Skip to main content

Posts

Showing posts from October, 2020

সমাজ জীবনে জুম’আর খুতবার প্রভাব ও খতিবদের করণীয়

বিসমিল্লাহির রহমানির রহীম আসসালামু আলাইকুম ওয়া রহমাতুল্লাহ। বরেণ্য আলেমদের সমন্বয়ে ‘সমাজ জীবনে জুম’আর খুতবার প্রভাব ও খতিবদের করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপনের সুযোগ পাওয়ায় মহান আল্লাহপাকের দরবারে জানাই লখো শুকরিয়া। আলহামদু লিল্লাহ। দরুদ ও সালাম প্রিয়তম নবী মুহাম্মাদুর রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহিস সালামের ওপর যাঁর মাধ্যমে আল্লাহপাক দয়া করে আমাদেরকে হেদায়াত দান করেছেন। নবী মুহাম্মদ (সা)-কে অনুসরণের ক্ষেত্রে যাঁরা অগ্রগামী সেই সাহাবায়ে কেরাম (রা) ও সকল নেক বান্দাদের প্রতি আল্লাহর রহমত ও করুণা কামনা করে আমার প্রবন্ধ পাঠ শুরু করছি। আজকের এই সেমিারের মাননীয় সভাপতি, মডারেটর, বিজ্ঞ আলোচকবৃন্দ, সেমিনার আয়োজনে নেপথ্যে যারা দায়িত্ব পালন করছেন এবং শ্রদ্ধেয় শ্রোতৃমন্ডলি। খুতবা অর্থ বক্তৃতা, ভাষণ। মানুষকে স্বমতে আনা বা কোনো আদর্শ প্রচারের ক্ষেত্রে বক্তৃতার রয়েছে যাদুকরী শক্তি। মানুষের জন্য হেদায়াত মহাগ্রন্থ আল কুরআন বক্তৃতা আকারেই অবতীর্ণ হয়েছে। রসূলুল্লাহ (সা) মানুষের কাছে বক্তৃতার মাধ্যমেই কুরআনকে পেশ করেছেন। আরবী ভাষায় নাযিলকৃত আল কুরআন সহজেই আরববাসীদের মন জয় করতে সক্ষম হয়। যারা...

বিয়ে : প্রাসঙ্গিক নানা বিষয়

বিয়ে শুধু দু'জন নর ও নারী নয়, দু'টি পরিবার এবং আত্মীয়-স্বজন ও বন্ধু-বান্ধব সবার মাঝে সৃষ্টি হয় আনন্দ-উল্লাস। এটিই স্বাভাবিক। বিয়েকে নিয়ে নানা আচার-অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। গায়ে হলুদ, ক্ষীর খাওয়া, কনের বাড়িতে অনুষ্ঠান, ঘরসাজানো, বৌভাত, নববধুকে সংবর্ধনা ইত্যাদি। আল্লাহর রসূল (সা)-এর সময়ে বিয়ে ছিল খুবই অনাড়ম্বর। সেসময়ে সাধারণত মসজিদে খেজুর বিতরণ বা একটু সচ্ছল হলে ছাগল জবেহ করে খাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে এবং এসবই করা হয়েছে বরের পক্ষ থেকে। বর্তমানে কনের পরিবারের ওপর যে চাপ সেটি সে সময়ে ছিল না। কনের পরিবার স্বতঃস্ফূর্ত যা করে সেটিতে কোনো দোষ নেই। কিন্তু কোনো কিছু বাধ্য করা বা চাপিয়ে দেয়া সুস্পষ্ট জুলুম। বর্তমানে বিয়ে অনেক আড়ম্বরপূর্ণ হয়েছে। বিয়েকে কেন্দ্র করে নানা আয়োজন, নানা অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। দেশাচারও রয়েছে অর্থাৎ এক এক এলাকায় এক এক ধরনের আচার-অনুষ্ঠান। বৈধতার প্রশ্ন উঠালে আমার মতে সবই বৈধ যদি সেখানে বাহুল্য (অপচয়) ও অশ্লীলতা না থাকে। ইসলামে হারাম সুনির্দিষ্ট, বাকি সবই হালাল। ফিতরাতের ধর্ম ইসলাম অনেক উদার, এর মাঝে কোনো সংকীর্ণতা নেই। ইবাদতের ক্ষেত্রে নতুনত্বকেই বিদয়াত বলে। এসব আচা...

