Skip to main content

বিদায়ী ও নববর্ষে আমাদের করণীয়

আজকে ফজরের নামায শেষে খেমিরদিয়াড়, ভেড়ামারা (আমার শ্বশুরবাড়ি) জামে মসজিদে মুছল্লিদের উদ্দেশ্যে কিছু কথা- ৩১ ডিসেম্বর। ২০২০ সন বিদায় হয়ে যাচ্ছে এবং আগামীকাল শুরু হবে ২০২১। আমাদের জীবন থেকে একটি বছর খসে পড়লো। আল্লাহর বান্দাহ হিসেবে প্রতিনিয়ত আমরা গুনাহ করছি। আজকে ক্ষমা চেয়ে নেয়ার দিন এবং ২০২১ সনে আল্লাহর পথে চলার তাওফিক কামনা করে নতুন জীবন পরিচালনার লক্ষ্যে প্রতিজ্ঞাবদ্ধ হওয়ারও দিন। নেক আমলের বিনিময়ে আখিরাতে জান্নাত নয় বরং আল্লাহর ক্ষমা ও অনুগ্রহে কেবল জান্নাত লাভ সম্ভব। আমরা আমাদের নেক আমলের বিনিময়ে আল্লাহর কাছে ক্ষমা চাইবো। বাংলাদেশে হিংসা ও গীবতের চাষ হয়। ভাইয়ে ভাইয়ে হিংসা, পাড়া-প্রতিবেশীর মাঝে হিংসা এবং রাষ্ট্রীয় পর্যায়ে হিংসাসহ সর্বত্রই হিংসা ছড়িয়ে আছে। হিংসা শুধু কবীরা গুনাহ নয়, রসুলুল্লাহ (সা)-এর ঘোষণা মোতাবেক হিংসা মানুষের নেক আমল ধ্বংস করে দেয়। হাদিসটি এমন, আগুন যেমন শুকনা কাঠ জ্বালিয়ে দেয় তেমনি হিংসা মানুষের নেক আমল ধ্বংস করে দেয়। হিংসুটে মানুষ আল্লাহর কাছে ঘৃণিত এবং তার অনিষ্ট থেকে রক্ষা পাওয়ার জন্য আল্লাহ তাঁর কাছে সাহায্য চাইতে বলেছেন (সূরা ফালাক)। হিংসা থেকে সৃষ্টি হয় গীবত। কারো সাথে শত্রুতা ও অপছন্দ করার কারণে গীবত করা হয়। অথচ গীবতকারী তার নিজেরই ক্ষতি সাধন করে এবং শত্রুর নেকির পাল্লা ভারি করে দেয়। গীবত তাই, যে দোষ তার ভাইয়ের মধ্যে রয়েছে এবং তার অসাক্ষাতে বলা যা সে পছন্দ করে না। অহেতুক দোষারোপ ভয়ানক অপরাধ এবং সেটিকে বলা হয়েছে 'মিথ্যা অপবাদ'। আস্ত বোকা ছাড়া কেউ অপরের গীবত করে না। গীবতকে আল্লাহপাক কুরআনে মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার সাথে তুলনা করেছেন এবং হাদিসে যিনা অপেক্ষা জঘন্য বলা হয়েছে (অথচ যিনা অত্যন্ত ঘৃণিত ও লজ্জাজনক কাজ)। হিংসা-বিদ্বেষ ও গীবত সংকীর্ণমনা লোকেরাই করে থাকে। আল্লাহপাক তাঁর বান্দাদের মাঝে উদারতা দেখতে চান। দ্বীন হচ্ছে নছিয়ত (কল্যাণ কামনা) এবং সব মানুষেরই কল্যাণ কামনা। আল্লাহর কাছে ক্ষমা পাওয়ার সবচেয়ে ভালো উপায় হলো তাঁর বান্দাদের ক্ষমা করা। কুরআনে বলা হয়েছে অন্যায়ের প্রতিবিধান সমপরিমাণ অন্যায়, কিন্তু কেউ যদি ক্ষমা করে দেয় ও সংশোধন করে নেয় তার পুরস্কার আল্লাহর জিম্মায়। আর হাদিসে বলা হয়েছে, যে তার ভাইয়ের দোষ গোপন রাখবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তার দোষ গোপন রাখবেন এবং যে তার ভাইকে ক্ষমা করে দিবে আল্লাহ কিয়ামতের দিন তাকে ক্ষমা করে দিবেন। আমাদের উচিত, রাতে ঘুমানোর আগে সবাইকে ক্ষমা করে দেয়া। আসুন, নতুন বছরে অতীতের সকল হিংসা-বিদ্বেষ, মনোমালিন্য ও দোষারোপ পরিহার করে আল্লাহর অনুগত বান্দাহ হয়ে চলার চেষ্টা করি। আল্লাহ তাঁর বান্দার ত্রুটি-বিচ্যুতি ক্ষমা করার জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছেন। হে পরওয়ারদেগার! তুমি আমাদের অতীতের সকল গুনাহ ক্ষমা করে দাও ও তোমার পথে চলাটা সহজ করে দাও। আমিন।

Comments