বহুদিন পরে
এবং সর্বশেষ সাক্ষাত নড়াইলে। ফেসবুকের মাধ্যমে আবার নতুন করে আবিষ্কার। মোবাইল নম্বর
আদান-প্রদানের মাধ্যমে কথা হলো দু’জনেই যেহেতু
পাশাপাশি থাকি এবং হাঁটি, তাই হাঁটতে যেয়ে দেখা-সাক্ষাত করা যায়। গত দু’দিন একত্রে হাঁটা ও বেশ আলাপ-আলোচনাও হলো। তিনি এখন এক পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের
সহযোগী অধ্যাপক। এক ছেলে ও এক মেয়ের জনক। ছেলেটি বড়, বয়স নয় বছর; এখন হিফজ করছে, দু’পারা শেষ করে তৃতীয় পারা শুরু করেছে। তাঁর বয়স অর্ধ-শতাব্দী না হলেও
ছুঁই ছুঁই করছে অর্থাৎ চল্লিশের কোটা বেশ আগেই পার হয়েছে। সাক্ষাতের পর আমার প্রথম
কথাই ছিল বয়সের সাথে তো চেহারার মিল নেই। সেই যে ১৫/২০ বছর আগে দেখেছি, এখনো তাই। হেসে
দিয়ে বললেন, স্যার, ছাত্রাবস্থায় প্রচুর খেলাধুলা করেছি এবং এখন প্রতিদিন সকালে এক
ঘন্টা করে হাঁটি। আমাদের আলাপের বিষয় ছিল দেশ,সমাজ, ছাত্রসমাজ, ইসলাম অনেক কিছু মিলে।
ইসলামের প্রতি আমাদের উভয়েরই রয়েছে গভীর আকর্ষণ। দু’দিনের আলাপচারিতায়
আমরা উভয়েই একমত যে, দেশের অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি একান্তভাবে নির্ভর করছে বর্তমান ছাত্রসমাজের
নৈতিক ও বৈষয়িক উন্নতির সমন্বয়ে। তাই ছাত্রদের ক্যারিয়ার গঠনের প্রতি সবিশেষ গুরুত্ব
প্রদান করতে হবে। যুব সমাজকে নৈতিকভাবে ধ্বংস করে দেয়ার চলছে নানাবিধ প্রয়াস। কোন সন্দেহ
নেই, অন্যান্যদের তুলনায় ইসলামপন্থীরা নৈতিক দিক দিয়ে অনেক উন্নত। তারপরও বলা যায়,
আল্লাহপাক যে মানে ঈমানদারদেরকে দেখতে চান সেই মান থেকে তারা অনেক নীচে। বিশেষ করে
আর্থিক লেনদেন, ওয়াদা-প্রতিশ্রুতি প্রতিপালন ও আমানতদারীতে অনেকে বেশ দুর্বল। এর পেছনে
অন্যতম কারণ হলো, প্রয়োজনীয় যোগ্যতা ও অভিজ্ঞতা ছাড়াই বড় ধরনের অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে
জড়িয়ে পড়া। তাছাড়াও ব্যক্তিগত আমল-আখলাকেও আরো সমৃদ্ধ হওয়া দরকার। মসজিদে সময়মত উপস্থিত
হওয়া ও নামায শেষে রসূল (সা) শেখানো দোয়াসমূহে অভ্যস্ত হওয়াও প্রয়োজন। এ দিক দিয়েও
বেশ দুর্বলতা লক্ষণীয়। আবার অনেক ইতিবাচক দিকও রয়েছে। ঈমানদারদের বিপদাপদ আল্লাহর পক্ষ
থেকেই আসে এবং টিকে থাকার যোগ্যতাও আল্লাহই দিয়ে থাকেন। ঈমানদারদের প্রতি এটা আল্লাহতায়ালার
রহমতই বলতে হয়। জুলুম-নির্যাতন যারা করে তারা আল্লাহর নাগালের বাইরে নয়। তাদের বিষয়টি
আল্লাহর ওপর সোপর্দ করে ঈমানদারদের কেবল ইতিবাচক কাজই করে যাওয়া দরকার। আল্লাহ প্রতিশ্রুতিবদ্ধ
যে, যারা ঈমান আনবে ও নেক আমল করবে আল্লাহ তাদেরকে খেলাফত দান করবেন এবং ভীতিকর অবস্থা
দূর করে দেবেন (সূরা নূর ৫৫ আয়াত)। তাই ইসলামের জন্য যারাই কাজ করবেন তাদের উচিত নিজেদেরকে
নেক আমলে সমৃদ্ধ করা এবং এমতাবস্থায় আল্লাহও তাঁর প্রতিশ্রুতি পূরণ করবেন। ০৭/১১/২০১৭
ইসলাম ও সমসাময়িক বিষয়ে ব্যক্তিগত ব্লগ
Comments
Post a Comment