নবদম্পতিদের উদ্দেশ্যে

(আমাদের ছেলেরা হোক বৌপাগল এবং বৌমারা হোক পতিপরায়ণা (স্বামী পাগল) সম্প্রতি হিলালী-আফরোজা পরিবারের দু’জন সদস্যের একদিনের ব্যবধানে বিয়ে সম্পন্ন হলো। আমরা তাদের দাম্পত্য জীবনের অব্যাহত সুখ ও সম্মৃদ্ধি এবং আল্লাহর রহমত কামনা করছি। (আমার এই লেখা দু’জনের মধ্যে সীমাবদ্ধ নয় সকল দম্পতির উদ্দেশ্যে যদিও তাদের উপলক্ষ করে।) আল্লাহপাক প্রতিটি জীবকে জোড়ায় জোড়ায় সৃষ্টি করেছেন এবং নর ও নারী পরস্পরের মাঝে দিয়ে রেখেছেন আকর্ষণ। তাইতো সৃষ্টির আদি থেকে তারা জুটি বেঁধে চলার চেষ্টা করেছে এবং তা অব্যাহত রয়েছে। যিনা, ব্যাভিচার ও ধর্ষণের মূলে রয়েছে বিপরিত লিঙ্গের প্রতি আকর্ষণ। পরস্পরের প্রতি আকর্ষণ প্রকৃতিগত, জোর করে দমিয়ে রাখা বা অস্বীকার করা কোনোটাই ইসলাম সমর্থন করে না। মানুষের জীবনের অনেক দিকের মধ্যে যৌনজীবন অন্যতম। বিবাহের মাধ্যমে ইসলাম যৌনজীবনকে সুশৃঙ্খল করেছে। যৌন চাহিদা পূরণের একমাত্র উপায় হিসেবে বিবাহকে নির্ধারণ করেছে। বিবাহ বহির্ভূত যৌনজীবন তা হোক কথা, আচরণ, অঙ্গভঙ্গির মাধ্যমে যৌনপীড়ন বা যিনা-ব্যাভিচার, ধর্ষণ সবই হারাম, ঘৃণিত ও নিন্দনীয়। বিবাহের মাধ্যমে যে জীবন (স্বামী-স্ত্রী পরস্পরকে আনন্দ দানের জন্য...

দাম্পত্য জীবন সুখের হোক

দাম্পত্য জীবন সুখের হোক এটা সকলের চাওয়া। কিন্তু আদতে কী ঘটে এবং কেন ঘটে? সেসব বিষয়ের ইসলামী দৃষ্টিভঙ্গি জানার চেষ্টা করবো আমরা। বিয়ের মধ্য দিয়ে দু’জন নর ও নারী যে জীবন শুরু করে তারই নাম দাম্পত্য জীবন ।  ইসলাম ফিতরাতের ধর্ম। মানুষের স্বভাব-প্রকৃতি যা দাবী করে ইসলাম মূলত তাই। এজন্য ইসলামকে বলা হয় সহজ ও প্রকৃতির ধর্ম। নর ও নারীর প্রতি আকর্ষণ স্বাভাবিক-প্রকৃতিগত (আল্লাহপ্রদত্ত) এবং পরস্পর একত্র হওয়ার মধ্যে রয়েছে প্রশান্তি।  পরস্পর একত্র হওয়াকে ইসলাম একটি শৃঙ্খলার মধ্যে এনেছে এবং এটিকে বলগাহীন ছেড়ে দেয়নি। প্রকৃতিগতভাবে নারী কোমল ও দুর্বল। সমাজ জীবনে শৃঙ্খলা ও নারীর নিরাপত্তার স্বার্থে দাম্পত্য জীবন যাপনের লক্ষ্যে ইসলাম বিবাহকে ফরজ করেছে এবং বিবাহ বহির্ভূত যৌন চাহিদা পূরণের সকল উপায়-উপকরণকে হারাম ঘোষণা করেছে।  ইসলামে যিনা-ব্যাভিচার ও ধর্ষণের মত ঘৃণ্য অপরাধের শাস্তি অত্যন্ত কঠোর ও নির্মম। শাস্তি হিসেবে অবিবাহিতদের প্রকাশ্যে ১০০ বেত্রাঘাত এবং বিবাহিতদের পাথর ছুঁড়ে হত্যা নিশ্চিত করা। এ শাস্তি দৃষ্টান্তমূলক, যাতে সবাই উপলব্ধি করে পাপাচার থেকে দূরে থাকে।  পক্ষান্তরে বিবাহের ম...

