Skip to main content

সদাচারী ব্যক্তিকে আল্লাহ ভালোবাসেন


বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
রাসূল (সা) বলেছেন-যমীনে যারা আছে তাদের সাথে সদাচরণ করো, তাহলে আসমানে যিনি আছেন তিনিও তোমাদের সাথে সদাচরণ করবেন। তিনি আরো বলেছেন-তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই উত্তম যে চরিত্রের দিক থেকে উত্তম। চরিত্রের সবচেয়ে বড় গুণ সদাচরণ। কারো প্রতি কষ্টদায়ক ব্যবহার বা গালাগাল বা সম্মানহানি করা অত্যন্ত ঘৃণ্য ও আল্লাহর অসন্তুষ্টির পরিচায়ক। আল্লাহর বাণী-নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনা-সামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে। এদের পরিণতি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তাদেরকে হুতামায় নিক্ষেপ করা হবে=যা জ্বলন্ত আগুন, প্রচন্ডভাবে উত্তপ্ত-উৎক্ষিপ্ত, অন্তর পর্যন্ত স্পর্শ করে। আল্লাহর সকল সৃষ্টি বিশেষ করে সকল মানুষ সদাচরণের দাবীদার। তার মধ্যে সদাচরণের সবচেয়ে বড় হকদার হলেন আপন পিতা-মাতা। তারা জান্নাতের সিঁড়ি, তাঁদের সাথে দুর্ব্যবহারের অর্থ হলো জান্নাতে যাওয়ার পথ রুদ্ধ করে ফেলা। এরপর নিজের স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, অধীনস্থ ব্যক্তিবর্গসহ আল্লাহর সকল বান্দা সদাচরণের হকদার। স্ত্রীর অধিকার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-আখিরাতে স্ত্রীর সাক্ষ্য গ্রহণ করা হবে এবং আরো বলা হয়েছে-তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই উত্তম যে তার স্ত্রীর নিকট উত্তম। তাই জান্নাতে যাওয়ার ক্ষেত্রে স্ত্রীর সাথে সদাচরণ অত্যাবশ্যক। তেমনিভাবে স্বামীর সাথে স্ত্রীর সদাচরণও তার নাজাতের জন্য অবশ্যম্ভাবী। আয়েশা (রা) বর্ণিত একটি হাদিস। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) বলেছেন : পূর্ণ মুমিন সেই ব্যক্তি যার চরিত্র উত্তম এবং যে তার পরিবার-পরিজনের (স্ত্রী-সন্তানদের) প্রতি সদয়। যে পরিবারে সদস্যদের মাঝে সদাচরণ রয়েছে সেই পরিবারটি একটি সুখি ও আদর্শ পরিবার।
সমমর্যাদা বা নিজের চেয়ে বড়দের সাথে সদাচরণ খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু অধীনস্থরা প্রায়ই সদাচরণ থেকে বঞ্চিত হয় এবং নানাভাবে হেনস্থা হয়। রাসূল (সা) বলেছেন-তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই উত্তম যে তার অধীনস্থদের কাছে উত্তম। তিনি আরো বলেন-দৈনিক সত্তর বার হলেও তাদের অপরাধ ক্ষমা করে দাও। এভাবে আলোচনা করলে আমরা দেখতে পাব যে, আল্লাহর সকল বান্দার সাথে উত্তম আচরণের জন্য রাসূল (সা) আমাদেরকে জোর তাগিদ দিয়েছেন। এই সমাজে চলতে গেলে ভুল-ত্রুটি খুবই স্বাভাবিক। আমরা যদি অপরের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দেই তাহলে আল্লাহপাক আখিরাতে আমাদের ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করে দেবেন। তাই আমাদেরকে আল্লাহর গুণে গুণান্বিত- উদার, ক্ষমা ও সহনশীল হওয়া দরকার। ক্ষমা দুর্বলতা নয়, ক্ষমা হলো মহত্তের লক্ষণ। এই রমযান মাস আমাদেরকে সদাচারী হওয়ার বড় শিক্ষা দেয়। কারো সাথে ঝগড়া-ঝাটি করা বা মন্দ বলার তো প্রশ্নই উঠে না। বরং কেউ মন্দ বলতে চাইলে বা ঝগড়া করতে এগিয়ে আসলে জবাব হবে-ভাই, আমি রোযাদার। রোযা আমাদেরকে সংযম শিক্ষা দেয়। এই মুখ দিয়ে কোন অশ্লীল কথা বলা বা কাউকে হেয় করা বা সম্মান হানি করার মত কিছু বলা অত্যন্ত নিন্দনীয়। আল্লাহর রাসূল (সা) বলেছেন- কেউ যদি আমাকে দুই ঠোঁটের মাঝখান ও দুই রানের মাঝখানের হেফাজতের নিশ্চয়তা দিতে পারে, তাহলে আমি তাকে জান্নাতের নিশ্চয়তা দিতে পারি। মানুষ হিসেবে আমরা ত্রুটি-বিচ্যুতির উর্দ্ধে নই। কখনো যদি কারো সাথে মনোমালিন্যের সৃষ্টি হয় তাহলে দ্রুত সংশোধন করে নেয়ার কথা হাদিসে বলা হয়েছে এবং যে প্রথমে এগিয়ে আসে তাকে প্রভূত ছওয়াব দানের কথাও রয়েছে। আল্লাহপাক আমাদেরকে তাঁর সকল বান্দার সাথে সর্বোত্তম আচরণ করার তাওফিক দান করুন। আমিন। ২১/০৬/২০১৭


Comments