বিসমিল্লাহির
রহমানির রহীম
ধানমন্ডি তাকওয়া
মসজিদে আজকে ফজরে তেলাওয়াত করা হয়েছে সূরা আলে ইমরানের ১০ম ও ১১শ রুকু। নামায শেষে
১০২ নং আয়াতের সংক্ষিপ্ত আলোচনা করেন হাফেজ মাওলানা আব্দুর রশীদ। সরল অর্থ-
‘হে ঈমানদারগণ!
তোমরা আল্লাহকে ভয় করো ভয় করার মত এবং মুসলমান না হয়ে মরো না।’
এ আয়াতের ব্যাখ্যা
প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ঈমানদারগণ সর্বাবস্থায় আল্লাহতায়ালার আনুগত্য ও তাঁকে স্মরণ করে
চলবে, তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে এবং কখনই তাঁর নাফরমানি করবে না। একটি মুহূর্তও সে আল্লাহর
স্মরণ থেকে গাফেল থাকবে না ও তাঁর আনুগত্যের বাইরে চলবে না। সাহাবায়ে কেরাম ভীত-সন্ত্রস্ত
হয়ে পড়লে পরবর্তীতে বলা হয় যতখানি সাধ্যে কূলায়। আল্লাহ কারো ওপর তার সাধ্যের অতিরিক্ত
বোঝা চাপাননি।
(অতিরিক্ত কথা-
এই সমাজে আমরা অনেককে ভয় করে চলি, এটা স্বাভাবিক ও প্রয়োজন, এতে দোষের কিছু নেই। যেমন-
সন্তান তার পিতা-মাতাকে, ছাত্র-ছাত্রী তার শিক্ষককে, স্ত্রী তার স্বামীকে, অফিসের কর্মচারী
তার বসকে, দেশের নাগরিক সরকারকে; আবার হিংস্র জন্তু-জানোয়ারকেও আমরা ভয় করি। এ সব ভয়
আমরা কেন করি-এ প্রশ্নের জবাবে আমরা বলে থাকি যে, ভয় না করে চললে আমাদের ক্ষতি হবে।
এ সবই ঠিক আছে। তবে শর্ত হচ্ছে আল্লাহর প্রতি ভয়কে যেন ছাড়িয়ে না যায়। যেমন-আমরা পিতা-মাতাকে
ভয় করি ও তাদের আনুগত্য করি; কিন্তু তাঁরা যদি আল্লাহর নাফরমানির পর্যায়ে পড়ে এমন কোন
বিষয়ে আদেশ করে তাহলে তা অমান্য করাটাই হলো আল্লাহকে ভয় করা। হাদিসে স্পষ্টভাবে বলা
হয়েছে, ‘স্রষ্টার নাফরমানি করে সৃষ্টির কোন আনুগত্য
নেই।’
দুনিয়ায় আমরা যাদেরকে ভয় করি তাদের অমান্য করলে তারা
আমাদের দুনিয়ার জীবনটা ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারে (তাও সেটা নির্ভর করে আল্লাহর মঞ্জুরির
ওপর)। পক্ষান্তরে আল্লাহর এখতিয়ার কত ব্যাপক। এ দুনিয়ায় আমাদের সুস্থতা, রিজিক, টিকে
থাকা ও আমাদের স্ত্রী-পুত্র-পরিজনের কল্যাণ সবকিছুতে আল্লাহতায়ালার কর্তৃত্ব রয়েছে।
সর্বোপরি মৃত্যুর পরে জান্নাত-জাহান্নামের ফয়সালা একান্তভাবে নির্ভর করছে আল্লাহতায়ালার
মর্জির ওপর। আমরা সমাজে কারো ক্ষমতা ও কর্তৃত্বের মাপকাঠিতে তাকে ভয় করি। যে যত বেশি
ক্ষমতাবান তাকে সেই মাত্রাই ভয় করা হয়। আল্লাহতায়ালাকে তাঁর ক্ষমতা, কর্তৃত্ব পরিমাপ
করেই আমাদেরকে ভয় করতে হবে। যেমন-অফিসের বসকে ঘুষ না দিলে তিনি আমাকে বদলী করতে পারেন,
বদলী ঠেকানোর জন্যে ঘুষ দেই; কিন্তু আমরা জানি ঘুষের আদান-প্রদানকারী জাহান্নামে যাবে।
ফলে আল্লাহকে ভয় করলে সে বদলী মেনে নেবে কিন্তু ঘুষ দিবে না। এভাবে জীবনের সকল ক্ষেত্রে
আল্লাহকে ভয় করে চলাটার নামই ইসলাম এবং যে চলে সেই মুসলিম। আল্লাহপাক আমাদেরকে সর্বাবস্থায়
মুসলিম (অনুগত) হয়ে চলার তাওফিক দান করুন। আমিন। ১০/১১/২০১৭
Comments
Post a Comment