বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম
বোখারী শরীফে (১-১০খন্ড
একত্রে) ছদকাতুল ফিতর সম্পর্কে ১০টা হাদিস উদ্ধৃত করা হয়েছে (হাদিস নং ১৪০৫-১৪১৪
পৃষ্ঠা ২৫০-২৫১)। সব কয়টি হাদিসে জনপ্রতি এক ছা পরিমাণ খেজুর/যব/গম/পনির/কিসমিস-এর
কথা বলা হয়েছে। সে সময়ে খাদ্যশস্যের যে কোন একটি দিয়ে ফিতরা দেয়া যেত, কিন্তু
পরিমাণ এক ছা এবং এটা চালু ছিল রাসূল (সা) ও তাঁর পরবর্তী চার খলিফার যুগ পর্যন্ত।
হযরত আমীর মুয়াবিয়া (রা)-এর সময়ে গমের দাম বৃদ্ধিজনিত কারণে তিনি বলেন এক মুদ গম
যেহেতু অন্যান্য দ্রব্যের দুই মুদের সমান তাই কেউ গম দিতে চাইলে অর্দ্ধ ছা দিতে
পারবে। সেই থেকেই গমের ক্ষেত্রে অর্দ্ধ ছা-এর প্রচলন (অন্যান্য দ্রব্যের ক্ষেত্রে
এক ছা) এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন অর্দ্ধ ছা গমের দাম ৬৫/- টাকা সর্বনিম্ন ফিতরা
নির্ধারণ করেছেন এবং তারা সর্বোচ্চ একটি পরিমাণের কথাও বলেছেন (প্রায় দুই হাজার
টাকা)। আমাদের দেশে খাদ্যশস্যের মধ্যে গমের দামই সর্বনিম্ন। তাই বিশেষজ্ঞ আলেমদের
অভিমত এক ছা গম অর্থাৎ ১৩০/- হিসেবে ফিতরা দেয়াটা উত্তম হবে। নমুনাস্বরূপ ২/১টা
হাদিস নিম্নে দেয়া হলো।
হাদিস নং ১৪০৫- হযরত
ইবনে ওমর (রা) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্লাহ (সা) মুসলিম দাস ও স্বাধীন ব্যক্তি
পুরুষ ও নারী এবং বালক-বালিকা ও বৃদ্ধ-বৃদ্ধাদের ওপর ছদকায়ে ফিতর (রোযার ফিতর) এক
ছা’ যব নির্ধারণ করে দিয়েছেন। তিনি এটাও আদেশ দিয়েছেন যে, লোকদের
ঈদের নামাযে যাওয়ার পূর্বেই যেন তা আদায় করা হয়।
হাদিস নং ১৪১০-হযরত আবু
সাঈদ খুদরী (রা) থেকে বর্ণিত। তিনি বলেন, আমরা নবী করীম (সা) এর সময় ছদকায়ে ফিতর
বাবদ জনপ্রতি এক ছা পরিমাণ গম অথবা এক ছা পরিমাণ যব অথবা এক ছা পরিমাণ খেজুর বা এক
ছা পরিমাণ কিসমিস প্রদান করতাম। মুয়াবিয়া (রা)-এর আমলে যখন গম আমদানী হলো, তখন
তিনি বললেন, আমার মতে এর (গমের) এক ‘মুদ’
দু মুদের সমান।
সকল হাদিসের বর্ণনা একই।
যেহেতু ফিতরা রোযার ত্রুটি-বিচ্যুতি দূর করার লক্ষ্যে এবং দরিদ্রদের কল্যাণে, তাই
ঈদের পূর্বেই তা প্রদান করতে হবে। সাধারণত সাহাবায়ে কেরাম ২/১দিন পূর্বেই প্রদান
করতেন। ঈদের পরে দেয়া হলে তা সাধারণ দান হিসেবে বিবেচিত হবে।
Comments
Post a Comment