পেছন ফিরে দেখা (এম এম কলেজ, যশোর নিয়ে স্মৃতিচারণ)

আমার দেখা সেরা কলেজসমূহের অন্যতম এম এম কলেজ, যশোর। এই কলেজে ২৫.০৪.২০০৪ হতে ১৭.০৩.২০০৯ পর্যন্ত সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে দায়িত্ব পালনের সুযোগ লাভ করায় নিজেকে ধন্য মনে করি। ঐ কলেজ থেকেই অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পাই। শিক্ষার সুষ্ঠু ও নকলমুক্ত পরিবেশ, শিক্ষকদের মর্যাদা সমুন্নত রাখা, রাজনীতিক ও ছাত্র নেতৃবৃন্দের প্রভাবমুক্ত চমৎকার পরিবেশ সে সময়টিতে লক্ষ্য করেছি। আমি ঐ কলেজে শিক্ষক পরিষদের দুই টার্ম সম্পাদক এবং বিসিএস সাধারণ শিক্ষা সমিতির কলেজ ইউনিটের সভাপতি ছিলাম। সে সময়ে সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করেছেন প্রফেসর টিএম জাকির হোসেন (বর্তমান অধ্যক্ষ, বয়রা সরকারি মহিলা কলেজ, খুলনা)। এম এম কলেজে অর্থনীতি বিভাগে অধ্যাপকের দু’টি পদ এবং একটি পদ খালি থাকা সত্ত্বেও আমাকে মৌলভীবাজার সরকারি কলেজে বদলী করা হয়। সেখানে মাত্র ৬ মাস চাকুরি করলেও আমি ও আমার পরিবার সেটি খুব উপভোগ করেছি। বিদায় গ্রহণের সময় দু’টি কলেজ থেকেই আমার সহকর্মী ও ছাত্র-ছাত্রীরা বর্ণাঢ্য সংবর্ধনার আয়োজন করেছিল। শিক্ষার্থীদের মাঝে যারা উদ্যোক্তা ছিল তাদের মাঝে অনেকের সাথে ফেসবুকে আমার যোগাযোগ রয়েছে। আমি সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি। আমি একটি ব...

যিনার কাছেও যেয়ো না, ওটা অত্যন্ত খারাপ কাজ

জু’মা বক্তৃতা ০৯.১০.২০২০ আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জু’মার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর সম্প্রতি বিভিন্ন স্থানে ধর্ষণের ঘটনায় গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে কঠোর ভাষায় সমালোচনা করেন। তিনি কুরআনের আয়াত উদ্ধৃত করে বলেন, ‘যিনার কাছেও যেয়ো না, ওটা অত্যন্ত খারাপ কাজ এবং খুবই জঘন্য পথ’- বনী ইসরাইল ৩২। তিনি বলেন, যিনার সহায়ক সমাজে নানা কার্যক্রমের প্রসার ঘটায় ধর্ষণের মত জঘন্য ঘটনা এতো প্রসার লাভ করেছে এবং বিভিন্ন স্থানে সংঘটিত ধর্ষণের উল্লেখ করে এর প্রতিকারের জন্য তিনি ব্যক্তি, সমাজ ও রাষ্ট্রীয় উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা উল্লেখ করেন। পর্দাহীনতা, নারীকে পণ্য হিসেবে ব্যবহার, অশ্লীলতা প্রসারের লক্ষ্যে ইউ-টিউব, সিনেমা, নাটক, টেলিভিশনের বিভিন্ন অনুষ্ঠান বিশেষ করে ভারতীয় চ্যানেলের তিনি তীব্র সমালোচনা করেন। সমাজে যিনা-ব্যাভিচার ও ধর্ষণের মত জঘন্য ঘটনার কারণ ও প্রতিকার নিয়ে খতিব মহোদয় ধারাবাহিক আলোচনা করেন। ১. পারিবারিক শিক্ষা : পরিবারে নৈতিক শিক্ষা না থাকায় আজ সমাজের এতো অধপতন। নৈতিক শিক্ষার ভিত্তি হলো কুরআনের শ...

