Skip to main content

জুলুম সর্বাবস্থায় হারাম।

 

জুলুম অর্থ কাউকে তার প্রাপ্য থেকে বঞ্চিত করা বা কারো অধিকার হরণ করা। সেটা হোক নিজের, স্বামী/স্ত্রীর বা সন্তানের বা পরিবারের বা সমাজ ও রাষ্ট্রের। নিজের ওপর জুলুম সাধারণত মানুষ উপলব্ধি করে না বা বুঝতে চায় না। ব্যক্তি তার নিজের স্বাস্থ্য, ঈমান ও কল্যাণকে সর্বাগ্যে গুরুত্ব দিবে। স্বামী/স্ত্রী, সন্তান, পরিবার বা সমাজ ও রাষ্ট্রের কল্যাণ সাধন তার দায়িত্বের অংশ। ঠিকভাবে দায়িত্ব পালন করলে বা তাদের প্রাপ্য আদায় করলে দুনিয়া ও আখেরাতে সে পুরস্কৃত হবে এবং ভিন্ন হলে তাকে তিরস্কৃত হতে হবে দুনিয়া ও আখেরাতে। সন্তান-সন্ততি বা পরিবার বা আত্মীয়-স্বজনের জন্য কেহ যদি কোনো অন্যায় আচরণ করে বা নিজ থেকে কারো প্রতি জুলুম করে বা আল্লাহর নাফরমানি করে তাহলে ব্যক্তি তার নিজের প্রতিই জুলুম করে। জুলুমের প্রতিকার হলো এই দুনিয়ার জীবনে তওবা করে নিজেকে পরিশুদ্ধ করে নেয়া। আখেরাতে ব্যক্তি আল্লাহর আদালতে একাকীই দাঁড়াবে। কেহ তাকে সাহায্য করবে না বা কোনো বন্ধুত্ব বা আত্মীয়তা কাজে আসবে না।

মানুষ আল্লাহপাকের বড়ো আদরের সৃষ্টি এবং সৃষ্টির সেরা ও তাঁর খলিফা। আদম আ.-কে সৃষ্টি করার পর ফেরেশ্তা কর্তৃক সেজদা করানোর মধ্য দিয়ে মূলত মানুষের শ্রেষ্ঠত্বই তুলে ধরা হয়েছে। সেই মানুষই জান্নাতে আল্লাহর নাফরমানি করলে তিনি তাঁর কাছে ক্ষমা চাওয়ার ভাষা শিখিয়ে দেন এবং আদম আ. ক্ষমা চাইলে তাঁকে ক্ষমা করার পাশাপাশি নবুয়ত দান করে আরো সম্মানিত করেন।

মানুষের দ্বারা অন্যায় হওয়া খুবই স্বাভাবিক। কিন্তু ফিরে আসার সুযোগ রয়েছে। তাই অন্যায় পাহাড়সম হলেও আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হতে নেই। হতে পারে জীবনভর নামাজ পড়েননি, রোজা রাখেননি, নেশা করেছেন, জুয়া খেলেছেন আরো কতো গুনাহ যার খবর কেবল আল্লাহই জানেন। তাই অপেক্ষা না করে আপনার রবের কাছেই ফিরে আসুন। দেখুন না, আপনার রব মহান আল্লাহ আপনার সম্পর্কে কী বলেছেন?

তাঁর বাণী, ‘(হে নবি) বলে দাও, হে আমার বান্দারা! যারা নিজেদের আত্মার ওপর জুলুম করেছো, আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। নিশ্চিতভাবেই আল্লাহ সমস্ত গোনাহ মাফ করে দেন। তিনি ক্ষমাশীল ও দয়ালু। ফিরে এসো তোমার রবের দিকে এবং তাঁর অনুগত হয়ে যাও তোমাদের ওপর আজাব আসার পূর্বেই। তখন কোনো দিক থেকেই আর সাহায্য পাওয়া যাবে না’- সুরা আয যুমার ৫৩-৫৪।

কথা স্পষ্ট, আর বিলম্ব নয়, এখনই ফিরে আসুন। শয়তানের ধোকাকে অগ্রাহ্য করুন। এইতো সামনে এশার নামাজ। অজু করে মসজিদ পানে এগিয়ে যান, আপনার পৌঁছতে বিলম্ব হতে পারে কিন্তু আল্লাহর ক্ষমা করতে বিলম্ব হবে না। এখন সিদ্ধান্ত আপনার, বাকিটা আপনার মহান রব করে দিবেন। আমার আপনার আল্লাহ কোনো স্বৈরশাসকের মতো নন, যারা মানুষকে শাস্তি দানের জন্য ওঁৎ পেতে থাকে ও সত্য-মিথ্যার মিশ্রণ ঘটিয়ে নানা বাহানা তালাশ করে পক্ষান্তরে  মহান আল্লাহ তাঁর বান্দাকে ক্ষমা করার জন্য নানা উপায় খুঁজবেন। কেন সেই আল্লাহর প্রতি কৃতজ্ঞ হবেন না? আসুন, আমরা জুলুম না করি এবং জালেমের সাথে সকল সংস্রব ছিন্ন করি।

Comments