Skip to main content

জুমা আলোচনা (মসজিদ উত তাকওয়া)

০৭.১০.২০২২

সুন্নাতে রসুলুল্লাহ সা.-এর অনুসরণের মধ্যেই রয়েছে দুনিয়া ও আখেরাতের কল্যাণ

বিসমিল্লাহির রহমানির রহিম

আজ জুমায় মসজিদ উত তাকওয়া, ধানমন্ডির সম্মানিত খতিব আলহাজ মুফতি সাইফুল ইসলাম আল্লাহর হামদ ও রসুলল্লাহ সা.-এর ওপর দরুদ ও সালাম পেশের পর সিরাতুন্নবি সা. উপলক্ষে যথার্থ সুন্নাতের অনুসরণের উপর গুরুত্বারোপ করে সাহাবায়ে কেরামের রসুলপ্রেম ও ত্যাগ স্বীকার নিয়ে আলোচনা করেন। (দশ মিনিট বিলম্বে অর্থাৎ ১২-৪০ মি. পৌঁছে আমার স্থান হয় চারতলায়। সাউন্ড সিস্টেম খুব সুন্দর হওয়ায় শোনার ক্ষেত্রে তেমন সমস্যা হয়নি।)

রসুলুল্লাহ সা.-কে অনুসরণের ক্ষেত্রে আমাদের সম্মুখে দৃষ্টান্ত হয়ে আছেন সাহাবায়ে কেরাম রা.। হিজরতের প্রাক্কালে রসুলুল্লাহ সা. হজরত আবু বকর রা.-কে বলে রাখেন, যে কোনো সময় আমাদেরকে হিজরত করতে হতে পারে। শোনার সাথে সাথে আবু বকর রা. সর্বদা প্রস্তুত হয়ে থাকেন এবং রাতে আর বিছানায় পিঠ লাগিয়ে ঘুমাননি। নির্দিষ্ট দিন দরজায় টোকা দেয়ার সাথে সাথে আবু বকর রা. দরজা খুলে দেন। রসুলুল্লাহ সা. জিজ্ঞাসা করলেন, এতো তাড়াতাড়ি খুলে দিলে কীভাবে? জবাবে বলেন, ইয়া রসুলুল্লাহ সা.! হিজরতের কথা আপনার মুখে শোনার পর থেকে আর রাতে বিছানায় ঘুমাইনি। এরই নাম রসুলপ্রেম। হিজরতের সেই বিপদসঙ্কুল পথে তিনি রসুল সা.-এর সহযাত্রী হলেন।

রসুল সা.-এর কাছে অনেকের আমানত রক্ষিত ছিল। এর মধ্যে শত্রু-মিত্র অনেকের ধনসম্পদ ছিল। জীবনের প্রতি হুমকি। তারপরও তিনি আমানতের কথা বিস্মৃত হননি। তাঁর বিছানায় আলী রা.-কে রেখে গেলেন তাঁর কাছে রক্ষিত মালামাল মালিকদের নিকট বুঝে দেয়ার জন্য। কোনো দ্বিরুক্তি নেই, নিজের জীবন বিপন্ন হতে পারে, শত্রুরা রসুল সা.-কে না পেয়ে তাঁকেই হত্যা করতে পারে। কোনো ভয়, শঙ্কা না করে বিনা বাক্যে রসুল সা.-এর আনুগত্য করলেন।

খলিফা ওমর রা. মৃত্যুশয্যায় শায়িত। এমতাবস্থায় ছেলেকে পাঠালেন মা আয়েশার কাছে, রসুল সা. ও তাঁর সাথি আবু বকরের রা. পাশে তাঁকে একটু জায়গায় দেয়ার জন্য। আয়েশা রা. রাজি হলেন। তারপরও বললেন, কবর দেয়ার সময় আবার অনুমতি নিতে। এভাবে তাঁরা কতো সতর্ক জীবন যাপন করেছেন।

হজরত ওছমান রা. বিদ্রোহীদের দ্বারা ঘেরাও অবস্থায় ছিলেন রোজা এবং কুরআন তেলাওয়াতরত। তাঁর পাহারায় নিয়োজিত ছিলেন অন্যান্যদের সাথে আলী রা.-এর দুই পুত্র হাসান ও হোসেন রা.। বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওছমান রা.-এর অনুমতি চাওয়া হয়। মুসলমানদের রক্তে তাঁর হাত রঞ্জিত হবে এই ভয়ে তিনি নিজেই শহীদ হওয়ার জন্য প্রস্তুত হয়ে পড়েন। এমনই ছিল সাহাবায়ে কেরামের আল্লাহর ভয় ও তাঁর কাছে জবাবদিহির অনুভূতি।

হজরত আমির মুয়াবিয়া রা. হজ করছেন। তিনি কাবা শরিফের দেয়ালে বারবার স্পর্শ করছেন। আব্দুল্লাহ ইবনে ওমর রা. দৃষ্টি আকর্ষণ করে বলেন, রসুলুল্লাহ সা. রুকনে ইয়ামানিকে স্পর্শ করতেন ও হাজরে আসওয়াদে চুমু খেতেন। এর বাইরে আর কোথাও স্পর্শ করতেন না। আমির মুয়াবিয়া রা. পাল্টা যুক্তি বা প্রশ্ন না তুলে তাৎক্ষণিক মেনে নেন। এরই নাম সুন্নাতের অনুসরণ। বর্তমানে সুন্নাতের নামে বিদয়াতের ছড়াছড়ি। বিদয়াত অবশ্যই ত্যাগ করতে হবে।

খতিব মহোদয় সিরাতুন্নবি সা. উপলক্ষে মসজিদ উত তাকওয়া সোসাইটি কর্তৃক তিনদিন ব্যাপী গৃহিত কর্মসূচি তুলে ধরে তাতে শরীক হওয়ার জন্য তাঁর মুসল্লিদের প্রতি আহবান জানান। ৭-৯ (শুক্র-রবিবার) আসরে শিশু-কিশোরদের প্রতিযোগিতা, মাগরিব থেকে আলোচনা সভা এবং মসজিদের পঞ্চম তলায় বইমেলায় শুক্রবার জুমার পর থেকে রাত সাড়ে নয় এবং শনি-রবি দুপুর বারোটা থেকে রাত সাড়ে ন’টা পর্যন্ত সবার জন্য উন্মুক্ত থাকবে। শিশু ও নারীদের উপযোগী বইসহ বিপুল পরিমাণ বই থাকবে বলে তিনি উল্লেখ করেন। সংক্ষেপিত।

Comments