ঈমানদারদের জন্য ক্ষমা ও উত্তম রিযিকের প্রতিশ্রুতি রয়েছে

কুরআনের পাঠ ‘আরো কতো জনপদ! তারা ছিল দুরাচার, আমি প্রথমে তাদেরকে অবকাশ দিয়েছি, তারপর পাকড়াও করেছি। আর সবাইকে তো আমারই কাছে ফিরে আসতে হবে। হে মুহাম্মদ! বলে দাও, হে লোক সকল, আমি তোমাদের জন্য শুধুমাত্র একজন সুস্পষ্ট সতর্ককারী। কাজেই যারা ঈমান আনবে ও সৎ কাজ করবে তাদের জন্য রয়েছে মাগফেরাত ও সম্মানজনক জীবিকা। আর যারা আমার আয়াত ব্যর্থ করার চেষ্টা করবে তারা হবে জাহান্নামের অধিকারী’- সূরা আল হাজ্জ ৪৮-৫১। বর্ণনাভঙ্গি ও বিষয়বস্তুর প্রেক্ষিতে বলা যায় সূরা হজ্জের একটি অংশ মক্কার শেষ দিকে ও বাকি অংশ মদীনার শুরুতে নাযিল হয়। মদীনায় হিজরত করার পর হজ্জের মওসূমে আল্লাহর ঘর জিয়ারতের আকাঙ্ক্ষা স্বাভাবিকভাবে মুসলমানদের অন্তরে জাগে। এই ঘরটি তৈরীই হয়েছিল আল্লাহর স্মরণের লক্ষ্যে, কিন্তু তা মুশরিকদের নিয়ন্ত্রণে থাকায় তাওহীদের পরিবর্তে সেটি শিরকের কেন্দ্রে পরিণত হয়েছিল এবং আল্লাহর ইবাদতকারীদের জন্য মসজিদে হারামের পথ রুদ্ধ করে দিয়েছিল। এই দুরাচারদের সেখান থেকে হটিয়ে কাবার নিয়ন্ত্রণ গ্রহণ এবং একটি কল্যাণমূলক সমাজ প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মুসলমানদের প্রতি এই প্রথম যুদ্ধের অনুমতি প্রদান করা হয়েছে। এই সূরাটিতে আরবের ম...

