Skip to main content

বিপদাপদ আল্লাহর পক্ষ হতে


অবশেষে আমি তাদের ওপর দুর্যোগ পাঠালাম, পঙ্গপাল ছেড়ে দিলাম, উকুন ছড়িয়ে দিলাম, ব্যাঙের উপদ্রব সৃষ্টি করলাম এবং রক্ত বর্ষণ করলাম, এসব নিদর্শন আলাদা আলাদা করে দেখালাম। কিন্তু তারা অহংকারে মেতে রইলো এবং তারা ছিল বড়ই অপরাধপ্রবণ সম্প্রদায়। সূরা আ'রাফ ১৩৩।

হযরত মুসা (আ)-কে অস্বীকার ও তাঁর সম্প্রদায়ের ওপর সীমাহীন জুলুম-নির্যাতনের প্রেক্ষিতে আল্লাহপাক মিসরবাসীদের ওপর নানা বিপদ-মুসিবত চাপিয়ে দিয়েছেন। এমন কিছু ঘটলে ফিরাউনের লোকজন মুসা (আ)-এর কাছে এসে আল্লাহর কাছে দুআ করতে বলতো। আল্লাহ তাদের ওপর থেকে বিপদ সরিয়ে দিলে তারা আবার নাফরমানি করতো। শেষ পর্যন্ত আল্লাহ ফিরাউনসহ তার লোক-লস্করকে সমুদ্রে ডুবিয়ে মেরেছেন।

এখানে আল্লাহপাক স্পষ্ট করেছেন, ঝড়-ঝাপটা, ভূমিকম্প, রোগ-বালাই সবই তাঁর দেয়া এবং সেটি আমাদের কর্মফল। তিনি বিপদ-আপদ যা দেন তা এই উদ্দেশ্যে যাতে তাঁর বান্দারা ফিরে আসে (হয়তো তাদের চেতনা ফিরে আসবে-সূরা আরাফ ১৩০)।

সে যুগে মানুষের জ্ঞানের সীমাবদ্ধতার কারণে পঙ্গপাল, উকুন, ব্যাঙের উপদ্রব ছিল; বিজ্ঞানের চরম উৎকর্ষতার যুগে খালি চোখে দেখা যায় না তিনি এমন ভাইরাস পাঠিয়েছেন। আল্লাহপাকের বাণী, 'কোনো বিপদ কখনই আসে না, আল্লাহর অনুমতি ছাড়া'। এটা আমাদের কাছে স্পষ্ট হতে হবে যে, এটি আল্লাহর পক্ষ থেকে এসেছে এবং দূর করার ক্ষমতাও তাঁর। এ জন্য আল্লাহর দেয়া সুন্নাহ (নিয়ম) অনুসরণ করতে হবে। আল্লাহর প্রতিনিধি হিসেবে তাঁর দেয়া জ্ঞান, প্রজ্ঞা পুরোপুরি কাজে লাগিয়ে সমাধান খুঁজতে হবে এবং আল্লাহর নাফরমানি থেকে ফিরে এসে তাঁর কাছে নিজেকে সোপর্দ করতে হবে।

ইতোমধ্যে মানুষ অনেকখানি ফিরে এসেছে। যুদ্ধবাজদের যুদ্ধোন্মাদনা এবং ভারত, চিনসহ বিভিন্ন দেশে মানুষের প্রতি জুলুম-নির্যাতন হ্রাস পেয়েছে। আমাদের দেশেও ক্রসফায়ারের কথা শোনা যায় না এবং কারারুদ্ধদের ছেড়ে দেয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়েছে; অশ্লীলতার যে প্রসার ঘটেছিল তা থমকে দাঁড়িয়েছে, হয়তো অফিস-আদালতে ঘুষ-দুর্নীতি লোপ পেয়েছে - এ সবই ইতিবাচক দিক। সাথে সাথে মানুষ ব্যক্তিগত ইবাদত-বন্দেগিতে আত্মনিয়োগ করেছে। মানুষ তার জ্ঞান-বিজ্ঞান ও অভিজ্ঞতার আলোকে সতর্কতামূলক নানা ব্যবস্থাও গ্রহণ করেছে। আমরা আশা করি, দয়াময় মহান আল্লাহ আমাদের ওপর থেকে তাঁর গজব সরিয়ে নেবেন।

আল্লাহর দেয়া বিপদ-মুসিবত মু'মিনের ঈমান বৃদ্ধি করে। পক্ষান্তরে কাফির আরো গুমরাহ হয়ে যায়।

হে আমাদের রব! তুমি আমাদের ঈমান বাড়িয়ে দাও, বিপদপদে পরম ধৈর্য দান করো এবং বিপদাপদ আমাদের থেকে হটিয়ে দাও।

হে আল্লাহ! তুমি আমাদেরকে মুসলিম হিসেবে টিকিয়ে রেখ ও মুসলিম হিসেবে মৃত্যু দান করো। আমিন।

Comments