Skip to main content

Posts

Showing posts from June, 2017

যাকাত সম্পদ বৃদ্ধি করে

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম যাকাত শব্দের আভিধানিক অর্থ বৃদ্ধি এবং এর আর একটি অর্থ পবিত্রতা, পরিচ্ছন্নতা। নামাযের পরে যাকাত ইসলামের সর্বাপেক্ষা গুরুত্বপূর্ণ স্তম্ভ এবং একটি আর্থিক ইবাদত। ইসলামী ভ্রাতৃত্বের মধ্যে শামিল হওয়ার জন্য নামাযের সাথে যাকাতও অপরিহার্য- ‘ যদি তারা তাওবা করে এবং নামায কায়েম করে ও যাকাত আদায় করে তাহলে তারা তোমাদের দ্বীনি ভাই ’ । যাকাত আদায় না করা মূলত মুশরিকদের কাজ- ‘ ধ্বংস ঐ সব মুশরিকদের জন্য যারা যাকাত আদায় করে না ’ । ইসলামে নামায ও যাকাতের মধ্যে কোন পার্থক্য করার সুযোগ নেই। হযরত খালিদ বিন ওয়ালিদ (রা) বলেছেন- ‘ নামায ও যাকাত একটি অপরটির সম্পূরক, একটি ছাড়া অন্যটি কবুল হয় না ’ । রাসূল (সা)-এর ইন্তেকালের পরে কিছু লোক যাকাত দিতে অস্বীকার করলে আবু বকর (রা) অস্বীকারকারীদেরকে মুরতাদ (ধর্মত্যাগী) ঘোষণা করে তাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। সমাজে নামায কায়েম ও যাকাত আদায় রাষ্ট্রসরকারের দায়িত্ব হলেও মুসলমানরা স্ব-উদ্যোগে মসজিদ নির্মাণ করে নামাযের ব্যবস্থা করলেও যাকাত আদায়ের তেমন সামষ্টিক উদ্যোগ নেই। মানুষের ধারণা সম্পদ থেকে যাকাত আদায় করলে তার সম্পদ কমে যাবে। অথচ ...

সদাচারী ব্যক্তিকে আল্লাহ ভালোবাসেন

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম রাসূল (সা) বলেছেন- ‘ যমীনে যারা আছে তাদের সাথে সদাচরণ করো, তাহলে আসমানে যিনি আছেন তিনিও তোমাদের সাথে সদাচরণ করবেন ’ । তিনি আরো বলেছেন- ‘ তোমাদের মধ্যে ঐ ব্যক্তিই উত্তম যে চরিত্রের দিক থেকে উত্তম ’ । চরিত্রের সবচেয়ে বড় গুণ সদাচরণ। কারো প্রতি কষ্টদায়ক ব্যবহার বা গালাগাল বা সম্মানহানি করা অত্যন্ত ঘৃণ্য ও আল্লাহর অসন্তুষ্টির পরিচায়ক। আল্লাহর বাণী- ‘ নিশ্চিত ধ্বংস তাদের জন্য যারা মানুষকে সামনা-সামনি গালাগাল ও পেছনে দোষ প্রচার করে ’ । এদের পরিণতি সম্পর্কে বলা হয়েছে যে, তাদেরকে হুতামায় নিক্ষেপ করা হবে=যা জ্বলন্ত আগুন, প্রচন্ডভাবে উত্তপ্ত-উৎক্ষিপ্ত, অন্তর পর্যন্ত স্পর্শ করে। আল্লাহর সকল সৃষ্টি বিশেষ করে সকল মানুষ সদাচরণের দাবীদার। তার মধ্যে সদাচরণের সবচেয়ে বড় হকদার হলেন আপন পিতা-মাতা। তারা জান্নাতের সিঁড়ি, তাঁদের সাথে দুর্ব্যবহারের অর্থ হলো জান্নাতে যাওয়ার পথ রুদ্ধ করে ফেলা। এরপর নিজের স্ত্রী, সন্তান-সন্ততি, নিকটবর্তী আত্মীয়-স্বজন, প্রতিবেশী, অধীনস্থ ব্যক্তিবর্গসহ আল্লাহর সকল বান্দা সদাচরণের হকদার। স্ত্রীর অধিকার প্রসঙ্গে বলা হয়েছে-আখিরাতে স্ত্রীর সাক্ষ্য গ্রহণ ...