ঈমানদারদের সম্মিলিত পথের বিপরিত পথ হলো গোমরাহীর পথ

কুরআনের পাঠ ‘যে ব্যক্তি তার কাছে প্রকৃত হেদায়াত স্পষ্ট হয়ে যাওয়ার পর রসূলের বিরুদ্ধাচরণ করবে এবং ঈমানদারদের পথ ছেড়ে অন্য ধরনের নিয়ম-নীতির অনুসরণ করবে, তাকে আমি সেদিকেই ধাবিত করবো- যেদিকে সে ধাবিত হয়েছে, তাকে আমি জাহান্নামের আগুনে পুড়িবে দেবো, আর তা কতো নিকৃষ্ট আবাসস্থল’- সূরা আন্ নিসা ১১৫। কুরআন মজিদ নাযিল হয়েছে বক্তৃতার আকারে। বক্তা একই সময়ে অনেক বিষয়ের অবতারণা করেন। এই সূরা আন্ নিসাও বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন বিষয়াবলী সম্বলিত কয়েকটি ভাষণের সমষ্টি। তৃতীয় হিজরি থেকে চতুর্থ হিজরি শেষ বা পঞ্চম হিজরির শুরুর দিকে এই সূরাটি অবতীর্ণ হয়। এই আয়াতে ইংগিত রয়েছে এক মুনাফিক ও ইহুদীর মামলা সংক্রান্ত বিষয়ের। কোনো সূরা বা আয়াতে কোনো ঘটনার ইংগিত থাকলেও কুরআন মজিদ শ্বাশত, চিরন্তন এবং কিয়ামত পর্যন্ত তা মানুষের জন্য হেদায়াত। তাফসির গ্রন্থ থেকে এতটুকু উপলব্ধি করা যায় যে একজন মুসলমান ও ইহুদীর মধ্যকার বিরোধের বিচার রসূল (সা)-এর কাছে আসে। ইহুদীটা সঠিক ছিল। বিষয়টি আল্লাহপাক রসূল (সা)-কে অবহিত করলে বিচার ইহুদীর অনুকূলে আসে। তাতে সেই মুসলিম ক্ষুব্ধ হয় এবং একপর্যায়ে মক্কায় ইসলামের শত্রুদের সাথে মিলিত হয়ে ইসলাম বি...

সর্বক্ষেত্রে রসূল (সা)-এর অনুসরণ মু’মিনের জন্য অপরিহার্য

কুরআনের পাঠ (হে নবী) তোমার মালিকের শপথ, এরা কিছুতেই ঈমানদার হতে পারবে না, যতক্ষণ না তারা তাদের যাবতীয় মতবিরোধের ফয়সালায় তোমাকে বিচারক মেনে নেবে, অতপর তুমি যা ফয়সালা করবে সে ব্যাপারে তাদের মনে কোনো দ্বিধাদ্বন্দ্ব থাকবে না এবং তোমার সিদ্ধান্ত তারা সর্বান্তকরণে মেনে নেবে’- সূরা আন্ নিসা ৬৫। সূরা আন্ নিসা কয়েকটি ভাষণের সমষ্টি। তৃতীয় হিজরি থেকে চতুর্থ হিজরি শেষ বা পঞ্চম হিজরির শুরুর দিকে অবতীর্ণ হয়। এই সূরায় উত্তরাধিকার বন্টন, ইয়াতিমের অধিকার সংরক্ষণ, যুদ্ধের ময়দানে ভয়কালীন নামায, তায়াম্মুমের বিধানসহ সমাজের সংশোধন ও সংস্কার বিধানসহ নানা বিষয় আলোচিত হয়েছে। মদীনায় হিজরতের পরে মুহাম্মদ (সা) কেবল দ্বীনের প্রচারক নন বরং একটি রাষ্ট্রের শাসক ও বিচারকসহ সর্বময় কর্তৃত্বের অধিকারী হন। এই আয়াতটি নাযিল হওয়া প্রসঙ্গে মা’রেফুল কুরআন ও তাফসিরে ইবনে কাসিরে হযরত ওমর (রা)-এর একটি ঘটনা উল্লেখ করা হয়েছে। কোনো একটি বিষয়ে দু’ব্যক্তি রসূলুল্লাহ (সা)-এর কাছে বিচারপ্রার্থী হন। রসূল (সা) বিচার করে দিলে যার প্রতিকূলে যায় সে প্রতিদ্বন্দ্বিকে সাথে নিয়ে বিষয়টি ওমর (রা)-এর কাছে আবার পেশ করে। ওমর (রা) উভয়ের বক্তব...

