত করাই উত্তম। (৬-৮) যে কোনো খবরে বিশ্বাস ও ব্যবস্থা গ্রহণ ঠিক নয়। বরং যাচাই-বাছাই করে ব্যবস্থা নিতে হবে। (৯-১০) মু’মিনদের দু’টি দলের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে যারা নিরপেক্ষ রয়েছে তাদের কর্তব্য মিমাংসা করে দেয়া। কোনো দল বাড়াবাড়ি করলে বা জুলুম করলে সবাই মিলে সেই দলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে হবে যতক্ষণ না মিমাংসায় রাজি না হয়। রাজি হলে উভয় দলের মধ্যে ন্যায় ও ইনসাফের সাথে মিমাংসা করতে হবে এবং এ-ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করতে হবে। মু’মিনদের সম্পর্ক পরস্পরের ভাই। ১১. ঈমানদার নর ও নারীর সমাজ মিশ্র হবে না। আলাদা সমাজ এবং নর ও নারীকে আলাদা উল্লেখ করে বলা হয়েছে কেউ কাউকে উপহাস করা বা খারাপ নামে ডাকা যাবে না। অর্থাৎ কারো সম্মান হানি করা যাবে না। ১২. ধারণা-অনুমান বা গোয়েন্দাগিরি করা যাবে না। দোষ অনুসন্ধান করা যাবে না। (কারো চিঠি খুলে পড়া, টেলিফোনে আড়িপাতা বা দু’জন ব্যক্তির আলাপ শোনা যাবে না বা কারো ঘরে উঁকি দেয়া যাবে না।) গীবতকে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করে বলা হয়েছে কারো অসাক্ষাতে তার নিন্দা করা যাবে না। ১৩. মানবজাতির সৃষ্টি একজন পুরুষ ও নারী (আদম আ. ও হাওয়া আ.) থেকে। বিভিন্ন জাতি ও গোত্র স্রেফ পরিচিতির জন্য। বিভিন্ন জাতি-গোষ্ঠীর মাঝে কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। শ্রেষ্ঠত্ব কেবল তাকওয়ায় অর্থাৎ যে আল্লাহকে বেশি ভয় করে। (১৪-১৫) মৌখিক ঈমানের দাবী যথার্থ নয় বরং আল্লাহ ও তাঁর রসূল (সা)-এর প্রতি ঈমান আনা ও কোনো সন্দেহ পোষণ না করা এবং জান-মাল দিয়ে আল্লাহর রাস্তায় যারা জিহাদ করে তারাই সত্যনিষ্ঠ। (১৬-১৮) দ্বীন গ্রহণ একান্ত ব্যক্তির কল্যাণ, এর মধ্য দিয়ে আল্লাহর প্রতি কোনো অনুগ্রহ নয়। অদৃশ্য জগতের সকল খবর আল্লাহ জানেন। মানুষ যা করে তার সবকিছুই আল্লাহ পর্যবেক্ষণ করেন।

Comments