হাদিসের আলোকে ছদকাতুল ফিতর

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম বোখারী শরীফে (১-১০খন্ড একত্রে) ছদকাতুল ফিতর সম্পর্কে ১০টা হাদিস উদ্ধৃত করা হয়েছে (হাদিস নং ১৪০৫-১৪১৪ পৃষ্ঠা ২৫০-২৫১)। সব কয়টি হাদিসে জনপ্রতি এক ছা পরিমাণ খেজুর/যব/গম/পনির/কিসমিস-এর কথা বলা হয়েছে। সে সময়ে খাদ্যশস্যের যে কোন একটি দিয়ে ফিতরা দেয়া যেত, কিন্তু পরিমাণ এক ছা এবং এটা চালু ছিল রাসূল (সা) ও তাঁর পরবর্তী চার খলিফার যুগ পর্যন্ত। হযরত আমীর মুয়াবিয়া (রা)-এর সময়ে গমের দাম বৃদ্ধিজনিত কারণে তিনি বলেন এক মুদ গম যেহেতু অন্যান্য দ্রব্যের দুই মুদের সমান তাই কেউ গম দিতে চাইলে অর্দ্ধ ছা দিতে পারবে। সেই থেকেই গমের ক্ষেত্রে অর্দ্ধ ছা-এর প্রচলন (অন্যান্য দ্রব্যের ক্ষেত্রে এক ছা) এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন অর্দ্ধ ছা গমের দাম ৬৫/- টাকা সর্বনিম্ন ফিতরা নির্ধারণ করেছেন এবং তারা সর্বোচ্চ একটি পরিমাণের কথাও বলেছেন (প্রায় দুই হাজার টাকা)। আমাদের দেশে খাদ্যশস্যের মধ্যে গমের দামই সর্বনিম্ন। তাই বিশেষজ্ঞ আলেমদের অভিমত এক ছা গম অর্থাৎ ১৩০/- হিসেবে ফিতরা দেয়াটা উত্তম হবে। নমুনাস্বরূপ ২/১টা হাদিস নিম্নে দেয়া হলো। হাদিস নং ১৪০৫- হযরত ইবনে ওমর (রা) বর্ণিত। তিনি বলেন, রাসূলুল্ল...

যাকাতের নেছাব ও অলঙ্কারের যাকাত

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম যাকাতের নেছাবের ব্যাপারে নানা জন নানা কথা বলেন। আমাকেও কেউ কেউ জিজ্ঞেস করেন। ড. ইউসুফ আল কারযাভীর ইসলামের যাকাত বিধান (ইসলামিক ফাউন্ডেশন প্রকাশিত ও মাওলানা আব্দুর রহীম অনূদিত ২ খন্ডে ৫০৩+৭০৯=১২১২ পৃষ্ঠার এক অনবদ্য কীর্তি) বইটি পড়ার পর আমার মনে হলো সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণই মানদন্ড হওয়া উচিৎ। নিম্নে আমার যুক্তিসমূহ উল্লেখ করছি। ১. বর্তমান সময়ে যাকাতের নেছাব স্বর্ণের ভিত্তিতেই হওয়া উচিৎ। সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ ও সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য মূল্যমানে ব্যাপক পার্থক্য। এ ছাড়া বর্তমানে আমাদের দেশসহ অধিকাংশ দেশে স্বর্ণকেই মূল্যমান হিসেবে বিবেচনা করা হয়। সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ অথবা সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্য বা সমপরিমাণ সম্পদের মালিককে সাহেবে নেছাব বলে। শরীয়তে যেখানে অথবা রয়েছে সেখানে আমার দৃষ্টিতে যে কোন একটি গ্রহণের সুযোগ রয়েছে। ২. যাকাত ধনীদের কাছ থেকে গ্রহণ করে দরিদ্রদের মধ্যে বন্টনের জন্য বলা হয়েছে। সাড়ে বায়ান্ন তোলা রৌপ্যমান একজন ধনীর মানদন্ড হতে পারে না। যেখানে বলা হয়েছে যে, উটের ৫টির কমে যাকাত নেই, গরু-মহিষে ৩০টি এবং ছাগল-ভেড়া ৪০টির কমে যাকাত নেই। এ সব বিবেচনায় ...

শুরু হলো রমযানের শেষ দশক

বিসমিল্লাহির রাহমানির রহীম আজ সূর্যাস্তের পর ২১শে রমযান শুরুর মধ্য দিয়ে আমরা রমযানের শেষ দশক পেলাম। এই দশকেই রয়েছে মহিমান্বিত রজনী লাইলাতুল কদর যা আল্লাহর ভাষায় সহস্র মাস অপেক্ষাও উত্তম। এই শেষ দশক রাসূল (সা)-এর কাছে ছিল খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তিনি অত্যন্ত ব্যস্ত মানুষ। ইসলামী রাষ্ট্রের রাষ্ট্রপ্রধান, সরকার প্রধান, প্রধান বিচারপতি, প্রধান সেনানায়ক, তিনিই সব। সব ব্যস্ততাকে উপেক্ষা করে তিনি নিবিষ্ট মনে পূর্ণ দশক মসজিদে ইতিকাফে কাটাতেন। অথচ তিনি ত্রুটিমুক্ত, হাউজে কাউছারের পানি পান করানোর একক কর্তৃত্ব তাঁর, তিনিই প্রথম সুপারিশকারী-সেই তিনিই আল্লাহর ইবাদত-বন্দেগীর কঠোর শ্রমে নিজেকে নিয়োজিত রাখতেন। লাইলাতুল ক্বদর সম্পর্কে তিনি বলেছেন- ‘ যে ঈমান ও এহতেছাবের সাথে এই রাতে দন্ডায়মান হবে আল্লাহ তার অতীতের সব গুনাহ মাফ করে দিবেন ’ । বান্দার অপরাধ ক্ষমা করে নেয়ার এ এক অপূর্ব সূযোগ। হ্যাঁ, বান্দা ফিরে আসুক তা আল্লাহও চান। রমযানের শেষ দশকের বেজোড় রাতসমূহে শবে কদরের রাত তালাশ করার জন্য রাসূল (সা) বলেছেন। যারা ইতেকাফে বসেছেন তারা মহা সৌভাগ্যবান। আশা করা যায় তাদের নছিবে লাইলাতুল ক্বদর ধরা দেবে। এই ...