Skip to main content

বাড়ছে তারকাদের আত্মহত্যা

শুধু তারকা নয়স্কুল-কলেজের ছাত্র-ছাত্রীনব-দম্পতিসন্তানের মাসহ বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষ অহরহ আত্মহত্যার মত জঘন্য কর্ম করে জাহান্নামে স্থায়ী ঠিকানা করে নিচ্ছে। এ ছাড়া খুন-খারাবিও অনেক বেড়ে গেছে। পিতা-মাতা তাদের আদরের সন্তানস্বামী তার প্রিয়তমা স্ত্রী এবং স্ত্রী তার প্রিয়তম স্বামী থেকে নিরাপদ নয়। কেন এ সর্বনাশা হত্যাকান্ড। আত্মহত্যাই বা কেনআত্মহত্যাকারী একজন খুনি এবং জঘন্যতম খুনি। সব ধরনের খুনের শাস্তিই হলো জাহান্নাম যেখানে চিরদিন থাকতে হবে। তবে সাধারণ খুনের কখনও প্রায়শ্চিত্ব সম্ভব। যেমন তাওবা করে এবং নিহত ব্যক্তির উত্তরাধিারীকে ক্ষতিপূরণ প্রদান করে বা দুনিয়ায় দন্ড ভোগ করে। কিন্তু আত্মহত্যাকারী চিরতরে দুনিয়া ও আখিরাতকে হারায়। কেনই বা আত্মহত্যা আর কেনই বা এ হত্যাকান্ডএ প্রশ্নের জবাবে সমাজবিদরা (বিশেষ করে সমাজতান্ত্রিক দর্শনে বিশ্বাসী) বলবে এর কারণ অর্থনীতিক। কিন্তু তারকারা তো আর্থিক সমস্যা থেকে মুক্ত। বিশেষ কোন মতবাদে বিশ্বাসী না হয়ে সমাজ ও মানুষ নিয়ে যারা চিন্তা করে তারা বলবেহতাশা থেকেই এ আত্মহত্যা এবং হতাশার একক কোন কারণ নেই। আমরা হতাশার কিছু কারণ নিম্নে উল্লেখ করতে পারি।

১. দাম্পত্যকলহ। আত্মহত্যার মূল কারণ হলো দাম্পত্যজীবনে অশান্তি। আর এর মূলে রয়েছে পরকিয়া। নারি-পুরুষের অবাধ মেলামেশা থেকেই সৃষ্টি হয় পরকিয়া এবং স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে বিরোধ। এ অবস্থার অবসান ঘটাতে পারে কেবল ইসলামী মূল্যবোধ। ইসলামে বিশ্বাসী একজন ব্যক্তির পরকিয়ার প্রশ্নই ওঠেনা এবং ইসলাম পারিবারিক জীবনকে খুবই বড় করে দেখে । ইসলামের দৃষ্টিতে পরিবার হলো প্রশান্তির জায়গা। এখানে যাতে শান্তি ব্যহত না হয় সে জন্য স্বামী-স্ত্রী উভয়েরই দায়িত্ব রয়েছে। ডেল কার্নেগীর চসৎকার উক্তি স্মরণযোগ্য-'দাম্পত্য জীবনে সুখি হতে চাওতাহলে-পরস্পরকে অবিশ্বাস করবে না আর ঘ্যানর ঘ্যানর করবে না।'

২. দুনিয়াতে না পাওয়ার হতাশা। একটা ভালো চাকুরিব্যবসায়ে ক্রমাগত লোকসানপরীক্ষায় বারবার অকৃতকার্য হওয়াএকটি ভালো স্বামী বা স্ত্রী না পাওয়া বা প্রেমে ব্যর্থ হওয়াপ্রিয়জন কর্তৃক উপেক্ষা বা নানা কারণে মানুষের মধ্যে হতাশা দেখা দেয়।

এর থেকে উত্তরণের উপায় হলো হতাশামুক্ত জীবন। কেবল ধর্মীয় বিশ্বাস বা মূল্যবোধই পারে মানুষকে হতাশা থেকে মুক্ত রাখতে। এ পৃথিবীতে নিরবচ্ছিন্ন সুখ বা দু:খ বলে কিছু নেই। এ পৃথিবী একটা পরীক্ষাগার।  আল্লাহর বাণী-'কোন বিপদ কখনই আসে নাআসে আল্লাহর অনুমতিক্রমে। যে ব্যক্তি আল্লাহর প্রতি ঈমান আনে আল্লাহ তার দিলকে হেদায়াত (প্রশান্তি) দান করেন। একজন মুমিন বিশ্বাস করে যে আল্লাহর ভান্ডার অফুরন্ত এবং আল্লাহ তাঁর বান্দাহর চাওয়া কখনও অপূর্ণ রাখেন না। আল্লাহর বাণী-'যে আমাকে ডাকে আমি তার ডাক শুনি ও জবাব দিই।তাই পূর্ণ বিশ্বাস ও আল্লাহর ওপর নির্ভরতা সহকারে চাইতে হবে। না পেলে বুঝতে হবে আমি যা চাচ্ছি তা আল্লাহর মনপুত নয় বা এ মুহূর্তে আমার উপযোগী নয়।  আল্লাহর কাছে চাওয়া বাদ দেয়া যাবে না এবং এ দুনিয়ায় আমার চাওয়া পূরণ না হলেও আল্লাহ আখিরাতে আমাকে এত দিবেন যে আমি তাঁর প্রতি সন্তুষ্ট হয়ে পড়বো। এ অনুভূতি একজন মুমিনের মধ্যে কাজ করে বিধায় না পাওয়ার বেদনা বা কোন দু:খ-কষ্ট মুমিনকে কখনই হতাশ করে না। আল্লাহ আমাদেরকে যথার্থ মুমিন হয়ে পূর্ণ আল্লাহনির্ভর হওয়ার তাওফিক দান করুন। আমীন।

Comments