আল্লাহকে যারা ভয় করে চলে আল্লাহ তাদের কল্পনার বাইরেও রিজিক দেন

জু’মা বক্তৃতা ০২.১০.২০২০ আজ মিরপুর কাঁঠালবাগ জামে মসজিদে জু’মার খুতবায় সম্মানিত খতিব আলহাজ্জ মুফতি মাওলানা মাহমুদুল হাসান আশরাফী আল্লাহর হামদ ও রসুল (সা)-এর প্রতি দরুদ ও সালাম পেশের পর গত দিনের মত আজও রিজিক নিয়ে আলোচনা করেন এবং আগামী দিনেও করবেন বলে জানান। আল্লাহপাক প্রদত্ত সকল অনুগ্রহই রিজিক। রিজিক শব্দটি কুরআন মজিদে ১২৩ বার এসেছে। তিনি আজকের আলোচনায় কুরআন থেকে প্রচুর আয়াত উদ্ধৃত করেন এবং হাদিস পেশ করেন। আমি এখানে তাঁর আলোচনার সারসংক্ষেপ তুলে ধরবো ইন-শা-আল্লাহ। আল্লাহপাক তাঁর সকল সৃষ্টির রিজিকের ব্যবস্থা করেছেন। পশু-পাখি থেকে শুরু করে এমন কোনো সৃষ্টি নেই যার রিজিকের দায়িত্ব তিনি নেননি। পাখিগুলো সকালে খালি পেটে বের হয়ে যায় এবং ভরা পেটে বাসায় ফেরে। তাদের সুনির্দিষ্ট কোনো চাকুরি বা ব্যবসা নেই অথচ তাদের রিজিকের কোনো ঘাটতি হয় না। আল্লাহর ওপর তাদের তাওয়াক্কুল রয়েছে। তারা তাদের বাসা থেকে বেরিয়ে পড়ে এবং আল্লাহর ছাড়ানো ছিটানো রিজিক তালাশ করে। বেরিয়ে পড়াটাই তাদের দায়িত্ব এবং বাকিটা আল্লাহ করে দেন। এমনিভাবে সকল সৃষ্টির রিজিকের ব্যবস্থা তিনি করেছেন। ‘তোমাদের রিজিকও আল্লাহ দিয়ে থাকেন’-এ কথা...

কুরআনের পাঠ (সূরা আহযাব ৩৬)

‘যখন আল্লাহ ও তাঁর রসূল কোনো বিষয়ের ফায়সালা দিয়ে দেন তখন কোনো মু’মিন পুরুষ ও নারীর সেই ব্যাপার নিয়ে ফায়সালা করার কোনো অধিকার নেই। আর যে কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসূলের নাফরমানী করে সে সুস্পষ্ট গোমরাহীতে লিপ্ত হয়’- সূরা আহযাব ৩৬। সূরা আহযাবে তিনটি ঘটনার উল্লেখ রয়েছে। পঞ্চম হিজরির শাওয়াল মাসে সংঘটিত হয় আহযাব (খন্দকের) যুদ্ধ, জিলকদ মাসে বনি কুরাইযার যুদ্ধ এবং একই মাসে আল্লাহর রসূল (সা)-এর সাথে হযরত যয়নব (রা)-এর বিয়ে। হযরত জয়নব (রা)-এর বিয়ের বিষয়টি পুরোটাই মহান আল্লাহপাকের ইংগিতে সম্পন্ন হয়। এই বিয়ে আয়োজনের পশ্চাতে লক্ষ্য ছিল দীর্ঘদিনের চলে আসা কুসংস্কারের মূলোৎপাটন। হযরত যায়িদ (রা) ছিলেন আল্লাহর রসূল (সা)-এর খরিদ ও আযাদকৃত গোলাম এবং তিনি তাঁকে পালক পুত্র হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। তৎকালে পালক পুত্র/কন্যা নিজের ঔরসজাত/গর্ভজাত পুত্র/কন্যার মতো বিবেচিত হতো। বিয়ে-সাদী ও উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে প্রকৃত পুত্র/কন্যা ও পালক পুত্র/কন্যার মধ্যে কোনো পার্থক্য করা হতো না। সে সময়ে মদীনায় উত্তরাধিকার আইন কার্যকরসহ নানা সংস্কারমূলক কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছিল। বংশীয় আভিজাত্য, সাদা-কালো, ধনী-দরিদ্র, আরব-অনারবের পা...